Ajker Patrika

মাঠে পানি, খেলাধুলা ব্যাহত

শিমুল চৌধুরী, ভোলা
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ৪৪
মাঠে পানি, খেলাধুলা ব্যাহত

ভোলা সদর ও লালমোহন উপজেলায় দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বর্ষার পানি জমে থাকায় শিশুদের খেলাধুলা ব্যাহত হচ্ছে। জমে থাকা পানিতে আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, স্কুলমাঠ ভরাটের কোনো বরাদ্দ তাদের নেই। যাদের এধরণে সমস্যা আছে তারা নিজ নিজ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করলে, তারা বরাদ্দ দিলে মাঠ ভরাটের কাজ করতে পারে।

ভোলা সদর উপজেলার মধ্য শিবপুর মৌলভীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয় মাঠে বৃষ্টির পানি ও পাশের একটি ডোবায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আর সেই মাঠে কয়েকটি হাঁস বিচরণ করছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আবু তাহের জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের মাঠটি জলাবদ্ধ। পাশের একটি ডোবায় বৃষ্টির পানি জমে আছে। ফলে স্কুল মাঠে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখর রঞ্জন ভক্ত বলেন, এ খাতে আমাদের কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয় না। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ উপজেলা পরিষদে একটি আবেদন করলে স্কুল মাঠ ভরাটের জন্য কিছু বরাদ্দ পেতে পারে।

লালমোহন ইউনিয়নের উত্তর ফুলবাগিচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠেও একই অবস্থা। সেই স্কুল মাঠেও বর্ষার পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মাঠ দিয়ে চলাফেরা করা যাচ্ছে না। এতে করে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। দ্রুত মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় স্কুলমাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

উত্তর ফুলবাগিচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান, স্কুলের মাঠে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তারা আরও জানান, বিদ্যালয়ের টয়লেটটিও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নির্মাণাধীন একটি ওয়াশ ব্লকের কাজও বন্ধ রয়েছে গত কয়েক মাস ধরে। এতে করে বিপাকে পড়তে হচ্ছে বিদ্যালয়টির পাঁচ শিক্ষকসহ ২১১ শিক্ষার্থীকে। অবিলম্বে ওয়াশ ব্লকটির নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

মাঠের জলাবদ্ধতার ব্যাপারে উত্তর ফুলবাগিচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বাহাউদ্দিন বলেন, চারপাশে মাছের খামার হওয়ায় স্কুলমাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনের কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে মাঠ ভরাটের জন্য একটি বরাদ্দ পেয়েছি। এখানকার জলাবদ্ধতা দূর করতে হলে ২০ হাজার ৩৬ বর্গফুটজুড়ে বালু ফেলতে হবে, যা ওই বরাদ্দের টাকা দিয়ে সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দ আরও বাড়িয়ে দিলে মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসণ করা সম্ভব হবে। ওয়াশ ব্লকের ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক বলেন, ওয়াশ ব্লকটি নির্মাণ করেও বর্তমানে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছে দ্রুত বাকি কাজ সম্পন্ন করবে।

এ ব্যাপারে লালমোহন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান মিলন জানান, এ বছর আর বরাদ্দ বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। যা বরাদ্দ পেয়েছেন এর মধ্যেই বিদ্যালয়ের যেসব সমস্যা রয়েছে সে সব সমস্যার সমাধান করতে হবে। ওয়াশ ব্লকের বিষয়ে তিনি বলেন, এ উপজেলায় ১১-১২টি ওয়াশ ব্লকের কাজ চলছে। অধিকাংশ ওয়াশ ব্লকের কাজই বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদার। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঠিকাদার এখন থেকে পর্যায়ক্রমে ওয়াশ ব্লকের কাজ শুরু করবেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখীল চন্দ্র হালদার বলেন, স্কুলমাঠ ভরাটের কোনো বরাদ্দ আমাদের নেই। সেই ক্ষেত্রে নিজ নিজ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন করলে, তারা বরাদ্দ দিলে সেটা দিয়ে মাঠ ভরাটের কাজ করতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত