Ajker Patrika

সংকটে আছে নির্বাচন কমিশন

সম্পাদকীয়
সংকটে আছে নির্বাচন কমিশন

দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্ণ করেছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এই এক বছরে নিজেদের কতটুকু গুছিয়ে নিতে পেরেছে, তা স্পষ্ট না হলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনের অন্য সদস্যরা কথা কম বলেননি। সুযোগ পেলেই তাঁরা কথা বলেন। তবে সব কথা জরুরি বা প্রয়োজনীয়, সেটা নয়। কম কথা, বেশি কাজ—এই নীতি আমাদের দেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রায়ই মেনে চলতে চান না। কাজে বড় না হয়ে কথায় বড় হওয়ার একটি রোগ অনেককেই পেয়ে বসেছে। নির্বাচন কমিশনের কর্তাব্যক্তিরাও এর ছোঁয়াচ থেকে মুক্ত নন।

নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। ভোটসংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আস্থা অর্জন করা নির্বাচন কমিশনের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নিজেই স্বীকার করেছেন, দেশের নির্বাচনব্যবস্থা এখনো মানুষের কাছে আস্থাভাজন হয়ে ওঠেনি। বৃহস্পতিবার জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যেহেতু নির্বাচন আয়োজন করবে, তাই মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব আছে। তাদের আস্থাটা বাড়াতে হবে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে আর ১০ মাস বাকি। গত এক বছরে আস্থা অর্জনের কাজে খুব একটা অগ্রগতি না হয়ে থাকলে বাকি সময়ে সেটা হবে বলে কি মনে করা যায়?

রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না, তা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা কি নির্বাচন কমিশনের কাজ? আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারও বলেছিলেন, সব দলকে নির্বাচনে আনা কমিশনের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, ‘আমরা একটা সংকটে আছি, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ, ভোট নিয়ে আমরা এখনো রাজনৈতিক দলগুলোকে পুরোপুরি ঐক্যবদ্ধ দেখতে পাচ্ছি না। এই ঐক্যটা খুব বেশি প্রয়োজন। যদি ঐক্যের ভিত্তিতে নির্বাচনটা হয়, তাহলে রাজনৈতিক সংকট হবে না। আমরা কখনোই চাই না, নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের সময়ে কোনো রাজনৈতিক সংকট হোক।’

সিইসি বলেছেন, ১৯৭০ সালে নির্বাচন হয়েছিল লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডারের (এলএফও) অধীনে। তখন দেশে কোনো সংবিধান ছিল না। সেই নির্বাচনে যে ফল হয়েছিল, পাকিস্তান সামরিক জান্তা তা অমান্য করল, অশ্রদ্ধা করল। একটা নির্বাচনের ফল উপেক্ষা করার কারণে একটি দেশ ভেঙে গিয়েছিল। জাতি যখন দেখল তাদের অপমানিত করা হয়েছে, তাদের অস্বীকার করা হয়েছে, তাদের ম্যান্ডেটকে মূল্য দেওয়া হয়নি, তখন তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। এর ফলাফল সবার জানা। কাজেই নির্বাচন যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তা রাজনৈতিকভাবে সবাইকে অনুধাবন করতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃত্বকে 
এটা বুঝতে হবে। নির্বাচন এবং ভোটাধিকারকে হালকাভাবে গ্রহণ না করাই ভালো।

সবার অংশগ্রহণে একটা সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য ভোটার, দল, প্রার্থী, এজেন্ট, গণমাধ্যমকর্মী—সবার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা কমিশনের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে কমিশনের শতভাগ আন্তরিকতার প্রমাণ দেশবাসী পেয়েছে কি?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে লতিফ সিদ্দিকী অবরুদ্ধ, নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

বড় ভাইসহ ডিবি হেফাজতে থাকা সবার সসম্মানে মুক্তি চাই: কাদের সিদ্দিকী

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত