Ajker Patrika

অভাব ঘুচানো হলো না তাঁর

তারাগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২১, ২২: ২০
অভাব ঘুচানো হলো না তাঁর

তারাগঞ্জের তরুণ কেশব রায় উচ্চশিক্ষার জন্য গিয়েছিলেন ঢাকায়। ভর্তি হয়েছিলেন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে। স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষে চাকরি করে পরিবারের অভাব ঘোচাবেন। কিন্তু সেই স্বপ্নের সঙ্গে নিভে গেছে তাঁর জীবনপ্রদীপও।

কেশব গত মঙ্গলবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পশ্চিম তেজতুরী বাজার এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের বাড়িতে তাঁর মরদেহ আনা হয়। তিনি উপজেলার বায়ানপাড়া গ্রামের মংলু রায় ও আরতী রানী দম্পতির বড় ছেলে।

প্রতিবেশীরা জানান, কেশবের বাবার কোনো আবাদি জমি নেই। দেড় বছর আগে তাঁর দুবার অস্ত্রোপচার হয়। এরপর থেকে তিনি আর ভারী কাজ করতে পারেন না। সংসার চালান কেশবের ছোট ভাই রডমিস্ত্রি সুশান্ত।

কেশব ২০১৮ সালে সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ষষ্ঠ সেমিস্টার সম্পন্ন করেছিলেন। করোনার ছুটিতে তিনি নিজের খরচ জোগাতে মামা কমল রায়ের সঙ্গে রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোডে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের কম্পিউটার শাখায় খণ্ডকালীন কাজ করছিলেন।

মামা কমল রায় জানান, কেশব মঙ্গলবার রাতে অফিস থেকে বাইসাইকেলে করে তেজগাঁওয়ের মণিপুরের বাসায় ফিরছিলেন। রাত ৯টার দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁকে ছুরিকাঘাত করে সাইকেল ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়।

পথচারীরা পরে কেশবকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ১১টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গত বুধবার ঢামেক হাসপাতাল মর্গে তাঁর লাশ শনাক্ত করা হয়।

গতকাল সকাল ১০টার দিকে বায়ানপাড়া গ্রামে কেশবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর লাশ সৎকারের জন্য শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ সময় পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন।

কেশবের বাবা বলছিলেন, ‘বেটাটার মোর কী দোষ আছলো? ওমরা মোর বেটাটাক মারি ফেলাইল। কত আশা আছলো বেটাটা লেখাপড়া করি চাকরি করবে, টাকা কামাইবে, সংসারোত অভাব থাকবে না। মোর সউগ স্বপ্ন শ্যাষ করি দিলে সন্ত্রাসীরা।’

স্বামীর এসব কথা শুনে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন স্ত্রী আরতী রানী। জ্ঞান ফিরলে আহাজারি করছিলেন, ‘আজ ছেলে চিতায় আগুন দেওচে। এ আগুন মোর কলিজাত জ্বলোছে। ছেলেটার মোর অফিসার হওয়া হইল না।’

ইকরচালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কেশবের পরিবার খুবই দরিদ্র। তাঁর বাবা অসুস্থ। ছোট ভাই সংসার চালায়। তাঁদের গত বছর ভিজিডি কার্ড করে দিয়েছিলাম। ছেলেটা লেখাপড়া করতে গিয়ে এভাবে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হবে ভাবতেই অবাক লাগছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী জাফরিন

পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী

টেলিটক এখন গলার কাঁটা পর্যায়ে চলে এসেছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

সিন্ধু পানিবণ্টন নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় পাকিস্তানের বড় জয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত