রাজীব কুমার সাহা
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি পরিচিত শব্দবন্ধ হলো ছিনিমিনি খেলা। আমরা প্রায়ই কথাবার্তায় এ শব্দবন্ধটির অবতারণা করি। ‘দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা’ বা ‘মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা’ সচরাচর এমন প্রসঙ্গে এ শব্দবন্ধটির ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু এই ছিনিমিনি খেলার প্রকৃত অর্থ কী? কীভাবে খেলতে হয় এ খেলা? এই শব্দবন্ধ কীভাবে তার আক্ষরিক অর্থ ছাপিয়ে আলংকারিক অর্থে প্রধান হয়ে উঠল? আজ জানব এই শব্দবন্ধের ইতিবৃত্ত।
‘ছিনিমিনি’ দেশি শব্দ। এর আক্ষরিক অর্থ হলো পুকুর বা জলাশয়ে খোলামকুচি (মাটির হাঁড়ি, কলসি প্রভৃতির ভাঙা টুকরো) ছুড়ে ভাসানোর খেলাবিশেষ। আর এর আলংকারিক অর্থ হলো স্বেচ্ছাচারিতা, অর্থের অপচয় বা হেলাফেলায় বেহিসাবি ব্যয় করা, নষ্ট করা।ইংরেজিতে এই খেলাকে বলে ‘গেম অব ডাক অ্যান্ড ড্রেকস’। এবার সবিস্তারে আলোচনা করি।
মূলত ছিনিমিনি ছোটদের একটি চমৎকার খেলাবিশেষ। শান্ত জলাশয় বা পুকুরে এটি খেলতে হয়। মাটির হাঁড়ি-পাতিল, কলসি প্রভৃতির ভাঙা ছোট টুকরোকে বলা হয় খোলামকুচি বা খাপরা। এই খাপরা বা ছোট টুকরো পুকুরে বিশেষ কৌশলে ছুড়ে মারার খেলাকে বলা হয় ছিনিমিনি। এই খেলায় মাটির হাঁড়ি-পাতিলের ভাঙা টুকরো কিংবা চ্যাপটা ঢিল পানিতে এমনভাবে ছোড়া হয় যেন তা ক্রমান্বয়ে একবার পানি ছুঁয়ে আরেকবার শূন্যে ভেসে লাফিয়ে চলা ব্যাঙের মতো সামনের দিকে ছুটতে থাকে।
এভাবে যার ছোড়া খোলামকুচি যত দূরে যেতে পারে, তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। শিশু-কিশোরেরা গ্রামে গ্রামে, বিশেষ করে বর্ষার সময় এ খেলায় দারুণভাবে অংশগ্রহণ ও উপভোগ করে। তবে এ খেলাটি যে কেবল ছোটরাই খেলে তা নয়, বড়রাও ছিনিমিনি খেলেন।
কিন্তু দুটো খেলারই আলাদা আলাদা অর্থ রয়েছে। শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে এটি নিছকই খেলাবিশেষ, কিন্তু বড়দের ক্ষেত্রে এটি কখনো টাকাপয়সা আবার কখনো অন্যের জীবন নিয়ে খেলা।
ছিনিমিনি খেলতে গিয়ে শিশু-কিশোরেরা অনেক সময় সুবিধাজনক আকারের খোলামকুচি না পেয়ে ঘরের ভালো হাঁড়ি-পাতিল ভেঙে টুকরো টুকরো করে এ খেলায় মত্ত হয়ে উঠত। খেলার ছলে মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট করার এই শিশুসুলভ প্রবণতাটি শিশু-কিশোরদের হাত থেকে বড়দের মুখের ভাষায় আলংকারিক অর্থে স্থান করে নিয়েছে; অর্থাৎ গুরুত্বপূর্ণ কোনো কিছু নিয়ে এ রকম ছেলেখেলা বা হেলাফেলা করলে তাকে বলা হয় ‘ছিনিমিনি খেলা’।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনায়ও আমরা ‘ছিনিমিনি খেলা’র সন্ধান পাই। তবে সেটি আক্ষরিক অর্থেই ছিনিমিনি খেলা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুনশ্চ কাব্যগ্রন্থের ‘বালক’ শীর্ষক কবিতায় পাই,
‘মুখে জল নিয়ে আকাশে ছিটোতে ছিটোতে
সাঁতার কাটে,
ছিনিমিনি খেলে ঘাটে দাঁড়িয়ে,
কঞ্চি নিয়ে করে মাছ-ধরা খেলা,’
পুরো রবীন্দ্রসাহিত্যে এই ছিনিমিনি খেলার প্রসঙ্গটি একবারই রয়েছে। এ ছাড়া আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লোকখেলা
নিয়ে বেশ কয়েকটি শিশুতোষ নাটিকা রচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি নাটিকা হলো ‘ছিনিমিনি খেলা’।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি পরিচিত শব্দবন্ধ হলো ছিনিমিনি খেলা। আমরা প্রায়ই কথাবার্তায় এ শব্দবন্ধটির অবতারণা করি। ‘দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা’ বা ‘মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা’ সচরাচর এমন প্রসঙ্গে এ শব্দবন্ধটির ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু এই ছিনিমিনি খেলার প্রকৃত অর্থ কী? কীভাবে খেলতে হয় এ খেলা? এই শব্দবন্ধ কীভাবে তার আক্ষরিক অর্থ ছাপিয়ে আলংকারিক অর্থে প্রধান হয়ে উঠল? আজ জানব এই শব্দবন্ধের ইতিবৃত্ত।
‘ছিনিমিনি’ দেশি শব্দ। এর আক্ষরিক অর্থ হলো পুকুর বা জলাশয়ে খোলামকুচি (মাটির হাঁড়ি, কলসি প্রভৃতির ভাঙা টুকরো) ছুড়ে ভাসানোর খেলাবিশেষ। আর এর আলংকারিক অর্থ হলো স্বেচ্ছাচারিতা, অর্থের অপচয় বা হেলাফেলায় বেহিসাবি ব্যয় করা, নষ্ট করা।ইংরেজিতে এই খেলাকে বলে ‘গেম অব ডাক অ্যান্ড ড্রেকস’। এবার সবিস্তারে আলোচনা করি।
মূলত ছিনিমিনি ছোটদের একটি চমৎকার খেলাবিশেষ। শান্ত জলাশয় বা পুকুরে এটি খেলতে হয়। মাটির হাঁড়ি-পাতিল, কলসি প্রভৃতির ভাঙা ছোট টুকরোকে বলা হয় খোলামকুচি বা খাপরা। এই খাপরা বা ছোট টুকরো পুকুরে বিশেষ কৌশলে ছুড়ে মারার খেলাকে বলা হয় ছিনিমিনি। এই খেলায় মাটির হাঁড়ি-পাতিলের ভাঙা টুকরো কিংবা চ্যাপটা ঢিল পানিতে এমনভাবে ছোড়া হয় যেন তা ক্রমান্বয়ে একবার পানি ছুঁয়ে আরেকবার শূন্যে ভেসে লাফিয়ে চলা ব্যাঙের মতো সামনের দিকে ছুটতে থাকে।
এভাবে যার ছোড়া খোলামকুচি যত দূরে যেতে পারে, তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। শিশু-কিশোরেরা গ্রামে গ্রামে, বিশেষ করে বর্ষার সময় এ খেলায় দারুণভাবে অংশগ্রহণ ও উপভোগ করে। তবে এ খেলাটি যে কেবল ছোটরাই খেলে তা নয়, বড়রাও ছিনিমিনি খেলেন।
কিন্তু দুটো খেলারই আলাদা আলাদা অর্থ রয়েছে। শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে এটি নিছকই খেলাবিশেষ, কিন্তু বড়দের ক্ষেত্রে এটি কখনো টাকাপয়সা আবার কখনো অন্যের জীবন নিয়ে খেলা।
ছিনিমিনি খেলতে গিয়ে শিশু-কিশোরেরা অনেক সময় সুবিধাজনক আকারের খোলামকুচি না পেয়ে ঘরের ভালো হাঁড়ি-পাতিল ভেঙে টুকরো টুকরো করে এ খেলায় মত্ত হয়ে উঠত। খেলার ছলে মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট করার এই শিশুসুলভ প্রবণতাটি শিশু-কিশোরদের হাত থেকে বড়দের মুখের ভাষায় আলংকারিক অর্থে স্থান করে নিয়েছে; অর্থাৎ গুরুত্বপূর্ণ কোনো কিছু নিয়ে এ রকম ছেলেখেলা বা হেলাফেলা করলে তাকে বলা হয় ‘ছিনিমিনি খেলা’।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনায়ও আমরা ‘ছিনিমিনি খেলা’র সন্ধান পাই। তবে সেটি আক্ষরিক অর্থেই ছিনিমিনি খেলা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুনশ্চ কাব্যগ্রন্থের ‘বালক’ শীর্ষক কবিতায় পাই,
‘মুখে জল নিয়ে আকাশে ছিটোতে ছিটোতে
সাঁতার কাটে,
ছিনিমিনি খেলে ঘাটে দাঁড়িয়ে,
কঞ্চি নিয়ে করে মাছ-ধরা খেলা,’
পুরো রবীন্দ্রসাহিত্যে এই ছিনিমিনি খেলার প্রসঙ্গটি একবারই রয়েছে। এ ছাড়া আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লোকখেলা
নিয়ে বেশ কয়েকটি শিশুতোষ নাটিকা রচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি নাটিকা হলো ‘ছিনিমিনি খেলা’।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫