Ajker Patrika

আবার নির্মাণ হচ্ছে অবৈধ ভাটা

মো. আরফাত হোসাইন, রাউজান (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ১৩
আবার নির্মাণ হচ্ছে অবৈধ ভাটা

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীর পাড়ে চট্টগ্রামের রাউজান অংশে এখনো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে দুটি ইটভাটা। এবার নদীর পাশে অনুমতিবিহীনভাবে পুনরায় তৈরি করা হচ্ছে আরও একটি ভাটা। এটি কিছুদিন আগে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল প্রশাসন।

সূত্রে জানা গেছে, হালদা তীরের রাউজান ও হাটহাজারী অংশে ১০টি অবৈধ ইটভাটা ছিল। এর মধ্যে ৭টি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে নদীর রাউজান অংশে ৩টি ভাটা আজও চালু আছে।

সূত্রে আরও জানা যায়, রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নের সার্কাদা এলাকায় হালদাপাড়ে ‘মেসার্স আজমীর অটোব্রিকস’ ও পশ্চিম আবুরখীল এলাকায় ‘শান্তি ব্রিকস’ নামে দুটি ভাটা রয়েছে। এ ভাটা দুটি অবৈধ হলেও প্রশাসন কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গুঁড়িয়ে দেওয়া চিমনির পাশেই নতুন পাকা চিমনি স্থাপন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে চিমনির ইট গাঁথুনির কাজ অনেকটা শেষ হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকেরা।

এদিকে নদীর পাড় কেটে হালদা নদীপথে ইঞ্জিনচালিত নৌকার মাধ্যমে ভাটায় মাটি আনা হচ্ছে। হালদায় ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ভাটার মালিকেরা কিছু তোয়াক্কা করছেন না।

এ বিষয়ে কথা বলতে নদীর পাড়ে ‘এ আলী’ ও ‘আজমীর অটোব্রিকস’ দুটির মালিক জাহেদুল ইসলামকে ইটভাটায় পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইলে একাধিকবার কল করা হয়। তবে তিনি ধরেননি।

হালদায় ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ইটভাটার মালিকেরা এর কিছু তোয়াক্কা করছেন না। নদীর পাড় কেটে ভাটায় মাটি আনছেন।এ বিষয়ে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, ‘হালদা নদীর মা মাছ তথা জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অভিযান অব্যাহত আছে। যাঁরা হালদা নদীর ক্ষতি করার অপতৎপরতা চালাবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ও হালদা গবেষক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘ইটভাটার ধোঁয়া আশপাশেরসহ নদীর পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এ ছাড়া নদীর পাড় কাটা ও ইট পরিবহনে বড় বড় জাহাজের ব্যবহার নদীর জন্য ক্ষতিকর। ইটভাটা থেকে যে ধোঁয়া বের হয়, তা বাতাসের আর্দ্রতায় মিশে অ্যাসিড তৈরি করে। এটা যখন নিচে পড়ে, তখন সালফিউরিক অ্যাসিডে পরিণত হয়। এ ছাড়া কয়লাও ক্ষতিকর। কাঠ জ্বালানো হলে কার্বন ড্রাই-অক্সাইড তৈরি হয়। এগুলো বাতাস আর আর্দ্রতার সঙ্গে মিশে নদীতে পড়ে তা পানির ক্ষতি করে।’

ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া আরও বলেন, ‘নদীতে চলাচলরত ড্রেজারের আঘাতে ডলফিনের মৃত্যুও হচ্ছে।’

এই বিষয়ে কথা বলার জন্য চট্টগ্রাম জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জমির উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি। খুদেবার্তা পাঠিয়ে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত হালদা নদীতে ৩১টি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে। ডলফিন মৃত্যুর তিন ধরনের কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আঘাতজনিত কারণ।

বেশ কয়েকটি ডলফিনের ময়নাতদন্ত করে জানা গেছে, ড্রেজারের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

পিরোজপুরে ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও সমিতির পরিচালক, সদস্যদের বিক্ষোভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত