Ajker Patrika

বিশ্বের ২৪ কোটি ২০ লাখ হেক্টর কৃষিজমিতে বিপজ্জনক মাত্রার ভারী ধাতু: গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের মোট কৃষি জমির ছয় ভাগের এক ভাগ ভারী ধাতুতে দূষিত। গবেষকদের হিসাব মতে, বিশ্বের প্রায় ২৪ কোটি ২০ লাখ হেক্টর জমিতে আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম, কোবাল্ট, ক্রোমিয়াম, কপার অথবা সিসার মতো ভারী ধাতুর অন্তত একটির উপস্থিতি রয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বের ১৪ থেকে ১৭ শতাংশ কৃষি জমিই এসব ধাতু দ্বারা দূষিত। আর এই উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে বসবাস প্রায় ১৪০ কোটি মানুষের।

বিশ্বের ১ হাজারেরও বেশি আঞ্চলিক গবেষণার তথ্য–উপাত্ত মেশিন লার্নিং প্রযুক্তিতে বিশ্লেষণ করে এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন গবেষকেরা।

সবচেয়ে বিস্তৃতভাবে পাওয়া গেছে ক্যাডমিয়াম ধাতু, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার কিছু অংশে এই ধাতুর উপস্থিতি আশঙ্কাজনক ভাবে বেশি।

যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ড. লিজ রায়লট দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, এ ধরনের দূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলো। তিনি বলেন, ‘দূষণের মানচিত্র আমাদের এই বার্তা দেয় যে দূষণের কোনো ভৌগোলিক সীমারেখা নেই। এই সমস্যা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জরুরি। দূষণের বড় একটি অংশ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে, যেখানে স্থানীয় জনগণ সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়ছে। এই দূষিত ফসল যখন বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় ঢুকে পড়ে, তখন তার প্রভাব কতটা বিস্তৃত হয়, তা এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট না হলেও আন্দাজ করা যায়।’

রায়লট বলেন, ‘এই অনুসন্ধানগুলো থেকে স্পষ্ট হয়, এই বিষাক্ত পদার্থগুলো কতটা গভীরভাবে আমাদের মাটিকে দূষিত করছে, খাদ্য ও পানিতে মিশে আমাদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এগুলো ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি থেকে শুরু করে স্নায়ু ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা হ্রাস এবং ক্যানসারের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে।’ রায়লট ভারী ধাতু সংক্রান্ত এই গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।

গবেষকেরা বলছেন, প্রাকৃতিকভাবে তো বটেই, মানবসৃষ্ট নানা কারণেও এ ধরনের ধাতব দূষণ হতে পারে। দূষিত মাটি শুধু পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি নয়, এটি ফসলের উৎপাদন কমিয়ে দেয়, পানি দূষিত করে। এমনকি গৃহপালিত পশুর দেহে বায়ো–অ্যাকুমুলেশনের (পশুর শরীরে জমা হয়, পরে সেই পশুর মাংস খাওয়ার মধ্য দিয়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে) মাধ্যমে খাদ্যনিরাপত্তাকেও বিপন্ন করে। এ ধরনের দূষণ একবার মাটিতে প্রবেশ করলে তা কয়েক দশক ধরে টিকে থাকতে পারে।

বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছেন, প্রযুক্তি-নির্ভর সবুজ অবকাঠামো নির্মাণের জন্য যেসব গুরুত্বপূর্ণ ধাতুর চাহিদা বাড়ছে—তাতে ভারী ধাতুর দূষণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে রায়লট বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সবুজ অবকাঠামো যেমন: উইন্ড টারবাইন (বায়ুকল), বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি এবং সৌর প্যানেল ইত্যাদি নির্মাণে এসব ধাতব উপাদান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আর এসব তৈরিতে ধাতব উপাদানের যে নিরবচ্ছিন্ন চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে তাতে ভারী ধাতুর দূষণ আরও বাড়বে।’

উল্লেখ্য, নবায়নযোগ্য শক্তি বিশেষ করে বৈদ্যুতিক গাড়ি, বায়ু বিদ্যুৎ ও সৌর বিদ্যুতের জন্য ব্যাটারির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এসব ব্যাটারির গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের মধ্যে রয়েছে: নিকেল ও সিসা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত