Ajker Patrika

ফেল থেকে ১৮ জনের জিপিএ-৫

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৪৬
ফেল থেকে ১৮ জনের জিপিএ-৫

সাদিকুন নাহার এসএসসি পরীক্ষা খুব ভালো দিয়েছিল। কিন্তু ফল প্রকাশ হলে দেখা গেল, পদার্থবিজ্ঞানে সে ফেল (অকৃতকার্য) করেছে। মানতে না পেরে সাদিকুন বোর্ডে চ্যালেঞ্জ করেছিল। খাতা পুনর্নিরীক্ষায় দেখা গেল, সাদিকুন পদার্থবিজ্ঞানে পেয়েছে জিপিএ-৫। ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষায় রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ১৮ শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে একেবারেই ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে।

গত শুক্রবার রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের খাতা পুনর্নিরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা গেছে, এবার মোট ১১৬ শিক্ষার্থীর ১২০টি বিষয়ের ফল পরিবর্তন হয়েছে। ফেল থেকে পাস করেছে ৭৯ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ১৮ জন কোনো কোনো বিষয়ে ফেল থেকে পেয়েছে এ প্লাস। এ গ্রেড থেকে ফল পাল্টে উচ্চতর গ্রেড পেয়েছে ২২ জন। এ মাইনাস থেকে উচ্চতর গ্রেড পেয়েছে ১২ জন, বি গ্রেড থেকে ৭ জনের ফল পাল্টে উচ্চতর গ্রেড হয়েছে।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ফল প্রকাশের পর এবার এসএসসি পরীক্ষার ৯ হাজার ৪৪৩টি খাতা পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করে ৮ হাজার ৩৮৭ শিক্ষার্থী। সবচেয়ে বেশি ৩ হাজার ৪৭৭টি পদার্থবিজ্ঞান খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন পড়ে। এ ছাড়া ভূগোল ও পরিবেশের ১ হাজার ২৮১টি, উচ্চতর গণিতের ৩১৮টি, রসায়নের ২ হাজার ১৭০টি, জীববিজ্ঞানের ৫৭৭টি, পৌরনীতি ও নাগরিকতার ১০২টি, অর্থনীতির ৬৭টি, ব্যবসায় উদ্যোগের ৬৯টি, হিসাববিজ্ঞানের ৩৫৫টি, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিংয়ের ৩৭৯টি এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতার ৬৪৮টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন জমা পড়ে। বেশির ভাগ খাতার ফল একই থাকলেও ১১৬ জনের ১২০টি বিষয়ের পরীক্ষার ফল পাল্টে গেছে।

এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর চারঘাটের বেলঘরিয়া আবদুস সাত্তার উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুইটি খাতুন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। গণিতে ফেল এসেছিল তার। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, সুইটি মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। আত্মহত্যা করায় তার খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন কেউ করেনি। তবে তার ফেল নিয়ে আমাদেরও একটু সন্দেহ আছে। তিনি বলেন, পরীক্ষকেরা যত্ন নিয়েই খাতা পরীক্ষণ করেন। তা-ও ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকে বলেই খাতা পুনর্নিরীক্ষণে ফল পাল্টায়। তাই পরীক্ষকদের আরও সতর্ক হওয়া দরকার।

একই কথা বলছেন শিক্ষাবিদেরাও। রাজশাহী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বলেন, ‘যারা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে, তাদের অল্প কিছু শিক্ষার্থীর ফল পাল্টায়। কয়েক হাজার খাতার পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন পড়ে। অর্থ দিয়ে শিক্ষার্থীরা আবেদন করে। কিন্তু দ্বিতীয়বার খাতা দেখা হয় না। শুধু নম্বর ঠিকমতো যোগ করা হয়েছে কি না সেটুকু দেখা হয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পয়সার অপচয় হলো। বেশির ভাগেরই লাভ হয় না।’

হবিবুর রহমান আরও বলেন, ‘প্রধান পরীক্ষক বা শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার অপারেটর ভুল করলে তাঁর জন্য শিক্ষার্থীরা কেন টাকা গুনবে? তাই আমি মনে করি, ফল ঘোষণার আগেই বোর্ডই খাতা পুনর্নিরীক্ষণ করবে। তাহলে ভুলটা কম হবে। এটা যদি বোর্ড না-ই পারে, তাহলে বিনা পয়সায় খাতা পুনর্নিরীক্ষণ করতে হবে। যাঁরা ভুল করবে, তাঁদের বড় শাস্তি দিতে হবে।’

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো পরীক্ষক ভুল করলে আমরা পরীক্ষাসংক্রান্ত কাজ থেকে তাঁকে দুই বছর বা এর বেশি বিরত রাখতে পারি। এর বেশি কিছু আমরা পারি না।’ শিক্ষার্থীদের টাকায় পুনর্নিরীক্ষণ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আন্তবোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি বিষয়ের জন্য ১২০ টাকা নেওয়া হয়। এই টাকা শিক্ষার্থীরা ফেরত পায় না। এটা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের লাশ মিলল মেঘনায়, শোকাহত আজকের পত্রিকা

‘সামনে চমকপ্রদ বেশ কিছু ঘটনা ঘটবে, অনেক বিষয় আমি জানি’

কিশোরগঞ্জে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষ-গুলি, নিহত ১

‘মব’ সৃষ্টি করে ৩ কিশোরকে সেতুর সঙ্গে বেঁধে রাতভর পিটুনি, নিহত ১

সনদ জালিয়াতি: ব্যাংকের চাকরি যাওয়া জাহাঙ্গীরের স্কুল সভাপতির পদও গেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত