Ajker Patrika

পাস করেও আইনজীবী হতে পারছেন না তাঁরা

শাকিলা ববি, সিলেট
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২১, ১১: ১০
পাস করেও আইনজীবী হতে পারছেন না তাঁরা

২০১৫ সালে ২ লাখ টাকা দিয়ে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে ভর্তি হন সুনামগঞ্জের এক শিক্ষার্থী। বিভাগের ২৩তম ব্যাচের এ শিক্ষার্থীর সম্মান শেষ হয় ২০১৯ সালে। হাওরের সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীকে ৪ বছরে প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে। এত টাকা খরচ করেও তিনি বার কাউন্সিলে আইনজীবী তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে পারছেন না।

বার কাউন্সিল বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি ব্যাচে নির্ধারিত আসনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করায় তারা আবেদন জমা নেবেন না। তাই ব্যাচের ১৪৮ জনের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারাচ্ছন্ন। আইনজীবী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর শিক্ষার্থীরা আছেন অনিশ্চয়তার মধ্যে।

২১, ২২, ২৩ ও ২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় অথোরিটি ও আইন বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় প্রতি সেমিস্টারে ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করান। এ জন্য বার কাউন্সিল ইন্টিমেশন জমা নিচ্ছে না তাঁদের। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রায় ৮ মাস আগে ১৪৮ শিক্ষার্থীর পক্ষে হাইকোর্টে দুটি রিট করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আপতার মিয়া ও ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম শফি। এই রিট দুটোর ওপর ভিত্তি করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে ২৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এর মধ্যে ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা আপতার মিয়া ও ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা শফিকুল ইসলাম শফির রিটের পক্ষে হয়। হাইকোর্ট ৮ সপ্তাহ সময় দেন এই টাকা পরিশোধ করার জন্য। জরিমানার টাকা পরিশোধের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রধান হুমায়ূন কবির বলেন, ‘মূলত ২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সেমিস্টারে ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি না করার জন্য নোটিশ দেন এবং এটা সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রযোজ্য ছিল। তাই শুধু আমরা না, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এই জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। এর আগে আমাদের এই অপরাধের জন্য ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। ওই টাকা জমা দেওয়ার পরও আমাদের শিক্ষার্থীদের বার কাউন্সিলে আইনজীবী তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে দেয়নি। পাশাপাশি একই অপরাধের জন্য আমাদের দুইবার জরিমানা করা হয়েছে। এটা আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। তারপরও আমরা টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। এখন শিক্ষার্থীরা যেহেতু এ বিষয় নিয়ে কোর্টে গেছেন তাই সবকিছু কোর্টর মাধ্যমেই হবে। আমরা যদি টাকা দিতে না পারি তাহলে কোর্ট আমাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেবে।’

এদিকে ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে আগামী রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়া আইন বিভাগের ১৪৮ শিক্ষার্থী। আগামী রোববারের মধ্যে হাইকোর্ট নির্দেশিত জরিমানার টাকা পরিশোধের বিষয়ে সমাধানমূলক সিদ্ধান্তে না এলে সোমবার ক্যাম্পাস তালাবন্ধ করবেন বলে জানান ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এই আল্টিমেটাম দেন তাঁরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহিদ উল্লাহ তালুকদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে কোনো অর্থ নেই। এই অর্থের জোগান বোর্ড অব ট্রাস্টিজ দিতে পারবে। এ ব্যাপারে ট্রাস্টিজের সদস্যদের সহযোগিতা ছাড়া কিছু করা সম্ভব নয়। বর্তমানে যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান আছেন তিনিও লন্ডনে অবস্থান করছেন। তাই এ ব্যাপার নিয়ে সমন্বয়হীনতা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে লতিফ সিদ্দিকী অবরুদ্ধ, নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

নির্বাচনের আগে কোনো বৈধ অস্ত্র ফেরত দেবে না সরকার

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত