Ajker Patrika

বালু উত্তোলন থামছেই না

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ২৯
বালু উত্তোলন থামছেই না

গঙ্গাচড়ায় নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন থামছেই না। যার প্রভাবে দিন দিন বাড়ছে নদীভাঙন। সর্বশেষ দুই সপ্তাহ আগে তিস্তায় আকস্মিক ঢলের সময় দেখা গিয়েছিল ভাঙনের তাণ্ডবলীলা। ভুক্তভোগীদের আশঙ্কা, বালু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে এই ভাঙন আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।

সরেজমিনে উপজেলা সদরের ধামুর বোল্লারপাড় এলাকায় দেখা যায়, তিস্তার তীর এবং চরাঞ্চল থেকে চলছে বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলন। এ বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুল হক, রফিকুল, জাহাঙ্গীর ও শফিকুল ইসলামসহ অনেকের সঙ্গে।

শফিকুল জানান, ধামুর গ্রামের ইয়াছিন আলী বালুর ব্যবসা করে এখন দুটি ট্রাক্টর ও ট্রলি কিনে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি পরিবহনের ব্যবসা করছেন। এতে চালকের দায়িত্ব পালন করছেন তাঁর দুই ছেলে জামাল ও কামাল। তাঁদের দাপটে এলাকার কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিপক্ষে কথা বলার সাহস পান না।

শফিকুল আরও জানান, বালু উত্তোলনে জড়িত ব্যক্তিরা বিভিন্ন সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তাঁরা সাধারণত মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান প্রভৃতি এলাকার জায়গা ভরাট করে দেওয়ার আড়ালে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন। সেই বালু পরে উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন ব্যক্তিগত নির্মাণকাজে সরবরাহ করা হয়।

একই এলাকার রফিকুল জানান, বর্ষা মৌসুমে শ্যালো মেশিন দিয়ে এবং শুকনো মৌসুমে সরাসরি কোদাল, বেলচায় করে তিস্তা নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু পরিবহনের ফলে একদিকে নদীতে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়ে প্রতি বছরই ভাঙন বাড়ছে, অপরদিকে ভারী যানবাহন চলাচলে এলাকার রাস্তাগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় লোকদের।

আরেক বাসিন্দা আসাদুল হক জানান, স্থানীয় প্রশাসন সক্রিয় হলে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব হতো। প্রশাসনের পরোক্ষ মদদেই বালুর অবৈধ ব্যবসা অব্যাহত রয়েছে।

উপজেলার তিস্তা পাড়ের সাত ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থানে দীর্ঘ দিন ধরে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, এই কাজে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে যুক্ত আছেন স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মী। এতে অবৈধ বালু ব্যবসায়ী ও সহযোগীরা লাভবান হলেও বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছেন স্থানীয় জনগণ।

ভুক্তভোগীদের দাবি, রাস্তার ক্ষতি ও নদীভাঙন থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের বিকল্প নেই।

এ বিষয়ে বালু ব্যবসায়ী ইয়াছিন আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান ও শ্মশানে মাটি ভরাট করি। বিনিময়ে টাকা নেই। আপনারা ছবি তুলে কোথায় ছাপাবেন ছাপান।’

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে তাঁদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত