Ajker Patrika

ভরা মৌসুমেও ইলিশের খরা জেলেদের মলিন চেহারা

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
ভরা মৌসুমেও ইলিশের খরা জেলেদের মলিন চেহারা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জেলেরা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ ধরতে যান। সারা বছর বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরলেও এ সময় ইলিশ শিকার করেন তাঁরা। কিন্তু এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী ইলিশ না পেয়ে হতাশা নিয়ে ফিরতে হয়েছে। কারণ যে ইলিশ পেয়েছেন, তা দিয়ে নৌকার জ্বালানি খরচই মেটানো যাবে না।

অন্যদিকে মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, এবার বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় উজান থেকে সন্দ্বীপ চ্যানেলে মিঠাপানির স্রোত আসেনি। ফলে এ চ্যানেলে আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বৃষ্টি হলেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশের দেখা মিলবে।

গতকাল শুক্রবার সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ঘাটে সারি সারি ইলিশ ধরার নৌকা ভিড়ছে। তবে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে ঘাটে ফিরে আসা নৌকা থেকে মলিন বদনে নেমে আসছেন জেলেরা। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, গত বছর ৬৫ দিন বন্ধের পর প্রথম ১২ দিনে ২০০ টনের বেশি ইলিশ ধরা পড়েছিল। কিন্তু এ বছর ৯০ টন ইলিশ ধরা পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৩৮টি জেলে পল্লি আছে। এসব পল্লিতে বসবাসকারী অর্ধ লক্ষাধিক জেলের জীবন চলে সাগরে মাছ শিকার করে। এই ইলিশ শিকার ও বিক্রির টাকাতেই পুরো বছর সংসার চলে তাঁদের।

সাগর থেকে ফিরে আসা বিপ্লব জলদাস বলেন, গত ১২ দিনে পাঁচ হাজার টাকার ইলিশ পেয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর বোর্ড ও শ্রমিকের মজুরি বাবদ খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। 
বাঁশবাড়িয়া বোয়ালিয়াকূল গ্রামের জেলে নন্দলাল জলদাশ বলেন, ‘আমরা শুধু একটি মৌসুমের দিকেই চেয়ে থাকি। আগে জুন-আগস্ট পর্যন্ত মাছ শিকার করতাম। এখন সরকারের নির্দেশ মেনে জুলাইয়ের শেষ থেকে শুরু করেছি। প্রায় দুই সপ্তাহেও আমরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছি না। তাহলে ৬৫ দিন মাছ শিকার বন্ধ করে কী লাভ হলো বুঝতে পারছি না।’

উপজেলার বাড়বকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া বোয়ালিয়াকূল, কুমিরা-সন্দ্বীপ ঘাট, ভাটিয়ারি ও সলিমপুর সাগর উপকূলীয় জেলে পাড়া ঘুরে জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে চরম হতাশা দেখা গেছে। তবে অনেক জেলে এখনো বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে। তাঁদের আশা, ভারী বৃষ্টি হওয়ার সময় এখনো আছে। বৃষ্টি হলেই ভাগ্যের চাকা ঘুরতে পারে তাঁদের।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এবার বর্ষা কম হওয়ায় উজান থেকে পর্যাপ্ত মিঠা পানির স্রোত সন্দ্বীপ চ্যানেলে আসছে না। ফলে গভীর সাগর থেকেও চ্যানেলগুলোর দিকে ইলিশ কম আসছে। তাই ইলিশ ধরা কম পড়ছে। কিন্তু যারা গভীর সমুদ্রে জাল ফেলছেন, তাঁদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে বলে দাবি করেন তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত