আশিকুর রহমান সমী

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির স্বার্থেও জরুরি ব্যাঙ সংরক্ষণ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ হলেও জীববৈচিত্র্য অনেকই সমৃদ্ধ। ওরিয়েন্টাল নামক প্রাণি-ভৌগলিক অঞ্চলের ইন্দো-বার্মা ও ইন্দো-চায়না হটস্পটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এ দেশ প্রাণীবৈচিত্র্যে তথা বন্যপ্রাণী বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। এ দেশের উত্তর- পূর্বাঞ্চলে এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে পাহাড়ি চির সবুজ বন, দক্ষিণ-পশ্চিমে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, দক্ষিণজুড়ে বঙ্গোপসাগর আর মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিম পর্যন্ত শালবন ও জালের মতো ছড়ানো নদ-নদী। যা সম্মিলিতভাবে গড়ে তুলেছে জীব-বৈচিত্র্যের এক অপূর্ব সমাহার।
এখানকার বন্যপ্রাণীদের একটি অংশ উভচর শ্রেণির সদস্য। বাংলাদেশে Anura (অ্যানুরা) এবং Gymnophiona (জিমনোফিনা) পরিবারের উভচরদের দেখা মেলে। উভচর গবেষণা সংস্থা এম্ফিবিয়ান স্পিসিস অব দ্য ওয়ার্ল্ডের তথ্যমতে বিশ্বে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭৫২ টি। এর মধ্যে অ্যানুরা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ৭ হাজার ৭০৭ টি। তবে বর্তমানে নিত্য-নতুন গবেষণায় আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন নতুন প্রজাতি। বিগত বছরগুলোর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও গবেষণায় বাংলাদেশেও বেড়েছে উভচরের সংখ্যা। আর এদের মধ্যে অন্যতম বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। এরা দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশসহ কৃষি অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের অবস্থা
গত ৫০ বছরের বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যাঙের প্রজাতিগত সংখ্যা ৬৩টি। কিন্তু আমাদের বন্যপ্রাণীবিষয়ক বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই সংখ্যাটি প্রকৃতপক্ষে ১০০-র ওপরে হতে পারে। আর গত ১২ বছরে বাংলাদেশ মোট ২৪টি নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে ৯টি প্রজাতি শুধু যে বাংলাদেশের জন্য নতুন তা নয়, পুরো পৃথিবীর জন্যই নতুন। ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশনের (আইইউসিএন) মূল্যায়িত তথ্য অনুযায়ী ৯ প্রজাতির ব্যাঙকে বিলুপ্তির ঝুঁকির লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের আবাসস্থল
সারাদেশ জুড়েই রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙের সমারোহ। জলজ-স্থলজ সব পরিবেশেই ব্যাঙ পাওয়া যায়, তবে ব্যাঙের জীবন ধারণের জন্য জলজ পরিবেশ অত্যাবশ্যকীয়। তাই সারাদেশের জলাশয়কেন্দ্রিক মিঠাপানিতে ব্যাঙের দেখা মেলে। কুনো ব্যাঙ, কোলা ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, লাউবিচি ব্যাঙ, ঝিঁঝি ব্যাঙ, কটকটি ব্যাঙ, ভেপু ব্যাঙ সচরাচর দেখতে পাওয়া ব্যাঙের প্রজাতি। তবে সিলেট ও চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে বিশেষ করে পাহাড়ি ছড়া এবং ঝিরিতে বেশি এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যাঙের দেখা মেলে। এ ছাড়া শালবন ব্যাঙের জন্য একটি আদর্শ আবাসস্থল। সিলেটের হাওর ও গঙ্গা প্লাবনভূমির জলাভূমিও ব্যাঙের চমৎকার আবাসস্থল। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে ব্যাঙের আনাগোনা বাড়ে। এ সময়টা মূলত ব্যাঙের প্রজনন মৌসুম।
শহরেও থাকে ব্যাঙ, রাখে মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান
বর্তমানে পৃথিবীর ৫৫ শতাংশ মানুষ শহরে বসবাস করে। ফলে কমছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। ব্যাঙ টিকে থাকার জন্য জল ও স্থল দুটিরই প্রয়োজন। কিন্তু শহরের জলজ পরিবেশ দিন দিন দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় শহরগুলো বিশেষ করে ঢাকার কথা যদি চিন্তা করি, বর্ষাকালে ব্যাঙের জন্য প্রয়োজনীয় জলাশয় একেবারেই কম। আর অস্থায়ী যেসব জলাশয় দেখা যায়, সেখানেও পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙের প্রজনন বিঘ্নিত হয়। এ কারণে শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে ব্যাঙ। এতে বেড়ে যাচ্ছে ব্যাঙের খাদ্য মশাসহ ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ। কিছুদিন আগে মশা দমনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জলাশয়ে ব্যাঙ অবমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙগুলো টিকে থাকার মতো পরিবেশ সেখানে আছে কিনা তা কতটা বিবেচনা করা হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের বাহক মশার লার্ভা ব্যাঙাচি অবস্থায় খায় ব্যাঙ। যা মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন, নগরায়ণের ফলে ব্যাঙের আবাসস্থল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রজনন ক্ষেত্রও নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে কমছে তাদের সংখ্যা। প্রকৃতি হারিয়ে ফেলছে ভারসাম্য। ফলাফল হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো মানবজাতি।
হাজার বছর ধরে কুনো ব্যাঙের প্যারোটিড গ্রন্থি ও অন্যান্য ত্বকীয় গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা হয়।
পরিবেশের নির্দেশক ও আবহাওয়া পূর্বাভাসে ব্যাঙ
পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক ব্যাঙ। একটি পরিবেশ বিশেষ করে জলজ পরিবেশ কতটা সুস্থ তার নির্দেশক হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্যশৃঙ্খলে রয়েছে প্রাণীটির বড় ভূমিকা। অর্থাৎ পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার একটি নির্দেশক হিসেবে কাজ করে ব্যাঙ।
কৃষকের বন্ধু ব্যাঙ
ব্যাঙ এক রাতে শরীরের ওজনের দ্বিগুণ পোকামাকড় খেতে পারে। এই পোকামাকড় ফসলের ক্ষতি করে। এতে অতিরিক্ত কীটনাশক যেমন প্রয়োগ করতে হয় না, তেমন ঠিক থাকে ফসলের গুণগত মান ও মাটির গুনাগুণ। আর ঠিক থাকে প্রকৃতির ভারসাম্য। আবার ব্যাঙের মূত্রে ইউরিয়া-জাতীয় পদার্থ থাকে, যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং ফসলের উৎপাদন ত্বরান্বিত করে। এক হিসেবে দেখা গেছে, একটি কোলা ব্যাঙ তার পুরো জীবনে প্রায় ৪ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে। পর্যাপ্ত ব্যাঙ থাকলে জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়। এতে যে আমরা শুধু আর্থিক ভাবে লাভবান হবো তা নয়, পাব কীটনাশক ও বিষমুক্ত খাবারের সরবরাহ। এতে কীটনাশকের বিষও পরিবেশে ছড়াবে না। এতে পরিবেশ, বিশেষ করে জলজ পরিবেশ থাকবে বিষক্রিয়া এবং দূষণ মুক্ত।
আমাদের সংস্কৃতির অংশ
আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্যাঙ। এখনো বৃষ্টির আশায় দেশীয় প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী দেওয়া হয় ব্যাঙের বিয়ে। এ ছাড়াও ব্যাঙ নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রবাদ প্রবচন। যা বহুকাল ধরে বাংলায় প্রচলিত। পাশাপাশি বাংলাদেশের লোকসাহিত্য, রূপকথা, উপন্যাস, কবিতায় বারবার উঠে এসেছে এই প্রাণীটির নাম। খনার বচনেও এসেছে ব্যাঙের কথা, ‘ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, শীঘ্রই হবে বৃষ্টি জান’।
মানব কল্যাণেই চাই বাংলাদেশে ব্যাঙ সংরক্ষণ
সংরক্ষিত এলাকাগুলোর বাইরে এই নতুন আবিষ্কৃত ব্যাঙ বা বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা ব্যাঙের একটি বড় অংশ রয়েছে। আমাদের হুমকিগ্রস্ত ৯টি ব্যাঙের মধ্যে ৬টি ব্যাঙই সংরক্ষিত এলাকার বাইরে এমনকি নতুন আবিষ্কৃত ২৪টি ব্যাঙের মধ্যে ৯টি আবিষ্কৃত হয়েছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে। এ ছাড়া ঢাকাইয়া ঝিঁঝি ব্যাঙ পাওয়া গেছে দূষিত শহর ঢাকা থেকে। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত সব ব্যাঙই কয়েকটি সংরক্ষিত এলাকায় পাওয়া গেছে। এই তথ্য এটাই নির্দেশ করে যে, ব্যাঙ নিয়ে এই অঞ্চলে আরও বিস্তৃত গবেষণা হলে নতুন নতুন ব্যাঙ প্রজাতির তথ্য বের হয়ে আসবে।
আমাদের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বের চিরসবুজ বা মিশ্র চিরসবুজ বন বন্যপ্রাণীর জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হলেও আমাদের সারা দেশই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, গঙ্গা অববাহিকায় তিন ধরনের বিপন্ন প্রজাতির ব্যাঙ পাওয়া যায় এবং ২ প্রজাতির নতুন ব্যাঙ এখান থেকে পাওয়া গেছে। এ রকম প্রতিটি অঞ্চলই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বিশেষ করে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে ব্যাঙেরা আজ হুমকির সম্মুখীন। ক্রমশ ধ্বংস হচ্ছে জলজ পরিবেশ। সেই সঙ্গে জলজ পরিবেশে টিকে থাকা ব্যাঙের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। জলজ পরিবেশ দূষণ, গুণগত মান নষ্ট হওয়া, জলজ পরিবেশের নিয়ামকগুলোর মান নষ্ট হওয়া, জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, শহরের আয়তন বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক পরিবেশের বিলুপ্তি, রাস্তায় অতিরিক্ত যানবাহনের ফলে ব্যাঙের দুর্ঘটনায় মৃত্যু, পাহাড়ে অবৈধভাবে ব্যাঙ শিকার ইত্যাদি কারণে প্রাণীটির সংখ্যা আজ কমে যাচ্ছে। সংরক্ষিত এলাকার বাইরে আমাদের অগোচরে কত ব্যাঙ হারিয়ে যাচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পর্যন্ত পারছি না।
তাই সময় এসেছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে পরিবেশের এই পরম বন্ধু ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার। বড় কোনো প্রাণী যেরকম সংরক্ষণে গুরুত্ব পায় ঠিক ওই রকম না হলেও ন্যূনতম গুরুত্ব যেন বাংলাদেশের ব্যাঙেরা পায়।
লেখক: বন্যপ্রাণী গবেষক, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিকাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির স্বার্থেও জরুরি ব্যাঙ সংরক্ষণ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ হলেও জীববৈচিত্র্য অনেকই সমৃদ্ধ। ওরিয়েন্টাল নামক প্রাণি-ভৌগলিক অঞ্চলের ইন্দো-বার্মা ও ইন্দো-চায়না হটস্পটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এ দেশ প্রাণীবৈচিত্র্যে তথা বন্যপ্রাণী বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। এ দেশের উত্তর- পূর্বাঞ্চলে এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে পাহাড়ি চির সবুজ বন, দক্ষিণ-পশ্চিমে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, দক্ষিণজুড়ে বঙ্গোপসাগর আর মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিম পর্যন্ত শালবন ও জালের মতো ছড়ানো নদ-নদী। যা সম্মিলিতভাবে গড়ে তুলেছে জীব-বৈচিত্র্যের এক অপূর্ব সমাহার।
এখানকার বন্যপ্রাণীদের একটি অংশ উভচর শ্রেণির সদস্য। বাংলাদেশে Anura (অ্যানুরা) এবং Gymnophiona (জিমনোফিনা) পরিবারের উভচরদের দেখা মেলে। উভচর গবেষণা সংস্থা এম্ফিবিয়ান স্পিসিস অব দ্য ওয়ার্ল্ডের তথ্যমতে বিশ্বে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭৫২ টি। এর মধ্যে অ্যানুরা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ৭ হাজার ৭০৭ টি। তবে বর্তমানে নিত্য-নতুন গবেষণায় আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন নতুন প্রজাতি। বিগত বছরগুলোর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও গবেষণায় বাংলাদেশেও বেড়েছে উভচরের সংখ্যা। আর এদের মধ্যে অন্যতম বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। এরা দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশসহ কৃষি অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের অবস্থা
গত ৫০ বছরের বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যাঙের প্রজাতিগত সংখ্যা ৬৩টি। কিন্তু আমাদের বন্যপ্রাণীবিষয়ক বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই সংখ্যাটি প্রকৃতপক্ষে ১০০-র ওপরে হতে পারে। আর গত ১২ বছরে বাংলাদেশ মোট ২৪টি নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে ৯টি প্রজাতি শুধু যে বাংলাদেশের জন্য নতুন তা নয়, পুরো পৃথিবীর জন্যই নতুন। ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশনের (আইইউসিএন) মূল্যায়িত তথ্য অনুযায়ী ৯ প্রজাতির ব্যাঙকে বিলুপ্তির ঝুঁকির লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের আবাসস্থল
সারাদেশ জুড়েই রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙের সমারোহ। জলজ-স্থলজ সব পরিবেশেই ব্যাঙ পাওয়া যায়, তবে ব্যাঙের জীবন ধারণের জন্য জলজ পরিবেশ অত্যাবশ্যকীয়। তাই সারাদেশের জলাশয়কেন্দ্রিক মিঠাপানিতে ব্যাঙের দেখা মেলে। কুনো ব্যাঙ, কোলা ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, লাউবিচি ব্যাঙ, ঝিঁঝি ব্যাঙ, কটকটি ব্যাঙ, ভেপু ব্যাঙ সচরাচর দেখতে পাওয়া ব্যাঙের প্রজাতি। তবে সিলেট ও চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে বিশেষ করে পাহাড়ি ছড়া এবং ঝিরিতে বেশি এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যাঙের দেখা মেলে। এ ছাড়া শালবন ব্যাঙের জন্য একটি আদর্শ আবাসস্থল। সিলেটের হাওর ও গঙ্গা প্লাবনভূমির জলাভূমিও ব্যাঙের চমৎকার আবাসস্থল। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে ব্যাঙের আনাগোনা বাড়ে। এ সময়টা মূলত ব্যাঙের প্রজনন মৌসুম।
শহরেও থাকে ব্যাঙ, রাখে মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান
বর্তমানে পৃথিবীর ৫৫ শতাংশ মানুষ শহরে বসবাস করে। ফলে কমছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। ব্যাঙ টিকে থাকার জন্য জল ও স্থল দুটিরই প্রয়োজন। কিন্তু শহরের জলজ পরিবেশ দিন দিন দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় শহরগুলো বিশেষ করে ঢাকার কথা যদি চিন্তা করি, বর্ষাকালে ব্যাঙের জন্য প্রয়োজনীয় জলাশয় একেবারেই কম। আর অস্থায়ী যেসব জলাশয় দেখা যায়, সেখানেও পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙের প্রজনন বিঘ্নিত হয়। এ কারণে শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে ব্যাঙ। এতে বেড়ে যাচ্ছে ব্যাঙের খাদ্য মশাসহ ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ। কিছুদিন আগে মশা দমনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জলাশয়ে ব্যাঙ অবমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙগুলো টিকে থাকার মতো পরিবেশ সেখানে আছে কিনা তা কতটা বিবেচনা করা হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের বাহক মশার লার্ভা ব্যাঙাচি অবস্থায় খায় ব্যাঙ। যা মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন, নগরায়ণের ফলে ব্যাঙের আবাসস্থল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রজনন ক্ষেত্রও নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে কমছে তাদের সংখ্যা। প্রকৃতি হারিয়ে ফেলছে ভারসাম্য। ফলাফল হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো মানবজাতি।
হাজার বছর ধরে কুনো ব্যাঙের প্যারোটিড গ্রন্থি ও অন্যান্য ত্বকীয় গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা হয়।
পরিবেশের নির্দেশক ও আবহাওয়া পূর্বাভাসে ব্যাঙ
পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক ব্যাঙ। একটি পরিবেশ বিশেষ করে জলজ পরিবেশ কতটা সুস্থ তার নির্দেশক হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্যশৃঙ্খলে রয়েছে প্রাণীটির বড় ভূমিকা। অর্থাৎ পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার একটি নির্দেশক হিসেবে কাজ করে ব্যাঙ।
কৃষকের বন্ধু ব্যাঙ
ব্যাঙ এক রাতে শরীরের ওজনের দ্বিগুণ পোকামাকড় খেতে পারে। এই পোকামাকড় ফসলের ক্ষতি করে। এতে অতিরিক্ত কীটনাশক যেমন প্রয়োগ করতে হয় না, তেমন ঠিক থাকে ফসলের গুণগত মান ও মাটির গুনাগুণ। আর ঠিক থাকে প্রকৃতির ভারসাম্য। আবার ব্যাঙের মূত্রে ইউরিয়া-জাতীয় পদার্থ থাকে, যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং ফসলের উৎপাদন ত্বরান্বিত করে। এক হিসেবে দেখা গেছে, একটি কোলা ব্যাঙ তার পুরো জীবনে প্রায় ৪ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে। পর্যাপ্ত ব্যাঙ থাকলে জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়। এতে যে আমরা শুধু আর্থিক ভাবে লাভবান হবো তা নয়, পাব কীটনাশক ও বিষমুক্ত খাবারের সরবরাহ। এতে কীটনাশকের বিষও পরিবেশে ছড়াবে না। এতে পরিবেশ, বিশেষ করে জলজ পরিবেশ থাকবে বিষক্রিয়া এবং দূষণ মুক্ত।
আমাদের সংস্কৃতির অংশ
আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্যাঙ। এখনো বৃষ্টির আশায় দেশীয় প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী দেওয়া হয় ব্যাঙের বিয়ে। এ ছাড়াও ব্যাঙ নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রবাদ প্রবচন। যা বহুকাল ধরে বাংলায় প্রচলিত। পাশাপাশি বাংলাদেশের লোকসাহিত্য, রূপকথা, উপন্যাস, কবিতায় বারবার উঠে এসেছে এই প্রাণীটির নাম। খনার বচনেও এসেছে ব্যাঙের কথা, ‘ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, শীঘ্রই হবে বৃষ্টি জান’।
মানব কল্যাণেই চাই বাংলাদেশে ব্যাঙ সংরক্ষণ
সংরক্ষিত এলাকাগুলোর বাইরে এই নতুন আবিষ্কৃত ব্যাঙ বা বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা ব্যাঙের একটি বড় অংশ রয়েছে। আমাদের হুমকিগ্রস্ত ৯টি ব্যাঙের মধ্যে ৬টি ব্যাঙই সংরক্ষিত এলাকার বাইরে এমনকি নতুন আবিষ্কৃত ২৪টি ব্যাঙের মধ্যে ৯টি আবিষ্কৃত হয়েছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে। এ ছাড়া ঢাকাইয়া ঝিঁঝি ব্যাঙ পাওয়া গেছে দূষিত শহর ঢাকা থেকে। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত সব ব্যাঙই কয়েকটি সংরক্ষিত এলাকায় পাওয়া গেছে। এই তথ্য এটাই নির্দেশ করে যে, ব্যাঙ নিয়ে এই অঞ্চলে আরও বিস্তৃত গবেষণা হলে নতুন নতুন ব্যাঙ প্রজাতির তথ্য বের হয়ে আসবে।
আমাদের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বের চিরসবুজ বা মিশ্র চিরসবুজ বন বন্যপ্রাণীর জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হলেও আমাদের সারা দেশই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, গঙ্গা অববাহিকায় তিন ধরনের বিপন্ন প্রজাতির ব্যাঙ পাওয়া যায় এবং ২ প্রজাতির নতুন ব্যাঙ এখান থেকে পাওয়া গেছে। এ রকম প্রতিটি অঞ্চলই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বিশেষ করে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে ব্যাঙেরা আজ হুমকির সম্মুখীন। ক্রমশ ধ্বংস হচ্ছে জলজ পরিবেশ। সেই সঙ্গে জলজ পরিবেশে টিকে থাকা ব্যাঙের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। জলজ পরিবেশ দূষণ, গুণগত মান নষ্ট হওয়া, জলজ পরিবেশের নিয়ামকগুলোর মান নষ্ট হওয়া, জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, শহরের আয়তন বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক পরিবেশের বিলুপ্তি, রাস্তায় অতিরিক্ত যানবাহনের ফলে ব্যাঙের দুর্ঘটনায় মৃত্যু, পাহাড়ে অবৈধভাবে ব্যাঙ শিকার ইত্যাদি কারণে প্রাণীটির সংখ্যা আজ কমে যাচ্ছে। সংরক্ষিত এলাকার বাইরে আমাদের অগোচরে কত ব্যাঙ হারিয়ে যাচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পর্যন্ত পারছি না।
তাই সময় এসেছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে পরিবেশের এই পরম বন্ধু ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার। বড় কোনো প্রাণী যেরকম সংরক্ষণে গুরুত্ব পায় ঠিক ওই রকম না হলেও ন্যূনতম গুরুত্ব যেন বাংলাদেশের ব্যাঙেরা পায়।
লেখক: বন্যপ্রাণী গবেষক, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিকাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)
আশিকুর রহমান সমী

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির স্বার্থেও জরুরি ব্যাঙ সংরক্ষণ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ হলেও জীববৈচিত্র্য অনেকই সমৃদ্ধ। ওরিয়েন্টাল নামক প্রাণি-ভৌগলিক অঞ্চলের ইন্দো-বার্মা ও ইন্দো-চায়না হটস্পটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এ দেশ প্রাণীবৈচিত্র্যে তথা বন্যপ্রাণী বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। এ দেশের উত্তর- পূর্বাঞ্চলে এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে পাহাড়ি চির সবুজ বন, দক্ষিণ-পশ্চিমে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, দক্ষিণজুড়ে বঙ্গোপসাগর আর মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিম পর্যন্ত শালবন ও জালের মতো ছড়ানো নদ-নদী। যা সম্মিলিতভাবে গড়ে তুলেছে জীব-বৈচিত্র্যের এক অপূর্ব সমাহার।
এখানকার বন্যপ্রাণীদের একটি অংশ উভচর শ্রেণির সদস্য। বাংলাদেশে Anura (অ্যানুরা) এবং Gymnophiona (জিমনোফিনা) পরিবারের উভচরদের দেখা মেলে। উভচর গবেষণা সংস্থা এম্ফিবিয়ান স্পিসিস অব দ্য ওয়ার্ল্ডের তথ্যমতে বিশ্বে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭৫২ টি। এর মধ্যে অ্যানুরা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ৭ হাজার ৭০৭ টি। তবে বর্তমানে নিত্য-নতুন গবেষণায় আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন নতুন প্রজাতি। বিগত বছরগুলোর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও গবেষণায় বাংলাদেশেও বেড়েছে উভচরের সংখ্যা। আর এদের মধ্যে অন্যতম বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। এরা দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশসহ কৃষি অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের অবস্থা
গত ৫০ বছরের বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যাঙের প্রজাতিগত সংখ্যা ৬৩টি। কিন্তু আমাদের বন্যপ্রাণীবিষয়ক বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই সংখ্যাটি প্রকৃতপক্ষে ১০০-র ওপরে হতে পারে। আর গত ১২ বছরে বাংলাদেশ মোট ২৪টি নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে ৯টি প্রজাতি শুধু যে বাংলাদেশের জন্য নতুন তা নয়, পুরো পৃথিবীর জন্যই নতুন। ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশনের (আইইউসিএন) মূল্যায়িত তথ্য অনুযায়ী ৯ প্রজাতির ব্যাঙকে বিলুপ্তির ঝুঁকির লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের আবাসস্থল
সারাদেশ জুড়েই রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙের সমারোহ। জলজ-স্থলজ সব পরিবেশেই ব্যাঙ পাওয়া যায়, তবে ব্যাঙের জীবন ধারণের জন্য জলজ পরিবেশ অত্যাবশ্যকীয়। তাই সারাদেশের জলাশয়কেন্দ্রিক মিঠাপানিতে ব্যাঙের দেখা মেলে। কুনো ব্যাঙ, কোলা ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, লাউবিচি ব্যাঙ, ঝিঁঝি ব্যাঙ, কটকটি ব্যাঙ, ভেপু ব্যাঙ সচরাচর দেখতে পাওয়া ব্যাঙের প্রজাতি। তবে সিলেট ও চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে বিশেষ করে পাহাড়ি ছড়া এবং ঝিরিতে বেশি এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যাঙের দেখা মেলে। এ ছাড়া শালবন ব্যাঙের জন্য একটি আদর্শ আবাসস্থল। সিলেটের হাওর ও গঙ্গা প্লাবনভূমির জলাভূমিও ব্যাঙের চমৎকার আবাসস্থল। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে ব্যাঙের আনাগোনা বাড়ে। এ সময়টা মূলত ব্যাঙের প্রজনন মৌসুম।
শহরেও থাকে ব্যাঙ, রাখে মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান
বর্তমানে পৃথিবীর ৫৫ শতাংশ মানুষ শহরে বসবাস করে। ফলে কমছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। ব্যাঙ টিকে থাকার জন্য জল ও স্থল দুটিরই প্রয়োজন। কিন্তু শহরের জলজ পরিবেশ দিন দিন দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় শহরগুলো বিশেষ করে ঢাকার কথা যদি চিন্তা করি, বর্ষাকালে ব্যাঙের জন্য প্রয়োজনীয় জলাশয় একেবারেই কম। আর অস্থায়ী যেসব জলাশয় দেখা যায়, সেখানেও পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙের প্রজনন বিঘ্নিত হয়। এ কারণে শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে ব্যাঙ। এতে বেড়ে যাচ্ছে ব্যাঙের খাদ্য মশাসহ ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ। কিছুদিন আগে মশা দমনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জলাশয়ে ব্যাঙ অবমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙগুলো টিকে থাকার মতো পরিবেশ সেখানে আছে কিনা তা কতটা বিবেচনা করা হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের বাহক মশার লার্ভা ব্যাঙাচি অবস্থায় খায় ব্যাঙ। যা মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন, নগরায়ণের ফলে ব্যাঙের আবাসস্থল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রজনন ক্ষেত্রও নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে কমছে তাদের সংখ্যা। প্রকৃতি হারিয়ে ফেলছে ভারসাম্য। ফলাফল হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো মানবজাতি।
হাজার বছর ধরে কুনো ব্যাঙের প্যারোটিড গ্রন্থি ও অন্যান্য ত্বকীয় গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা হয়।
পরিবেশের নির্দেশক ও আবহাওয়া পূর্বাভাসে ব্যাঙ
পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক ব্যাঙ। একটি পরিবেশ বিশেষ করে জলজ পরিবেশ কতটা সুস্থ তার নির্দেশক হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্যশৃঙ্খলে রয়েছে প্রাণীটির বড় ভূমিকা। অর্থাৎ পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার একটি নির্দেশক হিসেবে কাজ করে ব্যাঙ।
কৃষকের বন্ধু ব্যাঙ
ব্যাঙ এক রাতে শরীরের ওজনের দ্বিগুণ পোকামাকড় খেতে পারে। এই পোকামাকড় ফসলের ক্ষতি করে। এতে অতিরিক্ত কীটনাশক যেমন প্রয়োগ করতে হয় না, তেমন ঠিক থাকে ফসলের গুণগত মান ও মাটির গুনাগুণ। আর ঠিক থাকে প্রকৃতির ভারসাম্য। আবার ব্যাঙের মূত্রে ইউরিয়া-জাতীয় পদার্থ থাকে, যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং ফসলের উৎপাদন ত্বরান্বিত করে। এক হিসেবে দেখা গেছে, একটি কোলা ব্যাঙ তার পুরো জীবনে প্রায় ৪ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে। পর্যাপ্ত ব্যাঙ থাকলে জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়। এতে যে আমরা শুধু আর্থিক ভাবে লাভবান হবো তা নয়, পাব কীটনাশক ও বিষমুক্ত খাবারের সরবরাহ। এতে কীটনাশকের বিষও পরিবেশে ছড়াবে না। এতে পরিবেশ, বিশেষ করে জলজ পরিবেশ থাকবে বিষক্রিয়া এবং দূষণ মুক্ত।
আমাদের সংস্কৃতির অংশ
আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্যাঙ। এখনো বৃষ্টির আশায় দেশীয় প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী দেওয়া হয় ব্যাঙের বিয়ে। এ ছাড়াও ব্যাঙ নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রবাদ প্রবচন। যা বহুকাল ধরে বাংলায় প্রচলিত। পাশাপাশি বাংলাদেশের লোকসাহিত্য, রূপকথা, উপন্যাস, কবিতায় বারবার উঠে এসেছে এই প্রাণীটির নাম। খনার বচনেও এসেছে ব্যাঙের কথা, ‘ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, শীঘ্রই হবে বৃষ্টি জান’।
মানব কল্যাণেই চাই বাংলাদেশে ব্যাঙ সংরক্ষণ
সংরক্ষিত এলাকাগুলোর বাইরে এই নতুন আবিষ্কৃত ব্যাঙ বা বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা ব্যাঙের একটি বড় অংশ রয়েছে। আমাদের হুমকিগ্রস্ত ৯টি ব্যাঙের মধ্যে ৬টি ব্যাঙই সংরক্ষিত এলাকার বাইরে এমনকি নতুন আবিষ্কৃত ২৪টি ব্যাঙের মধ্যে ৯টি আবিষ্কৃত হয়েছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে। এ ছাড়া ঢাকাইয়া ঝিঁঝি ব্যাঙ পাওয়া গেছে দূষিত শহর ঢাকা থেকে। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত সব ব্যাঙই কয়েকটি সংরক্ষিত এলাকায় পাওয়া গেছে। এই তথ্য এটাই নির্দেশ করে যে, ব্যাঙ নিয়ে এই অঞ্চলে আরও বিস্তৃত গবেষণা হলে নতুন নতুন ব্যাঙ প্রজাতির তথ্য বের হয়ে আসবে।
আমাদের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বের চিরসবুজ বা মিশ্র চিরসবুজ বন বন্যপ্রাণীর জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হলেও আমাদের সারা দেশই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, গঙ্গা অববাহিকায় তিন ধরনের বিপন্ন প্রজাতির ব্যাঙ পাওয়া যায় এবং ২ প্রজাতির নতুন ব্যাঙ এখান থেকে পাওয়া গেছে। এ রকম প্রতিটি অঞ্চলই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বিশেষ করে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে ব্যাঙেরা আজ হুমকির সম্মুখীন। ক্রমশ ধ্বংস হচ্ছে জলজ পরিবেশ। সেই সঙ্গে জলজ পরিবেশে টিকে থাকা ব্যাঙের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। জলজ পরিবেশ দূষণ, গুণগত মান নষ্ট হওয়া, জলজ পরিবেশের নিয়ামকগুলোর মান নষ্ট হওয়া, জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, শহরের আয়তন বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক পরিবেশের বিলুপ্তি, রাস্তায় অতিরিক্ত যানবাহনের ফলে ব্যাঙের দুর্ঘটনায় মৃত্যু, পাহাড়ে অবৈধভাবে ব্যাঙ শিকার ইত্যাদি কারণে প্রাণীটির সংখ্যা আজ কমে যাচ্ছে। সংরক্ষিত এলাকার বাইরে আমাদের অগোচরে কত ব্যাঙ হারিয়ে যাচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পর্যন্ত পারছি না।
তাই সময় এসেছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে পরিবেশের এই পরম বন্ধু ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার। বড় কোনো প্রাণী যেরকম সংরক্ষণে গুরুত্ব পায় ঠিক ওই রকম না হলেও ন্যূনতম গুরুত্ব যেন বাংলাদেশের ব্যাঙেরা পায়।
লেখক: বন্যপ্রাণী গবেষক, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিকাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির স্বার্থেও জরুরি ব্যাঙ সংরক্ষণ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ হলেও জীববৈচিত্র্য অনেকই সমৃদ্ধ। ওরিয়েন্টাল নামক প্রাণি-ভৌগলিক অঞ্চলের ইন্দো-বার্মা ও ইন্দো-চায়না হটস্পটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এ দেশ প্রাণীবৈচিত্র্যে তথা বন্যপ্রাণী বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। এ দেশের উত্তর- পূর্বাঞ্চলে এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে পাহাড়ি চির সবুজ বন, দক্ষিণ-পশ্চিমে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, দক্ষিণজুড়ে বঙ্গোপসাগর আর মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিম পর্যন্ত শালবন ও জালের মতো ছড়ানো নদ-নদী। যা সম্মিলিতভাবে গড়ে তুলেছে জীব-বৈচিত্র্যের এক অপূর্ব সমাহার।
এখানকার বন্যপ্রাণীদের একটি অংশ উভচর শ্রেণির সদস্য। বাংলাদেশে Anura (অ্যানুরা) এবং Gymnophiona (জিমনোফিনা) পরিবারের উভচরদের দেখা মেলে। উভচর গবেষণা সংস্থা এম্ফিবিয়ান স্পিসিস অব দ্য ওয়ার্ল্ডের তথ্যমতে বিশ্বে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭৫২ টি। এর মধ্যে অ্যানুরা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ৭ হাজার ৭০৭ টি। তবে বর্তমানে নিত্য-নতুন গবেষণায় আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন নতুন প্রজাতি। বিগত বছরগুলোর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও গবেষণায় বাংলাদেশেও বেড়েছে উভচরের সংখ্যা। আর এদের মধ্যে অন্যতম বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। এরা দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশসহ কৃষি অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের অবস্থা
গত ৫০ বছরের বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যাঙের প্রজাতিগত সংখ্যা ৬৩টি। কিন্তু আমাদের বন্যপ্রাণীবিষয়ক বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই সংখ্যাটি প্রকৃতপক্ষে ১০০-র ওপরে হতে পারে। আর গত ১২ বছরে বাংলাদেশ মোট ২৪টি নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে ৯টি প্রজাতি শুধু যে বাংলাদেশের জন্য নতুন তা নয়, পুরো পৃথিবীর জন্যই নতুন। ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশনের (আইইউসিএন) মূল্যায়িত তথ্য অনুযায়ী ৯ প্রজাতির ব্যাঙকে বিলুপ্তির ঝুঁকির লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যাঙেদের আবাসস্থল
সারাদেশ জুড়েই রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙের সমারোহ। জলজ-স্থলজ সব পরিবেশেই ব্যাঙ পাওয়া যায়, তবে ব্যাঙের জীবন ধারণের জন্য জলজ পরিবেশ অত্যাবশ্যকীয়। তাই সারাদেশের জলাশয়কেন্দ্রিক মিঠাপানিতে ব্যাঙের দেখা মেলে। কুনো ব্যাঙ, কোলা ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, লাউবিচি ব্যাঙ, ঝিঁঝি ব্যাঙ, কটকটি ব্যাঙ, ভেপু ব্যাঙ সচরাচর দেখতে পাওয়া ব্যাঙের প্রজাতি। তবে সিলেট ও চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে বিশেষ করে পাহাড়ি ছড়া এবং ঝিরিতে বেশি এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যাঙের দেখা মেলে। এ ছাড়া শালবন ব্যাঙের জন্য একটি আদর্শ আবাসস্থল। সিলেটের হাওর ও গঙ্গা প্লাবনভূমির জলাভূমিও ব্যাঙের চমৎকার আবাসস্থল। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে ব্যাঙের আনাগোনা বাড়ে। এ সময়টা মূলত ব্যাঙের প্রজনন মৌসুম।
শহরেও থাকে ব্যাঙ, রাখে মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান
বর্তমানে পৃথিবীর ৫৫ শতাংশ মানুষ শহরে বসবাস করে। ফলে কমছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। ব্যাঙ টিকে থাকার জন্য জল ও স্থল দুটিরই প্রয়োজন। কিন্তু শহরের জলজ পরিবেশ দিন দিন দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় শহরগুলো বিশেষ করে ঢাকার কথা যদি চিন্তা করি, বর্ষাকালে ব্যাঙের জন্য প্রয়োজনীয় জলাশয় একেবারেই কম। আর অস্থায়ী যেসব জলাশয় দেখা যায়, সেখানেও পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙের প্রজনন বিঘ্নিত হয়। এ কারণে শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে ব্যাঙ। এতে বেড়ে যাচ্ছে ব্যাঙের খাদ্য মশাসহ ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ। কিছুদিন আগে মশা দমনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জলাশয়ে ব্যাঙ অবমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙগুলো টিকে থাকার মতো পরিবেশ সেখানে আছে কিনা তা কতটা বিবেচনা করা হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের বাহক মশার লার্ভা ব্যাঙাচি অবস্থায় খায় ব্যাঙ। যা মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন, নগরায়ণের ফলে ব্যাঙের আবাসস্থল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রজনন ক্ষেত্রও নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে কমছে তাদের সংখ্যা। প্রকৃতি হারিয়ে ফেলছে ভারসাম্য। ফলাফল হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো মানবজাতি।
হাজার বছর ধরে কুনো ব্যাঙের প্যারোটিড গ্রন্থি ও অন্যান্য ত্বকীয় গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা হয়।
পরিবেশের নির্দেশক ও আবহাওয়া পূর্বাভাসে ব্যাঙ
পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক ব্যাঙ। একটি পরিবেশ বিশেষ করে জলজ পরিবেশ কতটা সুস্থ তার নির্দেশক হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্যশৃঙ্খলে রয়েছে প্রাণীটির বড় ভূমিকা। অর্থাৎ পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনার একটি নির্দেশক হিসেবে কাজ করে ব্যাঙ।
কৃষকের বন্ধু ব্যাঙ
ব্যাঙ এক রাতে শরীরের ওজনের দ্বিগুণ পোকামাকড় খেতে পারে। এই পোকামাকড় ফসলের ক্ষতি করে। এতে অতিরিক্ত কীটনাশক যেমন প্রয়োগ করতে হয় না, তেমন ঠিক থাকে ফসলের গুণগত মান ও মাটির গুনাগুণ। আর ঠিক থাকে প্রকৃতির ভারসাম্য। আবার ব্যাঙের মূত্রে ইউরিয়া-জাতীয় পদার্থ থাকে, যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং ফসলের উৎপাদন ত্বরান্বিত করে। এক হিসেবে দেখা গেছে, একটি কোলা ব্যাঙ তার পুরো জীবনে প্রায় ৪ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে। পর্যাপ্ত ব্যাঙ থাকলে জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়। এতে যে আমরা শুধু আর্থিক ভাবে লাভবান হবো তা নয়, পাব কীটনাশক ও বিষমুক্ত খাবারের সরবরাহ। এতে কীটনাশকের বিষও পরিবেশে ছড়াবে না। এতে পরিবেশ, বিশেষ করে জলজ পরিবেশ থাকবে বিষক্রিয়া এবং দূষণ মুক্ত।
আমাদের সংস্কৃতির অংশ
আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্যাঙ। এখনো বৃষ্টির আশায় দেশীয় প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী দেওয়া হয় ব্যাঙের বিয়ে। এ ছাড়াও ব্যাঙ নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রবাদ প্রবচন। যা বহুকাল ধরে বাংলায় প্রচলিত। পাশাপাশি বাংলাদেশের লোকসাহিত্য, রূপকথা, উপন্যাস, কবিতায় বারবার উঠে এসেছে এই প্রাণীটির নাম। খনার বচনেও এসেছে ব্যাঙের কথা, ‘ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, শীঘ্রই হবে বৃষ্টি জান’।
মানব কল্যাণেই চাই বাংলাদেশে ব্যাঙ সংরক্ষণ
সংরক্ষিত এলাকাগুলোর বাইরে এই নতুন আবিষ্কৃত ব্যাঙ বা বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা ব্যাঙের একটি বড় অংশ রয়েছে। আমাদের হুমকিগ্রস্ত ৯টি ব্যাঙের মধ্যে ৬টি ব্যাঙই সংরক্ষিত এলাকার বাইরে এমনকি নতুন আবিষ্কৃত ২৪টি ব্যাঙের মধ্যে ৯টি আবিষ্কৃত হয়েছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে। এ ছাড়া ঢাকাইয়া ঝিঁঝি ব্যাঙ পাওয়া গেছে দূষিত শহর ঢাকা থেকে। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত সব ব্যাঙই কয়েকটি সংরক্ষিত এলাকায় পাওয়া গেছে। এই তথ্য এটাই নির্দেশ করে যে, ব্যাঙ নিয়ে এই অঞ্চলে আরও বিস্তৃত গবেষণা হলে নতুন নতুন ব্যাঙ প্রজাতির তথ্য বের হয়ে আসবে।
আমাদের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বের চিরসবুজ বা মিশ্র চিরসবুজ বন বন্যপ্রাণীর জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হলেও আমাদের সারা দেশই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, গঙ্গা অববাহিকায় তিন ধরনের বিপন্ন প্রজাতির ব্যাঙ পাওয়া যায় এবং ২ প্রজাতির নতুন ব্যাঙ এখান থেকে পাওয়া গেছে। এ রকম প্রতিটি অঞ্চলই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বিশেষ করে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে ব্যাঙেরা আজ হুমকির সম্মুখীন। ক্রমশ ধ্বংস হচ্ছে জলজ পরিবেশ। সেই সঙ্গে জলজ পরিবেশে টিকে থাকা ব্যাঙের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। জলজ পরিবেশ দূষণ, গুণগত মান নষ্ট হওয়া, জলজ পরিবেশের নিয়ামকগুলোর মান নষ্ট হওয়া, জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, শহরের আয়তন বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক পরিবেশের বিলুপ্তি, রাস্তায় অতিরিক্ত যানবাহনের ফলে ব্যাঙের দুর্ঘটনায় মৃত্যু, পাহাড়ে অবৈধভাবে ব্যাঙ শিকার ইত্যাদি কারণে প্রাণীটির সংখ্যা আজ কমে যাচ্ছে। সংরক্ষিত এলাকার বাইরে আমাদের অগোচরে কত ব্যাঙ হারিয়ে যাচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পর্যন্ত পারছি না।
তাই সময় এসেছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে পরিবেশের এই পরম বন্ধু ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার। বড় কোনো প্রাণী যেরকম সংরক্ষণে গুরুত্ব পায় ঠিক ওই রকম না হলেও ন্যূনতম গুরুত্ব যেন বাংলাদেশের ব্যাঙেরা পায়।
লেখক: বন্যপ্রাণী গবেষক, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিকাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)

দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা।
৬ ঘণ্টা আগে
আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৩ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
৯ ঘণ্টা আগে
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
২ দিন আগে
জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা। আইকিউএয়ারের সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ১৫৪। যা নির্দেশ করে, ঢাকার বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।
আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি— গোড়ান, পেয়ারাবাগ রেল লাইন, বেচারাম দেউরি, কল্যাণপুর, দক্ষিণ পল্লবী, শান্তা ফোরাম, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।
দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে থাকা দিল্লির একিউআই স্কোর ৫০৭। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো মিশরের কায়রো (১৯১), পাকিস্তানের লাহোর (১৯১), ভারতের কলকাতা (১৮১) ও মুম্বাই (১৬৫)।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা। আইকিউএয়ারের সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ১৫৪। যা নির্দেশ করে, ঢাকার বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।
আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি— গোড়ান, পেয়ারাবাগ রেল লাইন, বেচারাম দেউরি, কল্যাণপুর, দক্ষিণ পল্লবী, শান্তা ফোরাম, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।
দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে থাকা দিল্লির একিউআই স্কোর ৫০৭। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো মিশরের কায়রো (১৯১), পাকিস্তানের লাহোর (১৯১), ভারতের কলকাতা (১৮১) ও মুম্বাই (১৬৫)।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃ
১২ আগস্ট ২০২৪
আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৩ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
৯ ঘণ্টা আগে
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
২ দিন আগে
জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে সকালবেলা রাজধানী ঢাকার আকাশ ছিল রৌদ্রোজ্জ্বল। তাপমাত্রাও গতকাল শনিবারের চেয়ে বেড়েছে। আগের দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ দশমিক ৯ থেকে সামান্য বেড়ে আজ সকাল ৬টায় ছিল ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৩ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সাধারণত অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৪ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৪ মিনিটে।

আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে সকালবেলা রাজধানী ঢাকার আকাশ ছিল রৌদ্রোজ্জ্বল। তাপমাত্রাও গতকাল শনিবারের চেয়ে বেড়েছে। আগের দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ দশমিক ৯ থেকে সামান্য বেড়ে আজ সকাল ৬টায় ছিল ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৩ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সাধারণত অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৪ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৪ মিনিটে।

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃ
১২ আগস্ট ২০২৪
দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা।
৬ ঘণ্টা আগে
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
২ দিন আগে
জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে আগামী ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
বাংলাদেশসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মোট ১৪টি দেশের প্রায় ১ হাজার ৫০০ বিশিষ্ট পরিবেশবিদ, গবেষক, নীতিনির্ধারক ও সামাজিক আন্দোলনের নেতাদের উপস্থিতিতে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই জলবায়ু অধিকারভিত্তিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সম্মেলনের আগে আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর আহ্বায়ক কমিটির আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমাবেশের ঘোষণা দেন অ্যাসেম্বলি কমিটির সদস্যসচিব শরীফ জামিল।
‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর লক্ষ্য, প্রস্তুতি, অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি অতিথিসহ দুই দিনের সেশন পরিকল্পনা, র্যালি এবং অন্যান্য আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুই দিনব্যাপী এই সমাবেশের প্রথম দিন ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ক্লাইমেট র্যালিতে অংশগ্রহণ এবং র্যালি শেষে ক্লাইমেট জাস্টিজ এসেম্বলি ২০২৫ উদ্বোধন করবেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও ধরার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এই উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
দিনব্যাপী প্রোগ্রামে ৩টি প্লান্যারি সেশন থাকবে। বাংলাদেশে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল থেকে আসা ভুক্তভোগীরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেবেন।
দ্বিতীয় দিনে ১৪ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় সমাবেশের প্রথম দিনের আলোচনার সারসংক্ষেপ, সুপারিশ ও করণীয় নিয়ে উপস্থাপন করা হবে ‘ড্রাফট অ্যাসেম্বলি ডিক্লারেশন’।
শরীফ জামিল বলেন, ‘প্রান্তিক এবং অপ্রান্তিক সকল মানুষের সচেতনতার মধ্য দিয়েই রূপান্তরের বাস্তবতার ন্যায্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সেই লক্ষ্যে এই জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫।’
ক্লাইমেট জাস্টিজ অ্যাসেম্বলি ২০২৫-এর আহ্বায়ক ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘পরিবেশ ও জলবায়ু বিশ্বব্যাপী হুমকির মুখে, ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় আমাদের পরিবেশকর্মীরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছে; যা একটি মহৎ কাজ। কোনো কিছুর বিনিময়ে এ কাজের মূল্যায়ন সম্ভব নয়। কিন্তু এই ঝুঁকি মোকাবিলায় অর্থায়ন প্রয়োজন। আমার যে জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ করতে যাচ্ছি, তাতে অনেক সহযোগীর সহযোগিতা প্রয়োজন রয়েছে, তা-ও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সঠিক রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে জলবায়ু ন্যায্যতার ন্যায্য প্রতিফলন পাওয়া সম্ভব।
এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন কো-কনভেনর, ক্লাইমেট জাস্টিজ অ্যাসেম্বলি ২০২৫-এর কো-কনভেনর এম এস সিদ্দিকি, সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা, সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল হক, শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাকিলা আজিজ এবং জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫ এর সমন্বয়ক এবং সহযোগী সমন্বয়কেরা।
জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫-এর আয়োজক ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’ (ধরা)। সহযোগী আয়োজক সিপিআরডি, কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিসেস, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, মিশনগ্রিন বাংলাদেশ, ব্রাইটার্স, ওএবি ফাউন্ডেশন, এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেবট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, অলটারনেটিভ ল কালেকটিভ, আর্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক, ফসিল ফুয়েল নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি ইনিশিয়েটিভ, ফসিল ফ্রি জাপান, গ্রিন কাউন্সিল, জাপান সেন্টার ফর আ সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোসাইটি, এলডিসি ওয়াচ, মাইনস, মিনারেলস অ্যান্ড পিপল, নেটজভের্ক এনার্জিভেন্ডে, ফিলিপাইন মুভমেন্ট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট ফর ইকুটেবল ডেভেলপমেন্ট, রিভারফক্স, সিডব্লিউটি।

ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে আগামী ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
বাংলাদেশসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মোট ১৪টি দেশের প্রায় ১ হাজার ৫০০ বিশিষ্ট পরিবেশবিদ, গবেষক, নীতিনির্ধারক ও সামাজিক আন্দোলনের নেতাদের উপস্থিতিতে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই জলবায়ু অধিকারভিত্তিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সম্মেলনের আগে আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর আহ্বায়ক কমিটির আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমাবেশের ঘোষণা দেন অ্যাসেম্বলি কমিটির সদস্যসচিব শরীফ জামিল।
‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর লক্ষ্য, প্রস্তুতি, অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি অতিথিসহ দুই দিনের সেশন পরিকল্পনা, র্যালি এবং অন্যান্য আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুই দিনব্যাপী এই সমাবেশের প্রথম দিন ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ক্লাইমেট র্যালিতে অংশগ্রহণ এবং র্যালি শেষে ক্লাইমেট জাস্টিজ এসেম্বলি ২০২৫ উদ্বোধন করবেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও ধরার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এই উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
দিনব্যাপী প্রোগ্রামে ৩টি প্লান্যারি সেশন থাকবে। বাংলাদেশে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল থেকে আসা ভুক্তভোগীরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেবেন।
দ্বিতীয় দিনে ১৪ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় সমাবেশের প্রথম দিনের আলোচনার সারসংক্ষেপ, সুপারিশ ও করণীয় নিয়ে উপস্থাপন করা হবে ‘ড্রাফট অ্যাসেম্বলি ডিক্লারেশন’।
শরীফ জামিল বলেন, ‘প্রান্তিক এবং অপ্রান্তিক সকল মানুষের সচেতনতার মধ্য দিয়েই রূপান্তরের বাস্তবতার ন্যায্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সেই লক্ষ্যে এই জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫।’
ক্লাইমেট জাস্টিজ অ্যাসেম্বলি ২০২৫-এর আহ্বায়ক ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘পরিবেশ ও জলবায়ু বিশ্বব্যাপী হুমকির মুখে, ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় আমাদের পরিবেশকর্মীরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছে; যা একটি মহৎ কাজ। কোনো কিছুর বিনিময়ে এ কাজের মূল্যায়ন সম্ভব নয়। কিন্তু এই ঝুঁকি মোকাবিলায় অর্থায়ন প্রয়োজন। আমার যে জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ করতে যাচ্ছি, তাতে অনেক সহযোগীর সহযোগিতা প্রয়োজন রয়েছে, তা-ও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সঠিক রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে জলবায়ু ন্যায্যতার ন্যায্য প্রতিফলন পাওয়া সম্ভব।
এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন কো-কনভেনর, ক্লাইমেট জাস্টিজ অ্যাসেম্বলি ২০২৫-এর কো-কনভেনর এম এস সিদ্দিকি, সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা, সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল হক, শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাকিলা আজিজ এবং জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫ এর সমন্বয়ক এবং সহযোগী সমন্বয়কেরা।
জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫-এর আয়োজক ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’ (ধরা)। সহযোগী আয়োজক সিপিআরডি, কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিসেস, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, মিশনগ্রিন বাংলাদেশ, ব্রাইটার্স, ওএবি ফাউন্ডেশন, এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেবট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, অলটারনেটিভ ল কালেকটিভ, আর্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক, ফসিল ফুয়েল নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি ইনিশিয়েটিভ, ফসিল ফ্রি জাপান, গ্রিন কাউন্সিল, জাপান সেন্টার ফর আ সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোসাইটি, এলডিসি ওয়াচ, মাইনস, মিনারেলস অ্যান্ড পিপল, নেটজভের্ক এনার্জিভেন্ডে, ফিলিপাইন মুভমেন্ট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট ফর ইকুটেবল ডেভেলপমেন্ট, রিভারফক্স, সিডব্লিউটি।

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃ
১২ আগস্ট ২০২৪
দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা।
৬ ঘণ্টা আগে
আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৩ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
৯ ঘণ্টা আগে
জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ২০ কিলোমিটার গভীরে। মূল কম্পনের পর বেশ কয়েকটি ছোট আফটারশকও অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে জাপানের পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকাগুলোর জন্য সতর্কতা হিসেবে ‘সুনামি অ্যাডভাইজরি’ জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, ঢেউগুলো প্রায় এক মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে, তাই উপকূলবাসীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে একই অঞ্চলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এতে বহু বাসিন্দা আহত হয়েছেন। সর্বশেষ পরিস্থিতি ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।

জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ২০ কিলোমিটার গভীরে। মূল কম্পনের পর বেশ কয়েকটি ছোট আফটারশকও অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে জাপানের পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকাগুলোর জন্য সতর্কতা হিসেবে ‘সুনামি অ্যাডভাইজরি’ জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, ঢেউগুলো প্রায় এক মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে, তাই উপকূলবাসীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে একই অঞ্চলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এতে বহু বাসিন্দা আহত হয়েছেন। সর্বশেষ পরিস্থিতি ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।

বর্ষাকাল চলছে। এই বৃষ্টির সঙ্গে অনন্য সম্পর্ক যে প্রাণীটির সেটি ব্যাঙ। বাঙালির বর্ষাকালের সঙ্গে ব্যাঙের সম্পর্ক আরও গভীর। প্রাচীনকাল থেকে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও। বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, বাংলাদেশের কৃ
১২ আগস্ট ২০২৪
দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা।
৬ ঘণ্টা আগে
আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৩ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
৯ ঘণ্টা আগে
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।
২ দিন আগে