Ajker Patrika

বন্যার পানিতে ডুবল ধান

রকিব হাসান নয়ন, মেলান্দহ
আপডেট : ২৬ মে ২০২২, ১১: ৪৬
বন্যার পানিতে ডুবল ধান

জামালপুরের মেলান্দহে বন্যায় নদ-নদীর পানি বেড়ে খেতের ধান তলিয়ে গেছে। উপজেলার ঘোষেরপাড়া ও ঝাউগড়া ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী অন্তত ১০০ বিঘা জমির পাকা ধান তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বলা হয়েছে, ঘোষেরপাড়া ও ঝাউগড়া ইউনিয়নে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। বেশির ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। কতটুকু ধান তলিয়ে গেছে, এটা তাদের জানা নেই।

জানা গেছে, ভারতের আসামের পাহাড়ি ঢলের পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এতে কয়েক দিন ধরে যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় যমুনা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পায়। এতে পানিতে তলিয়ে গেছে ধান, পাটসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল।

মেলান্দহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, এ বছর উপজেলায় ২০ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চাষ হয়েছে ২০ হাজার ২০০ হেক্টর।

স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, হঠাৎ করেই নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ঝাউগড়া ও ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের কাপাসহাঁটিয়া, শেখসাদি, টুপকারচর, ফকিরপাড়া, বেলতৈল, বীর ঘোষেরপাড়া, বাগবাড়ি, পূর্ব কাপাসহাটিয়া, তালুকপাড়া, রৌমারী ও ইলশামারী বিল ও তার আশপাশের অন্তত ১০০ বিঘা জমির পাকা ধান হঠাৎ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

সরেজমিন ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নে বীর ঘোষেরপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, খালে বন্যার পানি ঢুকে খালের আশপাশের ধানসহ জমি তলিয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়া ধান কাটছেন শ্রমিকেরা। ধান কেটে কৃষকেরা নৌকা দিয়ে উঁচু জায়গায় তুলছেন।

ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘এ বছর বোরো ধানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি ও বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে আমার ধানখেত তলিয়ে গিয়েছিল। ১ হাজার ৬০০ টাকা করে শ্রমিক নিয়ে পানির মধ্য থেকে ধান কেটে তুলেছি।’

ঝাউগড়া ইউনিয়নের কাপাস হাঁটিয়া গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সাত বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়ে ছিলাম। হঠাৎ পানিতে ডুবে গেছে সব জমির ধান। ১ হাজার ৪০০ টাকা মজুরি দিয়ে শ্রমিক এবং ১ হাজার ২০০ টাকার নৌকা ভাড়া নিয়ে ২ বিঘার ধান কেটে রাস্তায় তুলেছি। বাকি ধান এখনো পানির নিচে ডুবে আছে।’

কৃষক কোব্বাত বলেন, ‘১২ বিঘা জমির পাকা ধান পানিতে ডুবে গেছে। ১২ বিঘার মধ্যে ৬ বিঘার ধান কাটছি। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা মজুরিতেও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। পানি কিছুটা কমেছে। যদি এখন ধান না কাটি, তাহলে নষ্ট হবে।’

ঘোষেরপাড়া এলাকায় কৃষক শহিদুল বলেন, ‘আমি ধান কাটা শেষ করেছি। কিন্তু আমার ধানের খড় পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন তো খড় একটাও নাই। সবগুলোই পানিতে তলিয়ে আছে। আগের দিন সকালে খড় শুকাতে দিয়েছিলাম। পরের দিন সকালে দেখি সব তলিয়ে গেছে। এখন খড় না পাওয়া গেলে গরু পালন করা খুব কঠিন হয়ে যাবে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, ‘ঘোষেরপাড়া ও ঝাউগড়া ইউনিয়নে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়। এর মধ্যে রৌমারী ও ইলশামারী বিলে ৮০ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হয়েছিল। প্রায় সব ধান কাটা শেষ। ১২ একর জমির ধান কাটা বাকি রয়েছে। বাকিটা ১-২ দিনের মধ্যে কাটা শেষ হয়ে যাবে। কতটুকু জমির ধান তলিয়ে গেছে, এটা আমাদের জানা নেই। তবে পানি কমতে শুরু করেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

সাবেক ‘র’-এর প্রধানের নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত