Ajker Patrika

৯ ডলার

সম্পাদকীয়
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২২, ১২: ০৯
৯ ডলার

তাসের জুয়ার নেশা ছিল অ্যাডগার অ্যালান পোর। পড়াশোনা করার সময়ই তিনি জুয়ায় খুইয়েছেন অনেক টাকা। জুয়ার টাকা শোধ করার ক্ষমতাও ছিল না। পড়ালেখা ছেড়ে দিতে হয়েছিল।

লেখালেখি করেই জীবন কাটাবেন, তাই অন্য কোনো পেশার প্রতি আগ্রহ ছিল না। যখন বিয়ে করেন, তখন তাঁর বয়স ২৭। বিয়ে করেন এক আত্মীয়াকে, যার বয়স চৌদ্দ। বিয়ের পরপরই তিনি তাঁর একমাত্র উপন্যাসটি লেখার কাজে হাত দেন। কেন হঠাৎ ছোটগল্প ছেড়ে উপন্যাসের কাজ? ব্যাপারটা আর কিছুই না। প্রকাশকেরা তাঁর ছোটগল্প ছাপতে চাইছিলেন না আর।

মৃত্যুর কয়েক বছর আগে একটি ম্যাগাজিন পত্রিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেন তিনি। সেখানে লিখতে লাগলেন একের পর এক সমালোচনা। যাদের পছন্দ করতেন না, তাদের ছাল তো তুলে নিতেনই; যাদের পছন্দ করতেন, তাদেরও বাজে লেখাকে বাতিল করে দিতেন। এতে যা হওয়ার তাই হলো, অ্যালান পোর বন্ধুবান্ধব প্রায় নেই হয়ে গেল। খেপে ওঠা সাহিত্যিকেরা একজোট হয়ে অ্যালান পোর নামে বিষোদ্‌গার গাইতে লাগলেন। কমে গেল ম্যাগাজিন ক্রেতার সংখ্যা। ফলে সেই ম্যাগাজিন বন্ধ হয়ে গেল একসময়।

স্ত্রীকে খুব ভালোবাসতেন পো। জটিল রোগে স্ত্রীর মৃত্যুর পর বিষাদাক্রান্ত হলেন। নিজেও শয্যা নিলেন। সে সময় একেবারেই বন্ধুহীন তিনি। কেউই অসুস্থ কবি ও লেখককে দেখতে আসেন না। এমনকি মৃত্যুর পর তাঁকে সমাহিত করতে গিয়েছিলেন পুরোহিতসহ মাত্র সাতজন! সবচেয়ে সস্তা কফিনে কবরস্থানের একেবারে শেষ দিককার কোনায় তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। কোনো এপিটাফ ছিল না।

তারপর আরও ২৫ বছর কেটে গেলে যেন টনক নড়ল সাহিত্যসেবীদের। তাঁরা বুঝলেন, এ বড় অন্যায় হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর থেকে পো-ভক্তরা অর্থ সংগ্রহ করে সমাধিতে এপিটাফ বসাল, বসাল একটি দাঁড়কাকের ভাস্কর্য। ‘দাঁড়কাক’ অ্যালান পোর সবচেয়ে জনপ্রিয় কবিতার নাম। এই কবিতা লিখে তিনি পেয়েছিলেন ৯ ডলার। 

সূত্র: ফাক্তোভেদ ডট রু 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত