Ajker Patrika

মুড়িকাটায় মন ভালো নেই পেঁয়াজচাষিদের

শাহীন রহমান, পাবনা 
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ০৯: ১৮
মুড়িকাটায় মন ভালো নেই পেঁয়াজচাষিদের

‘ফলন ভালো হলিও সার, বিষ, বেছন, লেবারের যে দাম, তাতে ইবার পিঁয়েজের আবাদ কইরে লাভ হলো লায়। বিঘেয় ৫০ মণ ফলন হলি কী হবি! হাটে ৮০০ টেকা মণ বেইচে পুষাচ্ছে না। এত কষ্টের ফসলের দাম না পালি কিষক বাঁচপি ক্যাবা কইরে।’

এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে আগাম জাতের ‘মুড়িকাটা’ পেঁয়াজ লাগিয়েছিলেন পাবনার সুজানগর উপজেলার তারাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক সরোয়ার প্রামাণিক। ফলন ভালো হয়েছে, ৫০ মণ পেঁয়াজ পাওয়ার আশা করছেন তিনি। কিন্তু এরপরও খেত থেকে পেঁয়াজ তুলতে তুলতে তাঁর কপালে চিন্তার ভাঁজ। তিনি হিসাব করে দেখালেন, ৮০০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি করলে উৎপাদনের খরচই উঠবে না।

উত্তরের জেলা পাবনায় ‘মুড়িকাটা’ পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হলেও মন ভালো নেই কৃষকের। দুই সপ্তাহ আগেও ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে, কিন্তু বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা।

জেলায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আবাদ হয় সুজানগর উপজেলায়। সাপ্তাহিক হাটের দিন গতকাল বুধবার সকালে সুজানগর হাটে পেঁয়াজ তুলেছিলেন চর ভবানীপুর গ্রামের চাষি আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, ‘চার বিঘেত পিঁয়াজ লাগাইছিলেম। খরচ দেড় লাখের মতো হইছে। হয়তো ১৮০ মণ পিঁয়াজ পাব। এহন হাটে দাম মেলা কম। আইজ ৮০০ টেকা মণ বেচা লাইগল। এত কুমা দামে পিঁয়াজ বেচলি তো লস। সামনেরবার পিঁয়াজ আবাদ আর করব কি না চিন্তা করতিছি।’

পেঁয়াজচাষিদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে পেঁয়াজ আবাদ করলে খরচ হবে অন্তত ৬০ হাজার টাকা। এর মধ্যে জমি লিজ বাবদ ২০ হাজার টাকা, পেঁয়াজ বীজ ২৫ হাজার টাকা, সার ৩ হাজার টাকা, কীটনাশক ২ হাজার টাকা এবং শুরু থেকে ফলন ওঠা পর্যন্ত শ্রমিক খরচ ৯ হাজার টাকা। আর এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজের ফলন পাওয়া যাচ্ছে ৫০ মণ। গতকালের বাজারদর অনুযায়ী ৮০০ টাকা মণ বিক্রি করলে ৫০ মণের দাম ৪০ হাজার টাকা। এতে লোকসান ২০ হাজার টাকা। তবে মৌসুমের শুরুতে যাঁরা ১ হাজার ৩০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করতে পেরেছেন, তাঁদের কিছুটা লাভ হয়েছে। এ ছাড়া যাঁরা নিজেদের জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন, তাঁদের উৎপাদন খরচ কোনোমতে উঠলেও লাভের মুখ দেখতে পারছেন না।

দাম কম কেন জানতে চাইলে পেঁয়াজচাষিরা বলেন, এ পেঁয়াজ ঘরে বেশি দিন রাখা যায় না। সবাই একসঙ্গে পেঁয়াজ তুলে বাজারে নিয়ে আসে। আর হাটে পাইকার বা ব্যাপারীরাও এই সুযোগে ইচ্ছামতো দাম কম দিয়ে কেনেন। তাঁরা ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে বিক্রি করে ঠিকই লাভবান হন। কিন্তু লোকসান গুনতে হয় কৃষকদের।

সুজানগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল ইসলাম বলেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ পচনশীল। বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। জমি থেকে তোলার পরই বিক্রি করে ফেলতে হয়। এটা অল্পদিন বাজারে থাকে। এ কারণে চাষিরা একসঙ্গে হাটে নিয়ে গেলে সরবরাহ বেড়ে যায়। আর সরবরাহ বেশি হওয়ার কারণে দামও কমে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে আরেকটি প্রক্সি ওয়ারে জড়াতে চায়: ফরহাদ মজহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত