Ajker Patrika

শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম

সম্পাদকীয়
শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম

কথায় আছে মাছের পচন আগে ধরে মাথায়, এরপর শরীরের অন্যান্য অংশে সংক্রমিত হয়। তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্রের পচন যদি শিক্ষাব্যবস্থায় ধরে, তাহলে তার পরিণতি খারাপ হতে বাধ্য। শিক্ষার পচনটা কী রকম? শিক্ষা যিনি দেন, তিনি শিক্ষক। আর শিক্ষক যদি অযোগ্য হন, তাহলে তিনি কোনোভাবেই শিক্ষার্থীকে দক্ষভাবে তৈরি করতে পারবেন না। শিক্ষার্থীর মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে পারবেন না। একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি প্রকৃত শিক্ষক এবং যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে।

কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ্য শিক্ষক ছাড়া প্রকৃত শিক্ষা দেওয়া যায় না। এ জন্য প্রকৃত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ জরুরি। কিন্তু সাতক্ষীরার শ্যামনগরের সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে দেখুন! তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে শিক্ষক ও বিভিন্ন পদে কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় রোববার একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

বর্তমান সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করার জন্য নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই পাঠ্যক্রমে পাঠদান প্রক্রিয়ায়ও নতুনত্ব আনা হয়েছে। এই পাঠ্যক্রমে শিক্ষাকে শুধু পাঠ্যবইয়ের পড়া ও পরীক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে অর্জিত শিক্ষা যাতে ব্যবহারিক জীবনে সরাসরি কাজে লাগানো যায়, সেদিকটায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অস্বীকার করার উপায় নেই, নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকেরাই মূল ভূমিকা পালন করবেন।

তাই শিক্ষকদের যোগ্যতা ও দক্ষতার ওপরই নির্ভর করবে এর ভবিষ্যৎ। এই শিক্ষাক্রম ভালোভাবে বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।দুঃখজনক হলেও সত্য, নিয়োগের সময় যদি অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, তবে তাঁদের যতই প্রশিক্ষণ দেওয়া হোক না কেন, তাঁরা প্রশিক্ষণ অনুযায়ী পাঠদানে ব্যর্থ হবেন।

ইউরোপ-আমেরিকাসহ পাশ্চাত্যের উন্নত দেশগুলোয় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ। এসব দেশের শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ার তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। কর্মক্ষম ও উন্নত জাতি গঠন করতে হলে যেকোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়াকে প্রতিযোগিতার আওতায় আনা জরুরি। স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে উঠে ভালো শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য নিয়োগের যোগ্যতা ও শর্ত আরও উন্নত করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে শিক্ষকদের মানমর্যাদা, প্রশিক্ষণ ও বেতনকাঠামোয় আমূল পরিবর্তন আনা দরকার। সরকারকে এ বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।

সুন্দরবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যদি শুধু টাকাই শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের যোগ্যতা হয়, তাহলে সেখানকার শিক্ষা যে শিকেয় উঠবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এ জন্য ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা তদন্ত করতে হবে। তিনি দোষী হলে আইনের মাধ্যমে বিচার করতে হবে। পাশাপাশি নিয়োগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ‘স্বতন্ত্র নিয়োগ কমিশন’ গঠন করা যেতে পারে। এ কাজটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত