নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঘূর্ণিঝড় রিমাল উপকূলে সর্বোচ্চ ১০২ কিলোমিটার গতিবেগে আঘাত হেনেছে। এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হওয়াতে এর গতি ৯০ থেকে ১১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক।
রোববার (২৬ মে) দিবাগত রাত ২টায় ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এই আবহাওয়াবিদ বলেন, এখন পর্যন্ত রিমালের সর্বোচ্চ গতিবেগ পটুয়াখালীতে ঘণ্টায় ১০২ কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। আশা করছি, এটিই এর সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে।
তিনি বলেন, সন্ধ্যা থেকেই এটির কেন্দ্রভাগ উপকূল অতিক্রম শুরু করে। সোমবার সকালের মধ্যে রিমাল উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করবে। এরপর দিনের বেলায় শক্তি কমে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে বৃষ্টি ঝরাবে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রোববার (২৬ মে) রাত ৮টার দিকে উপকূলে আঘাত হানে রিমাল। এ সময় ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেড়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। এতে কিছু এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষে বুলেটিনে জানানো হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মোংলার দক্ষিণপশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম অব্যাহত রেখেছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপকূলীয় এলাকায় দুপুর থেকেই উচ্চ জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। প্রায় পুরো সুন্দরবন পানিতে তলিয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে বন্য প্রাণীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে বরগুনার আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট উচ্চ জোয়ার, জলোচ্ছ্বাস ও ঝোড়ো বাতাসে এখন পর্যন্ত দুইজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে লাখ লাখ মানুষ।
পিরোজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, রিমালের প্রভাবে সন্ধ্যা থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। রাতে বৃষ্টি ও বাতাসের তীব্রতা বেড়েছে, প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিও বাড়ছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে পিরোজপুর জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার উপকূলবর্তী এলাকা।
মঠবাড়িয়া ও ইন্দুরকানির উপকূলবর্তী বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে সাপলেজা, বড়মাছু, ছোট মাসুয়া,খেতাচিড়া, মাঝেরচর, টিকিট কাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা এবং ইন্দুরকানি উপজেলার টগরা সাঈদখালি চর, কালাইয়সহ প্রায় অর্ধশত এলাকা দুই থেকে আড়াই ফুট পানির নিচে। এসব এলাকার মানুষজন আশ্রয় কেন্দ্রে গেলেও গবাদিপশু ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৯৫ টি সাইক্লোন সেন্টার ও ২৬৬ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাতটি উপজেলায় আটটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। সাতটি উপজেলায় ৬৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
পিরোজপুর জেলায় ৩৩৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ থাকলেও অক্ষত রয়েছৈ মাত্র ১৪৪ কিলোমিটার। ফলে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চল দুই থেকে আড়াই ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বাগেরহাটের উপকূল জুড়ে বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল বেগে বাতাস বইছে। রাত পৌনে ১টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে৷ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সম্পূর্ণ জেলা।
শরণখোলার রায়েন্দা এলাকা থেকে আলী আকবর জানান, শরণখোলায় প্রচণ্ড বাতাস ও বৃষ্টি হচ্ছে। নদীর পানি বেড়েছে। আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনের চেয়ে রাতের জোয়ারে নদী ও খালগুলোর পানি দুই থেকে তিন ফুট বেশি পানি বেড়েছে। বেড়িবাঁধ ও সড়ক উপচে পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। এই অবস্থায় আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে বাগেরহাটবাসীর।
জেলার উপকূলীয় দুর্যোগপ্রবণ এলাকা থেকে আশ্রয় কেন্দ্রেগুলোতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। রোববার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বাগেরহাটের ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ঝড়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে নদী তীরবর্তি এলাকায় বসবাস করা জনসাধারণের জন্য জেলায় ৩৫৯টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ৭০ হাজারের বেশি মানুষের পাশাপাশি ৪ হাজারের বেশি গৃহপালিত পশুও আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে রাখা হয়েছে।
তবে আশ্রয় কেন্দ্রে আসা মানুষের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক কম বলে জানা যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর শরণখোলা ও মোংলা উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক-একটিতে আশ্রয় নিয়েছেন ১০-১৫ জন। তবে নদী তীরবর্তী এলাকায় কোনো কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে এই সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ জন। সে হিসাবে জেলার কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেওয়াদের সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ হাজারের এর বেশি হওয়ার কথা নয়।
এদিকে বিকেল থেকে ঝড়ের প্রভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন প্রায় ৫ লাখ গ্রাহক। সকালেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয় জেলার অধিকাংশ এলাকা। এর মধ্যে মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, মংলা ও রামপাল উপজেলার প্রায় অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না সারা দিনই। অন্যান্য এলাকাতেও বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিল। জেলা সদরের পৌর শহরে রাত সাড়ে ১০টায়ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রেখেছিল। তবে রাত ১১টার পর সেটিও বন্ধ হয়। ফলে পুরো বাগেরহাট জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
পল্লী বিদ্যুৎ সন্ধ্যা থেকে সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ রেখেছে। ঝোড়ো হাওয়ায় বিদ্যুতের লাইনে গাছপালা উপড়ে পড়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক সুশান্ত রায়।
বরগুনার পাথরঘাটা প্রতিনিধি জানিয়েছেন,রাত ৯টার দিকে রিমেলের তাণ্ডব বাড়তে থাকে। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জোয়ারের সময় ব্যাপক দমকা হাওয়া বয়ে গেছে এই এলাকায়।
পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চরলাঠীমারা গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে জানা যায়, রাত সাড়ে ৯টার দিকে জোয়ার শুরু হয়েছে। মূল জোয়ার আসে রাত ১১টার পর। এর আগেই ওই এলাকার একাধিক ঘরবাড়ি উড়ে গেছে। এ এলাকার কয়েক শতাধিক মানুষ সকাল থেকেই পানিবন্দি ছিল।
পাথরঘাটা পৌর এলাকার বিষখালী নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম রাত সাড়ে ৯টায় আজকের পত্রিকাকে জানান, বেরিবাঁধ এলাকার সবাই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। বর্তমানে প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইছে। এতে উপকূলীয় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন—
ঘূর্ণিঝড় রিমাল উপকূলে সর্বোচ্চ ১০২ কিলোমিটার গতিবেগে আঘাত হেনেছে। এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হওয়াতে এর গতি ৯০ থেকে ১১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক।
রোববার (২৬ মে) দিবাগত রাত ২টায় ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এই আবহাওয়াবিদ বলেন, এখন পর্যন্ত রিমালের সর্বোচ্চ গতিবেগ পটুয়াখালীতে ঘণ্টায় ১০২ কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। আশা করছি, এটিই এর সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে।
তিনি বলেন, সন্ধ্যা থেকেই এটির কেন্দ্রভাগ উপকূল অতিক্রম শুরু করে। সোমবার সকালের মধ্যে রিমাল উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করবে। এরপর দিনের বেলায় শক্তি কমে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে বৃষ্টি ঝরাবে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রোববার (২৬ মে) রাত ৮টার দিকে উপকূলে আঘাত হানে রিমাল। এ সময় ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেড়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। এতে কিছু এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষে বুলেটিনে জানানো হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মোংলার দক্ষিণপশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম অব্যাহত রেখেছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপকূলীয় এলাকায় দুপুর থেকেই উচ্চ জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। প্রায় পুরো সুন্দরবন পানিতে তলিয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে বন্য প্রাণীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে বরগুনার আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট উচ্চ জোয়ার, জলোচ্ছ্বাস ও ঝোড়ো বাতাসে এখন পর্যন্ত দুইজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে লাখ লাখ মানুষ।
পিরোজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, রিমালের প্রভাবে সন্ধ্যা থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। রাতে বৃষ্টি ও বাতাসের তীব্রতা বেড়েছে, প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিও বাড়ছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে পিরোজপুর জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার উপকূলবর্তী এলাকা।
মঠবাড়িয়া ও ইন্দুরকানির উপকূলবর্তী বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে সাপলেজা, বড়মাছু, ছোট মাসুয়া,খেতাচিড়া, মাঝেরচর, টিকিট কাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা এবং ইন্দুরকানি উপজেলার টগরা সাঈদখালি চর, কালাইয়সহ প্রায় অর্ধশত এলাকা দুই থেকে আড়াই ফুট পানির নিচে। এসব এলাকার মানুষজন আশ্রয় কেন্দ্রে গেলেও গবাদিপশু ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৯৫ টি সাইক্লোন সেন্টার ও ২৬৬ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাতটি উপজেলায় আটটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। সাতটি উপজেলায় ৬৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
পিরোজপুর জেলায় ৩৩৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ থাকলেও অক্ষত রয়েছৈ মাত্র ১৪৪ কিলোমিটার। ফলে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চল দুই থেকে আড়াই ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বাগেরহাটের উপকূল জুড়ে বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল বেগে বাতাস বইছে। রাত পৌনে ১টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে৷ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সম্পূর্ণ জেলা।
শরণখোলার রায়েন্দা এলাকা থেকে আলী আকবর জানান, শরণখোলায় প্রচণ্ড বাতাস ও বৃষ্টি হচ্ছে। নদীর পানি বেড়েছে। আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনের চেয়ে রাতের জোয়ারে নদী ও খালগুলোর পানি দুই থেকে তিন ফুট বেশি পানি বেড়েছে। বেড়িবাঁধ ও সড়ক উপচে পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। এই অবস্থায় আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে বাগেরহাটবাসীর।
জেলার উপকূলীয় দুর্যোগপ্রবণ এলাকা থেকে আশ্রয় কেন্দ্রেগুলোতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। রোববার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বাগেরহাটের ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ঝড়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে নদী তীরবর্তি এলাকায় বসবাস করা জনসাধারণের জন্য জেলায় ৩৫৯টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ৭০ হাজারের বেশি মানুষের পাশাপাশি ৪ হাজারের বেশি গৃহপালিত পশুও আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে রাখা হয়েছে।
তবে আশ্রয় কেন্দ্রে আসা মানুষের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক কম বলে জানা যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর শরণখোলা ও মোংলা উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক-একটিতে আশ্রয় নিয়েছেন ১০-১৫ জন। তবে নদী তীরবর্তী এলাকায় কোনো কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে এই সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ জন। সে হিসাবে জেলার কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেওয়াদের সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ হাজারের এর বেশি হওয়ার কথা নয়।
এদিকে বিকেল থেকে ঝড়ের প্রভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন প্রায় ৫ লাখ গ্রাহক। সকালেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয় জেলার অধিকাংশ এলাকা। এর মধ্যে মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, মংলা ও রামপাল উপজেলার প্রায় অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না সারা দিনই। অন্যান্য এলাকাতেও বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিল। জেলা সদরের পৌর শহরে রাত সাড়ে ১০টায়ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রেখেছিল। তবে রাত ১১টার পর সেটিও বন্ধ হয়। ফলে পুরো বাগেরহাট জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
পল্লী বিদ্যুৎ সন্ধ্যা থেকে সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ রেখেছে। ঝোড়ো হাওয়ায় বিদ্যুতের লাইনে গাছপালা উপড়ে পড়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক সুশান্ত রায়।
বরগুনার পাথরঘাটা প্রতিনিধি জানিয়েছেন,রাত ৯টার দিকে রিমেলের তাণ্ডব বাড়তে থাকে। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জোয়ারের সময় ব্যাপক দমকা হাওয়া বয়ে গেছে এই এলাকায়।
পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চরলাঠীমারা গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে জানা যায়, রাত সাড়ে ৯টার দিকে জোয়ার শুরু হয়েছে। মূল জোয়ার আসে রাত ১১টার পর। এর আগেই ওই এলাকার একাধিক ঘরবাড়ি উড়ে গেছে। এ এলাকার কয়েক শতাধিক মানুষ সকাল থেকেই পানিবন্দি ছিল।
পাথরঘাটা পৌর এলাকার বিষখালী নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম রাত সাড়ে ৯টায় আজকের পত্রিকাকে জানান, বেরিবাঁধ এলাকার সবাই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। বর্তমানে প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইছে। এতে উপকূলীয় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন—
আজ সোমবার বায়ুদূষণ ও বাতাসের গুণমান সূচক নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের সকাল ৯টার রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার বায়ুমান ৮১, যা সহনীয় বাতাসের নির্দেশক। গতকাল রোববার সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে ঢাকার বায়ুমান ছিল ৭৯।
১৪ ঘণ্টা আগেঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, আজ ঢাকার আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে।
১৪ ঘণ্টা আগেবাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ-এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসা
২ দিন আগেকাস্পিয়ান সাগরের পানির প্রধান উৎসই হলো রাশিয়ার ভলগা নদী। এটি ইউরোপের বৃহত্তম ও দীর্ঘতম নদী। কাস্পিয়ান সাগরের পানির ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই আসে ভলগা নদী থেকে।
২ দিন আগে