Ajker Patrika

বক দিয়ে বক শিকার

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ১৮
বক দিয়ে বক শিকার

গুরুদাসপুর উপজেলা পৌর সদরসহ বিভিন্ন বিলে পোষা বক দিয়ে ফাঁদ পেতে বুনো বক শিকার করছেন একশ্রেণির কৌশলী শিকারি। পরে এসব বক প্রকাশ্যে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করছেন। প্রচলিত আইনে পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ জেনেও তা থেকে বিরত থাকছেন না তাঁরা।

গুরুদাসপুর পৌর সদরসহ চলনবিল অঞ্চলে বকশিকারিদের আনাগোনা চোখে পড়ে বেশি। উপজেলার নাজিরপুরের গুপিনাথপুর বিল, পৌর সদরের বিভিন্ন মাঠ, বামনবাড়িয়ার বিল, হাড়িভাঙ্গা বিলসহ বেশ কিছু বিলে শিকারিরা নানা ধরনের ফাঁদ পেতে বকসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি শিকার করছেন।

সরেজমিন গতকাল রোববার ভোর ৫টায় পৌর সদরের দুখা ফকিরের মোড় এলাকার একটি বিলে বক শিকার করতে দেখা যায় কয়েকজন শিকারিকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, চাঁচকৈড় বাজারের অনেকেই ফাঁদ পেতে বক দিয়ে বক শিকার করেন। তাঁরা প্রতিদিন প্রায় ১০০টির বেশি বক শিকার করেন। এ ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন মাঠে একাধিক ব্যক্তি নির্বিঘ্নে বক শিকার করছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

স্থানীয় ব্যক্তি আছাদ বলেন, শিকারিরা বক ধরার জন্য একপ্রকার ফাঁদ পাতেন। বাঁশের ছোট বানা বৃত্তাকার করে মাটিতে পুঁতে দেন। এর ওপরের অংশ কলা ও খেজুরের পাতায় ঢেকে দিয়ে পোষা বকগুলো ফাঁদের ওপর বেঁধে রাখেন। পরে তা জলাশয়ের পাশে ও ধানের জমিতে স্থাপন করে ভেতরে লুকিয়ে থাকেন শিকারিরা। পোষা বকের ডাক শুনে বুনো বক আসে। তখন তাঁরা কলাপাতার ফাঁকে হাত ঢুকিয়ে বুনো বক ধরেন।

আছাদ আরও বলেন, এভাবে প্রতিবছর ভাদ্র থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত শিকারিরা বক শিকার করেন। প্রতি জোড়া বক ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি করেন উপজেলার বিভিন্ন বাজারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারি বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক আলী আকবর বলেন, বক ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। তা জেনেও অনেক শিকারি জলাশয় ও ধানের জমি থেকে বক শিকার করে বিক্রি করছেন, যা মোটেও কাম্য নয়।

গুরুদাসপুর বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, গত বছর মাইকিং করে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তবে এবার সচেতনতামূলক কাজ করা হয়নি। বক শিকার আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। অচিরেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শিকারিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত