Ajker Patrika

নিষেধ থাকলেও বার্ষিক মূল্যায়নে ফি আদায়

মো. মাহবুবুল আলম মিন্টু, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর)
নিষেধ থাকলেও বার্ষিক মূল্যায়নে ফি আদায়

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আদেশ অমান্য করে এই ফি নেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার উপজেলা থেকে ২২ হাজার ৭৬৩ জন পরীক্ষার্থী এ মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা।

জানা গেছে, উপজেলায় ১২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বিদ্যালয়গুলোয় মোট ২২ হাজার ৭৩৬ শিক্ষার্থী আছে। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শাখা, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে শিক্ষার্থী প্রতি ৫০ টাকা এবং তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ১০০ টাকা করে পরীক্ষার ফি আদায় করা হয়েছে। কোনো রসিদ ছাড়া এ ফি নেওয়া হয়েছে।

কিন্তু এবার পরীক্ষা ফি না নিয়ে বিদ্যালয়ের আনুষঙ্গিক খাত বা স্লিপ ফান্ড থেকে ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা রয়েছে।

ফি নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য আজ বিকেলে জরুরিভাবে প্রধান শিক্ষকদের বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক হওয়ার কথা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বৈঠক ডেকেছেন বলে জানা গেছে।

বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্বিতী রায়ের বাবা শুভাস রায় বলেন, ‘আমার স্ত্রী অন্তরা ঘোষ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সহসভাপতি। আমার মেয়েকেও ১০০ টাকা ফি জমা দিতে বলা হয়েছে। ফি না দিলে তাকে বেত্রাঘাতের কথাও বলা হয়। ফি নেওয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে বুধবার আর ফির জন্য চাপাচাপি করা হয়নি।’

একই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জোবাদে হোসেনের মা নারগিস বেগম ও একই ক্লাসের আনাস হোসেনের মা পারভিন আক্তার বলেন, তাঁদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে ফি নেওয়া হয়েছে।

ক্যাম্পেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম ও হাওলাদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান বলেন, এবার তাঁরা নির্দেশনা মেনে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ফি আদায় করেননি। শিক্ষার্থীরা ফি নেওয়ার কথা বললে তা সঠিক নয়।

রায়পুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোতালেব ও স্টেশন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকার কখন আনুষঙ্গিক খাত বা স্লিপ ফান্ডের টাকা দেয় তা নিশ্চিত নয়। এখন ব্যয় নির্বাহের জন্য তাঁরা পৌরসভা কাস্টারের শিক্ষকেরা আলোচনা করে খরচ মেটানোর জন্য পরীক্ষা ফি নিয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা টিপু সুলতান বলেন, তাঁরা বিষয়টি জেনেছেন। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনজন দাশ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে সরকারি নিয়ম না মানা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন তাঁরা এ ধরনের কাজ করেছেন সে জন্য সব প্রধান শিক্ষককে বৈঠকের জন্য ডাকা হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনছুর আলী চৌধুরী বলেন, ফি আদায়ে মন্ত্রণালয়ের নিষেধ থাকার বিষয়টি বারবার চিঠি দিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস ও প্রধান শিক্ষকদের জানানো হয়েছে। এরপরও যাঁরা সরকারি আদেশ অমান্য করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত