অজয় দাশগুপ্ত
অল্প কিছুদিন দেশে ছিলাম। বলা উচিত চট্টগ্রামে। কারণ ঢাকা যাওয়ার আগে দুই শত্রু আক্রমণ করে বসে। প্রথমত, অবরোধ বা হরতাল নামের দুশমন, অতঃপর মশার কামড়। প্রথমটি মানুষের চাপিয়ে দেওয়া, পরেরটি আংশিক মানুষের অবদান, বাকিটা হয়তো নিয়তি।
ডেঙ্গুর মতো ভয়াবহ একটি রোগ বা আক্রমণ সামলানোর মতো ইমিউন এখন আর আমাদের নেই। ভুগেছি বটে, কিন্তু অবাক হয়েছি বিরোধী দলের উগ্র আচরণে। আসলে দল বলতে কিছু আছে কি না, জানি না। কোথাও কোনো নজিরও মেলেনি। তাহলে কীভাবে অবরোধ চলছে? চলছে এভাবে: একদল লোক হঠাৎ বেরিয়ে আসে। কোথা থেকে আসে কেউ বোঝে না। হুটহাট গাড়িতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। সেই আগুনে পোড়া মানুষগুলো কি আওয়ামী লীগের না বিএনপি-জামায়াতের, তা-ও জানে না কেউ। কিন্তু মরলেই ভালো! আন্দোলন জমে ওঠে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো আন্দোলন দেখিনি; বরং প্রথম যেদিন হরতাল দিল, মানুষকে বিরক্ত হতে দেখেছি। বাড়িতে বেড়াতে আসা ছোট্ট মেয়েটি তার মাকে প্রশ্ন করছিল, ‘হরতাল কী?’ আমার নিকটাত্মীয় এক শিশু অথবা বালক সে খুব বিস্ময়ের সঙ্গে সবুর করছিল হরতাল দেখবে বলে। এই প্রজন্মের কাছে রাজনীতিবিদদের কী জবাব? আমার সিডনি ফিরে আসার গল্পটাই বা কম কী? গাড়ি বা তেমন কিছুতে এয়ারপোর্টে যাওয়াটাই রীতি। কিন্তু অবরোধের সময় কি সে জো থাকে? বাধ্য হয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে একটিতে মালামাল তুলে দিয়ে আরেকটিতে নিজেরা চেপে সামনে-পেছনে দুজন পাহারাদার নিয়ে এয়ারপোর্টে যাত্রা। সে কী বিড়ম্বনা!
কথা হচ্ছে, কেন আন্দোলন, কেন এই অবরোধ, কেউ ঠিক জানে না। বিএনপির ব্যর্থতা প্রকট। সরকারবিরোধী মনোভাব আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষের মনে যে রাগ বা বিতৃষ্ণার জন্ম দিয়েছে তাকে পুঁজি করেছে এই দল। আমার মনে হয়েছে সে আশি বা নব্বইয়ের দশকের মতো বিএনপি এখনো হাঁটু ভাঙা। তাদের আসল জোর জামায়াত-শিবির। এরা অদৃশ্যে থেকে শক্তি না জোগালে, অ্যাকশনে না গেলে অবরোধের ‘অ’টাও হতো না। বিএনপি যে অসংবেদনশীল বিচ্ছিন্ন একটি দল তার প্রমাণ তাদের নেতৃত্ব। যারা খালেদা জিয়ার মতো জনপ্রিয় নেতার মুক্তির জন্য ভালো করে আন্দোলন করতে পারেনি, তারা দেশের শাসনভার নিয়ে কী করবে?
যা-ই হোক, আমি বিদেশে থাকি। আমার কাছে যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো সার্বিক পরিস্থিতি এবং মানুষের মঙ্গল। সেদিক থেকে এই রাজনীতি অচিরেই বন্ধ করা দরকার। কোনো দেশ এমনি এমনি এগোয় না। তার বলিষ্ঠ নেতা-কর্মী আর জনগণ মিলে তাকে সামনে এগিয়ে দেয়। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা আছেন, এই বড় পাওয়া। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ। তারা যদি প্রধানমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে মাঠে নামে, দুই মিনিটও টিকতে পারবে না। কারণ নেতাদের ওপর মানুষের বিশ্বাস শেষ।
বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা আসলে কেমন? কলকাতা, ওডিশা ও বেনারস ভ্রমণের পর দেশে গিয়ে আমার মনে হয়েছে মানুষ খারাপ নেই। খারাপ করে রেখেছে রাজনীতি ও সিন্ডিকেট। মুখে মুখে যে যা-ই বলুক, খাবার টেবিল কিন্তু খালি কিছু না। এটা ঠিক যে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত কষ্টে আছে। এই কষ্ট নিবারণের প্রক্রিয়া নেই। মন্ত্রীরা লাগামহীন কথা বলেন। আর দেশের ভালো-মন্দ চলে গেছে টক শোওয়ালাদের কাছে। পৃথিবীর আর কোনো দেশের কোনো মিডিয়ায় দিনরাত এমন টক শোর নজির দেখি না।
সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশপ্রেম। সেটা নাই বললেই চলে। যার শেষ উদাহরণ সাকিব আল হাসান। নিয়মানুযায়ী আউটের আবেদন জানিয়ে শ্রীলঙ্কার ম্যাথুসকে আউট করায় বাংলাদেশিদের যে মনোভাব আর উদারতার বালখিল্য দেখলাম তা রীতিমতো হাস্যকর। সবাই বিশেষজ্ঞ, সবজান্তা। সাকিবকে ছোট করার নামে যে হীন মানসিকতা তার পেছনেও নাকি রাজনীতি। সাকিব নৌকায় ভোট চেয়েছিলেন, এটা তাঁর প্রচ্ছন্ন অপরাধ। সে কারণে দেশের সম্মান নষ্ট হলেও শ্রীলঙ্কাকে মাথায় রাখতে হবে। যে জাতির জীবনে, পরিবারে, সংসারে কোথাও উদারতা নেই, সব জায়গায় ঘুষ-দুর্নীতি, অনিরাপত্তা, তাদের এমন উদার মনোভাব সন্দেহজনক নয়? আসলে দেশ ও দেশপ্রেম এখন আর কাজ করে বলে মনে হয়নি।
এই প্রজন্ম হরতাল-অবরোধ চিনত না। মহান রাজনীতি এবার তা চিনিয়ে ছাড়ছে। দেশে যাওয়ার আগে প্রবাসী সুশীল রোগে আমি সরকারের তীব্র সমালোচনা করতে ছাড়িনি। এখনো করি, তবে দেশে গিয়ে মনে হয়েছে কারা চাইছে গণতন্ত্র? কারা এরা? দেশ ও দশের সঙ্গে সম্পর্কহীন এরা গদি ছাড়া কিছুই বোঝে না। সরকারের ব্যর্থতা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে না পারা, লুটপাট ও ক্ষমতার গর্বে দিশেহারা দলের ফাঁক বুঝতে পেরে এরা ঢুকতে পেরেছে। এরা কোনোভাবেই জনপ্রিয় কেউ নয়; বরং জনবিচ্ছিন্ন। কিন্তু এরা পুঁজি করেছে জনমনের ক্ষোভ। বলা বাহুল্য, এসব সবাই জানে। সরকারের এত উন্নয়ন কেন কাজে আসছে না, সেটাও সবাই বোঝে।
গণতন্ত্র যে কী, সেটা বাড়িঘরেই প্রকাশ্য। বাড়ির কর্তা যা বলে তা সবাই এক বাক্যে মেনে নেয়। বাড়ির বড় ভাই ছোটদের পেটালেও কিছু যায়-আসে না। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, যাকেই প্রশ্ন করেছি ভোট হলে কাকে দেবেন, সবাই বলেছে গণতন্ত্র চাই। তা তো বুঝলাম, কিন্তু কে আনবে গণতন্ত্র? দু-একজন বলল, শেখের বেটি। তাহলে এই আন্দোলন কেন? উত্তর এল, গণতন্ত্রের জন্য। বুঝলাম টিভির বাক্স ছাড়া আর কোথাও এগুলোর কোনো অস্তিত্ব নেই।
কোথাও মানুষের জন্য কেউ আছে, এমনটি মনে হয়নি। ঘাপটি মেরে থাকা, আত্মগোপনে থাকা লোকজন হঠাৎ বাইরে এসে বোমা ফাটিয়ে আগুন লাগিয়ে দেশ অচল করে দিচ্ছে, এটাও অবাক হওয়ার মতো বৈকি। রাজনীতিবিমুখ মানুষ কোনোভাবেই ভালো থাকতে পারছে না। এই দেশে হঠাৎ এত গণতন্ত্রপ্রেম আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হয়েছে। ঘরে, বাইরে, সমাজে একনায়কতন্ত্রের জয়জয়কার। ‘আমি আমি’ করা সমাজে গণতন্ত্র বলে মাতম ও জীবন অচল করে দেওয়া বড়ই তাজ্জবের।
মানতে হবে, মানুষকে কথা বলতে না দেওয়া, ভোট দিতে না দেওয়া, চাপিয়ে দেওয়া দলতন্ত্রের কারণেই উন্নয়ন মার খেয়ে গেছে। উত্তরণের উপায় যে আমেরিকা-ইন্ডিয়া না, সেটাও সবাই বোঝে। নেত্রীকে সাধারণ মানুষের ভাষা বুঝতে দিলে উত্তরণ সহজ হবে। তাঁকে কাচের ঘরে নয়, মানুষের মনে রাখতে হবে। এখনো ভরসা তিনি। সবাই বোঝেন শেখ হাসিনা না থাকলে এই দেশ অচল এবং তিনি দেশকে যে অবস্থায় নিয়ে গেছেন, তার হাল ধরা মূর্খ ও অতিশিক্ষিত চতুরদের দ্বারা অসম্ভব। দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকন্যার ওপর আস্থাশীল। এই ভরসাই হয়তো নৈরাজ্যকে ঠেকিয়ে দেবে।
লেখক: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী কলামিস্ট
অল্প কিছুদিন দেশে ছিলাম। বলা উচিত চট্টগ্রামে। কারণ ঢাকা যাওয়ার আগে দুই শত্রু আক্রমণ করে বসে। প্রথমত, অবরোধ বা হরতাল নামের দুশমন, অতঃপর মশার কামড়। প্রথমটি মানুষের চাপিয়ে দেওয়া, পরেরটি আংশিক মানুষের অবদান, বাকিটা হয়তো নিয়তি।
ডেঙ্গুর মতো ভয়াবহ একটি রোগ বা আক্রমণ সামলানোর মতো ইমিউন এখন আর আমাদের নেই। ভুগেছি বটে, কিন্তু অবাক হয়েছি বিরোধী দলের উগ্র আচরণে। আসলে দল বলতে কিছু আছে কি না, জানি না। কোথাও কোনো নজিরও মেলেনি। তাহলে কীভাবে অবরোধ চলছে? চলছে এভাবে: একদল লোক হঠাৎ বেরিয়ে আসে। কোথা থেকে আসে কেউ বোঝে না। হুটহাট গাড়িতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। সেই আগুনে পোড়া মানুষগুলো কি আওয়ামী লীগের না বিএনপি-জামায়াতের, তা-ও জানে না কেউ। কিন্তু মরলেই ভালো! আন্দোলন জমে ওঠে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো আন্দোলন দেখিনি; বরং প্রথম যেদিন হরতাল দিল, মানুষকে বিরক্ত হতে দেখেছি। বাড়িতে বেড়াতে আসা ছোট্ট মেয়েটি তার মাকে প্রশ্ন করছিল, ‘হরতাল কী?’ আমার নিকটাত্মীয় এক শিশু অথবা বালক সে খুব বিস্ময়ের সঙ্গে সবুর করছিল হরতাল দেখবে বলে। এই প্রজন্মের কাছে রাজনীতিবিদদের কী জবাব? আমার সিডনি ফিরে আসার গল্পটাই বা কম কী? গাড়ি বা তেমন কিছুতে এয়ারপোর্টে যাওয়াটাই রীতি। কিন্তু অবরোধের সময় কি সে জো থাকে? বাধ্য হয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে একটিতে মালামাল তুলে দিয়ে আরেকটিতে নিজেরা চেপে সামনে-পেছনে দুজন পাহারাদার নিয়ে এয়ারপোর্টে যাত্রা। সে কী বিড়ম্বনা!
কথা হচ্ছে, কেন আন্দোলন, কেন এই অবরোধ, কেউ ঠিক জানে না। বিএনপির ব্যর্থতা প্রকট। সরকারবিরোধী মনোভাব আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষের মনে যে রাগ বা বিতৃষ্ণার জন্ম দিয়েছে তাকে পুঁজি করেছে এই দল। আমার মনে হয়েছে সে আশি বা নব্বইয়ের দশকের মতো বিএনপি এখনো হাঁটু ভাঙা। তাদের আসল জোর জামায়াত-শিবির। এরা অদৃশ্যে থেকে শক্তি না জোগালে, অ্যাকশনে না গেলে অবরোধের ‘অ’টাও হতো না। বিএনপি যে অসংবেদনশীল বিচ্ছিন্ন একটি দল তার প্রমাণ তাদের নেতৃত্ব। যারা খালেদা জিয়ার মতো জনপ্রিয় নেতার মুক্তির জন্য ভালো করে আন্দোলন করতে পারেনি, তারা দেশের শাসনভার নিয়ে কী করবে?
যা-ই হোক, আমি বিদেশে থাকি। আমার কাছে যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো সার্বিক পরিস্থিতি এবং মানুষের মঙ্গল। সেদিক থেকে এই রাজনীতি অচিরেই বন্ধ করা দরকার। কোনো দেশ এমনি এমনি এগোয় না। তার বলিষ্ঠ নেতা-কর্মী আর জনগণ মিলে তাকে সামনে এগিয়ে দেয়। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা আছেন, এই বড় পাওয়া। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ। তারা যদি প্রধানমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে মাঠে নামে, দুই মিনিটও টিকতে পারবে না। কারণ নেতাদের ওপর মানুষের বিশ্বাস শেষ।
বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা আসলে কেমন? কলকাতা, ওডিশা ও বেনারস ভ্রমণের পর দেশে গিয়ে আমার মনে হয়েছে মানুষ খারাপ নেই। খারাপ করে রেখেছে রাজনীতি ও সিন্ডিকেট। মুখে মুখে যে যা-ই বলুক, খাবার টেবিল কিন্তু খালি কিছু না। এটা ঠিক যে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত কষ্টে আছে। এই কষ্ট নিবারণের প্রক্রিয়া নেই। মন্ত্রীরা লাগামহীন কথা বলেন। আর দেশের ভালো-মন্দ চলে গেছে টক শোওয়ালাদের কাছে। পৃথিবীর আর কোনো দেশের কোনো মিডিয়ায় দিনরাত এমন টক শোর নজির দেখি না।
সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশপ্রেম। সেটা নাই বললেই চলে। যার শেষ উদাহরণ সাকিব আল হাসান। নিয়মানুযায়ী আউটের আবেদন জানিয়ে শ্রীলঙ্কার ম্যাথুসকে আউট করায় বাংলাদেশিদের যে মনোভাব আর উদারতার বালখিল্য দেখলাম তা রীতিমতো হাস্যকর। সবাই বিশেষজ্ঞ, সবজান্তা। সাকিবকে ছোট করার নামে যে হীন মানসিকতা তার পেছনেও নাকি রাজনীতি। সাকিব নৌকায় ভোট চেয়েছিলেন, এটা তাঁর প্রচ্ছন্ন অপরাধ। সে কারণে দেশের সম্মান নষ্ট হলেও শ্রীলঙ্কাকে মাথায় রাখতে হবে। যে জাতির জীবনে, পরিবারে, সংসারে কোথাও উদারতা নেই, সব জায়গায় ঘুষ-দুর্নীতি, অনিরাপত্তা, তাদের এমন উদার মনোভাব সন্দেহজনক নয়? আসলে দেশ ও দেশপ্রেম এখন আর কাজ করে বলে মনে হয়নি।
এই প্রজন্ম হরতাল-অবরোধ চিনত না। মহান রাজনীতি এবার তা চিনিয়ে ছাড়ছে। দেশে যাওয়ার আগে প্রবাসী সুশীল রোগে আমি সরকারের তীব্র সমালোচনা করতে ছাড়িনি। এখনো করি, তবে দেশে গিয়ে মনে হয়েছে কারা চাইছে গণতন্ত্র? কারা এরা? দেশ ও দশের সঙ্গে সম্পর্কহীন এরা গদি ছাড়া কিছুই বোঝে না। সরকারের ব্যর্থতা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে না পারা, লুটপাট ও ক্ষমতার গর্বে দিশেহারা দলের ফাঁক বুঝতে পেরে এরা ঢুকতে পেরেছে। এরা কোনোভাবেই জনপ্রিয় কেউ নয়; বরং জনবিচ্ছিন্ন। কিন্তু এরা পুঁজি করেছে জনমনের ক্ষোভ। বলা বাহুল্য, এসব সবাই জানে। সরকারের এত উন্নয়ন কেন কাজে আসছে না, সেটাও সবাই বোঝে।
গণতন্ত্র যে কী, সেটা বাড়িঘরেই প্রকাশ্য। বাড়ির কর্তা যা বলে তা সবাই এক বাক্যে মেনে নেয়। বাড়ির বড় ভাই ছোটদের পেটালেও কিছু যায়-আসে না। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, যাকেই প্রশ্ন করেছি ভোট হলে কাকে দেবেন, সবাই বলেছে গণতন্ত্র চাই। তা তো বুঝলাম, কিন্তু কে আনবে গণতন্ত্র? দু-একজন বলল, শেখের বেটি। তাহলে এই আন্দোলন কেন? উত্তর এল, গণতন্ত্রের জন্য। বুঝলাম টিভির বাক্স ছাড়া আর কোথাও এগুলোর কোনো অস্তিত্ব নেই।
কোথাও মানুষের জন্য কেউ আছে, এমনটি মনে হয়নি। ঘাপটি মেরে থাকা, আত্মগোপনে থাকা লোকজন হঠাৎ বাইরে এসে বোমা ফাটিয়ে আগুন লাগিয়ে দেশ অচল করে দিচ্ছে, এটাও অবাক হওয়ার মতো বৈকি। রাজনীতিবিমুখ মানুষ কোনোভাবেই ভালো থাকতে পারছে না। এই দেশে হঠাৎ এত গণতন্ত্রপ্রেম আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হয়েছে। ঘরে, বাইরে, সমাজে একনায়কতন্ত্রের জয়জয়কার। ‘আমি আমি’ করা সমাজে গণতন্ত্র বলে মাতম ও জীবন অচল করে দেওয়া বড়ই তাজ্জবের।
মানতে হবে, মানুষকে কথা বলতে না দেওয়া, ভোট দিতে না দেওয়া, চাপিয়ে দেওয়া দলতন্ত্রের কারণেই উন্নয়ন মার খেয়ে গেছে। উত্তরণের উপায় যে আমেরিকা-ইন্ডিয়া না, সেটাও সবাই বোঝে। নেত্রীকে সাধারণ মানুষের ভাষা বুঝতে দিলে উত্তরণ সহজ হবে। তাঁকে কাচের ঘরে নয়, মানুষের মনে রাখতে হবে। এখনো ভরসা তিনি। সবাই বোঝেন শেখ হাসিনা না থাকলে এই দেশ অচল এবং তিনি দেশকে যে অবস্থায় নিয়ে গেছেন, তার হাল ধরা মূর্খ ও অতিশিক্ষিত চতুরদের দ্বারা অসম্ভব। দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকন্যার ওপর আস্থাশীল। এই ভরসাই হয়তো নৈরাজ্যকে ঠেকিয়ে দেবে।
লেখক: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী কলামিস্ট
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫