
ইকুয়েডরের চকো ক্লাউড ফরেস্ট বিখ্যাত তার বৈচিত্র্যময় বন্য প্রাণী আর উদ্ভিদের জন্য। উঁচু উঁচু সব গাছপালার ওপরে ঝুলে থাকা মেঘেদের জন্য এ ধরনের জঙ্গল ‘মেঘ অরণ্য’ বা ক্লাউড ফরেস্ট নাম পায়। ক্লাউড ফরেস্টে প্রচুর বৃষ্টিপাতও হয়। চকো ক্লাউড ফরেস্ট সম্প্রতি আরেকটি কারণে মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছে। সেটি বনের মধ্যে তৈরি করা বিলাসবহুল এক হোটেল।
চকো ক্লাউড ফরেস্টের মাত্র ২ শতাংশ প্রাকৃতিক বন অবশিষ্ট আছে এখন। এমন পরিস্থিতিতে মাশপি লজ বিলাসবহুল কিন্তু জঙ্গল ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উদ্ভাবনী এক পদক্ষেপ নিয়েছে। রোমাঞ্চপ্রেমী অতিথিদের জঙ্গল অভিযানে এখানকার বন্য প্রাণী সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেওয়া হয়। ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো থেকে হোটেলটির দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের আশপাশে।
সকালের সূর্যের আলো যখন ঘন কুয়াশার পর্দায় ঢাকা চকো ক্লাউড ফরেস্টের গাছপালার মাঝখান দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে বের হচ্ছে, তখন মাশপি লজের একজন পর্যটক হয়তো গাছের শাখায় শাখায় উড়ে বেড়ানো রঙিন প্রজাপতি দেখছেন মুগ্ধ চোখে। এটা তিনি করছেন তাঁর শয্যায় শরীর এলিয়ে দিয়ে। বাইরের জগৎ এবং তাঁর মধ্যে ব্যবধান বলতে একটি কাচের দেয়াল। ‘ইকো-ট্যুরিজম’ নামের যে শব্দটির সঙ্গে আমরা পরিচিত, ইকুয়েডরের জঙ্গলের মাঝখানে অবস্থিত মাশপি লজের চেয়ে এর বড় উদাহরণ আর কিছু হতে পারে না।
জঙ্গলের মধ্যে অনেক উঁচু কোনো দালান নয় এটি। বিশাল সব কাচের জানালাসহ এর নকশা এভাবে করা হয়েছে, যেন জঙ্গল ও লজটির মধ্যে একটি নিবিড় সম্পর্ক থাকে।
হোটেলটি হয়তো ধনী পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে। তবে এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে স্থানীয় অধিবাসীদের জীবন। মাশপির শতকরা ৮০ শতাংশ কর্মচারী আশপাশের অঞ্চলের বাসিন্দা। পর্যটনের বিকাশ মানেই এখনকার মানুষের বেঁচে থাকার একটি অবলম্বন তৈরি হওয়া। এর বিকল্প পেশা তাঁদের কাছে বনের গাছ কাটা ও খনি থেকে স্বর্ণ আহরণ। আর এগুলো করেই এখানকার মূল প্রাকৃতিক অরণ্যের কেবল ২ শতাংশ অবশিষ্ট আছে আর। এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
এই হতাশাজনক পরিসংখ্যানই কুইটোর সাবেক মেয়র রোক সেভিয়াকে ২০০১ সালে চকো ক্লাউড ফরেস্টের এক টুকরো জমি কিনতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। এটা তিনি করেন শুধু সংরক্ষণের স্বার্থেই। তারপর তিনি ক্রমাগত জমি কিনতে থাকেন। এর ফলাফল ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি সংরক্ষিত বন, ৬ হাজার ১৭৮ একরের মাশপি রিজার্ভ।
একটি গাছও কাটা পড়েনি গোটা লজটি বানাতে। তবে এটি তৈরির উপকরণ সংগ্রহ করা হয়েছে আশপাশের এলাকা থেকে, যেন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসারণ কম হয়।
গত এক দশকে মাশপি রিজার্ভের গবেষণায় ১৬টি নতুন প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে, যা চকো ক্লাউড ফরেস্ট সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
লজের রেস্তোরাঁটিতে ব্যবহার করা বেশির ভাগ উপাদানের উৎস ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকা। এটি ১৫টি স্থানীয় পরিবারের জীবিকা নির্বাহে এবং নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে সাহায্য করে।

অরণ্যটি রক্ষায় এবং টেকসই পর্যটনের শক্তি ব্যবহার করে স্থানীয় সম্প্রদায়কে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনার মিশন নিয়ে কাজ শুরু করা সেভিয়া একটি পুরোনো করাতকলের জায়গায় মাশপি লজ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। ‘আমি দেখতে চাই যে মাশপির অতিথিরা এই বিস্ময়কর বন সংরক্ষণের উৎসাহী একজন মানুষ হিসেবে তাঁদের বাড়িতে ফিরে যাবেন।’ তিনি বলেন। সেভিয়া আশা করেন, এখানকার জঙ্গল ভ্রমণে যে অভিজ্ঞতা হয়, তা-ই অতিথিদের অরণ্যের প্রতি ভালোবাসার জন্ম নেয়।
মাশপির একজন আবাসিক জীববিজ্ঞানীর নেতৃত্বে চকো ক্লাউড ফরেস্ট সম্পর্কে পরিচিতিমূলক কিছু আলোচনার পর পর্যটকদের একটি দলের সঙ্গে হয়তো আপনি মাশপির প্রধান আকর্ষণ ‘ড্রাগনফ্লাই ক্যানোপি গন্দোলা’য় চেপে বসবেন। এটি আসলে জঙ্গলের ওপর দিয়ে দুই কিলোমিটারের একটি কেব্ল কার রাইড।
ছাদ ছাড়া ধাতুর তৈরি কেব্ল কারটিতে ভ্রমণের সময় উঁচু উঁচু গাছগুলোর মাঝখান দিয়ে যাবেন। চাইলেই কোনো গাছের পাতা ছুঁয়ে দেখতে পারবেন। হয়তো বৃক্ষ শিখরে উঠে পড়া কোনো কাঠবিড়ালির দেখা মিলে যাবে। পাশ দিয়ে রঙিন ডানা মেলে উড়ে যাবে কোনো পাখি। ওপর থেকে নিচের অরণ্যও অন্য এক সৌন্দর্য নিয়ে ধরা দেবে আপনার চোখে। এত ওপরের আশ্চর্য শান্ত পরিবেশও আনন্দিত করবে আপনাকে।
এই যাত্রাপথে সঙ্গে থাকা গাইড হয়তো আপনাকে সংরক্ষণে মাশপি লজের নেওয়া নানা পদক্ষেপের বিষয় জানাবে। এখানকার বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষার উদ্দেশ্য নিয়েই এর পুরো নকশা করা হয়েছে। ‘বনের রক্ষক’ নামে পরিচয় করিয়ে দেওয়া সৌরশক্তিচালিত ১০টি অডিও রেকর্ডার বসিয়েছে মাশপি লজ কর্তৃপক্ষ সংরক্ষিত বনটির বিভিন্ন অংশে। এটি করাতের শব্দ শনাক্ত করতে এবং এই অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে পার্কের রেঞ্জারদের সতর্ক করতে সক্ষম।
প্রাণীদের গতিবিধি ও চলাফেরা পরীক্ষার জন্য ক্যামেরা ট্র্যাপও বসানো হয়েছে জঙ্গলের নানা অংশে। লজের পাশের একটি ছোট পরীক্ষাগারে মাশপিস রিসার্চ সেন্টারের গবেষকেরা ক্যামেরাবন্দী হওয়া ছবিগুলো বিশ্লেষণ করেন। সংরক্ষিত বনটিতে ১৬টি নতুন প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মাশপি ম্যাগনোলিয়া নামের একটি উদ্ভিদ। এর কাণ্ডে বেড়ে ওঠে অর্কিডের মতো কয়েক ডজন পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ।
‘এ কারণেই এখানে গবেষণা করা এত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অনেক নতুন প্রজাতি আবিষ্কারের অপেক্ষায় আছে।’ বলেন মাশপির আবাসিক জীববিজ্ঞানী চিয়ারা করেরা। তিনি সংরক্ষিত এলাকাটির বন্য প্রাণী নিয়ে গবেষণা করছেন এবং লজের ধারেই বিজ্ঞানের কাছে নতুন এক জাতের অর্কিড আবিষ্কার করেছেন।
মেঘ-অরণ্যের বন্য প্রাণী, গাছপালা ও সংরক্ষণের প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে পর্যটকদের জঙ্গলের গভীরে নিয়ে যাওয়ার কেবল একটি পদ্ধতি ক্যানোপি গন্দোলা। এ ছাড়া লজের ‘লাইফ সেন্টারে’ প্রজাপতি এবং এদের আচরণ সম্পর্কে জানানো হয়। আবার দুজন উঠতে পারেন গন্দোলার এমন একটি পা-চালিত সংস্করণ স্কাই বাইকে চেপেও জঙ্গলের অন্ধি-সন্ধিতে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হয়। এ সময় হয়তো দেখা হয়ে যেতে পারে খুদে পাখি হামিংবার্ডদের সঙ্গে।
শুধু জঙ্গলে ঘুরে বেড়ালে তো হবে না, খেতেও হবে। লজের ডাইনিং রুমে চারপাশের অরণ্যের দৃশ্য উপভোগ করতে করতে তিন বেলা খেতে পারবেন। মেন্যু ঋতুভেদে বদলায় এবং জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন উদ্ভিদ স্বাদে, গন্ধে খাবারগুলোকে করে তুলে অনন্য। যেমন বন্য রসুন এবং চিল্লাগুয়া (ধনেপাতার মতো) ব্যবহার করা হয় এখানকার নানা পদের খাবারে।
হয়তো সবজিতে ভরপুর একটি ‘মাউন্টেন স্টু’ ভাজা কাঁচা কলার পাশে প্লেটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে আপনার। এতে শোভা বর্ধক হিসেবে থাকবে খাওয়ার উপযোগী ফুল। আখের রসের সঙ্গে মিষ্টি আনারস দিয়েও একটি পদ পরিবেশন করা হতে পারে।
বেশির ভাগ উপাদানই লজের ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়। ইকুয়েডরের নারীদের একটি নিয়মিত আয়ের উৎস তৈরির জন্য নারী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে কেনা হয় মধু, জ্যামসহ অনেক জিনিসই।
রাতেও গাইড জঙ্গল ভ্রমণে নিয়ে যাবে আপনাকে। হেডল্যাম্পের আলোয় দেখবেন নানা ধরনের গাছ। হয়তো কোনো গাছে দেখা পেয়ে যাবেন একটি অপোসামের (বৃক্ষচর স্তন্যপায়ী প্রাণী), কিংবা চোখ আটকে যাবে বিশ্রামরত কোনো ট্যারান্টুলা মাকড়সায়। সকালে লজের কাছের ৮৫ ফুট উঁচু অবজারভেশন টাওয়ারে দাঁড়ালেই চোখ জুড়িয়ে যাবে, দেখবেন মেঘেরা কীভাবে উঁচু গাছপালার ওপরে আর পাহাড়চূড়ায় জেঁকে বসেছে। তারপর যখন আশ্চর্য এই অরণ্য ও মাশপি লজ থেকে ফিরে আসবেন, আপনার মন চাইবে সেখানে কিংবা এমন কোনো মনোমুগ্ধকর রাজ্যে ফিরে যেতে এখনই তল্পিতল্পা গুছানো শুরু করতে।
সূত্র: বিবিসি

ইকুয়েডরের চকো ক্লাউড ফরেস্ট বিখ্যাত তার বৈচিত্র্যময় বন্য প্রাণী আর উদ্ভিদের জন্য। উঁচু উঁচু সব গাছপালার ওপরে ঝুলে থাকা মেঘেদের জন্য এ ধরনের জঙ্গল ‘মেঘ অরণ্য’ বা ক্লাউড ফরেস্ট নাম পায়। ক্লাউড ফরেস্টে প্রচুর বৃষ্টিপাতও হয়। চকো ক্লাউড ফরেস্ট সম্প্রতি আরেকটি কারণে মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছে। সেটি বনের মধ্যে তৈরি করা বিলাসবহুল এক হোটেল।
চকো ক্লাউড ফরেস্টের মাত্র ২ শতাংশ প্রাকৃতিক বন অবশিষ্ট আছে এখন। এমন পরিস্থিতিতে মাশপি লজ বিলাসবহুল কিন্তু জঙ্গল ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উদ্ভাবনী এক পদক্ষেপ নিয়েছে। রোমাঞ্চপ্রেমী অতিথিদের জঙ্গল অভিযানে এখানকার বন্য প্রাণী সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেওয়া হয়। ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো থেকে হোটেলটির দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের আশপাশে।
সকালের সূর্যের আলো যখন ঘন কুয়াশার পর্দায় ঢাকা চকো ক্লাউড ফরেস্টের গাছপালার মাঝখান দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে বের হচ্ছে, তখন মাশপি লজের একজন পর্যটক হয়তো গাছের শাখায় শাখায় উড়ে বেড়ানো রঙিন প্রজাপতি দেখছেন মুগ্ধ চোখে। এটা তিনি করছেন তাঁর শয্যায় শরীর এলিয়ে দিয়ে। বাইরের জগৎ এবং তাঁর মধ্যে ব্যবধান বলতে একটি কাচের দেয়াল। ‘ইকো-ট্যুরিজম’ নামের যে শব্দটির সঙ্গে আমরা পরিচিত, ইকুয়েডরের জঙ্গলের মাঝখানে অবস্থিত মাশপি লজের চেয়ে এর বড় উদাহরণ আর কিছু হতে পারে না।
জঙ্গলের মধ্যে অনেক উঁচু কোনো দালান নয় এটি। বিশাল সব কাচের জানালাসহ এর নকশা এভাবে করা হয়েছে, যেন জঙ্গল ও লজটির মধ্যে একটি নিবিড় সম্পর্ক থাকে।
হোটেলটি হয়তো ধনী পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে। তবে এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে স্থানীয় অধিবাসীদের জীবন। মাশপির শতকরা ৮০ শতাংশ কর্মচারী আশপাশের অঞ্চলের বাসিন্দা। পর্যটনের বিকাশ মানেই এখনকার মানুষের বেঁচে থাকার একটি অবলম্বন তৈরি হওয়া। এর বিকল্প পেশা তাঁদের কাছে বনের গাছ কাটা ও খনি থেকে স্বর্ণ আহরণ। আর এগুলো করেই এখানকার মূল প্রাকৃতিক অরণ্যের কেবল ২ শতাংশ অবশিষ্ট আছে আর। এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
এই হতাশাজনক পরিসংখ্যানই কুইটোর সাবেক মেয়র রোক সেভিয়াকে ২০০১ সালে চকো ক্লাউড ফরেস্টের এক টুকরো জমি কিনতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। এটা তিনি করেন শুধু সংরক্ষণের স্বার্থেই। তারপর তিনি ক্রমাগত জমি কিনতে থাকেন। এর ফলাফল ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি সংরক্ষিত বন, ৬ হাজার ১৭৮ একরের মাশপি রিজার্ভ।
একটি গাছও কাটা পড়েনি গোটা লজটি বানাতে। তবে এটি তৈরির উপকরণ সংগ্রহ করা হয়েছে আশপাশের এলাকা থেকে, যেন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসারণ কম হয়।
গত এক দশকে মাশপি রিজার্ভের গবেষণায় ১৬টি নতুন প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে, যা চকো ক্লাউড ফরেস্ট সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
লজের রেস্তোরাঁটিতে ব্যবহার করা বেশির ভাগ উপাদানের উৎস ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকা। এটি ১৫টি স্থানীয় পরিবারের জীবিকা নির্বাহে এবং নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে সাহায্য করে।

অরণ্যটি রক্ষায় এবং টেকসই পর্যটনের শক্তি ব্যবহার করে স্থানীয় সম্প্রদায়কে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনার মিশন নিয়ে কাজ শুরু করা সেভিয়া একটি পুরোনো করাতকলের জায়গায় মাশপি লজ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। ‘আমি দেখতে চাই যে মাশপির অতিথিরা এই বিস্ময়কর বন সংরক্ষণের উৎসাহী একজন মানুষ হিসেবে তাঁদের বাড়িতে ফিরে যাবেন।’ তিনি বলেন। সেভিয়া আশা করেন, এখানকার জঙ্গল ভ্রমণে যে অভিজ্ঞতা হয়, তা-ই অতিথিদের অরণ্যের প্রতি ভালোবাসার জন্ম নেয়।
মাশপির একজন আবাসিক জীববিজ্ঞানীর নেতৃত্বে চকো ক্লাউড ফরেস্ট সম্পর্কে পরিচিতিমূলক কিছু আলোচনার পর পর্যটকদের একটি দলের সঙ্গে হয়তো আপনি মাশপির প্রধান আকর্ষণ ‘ড্রাগনফ্লাই ক্যানোপি গন্দোলা’য় চেপে বসবেন। এটি আসলে জঙ্গলের ওপর দিয়ে দুই কিলোমিটারের একটি কেব্ল কার রাইড।
ছাদ ছাড়া ধাতুর তৈরি কেব্ল কারটিতে ভ্রমণের সময় উঁচু উঁচু গাছগুলোর মাঝখান দিয়ে যাবেন। চাইলেই কোনো গাছের পাতা ছুঁয়ে দেখতে পারবেন। হয়তো বৃক্ষ শিখরে উঠে পড়া কোনো কাঠবিড়ালির দেখা মিলে যাবে। পাশ দিয়ে রঙিন ডানা মেলে উড়ে যাবে কোনো পাখি। ওপর থেকে নিচের অরণ্যও অন্য এক সৌন্দর্য নিয়ে ধরা দেবে আপনার চোখে। এত ওপরের আশ্চর্য শান্ত পরিবেশও আনন্দিত করবে আপনাকে।
এই যাত্রাপথে সঙ্গে থাকা গাইড হয়তো আপনাকে সংরক্ষণে মাশপি লজের নেওয়া নানা পদক্ষেপের বিষয় জানাবে। এখানকার বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষার উদ্দেশ্য নিয়েই এর পুরো নকশা করা হয়েছে। ‘বনের রক্ষক’ নামে পরিচয় করিয়ে দেওয়া সৌরশক্তিচালিত ১০টি অডিও রেকর্ডার বসিয়েছে মাশপি লজ কর্তৃপক্ষ সংরক্ষিত বনটির বিভিন্ন অংশে। এটি করাতের শব্দ শনাক্ত করতে এবং এই অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে পার্কের রেঞ্জারদের সতর্ক করতে সক্ষম।
প্রাণীদের গতিবিধি ও চলাফেরা পরীক্ষার জন্য ক্যামেরা ট্র্যাপও বসানো হয়েছে জঙ্গলের নানা অংশে। লজের পাশের একটি ছোট পরীক্ষাগারে মাশপিস রিসার্চ সেন্টারের গবেষকেরা ক্যামেরাবন্দী হওয়া ছবিগুলো বিশ্লেষণ করেন। সংরক্ষিত বনটিতে ১৬টি নতুন প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মাশপি ম্যাগনোলিয়া নামের একটি উদ্ভিদ। এর কাণ্ডে বেড়ে ওঠে অর্কিডের মতো কয়েক ডজন পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ।
‘এ কারণেই এখানে গবেষণা করা এত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অনেক নতুন প্রজাতি আবিষ্কারের অপেক্ষায় আছে।’ বলেন মাশপির আবাসিক জীববিজ্ঞানী চিয়ারা করেরা। তিনি সংরক্ষিত এলাকাটির বন্য প্রাণী নিয়ে গবেষণা করছেন এবং লজের ধারেই বিজ্ঞানের কাছে নতুন এক জাতের অর্কিড আবিষ্কার করেছেন।
মেঘ-অরণ্যের বন্য প্রাণী, গাছপালা ও সংরক্ষণের প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে পর্যটকদের জঙ্গলের গভীরে নিয়ে যাওয়ার কেবল একটি পদ্ধতি ক্যানোপি গন্দোলা। এ ছাড়া লজের ‘লাইফ সেন্টারে’ প্রজাপতি এবং এদের আচরণ সম্পর্কে জানানো হয়। আবার দুজন উঠতে পারেন গন্দোলার এমন একটি পা-চালিত সংস্করণ স্কাই বাইকে চেপেও জঙ্গলের অন্ধি-সন্ধিতে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হয়। এ সময় হয়তো দেখা হয়ে যেতে পারে খুদে পাখি হামিংবার্ডদের সঙ্গে।
শুধু জঙ্গলে ঘুরে বেড়ালে তো হবে না, খেতেও হবে। লজের ডাইনিং রুমে চারপাশের অরণ্যের দৃশ্য উপভোগ করতে করতে তিন বেলা খেতে পারবেন। মেন্যু ঋতুভেদে বদলায় এবং জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন উদ্ভিদ স্বাদে, গন্ধে খাবারগুলোকে করে তুলে অনন্য। যেমন বন্য রসুন এবং চিল্লাগুয়া (ধনেপাতার মতো) ব্যবহার করা হয় এখানকার নানা পদের খাবারে।
হয়তো সবজিতে ভরপুর একটি ‘মাউন্টেন স্টু’ ভাজা কাঁচা কলার পাশে প্লেটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে আপনার। এতে শোভা বর্ধক হিসেবে থাকবে খাওয়ার উপযোগী ফুল। আখের রসের সঙ্গে মিষ্টি আনারস দিয়েও একটি পদ পরিবেশন করা হতে পারে।
বেশির ভাগ উপাদানই লজের ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়। ইকুয়েডরের নারীদের একটি নিয়মিত আয়ের উৎস তৈরির জন্য নারী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে কেনা হয় মধু, জ্যামসহ অনেক জিনিসই।
রাতেও গাইড জঙ্গল ভ্রমণে নিয়ে যাবে আপনাকে। হেডল্যাম্পের আলোয় দেখবেন নানা ধরনের গাছ। হয়তো কোনো গাছে দেখা পেয়ে যাবেন একটি অপোসামের (বৃক্ষচর স্তন্যপায়ী প্রাণী), কিংবা চোখ আটকে যাবে বিশ্রামরত কোনো ট্যারান্টুলা মাকড়সায়। সকালে লজের কাছের ৮৫ ফুট উঁচু অবজারভেশন টাওয়ারে দাঁড়ালেই চোখ জুড়িয়ে যাবে, দেখবেন মেঘেরা কীভাবে উঁচু গাছপালার ওপরে আর পাহাড়চূড়ায় জেঁকে বসেছে। তারপর যখন আশ্চর্য এই অরণ্য ও মাশপি লজ থেকে ফিরে আসবেন, আপনার মন চাইবে সেখানে কিংবা এমন কোনো মনোমুগ্ধকর রাজ্যে ফিরে যেতে এখনই তল্পিতল্পা গুছানো শুরু করতে।
সূত্র: বিবিসি

ইকুয়েডরের চকো ক্লাউড ফরেস্ট বিখ্যাত তার বৈচিত্র্যময় বন্য প্রাণী আর উদ্ভিদের জন্য। উঁচু উঁচু সব গাছপালার ওপরে ঝুলে থাকা মেঘেদের জন্য এ ধরনের জঙ্গল ‘মেঘ অরণ্য’ বা ক্লাউড ফরেস্ট নাম পায়। ক্লাউড ফরেস্টে প্রচুর বৃষ্টিপাতও হয়। চকো ক্লাউড ফরেস্ট সম্প্রতি আরেকটি কারণে মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছে। সেটি বনের মধ্যে তৈরি করা বিলাসবহুল এক হোটেল।
চকো ক্লাউড ফরেস্টের মাত্র ২ শতাংশ প্রাকৃতিক বন অবশিষ্ট আছে এখন। এমন পরিস্থিতিতে মাশপি লজ বিলাসবহুল কিন্তু জঙ্গল ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উদ্ভাবনী এক পদক্ষেপ নিয়েছে। রোমাঞ্চপ্রেমী অতিথিদের জঙ্গল অভিযানে এখানকার বন্য প্রাণী সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেওয়া হয়। ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো থেকে হোটেলটির দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের আশপাশে।
সকালের সূর্যের আলো যখন ঘন কুয়াশার পর্দায় ঢাকা চকো ক্লাউড ফরেস্টের গাছপালার মাঝখান দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে বের হচ্ছে, তখন মাশপি লজের একজন পর্যটক হয়তো গাছের শাখায় শাখায় উড়ে বেড়ানো রঙিন প্রজাপতি দেখছেন মুগ্ধ চোখে। এটা তিনি করছেন তাঁর শয্যায় শরীর এলিয়ে দিয়ে। বাইরের জগৎ এবং তাঁর মধ্যে ব্যবধান বলতে একটি কাচের দেয়াল। ‘ইকো-ট্যুরিজম’ নামের যে শব্দটির সঙ্গে আমরা পরিচিত, ইকুয়েডরের জঙ্গলের মাঝখানে অবস্থিত মাশপি লজের চেয়ে এর বড় উদাহরণ আর কিছু হতে পারে না।
জঙ্গলের মধ্যে অনেক উঁচু কোনো দালান নয় এটি। বিশাল সব কাচের জানালাসহ এর নকশা এভাবে করা হয়েছে, যেন জঙ্গল ও লজটির মধ্যে একটি নিবিড় সম্পর্ক থাকে।
হোটেলটি হয়তো ধনী পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে। তবে এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে স্থানীয় অধিবাসীদের জীবন। মাশপির শতকরা ৮০ শতাংশ কর্মচারী আশপাশের অঞ্চলের বাসিন্দা। পর্যটনের বিকাশ মানেই এখনকার মানুষের বেঁচে থাকার একটি অবলম্বন তৈরি হওয়া। এর বিকল্প পেশা তাঁদের কাছে বনের গাছ কাটা ও খনি থেকে স্বর্ণ আহরণ। আর এগুলো করেই এখানকার মূল প্রাকৃতিক অরণ্যের কেবল ২ শতাংশ অবশিষ্ট আছে আর। এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
এই হতাশাজনক পরিসংখ্যানই কুইটোর সাবেক মেয়র রোক সেভিয়াকে ২০০১ সালে চকো ক্লাউড ফরেস্টের এক টুকরো জমি কিনতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। এটা তিনি করেন শুধু সংরক্ষণের স্বার্থেই। তারপর তিনি ক্রমাগত জমি কিনতে থাকেন। এর ফলাফল ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি সংরক্ষিত বন, ৬ হাজার ১৭৮ একরের মাশপি রিজার্ভ।
একটি গাছও কাটা পড়েনি গোটা লজটি বানাতে। তবে এটি তৈরির উপকরণ সংগ্রহ করা হয়েছে আশপাশের এলাকা থেকে, যেন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসারণ কম হয়।
গত এক দশকে মাশপি রিজার্ভের গবেষণায় ১৬টি নতুন প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে, যা চকো ক্লাউড ফরেস্ট সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
লজের রেস্তোরাঁটিতে ব্যবহার করা বেশির ভাগ উপাদানের উৎস ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকা। এটি ১৫টি স্থানীয় পরিবারের জীবিকা নির্বাহে এবং নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে সাহায্য করে।

অরণ্যটি রক্ষায় এবং টেকসই পর্যটনের শক্তি ব্যবহার করে স্থানীয় সম্প্রদায়কে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনার মিশন নিয়ে কাজ শুরু করা সেভিয়া একটি পুরোনো করাতকলের জায়গায় মাশপি লজ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। ‘আমি দেখতে চাই যে মাশপির অতিথিরা এই বিস্ময়কর বন সংরক্ষণের উৎসাহী একজন মানুষ হিসেবে তাঁদের বাড়িতে ফিরে যাবেন।’ তিনি বলেন। সেভিয়া আশা করেন, এখানকার জঙ্গল ভ্রমণে যে অভিজ্ঞতা হয়, তা-ই অতিথিদের অরণ্যের প্রতি ভালোবাসার জন্ম নেয়।
মাশপির একজন আবাসিক জীববিজ্ঞানীর নেতৃত্বে চকো ক্লাউড ফরেস্ট সম্পর্কে পরিচিতিমূলক কিছু আলোচনার পর পর্যটকদের একটি দলের সঙ্গে হয়তো আপনি মাশপির প্রধান আকর্ষণ ‘ড্রাগনফ্লাই ক্যানোপি গন্দোলা’য় চেপে বসবেন। এটি আসলে জঙ্গলের ওপর দিয়ে দুই কিলোমিটারের একটি কেব্ল কার রাইড।
ছাদ ছাড়া ধাতুর তৈরি কেব্ল কারটিতে ভ্রমণের সময় উঁচু উঁচু গাছগুলোর মাঝখান দিয়ে যাবেন। চাইলেই কোনো গাছের পাতা ছুঁয়ে দেখতে পারবেন। হয়তো বৃক্ষ শিখরে উঠে পড়া কোনো কাঠবিড়ালির দেখা মিলে যাবে। পাশ দিয়ে রঙিন ডানা মেলে উড়ে যাবে কোনো পাখি। ওপর থেকে নিচের অরণ্যও অন্য এক সৌন্দর্য নিয়ে ধরা দেবে আপনার চোখে। এত ওপরের আশ্চর্য শান্ত পরিবেশও আনন্দিত করবে আপনাকে।
এই যাত্রাপথে সঙ্গে থাকা গাইড হয়তো আপনাকে সংরক্ষণে মাশপি লজের নেওয়া নানা পদক্ষেপের বিষয় জানাবে। এখানকার বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষার উদ্দেশ্য নিয়েই এর পুরো নকশা করা হয়েছে। ‘বনের রক্ষক’ নামে পরিচয় করিয়ে দেওয়া সৌরশক্তিচালিত ১০টি অডিও রেকর্ডার বসিয়েছে মাশপি লজ কর্তৃপক্ষ সংরক্ষিত বনটির বিভিন্ন অংশে। এটি করাতের শব্দ শনাক্ত করতে এবং এই অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে পার্কের রেঞ্জারদের সতর্ক করতে সক্ষম।
প্রাণীদের গতিবিধি ও চলাফেরা পরীক্ষার জন্য ক্যামেরা ট্র্যাপও বসানো হয়েছে জঙ্গলের নানা অংশে। লজের পাশের একটি ছোট পরীক্ষাগারে মাশপিস রিসার্চ সেন্টারের গবেষকেরা ক্যামেরাবন্দী হওয়া ছবিগুলো বিশ্লেষণ করেন। সংরক্ষিত বনটিতে ১৬টি নতুন প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মাশপি ম্যাগনোলিয়া নামের একটি উদ্ভিদ। এর কাণ্ডে বেড়ে ওঠে অর্কিডের মতো কয়েক ডজন পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ।
‘এ কারণেই এখানে গবেষণা করা এত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অনেক নতুন প্রজাতি আবিষ্কারের অপেক্ষায় আছে।’ বলেন মাশপির আবাসিক জীববিজ্ঞানী চিয়ারা করেরা। তিনি সংরক্ষিত এলাকাটির বন্য প্রাণী নিয়ে গবেষণা করছেন এবং লজের ধারেই বিজ্ঞানের কাছে নতুন এক জাতের অর্কিড আবিষ্কার করেছেন।
মেঘ-অরণ্যের বন্য প্রাণী, গাছপালা ও সংরক্ষণের প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে পর্যটকদের জঙ্গলের গভীরে নিয়ে যাওয়ার কেবল একটি পদ্ধতি ক্যানোপি গন্দোলা। এ ছাড়া লজের ‘লাইফ সেন্টারে’ প্রজাপতি এবং এদের আচরণ সম্পর্কে জানানো হয়। আবার দুজন উঠতে পারেন গন্দোলার এমন একটি পা-চালিত সংস্করণ স্কাই বাইকে চেপেও জঙ্গলের অন্ধি-সন্ধিতে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হয়। এ সময় হয়তো দেখা হয়ে যেতে পারে খুদে পাখি হামিংবার্ডদের সঙ্গে।
শুধু জঙ্গলে ঘুরে বেড়ালে তো হবে না, খেতেও হবে। লজের ডাইনিং রুমে চারপাশের অরণ্যের দৃশ্য উপভোগ করতে করতে তিন বেলা খেতে পারবেন। মেন্যু ঋতুভেদে বদলায় এবং জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন উদ্ভিদ স্বাদে, গন্ধে খাবারগুলোকে করে তুলে অনন্য। যেমন বন্য রসুন এবং চিল্লাগুয়া (ধনেপাতার মতো) ব্যবহার করা হয় এখানকার নানা পদের খাবারে।
হয়তো সবজিতে ভরপুর একটি ‘মাউন্টেন স্টু’ ভাজা কাঁচা কলার পাশে প্লেটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে আপনার। এতে শোভা বর্ধক হিসেবে থাকবে খাওয়ার উপযোগী ফুল। আখের রসের সঙ্গে মিষ্টি আনারস দিয়েও একটি পদ পরিবেশন করা হতে পারে।
বেশির ভাগ উপাদানই লজের ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়। ইকুয়েডরের নারীদের একটি নিয়মিত আয়ের উৎস তৈরির জন্য নারী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে কেনা হয় মধু, জ্যামসহ অনেক জিনিসই।
রাতেও গাইড জঙ্গল ভ্রমণে নিয়ে যাবে আপনাকে। হেডল্যাম্পের আলোয় দেখবেন নানা ধরনের গাছ। হয়তো কোনো গাছে দেখা পেয়ে যাবেন একটি অপোসামের (বৃক্ষচর স্তন্যপায়ী প্রাণী), কিংবা চোখ আটকে যাবে বিশ্রামরত কোনো ট্যারান্টুলা মাকড়সায়। সকালে লজের কাছের ৮৫ ফুট উঁচু অবজারভেশন টাওয়ারে দাঁড়ালেই চোখ জুড়িয়ে যাবে, দেখবেন মেঘেরা কীভাবে উঁচু গাছপালার ওপরে আর পাহাড়চূড়ায় জেঁকে বসেছে। তারপর যখন আশ্চর্য এই অরণ্য ও মাশপি লজ থেকে ফিরে আসবেন, আপনার মন চাইবে সেখানে কিংবা এমন কোনো মনোমুগ্ধকর রাজ্যে ফিরে যেতে এখনই তল্পিতল্পা গুছানো শুরু করতে।
সূত্র: বিবিসি

ইকুয়েডরের চকো ক্লাউড ফরেস্ট বিখ্যাত তার বৈচিত্র্যময় বন্য প্রাণী আর উদ্ভিদের জন্য। উঁচু উঁচু সব গাছপালার ওপরে ঝুলে থাকা মেঘেদের জন্য এ ধরনের জঙ্গল ‘মেঘ অরণ্য’ বা ক্লাউড ফরেস্ট নাম পায়। ক্লাউড ফরেস্টে প্রচুর বৃষ্টিপাতও হয়। চকো ক্লাউড ফরেস্ট সম্প্রতি আরেকটি কারণে মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছে। সেটি বনের মধ্যে তৈরি করা বিলাসবহুল এক হোটেল।
চকো ক্লাউড ফরেস্টের মাত্র ২ শতাংশ প্রাকৃতিক বন অবশিষ্ট আছে এখন। এমন পরিস্থিতিতে মাশপি লজ বিলাসবহুল কিন্তু জঙ্গল ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উদ্ভাবনী এক পদক্ষেপ নিয়েছে। রোমাঞ্চপ্রেমী অতিথিদের জঙ্গল অভিযানে এখানকার বন্য প্রাণী সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেওয়া হয়। ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো থেকে হোটেলটির দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের আশপাশে।
সকালের সূর্যের আলো যখন ঘন কুয়াশার পর্দায় ঢাকা চকো ক্লাউড ফরেস্টের গাছপালার মাঝখান দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে বের হচ্ছে, তখন মাশপি লজের একজন পর্যটক হয়তো গাছের শাখায় শাখায় উড়ে বেড়ানো রঙিন প্রজাপতি দেখছেন মুগ্ধ চোখে। এটা তিনি করছেন তাঁর শয্যায় শরীর এলিয়ে দিয়ে। বাইরের জগৎ এবং তাঁর মধ্যে ব্যবধান বলতে একটি কাচের দেয়াল। ‘ইকো-ট্যুরিজম’ নামের যে শব্দটির সঙ্গে আমরা পরিচিত, ইকুয়েডরের জঙ্গলের মাঝখানে অবস্থিত মাশপি লজের চেয়ে এর বড় উদাহরণ আর কিছু হতে পারে না।
জঙ্গলের মধ্যে অনেক উঁচু কোনো দালান নয় এটি। বিশাল সব কাচের জানালাসহ এর নকশা এভাবে করা হয়েছে, যেন জঙ্গল ও লজটির মধ্যে একটি নিবিড় সম্পর্ক থাকে।
হোটেলটি হয়তো ধনী পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে। তবে এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে স্থানীয় অধিবাসীদের জীবন। মাশপির শতকরা ৮০ শতাংশ কর্মচারী আশপাশের অঞ্চলের বাসিন্দা। পর্যটনের বিকাশ মানেই এখনকার মানুষের বেঁচে থাকার একটি অবলম্বন তৈরি হওয়া। এর বিকল্প পেশা তাঁদের কাছে বনের গাছ কাটা ও খনি থেকে স্বর্ণ আহরণ। আর এগুলো করেই এখানকার মূল প্রাকৃতিক অরণ্যের কেবল ২ শতাংশ অবশিষ্ট আছে আর। এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
এই হতাশাজনক পরিসংখ্যানই কুইটোর সাবেক মেয়র রোক সেভিয়াকে ২০০১ সালে চকো ক্লাউড ফরেস্টের এক টুকরো জমি কিনতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। এটা তিনি করেন শুধু সংরক্ষণের স্বার্থেই। তারপর তিনি ক্রমাগত জমি কিনতে থাকেন। এর ফলাফল ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি সংরক্ষিত বন, ৬ হাজার ১৭৮ একরের মাশপি রিজার্ভ।
একটি গাছও কাটা পড়েনি গোটা লজটি বানাতে। তবে এটি তৈরির উপকরণ সংগ্রহ করা হয়েছে আশপাশের এলাকা থেকে, যেন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসারণ কম হয়।
গত এক দশকে মাশপি রিজার্ভের গবেষণায় ১৬টি নতুন প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে, যা চকো ক্লাউড ফরেস্ট সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
লজের রেস্তোরাঁটিতে ব্যবহার করা বেশির ভাগ উপাদানের উৎস ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকা। এটি ১৫টি স্থানীয় পরিবারের জীবিকা নির্বাহে এবং নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে সাহায্য করে।

অরণ্যটি রক্ষায় এবং টেকসই পর্যটনের শক্তি ব্যবহার করে স্থানীয় সম্প্রদায়কে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনার মিশন নিয়ে কাজ শুরু করা সেভিয়া একটি পুরোনো করাতকলের জায়গায় মাশপি লজ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। ‘আমি দেখতে চাই যে মাশপির অতিথিরা এই বিস্ময়কর বন সংরক্ষণের উৎসাহী একজন মানুষ হিসেবে তাঁদের বাড়িতে ফিরে যাবেন।’ তিনি বলেন। সেভিয়া আশা করেন, এখানকার জঙ্গল ভ্রমণে যে অভিজ্ঞতা হয়, তা-ই অতিথিদের অরণ্যের প্রতি ভালোবাসার জন্ম নেয়।
মাশপির একজন আবাসিক জীববিজ্ঞানীর নেতৃত্বে চকো ক্লাউড ফরেস্ট সম্পর্কে পরিচিতিমূলক কিছু আলোচনার পর পর্যটকদের একটি দলের সঙ্গে হয়তো আপনি মাশপির প্রধান আকর্ষণ ‘ড্রাগনফ্লাই ক্যানোপি গন্দোলা’য় চেপে বসবেন। এটি আসলে জঙ্গলের ওপর দিয়ে দুই কিলোমিটারের একটি কেব্ল কার রাইড।
ছাদ ছাড়া ধাতুর তৈরি কেব্ল কারটিতে ভ্রমণের সময় উঁচু উঁচু গাছগুলোর মাঝখান দিয়ে যাবেন। চাইলেই কোনো গাছের পাতা ছুঁয়ে দেখতে পারবেন। হয়তো বৃক্ষ শিখরে উঠে পড়া কোনো কাঠবিড়ালির দেখা মিলে যাবে। পাশ দিয়ে রঙিন ডানা মেলে উড়ে যাবে কোনো পাখি। ওপর থেকে নিচের অরণ্যও অন্য এক সৌন্দর্য নিয়ে ধরা দেবে আপনার চোখে। এত ওপরের আশ্চর্য শান্ত পরিবেশও আনন্দিত করবে আপনাকে।
এই যাত্রাপথে সঙ্গে থাকা গাইড হয়তো আপনাকে সংরক্ষণে মাশপি লজের নেওয়া নানা পদক্ষেপের বিষয় জানাবে। এখানকার বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষার উদ্দেশ্য নিয়েই এর পুরো নকশা করা হয়েছে। ‘বনের রক্ষক’ নামে পরিচয় করিয়ে দেওয়া সৌরশক্তিচালিত ১০টি অডিও রেকর্ডার বসিয়েছে মাশপি লজ কর্তৃপক্ষ সংরক্ষিত বনটির বিভিন্ন অংশে। এটি করাতের শব্দ শনাক্ত করতে এবং এই অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে পার্কের রেঞ্জারদের সতর্ক করতে সক্ষম।
প্রাণীদের গতিবিধি ও চলাফেরা পরীক্ষার জন্য ক্যামেরা ট্র্যাপও বসানো হয়েছে জঙ্গলের নানা অংশে। লজের পাশের একটি ছোট পরীক্ষাগারে মাশপিস রিসার্চ সেন্টারের গবেষকেরা ক্যামেরাবন্দী হওয়া ছবিগুলো বিশ্লেষণ করেন। সংরক্ষিত বনটিতে ১৬টি নতুন প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মাশপি ম্যাগনোলিয়া নামের একটি উদ্ভিদ। এর কাণ্ডে বেড়ে ওঠে অর্কিডের মতো কয়েক ডজন পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ।
‘এ কারণেই এখানে গবেষণা করা এত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অনেক নতুন প্রজাতি আবিষ্কারের অপেক্ষায় আছে।’ বলেন মাশপির আবাসিক জীববিজ্ঞানী চিয়ারা করেরা। তিনি সংরক্ষিত এলাকাটির বন্য প্রাণী নিয়ে গবেষণা করছেন এবং লজের ধারেই বিজ্ঞানের কাছে নতুন এক জাতের অর্কিড আবিষ্কার করেছেন।
মেঘ-অরণ্যের বন্য প্রাণী, গাছপালা ও সংরক্ষণের প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে পর্যটকদের জঙ্গলের গভীরে নিয়ে যাওয়ার কেবল একটি পদ্ধতি ক্যানোপি গন্দোলা। এ ছাড়া লজের ‘লাইফ সেন্টারে’ প্রজাপতি এবং এদের আচরণ সম্পর্কে জানানো হয়। আবার দুজন উঠতে পারেন গন্দোলার এমন একটি পা-চালিত সংস্করণ স্কাই বাইকে চেপেও জঙ্গলের অন্ধি-সন্ধিতে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হয়। এ সময় হয়তো দেখা হয়ে যেতে পারে খুদে পাখি হামিংবার্ডদের সঙ্গে।
শুধু জঙ্গলে ঘুরে বেড়ালে তো হবে না, খেতেও হবে। লজের ডাইনিং রুমে চারপাশের অরণ্যের দৃশ্য উপভোগ করতে করতে তিন বেলা খেতে পারবেন। মেন্যু ঋতুভেদে বদলায় এবং জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন উদ্ভিদ স্বাদে, গন্ধে খাবারগুলোকে করে তুলে অনন্য। যেমন বন্য রসুন এবং চিল্লাগুয়া (ধনেপাতার মতো) ব্যবহার করা হয় এখানকার নানা পদের খাবারে।
হয়তো সবজিতে ভরপুর একটি ‘মাউন্টেন স্টু’ ভাজা কাঁচা কলার পাশে প্লেটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে আপনার। এতে শোভা বর্ধক হিসেবে থাকবে খাওয়ার উপযোগী ফুল। আখের রসের সঙ্গে মিষ্টি আনারস দিয়েও একটি পদ পরিবেশন করা হতে পারে।
বেশির ভাগ উপাদানই লজের ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়। ইকুয়েডরের নারীদের একটি নিয়মিত আয়ের উৎস তৈরির জন্য নারী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে কেনা হয় মধু, জ্যামসহ অনেক জিনিসই।
রাতেও গাইড জঙ্গল ভ্রমণে নিয়ে যাবে আপনাকে। হেডল্যাম্পের আলোয় দেখবেন নানা ধরনের গাছ। হয়তো কোনো গাছে দেখা পেয়ে যাবেন একটি অপোসামের (বৃক্ষচর স্তন্যপায়ী প্রাণী), কিংবা চোখ আটকে যাবে বিশ্রামরত কোনো ট্যারান্টুলা মাকড়সায়। সকালে লজের কাছের ৮৫ ফুট উঁচু অবজারভেশন টাওয়ারে দাঁড়ালেই চোখ জুড়িয়ে যাবে, দেখবেন মেঘেরা কীভাবে উঁচু গাছপালার ওপরে আর পাহাড়চূড়ায় জেঁকে বসেছে। তারপর যখন আশ্চর্য এই অরণ্য ও মাশপি লজ থেকে ফিরে আসবেন, আপনার মন চাইবে সেখানে কিংবা এমন কোনো মনোমুগ্ধকর রাজ্যে ফিরে যেতে এখনই তল্পিতল্পা গুছানো শুরু করতে।
সূত্র: বিবিসি

বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
৯ ঘণ্টা আগে
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১১ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ।
১৫ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে বাস্তবায়িত ৮৯১টি প্রকল্পে অনিয়মের আনুমানিক পরিমাণ বলা হয়েছে ২৪৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ হাজার ১১০ কোটি টাকা)।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) টিআইবির ধানমন্ডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মো. মাহফুজুল হক এবং রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মো. সহিদুল ইসলাম। এ সময় সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামও ছিলেন।
প্রতিবেদনে ২০০৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়িত ১২টি তহবিলের আওতায় ৯৪২টি প্রকল্পের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রণীত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। অর্থের চাহিদার বিপরীতে সামঞ্জস্যপূর্ণ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব প্রকট।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সবচেয়ে বিপদাপন্ন অঞ্চলে বরাদ্দের অগ্রাধিকার কম এবং অনেক প্রকল্প বাস্তবে জলবায়ু অভিযোজনের সঙ্গে সম্পর্কহীন। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, জলবায়ু তহবিলের অর্থে সাফারি পার্ক ও ইকোপার্ক নির্মাণের মতো প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যেখানে নিম্নমানের কাজ, অর্থ আত্মসাৎ ও সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় তহবিলের প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা এবং ব্যর্থতার প্রকটতাও গবেষণায় উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৯১টি প্রকল্পের মধ্যে ৫৪৯টির (৬১ দশমিক ৬ শতাংশ) মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। গড়ে প্রকল্পের মেয়াদ ৬৪৮ দিন থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫১৫ দিনে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ১৩৩ শতাংশের বেশি সময় লেগেছে। কোনো কোনো প্রকল্পে চার বছরের পরিবর্তে ১৪ বছর পর্যন্ত সময় লেগেছে।
টিআইবির অভিযোগ, জলবায়ু অর্থায়নে প্রয়োজনীয় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৮৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রয়োজনীয় অর্থের মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিবছর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০০৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা পেয়েছি মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, যা অত্যন্ত নগণ্য।’
গবেষণা প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করেছে টিআইবি। সেগুলো হলো—
১. বিসিসিএসএপি ২০০৯ এবং জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ হালনাগাদ করে যুগোপযোগী করতে হবে। জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নে ট্রাস্ট ফান্ড এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতার জলবায়ু-সংশ্লিষ্ট অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
২. জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন, ২০১০ সংশোধন করতে হবে। আইনে ট্রাস্টের জনবল নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ক ধারা সংযোজন করতে হবে। বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের বিধান যুক্ত করতে হবে। ট্রাস্ট থেকে কমপক্ষে একজন বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তাকে প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন-সংক্রান্ত কারিগরি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল অর্জনে সক্ষম বা ট্রান্সফর্মেটিভ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তহবিলের আওতায় অর্থ বরাদ্দের সীমা বৃদ্ধি করতে হবে। জবাবদিহি নিশ্চিত এবং অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশে প্রচলিত আইন, যেগুলো ট্রাস্টের জন্য প্রযোজ্য, তা সুনির্দিষ্ট করে ট্রাস্ট আইনে উল্লেখ করতে হবে। আর্থিক ও কারিগরি ব্যবস্থাপক হিসেবে বিসিসিটির কর্মকর্তাদের প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন, প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি ও শর্তাবলি নির্ধারণ, প্রকল্প অনুমোদন, প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও অর্থ ছাড়, মাঠপর্যায়ে প্রকল্প তদারকি, প্রকল্প পরিবীক্ষণ এবং নথি ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে। দুর্নীতি ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রতিরোধ, অংশীজনের অংশগ্রহণ, তহবিল ও প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট তথ্য উন্মুক্তকরণ, পরিবেশ ও সামাজিক মূল্যায়ন এবং নিয়মিত নিরীক্ষা-সংক্রান্ত বিষয় নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩. রাজস্ব বাজেটের বাইরে বিসিসিটিকে উদ্ভাবনীমূলক কার্যক্রম, যেমন—আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল, কার্বন ট্রেডিং, ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজমসহ বেসরকারি অর্থায়ন উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৪. থিমভিত্তিক, বিপদাপন্নতা ও ঝুঁকির ভৌগোলিক বিন্যাসভিত্তিক এবং বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে বিসিসিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি সমন্বিত পথ নকশা প্রস্তুত করতে হবে। পথ নকশায় মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রমকে অন্তর্ভুক্ত করে সেই অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ, প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. বিসিসিটির আওতায় স্বল্পমেয়াদি এবং টাকার অঙ্ক ক্ষুদ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিহার করতে হবে। প্রান্তিক, দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ জেলা, উপজেলা এবং স্থান যেখানে সাধারণ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে জলবায়ু ঝুঁকি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব নয় এমন স্থানে বিসিসিটি থেকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৬. বাংলাদেশে বাস্তবায়িত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলের প্রকল্প নিয়মিত তদারকি ও নিরীক্ষা করার জন্য একটি পৃথক স্বাধীন তদারকি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৭. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে প্রকল্প অনুমোদন এবং বাস্তবায়নসহ ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কাছে জলবায়ু তহবিল কার্যকরভাবে পৌঁছানো নিশ্চিতে বিপদাপন্নতার সূচক এবং ভৌগোলিক বা স্থানিক ঝুঁকিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৮. জাতীয় পর্যায়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে জলবায়ু-সংক্রান্ত বিষয় সমন্বয়ের জন্য ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করতে হবে। সেই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনাসহ অংশীজন সমন্বয় ও আন্তপ্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. তহবিলসমূহের প্রকল্প বাস্তবায়নে বিবিধ অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে, অবকাঠামো ও সৌর সড়কবাতি-সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত করতে হবে।

বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে বাস্তবায়িত ৮৯১টি প্রকল্পে অনিয়মের আনুমানিক পরিমাণ বলা হয়েছে ২৪৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ হাজার ১১০ কোটি টাকা)।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) টিআইবির ধানমন্ডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মো. মাহফুজুল হক এবং রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মো. সহিদুল ইসলাম। এ সময় সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামও ছিলেন।
প্রতিবেদনে ২০০৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়িত ১২টি তহবিলের আওতায় ৯৪২টি প্রকল্পের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রণীত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। অর্থের চাহিদার বিপরীতে সামঞ্জস্যপূর্ণ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব প্রকট।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সবচেয়ে বিপদাপন্ন অঞ্চলে বরাদ্দের অগ্রাধিকার কম এবং অনেক প্রকল্প বাস্তবে জলবায়ু অভিযোজনের সঙ্গে সম্পর্কহীন। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, জলবায়ু তহবিলের অর্থে সাফারি পার্ক ও ইকোপার্ক নির্মাণের মতো প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যেখানে নিম্নমানের কাজ, অর্থ আত্মসাৎ ও সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় তহবিলের প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা এবং ব্যর্থতার প্রকটতাও গবেষণায় উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৯১টি প্রকল্পের মধ্যে ৫৪৯টির (৬১ দশমিক ৬ শতাংশ) মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। গড়ে প্রকল্পের মেয়াদ ৬৪৮ দিন থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫১৫ দিনে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ১৩৩ শতাংশের বেশি সময় লেগেছে। কোনো কোনো প্রকল্পে চার বছরের পরিবর্তে ১৪ বছর পর্যন্ত সময় লেগেছে।
টিআইবির অভিযোগ, জলবায়ু অর্থায়নে প্রয়োজনীয় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৮৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রয়োজনীয় অর্থের মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিবছর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০০৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা পেয়েছি মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, যা অত্যন্ত নগণ্য।’
গবেষণা প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করেছে টিআইবি। সেগুলো হলো—
১. বিসিসিএসএপি ২০০৯ এবং জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ হালনাগাদ করে যুগোপযোগী করতে হবে। জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নে ট্রাস্ট ফান্ড এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতার জলবায়ু-সংশ্লিষ্ট অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
২. জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন, ২০১০ সংশোধন করতে হবে। আইনে ট্রাস্টের জনবল নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ক ধারা সংযোজন করতে হবে। বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের বিধান যুক্ত করতে হবে। ট্রাস্ট থেকে কমপক্ষে একজন বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তাকে প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন-সংক্রান্ত কারিগরি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল অর্জনে সক্ষম বা ট্রান্সফর্মেটিভ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তহবিলের আওতায় অর্থ বরাদ্দের সীমা বৃদ্ধি করতে হবে। জবাবদিহি নিশ্চিত এবং অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশে প্রচলিত আইন, যেগুলো ট্রাস্টের জন্য প্রযোজ্য, তা সুনির্দিষ্ট করে ট্রাস্ট আইনে উল্লেখ করতে হবে। আর্থিক ও কারিগরি ব্যবস্থাপক হিসেবে বিসিসিটির কর্মকর্তাদের প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন, প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি ও শর্তাবলি নির্ধারণ, প্রকল্প অনুমোদন, প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও অর্থ ছাড়, মাঠপর্যায়ে প্রকল্প তদারকি, প্রকল্প পরিবীক্ষণ এবং নথি ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে। দুর্নীতি ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রতিরোধ, অংশীজনের অংশগ্রহণ, তহবিল ও প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট তথ্য উন্মুক্তকরণ, পরিবেশ ও সামাজিক মূল্যায়ন এবং নিয়মিত নিরীক্ষা-সংক্রান্ত বিষয় নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩. রাজস্ব বাজেটের বাইরে বিসিসিটিকে উদ্ভাবনীমূলক কার্যক্রম, যেমন—আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল, কার্বন ট্রেডিং, ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজমসহ বেসরকারি অর্থায়ন উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৪. থিমভিত্তিক, বিপদাপন্নতা ও ঝুঁকির ভৌগোলিক বিন্যাসভিত্তিক এবং বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে বিসিসিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি সমন্বিত পথ নকশা প্রস্তুত করতে হবে। পথ নকশায় মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রমকে অন্তর্ভুক্ত করে সেই অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ, প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. বিসিসিটির আওতায় স্বল্পমেয়াদি এবং টাকার অঙ্ক ক্ষুদ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিহার করতে হবে। প্রান্তিক, দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ জেলা, উপজেলা এবং স্থান যেখানে সাধারণ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে জলবায়ু ঝুঁকি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব নয় এমন স্থানে বিসিসিটি থেকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৬. বাংলাদেশে বাস্তবায়িত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলের প্রকল্প নিয়মিত তদারকি ও নিরীক্ষা করার জন্য একটি পৃথক স্বাধীন তদারকি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৭. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে প্রকল্প অনুমোদন এবং বাস্তবায়নসহ ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কাছে জলবায়ু তহবিল কার্যকরভাবে পৌঁছানো নিশ্চিতে বিপদাপন্নতার সূচক এবং ভৌগোলিক বা স্থানিক ঝুঁকিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৮. জাতীয় পর্যায়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে জলবায়ু-সংক্রান্ত বিষয় সমন্বয়ের জন্য ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করতে হবে। সেই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনাসহ অংশীজন সমন্বয় ও আন্তপ্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. তহবিলসমূহের প্রকল্প বাস্তবায়নে বিবিধ অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে, অবকাঠামো ও সৌর সড়কবাতি-সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত করতে হবে।

ইকুয়েডরের চকো ক্লাউড ফরেস্ট বিখ্যাত তার বৈচিত্র্যময় বন্য প্রাণী আর উদ্ভিদের জন্য। এখানকার উঁচু উঁচু সব গাছপালার ওপরে ঝুলে থাকে মেঘেরা। সম্প্রতি আরেকটি কারণে মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছে অরণ্যটি। সেটি বনের মধ্যে তৈরি করা বিলাসবহুল এক হোটেল। জঙ্গলে সংরক্ষণেও কাজ করছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
১২ অক্টোবর ২০২৩
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১১ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ।
১৫ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাব কাটতে না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে আবারও লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকার ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ জন্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সতর্কবার্তায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল ছাড়া লঘুচাপটির প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পড়বে না বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে এই লঘুচাপটির নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা খুব। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আজ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া সিলেট বিভাগেও আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাব কাটতে না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে আবারও লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকার ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ জন্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সতর্কবার্তায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল ছাড়া লঘুচাপটির প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পড়বে না বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে এই লঘুচাপটির নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা খুব। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আজ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া সিলেট বিভাগেও আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ইকুয়েডরের চকো ক্লাউড ফরেস্ট বিখ্যাত তার বৈচিত্র্যময় বন্য প্রাণী আর উদ্ভিদের জন্য। এখানকার উঁচু উঁচু সব গাছপালার ওপরে ঝুলে থাকে মেঘেরা। সম্প্রতি আরেকটি কারণে মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছে অরণ্যটি। সেটি বনের মধ্যে তৈরি করা বিলাসবহুল এক হোটেল। জঙ্গলে সংরক্ষণেও কাজ করছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
১২ অক্টোবর ২০২৩
বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
৯ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ।
১৫ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ। অন্যদিকে ঢাকার বাতাসেও দূষণের মাত্রা গতকালের তুলনায় বেড়েছে।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১০৫, যা গতকাল ছিল ৮০। বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় আজ ১০ম স্থানে আছে ঢাকা, গতকাল ছিল ২২তম স্থানে।
বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা পাকিস্তানের লাহোর শহরটির বায়ুমান আজ ৩৫৯, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের কলকাতা ও দিল্লি, উগান্ডার কাম্পালা ও পাকিস্তানের করাচি। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৪৮, ২৩১, ১৫৯ ও ১৫৬।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ। অন্যদিকে ঢাকার বাতাসেও দূষণের মাত্রা গতকালের তুলনায় বেড়েছে।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১০৫, যা গতকাল ছিল ৮০। বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় আজ ১০ম স্থানে আছে ঢাকা, গতকাল ছিল ২২তম স্থানে।
বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা পাকিস্তানের লাহোর শহরটির বায়ুমান আজ ৩৫৯, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের কলকাতা ও দিল্লি, উগান্ডার কাম্পালা ও পাকিস্তানের করাচি। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৪৮, ২৩১, ১৫৯ ও ১৫৬।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

ইকুয়েডরের চকো ক্লাউড ফরেস্ট বিখ্যাত তার বৈচিত্র্যময় বন্য প্রাণী আর উদ্ভিদের জন্য। এখানকার উঁচু উঁচু সব গাছপালার ওপরে ঝুলে থাকে মেঘেরা। সম্প্রতি আরেকটি কারণে মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছে অরণ্যটি। সেটি বনের মধ্যে তৈরি করা বিলাসবহুল এক হোটেল। জঙ্গলে সংরক্ষণেও কাজ করছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
১২ অক্টোবর ২০২৩
বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
৯ ঘণ্টা আগে
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১১ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে আবারও সৃষ্টি হয়েছে লঘুচাপ। লঘুচাপটি বর্তমানে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলীয় এলাকায় রয়েছে। এটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম বরাবর মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট ছাড়া লঘুচাপটির প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পড়বে না বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটির নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এর কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আজ বৃষ্টি হতে পারে। সিলেট বিভাগেও আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৭টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আকাশ দুপুর পর্যন্ত আংশিক মেঘলা থাকবে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮৪ শতাংশ। আজকে ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ১৮ মিনিটে। আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৭ মিনিটে।
সারা দেশের আজকের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
তবে শীতের দেখা মিলতে আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা বলেন, ডিসেম্বর মাসের আগে সারা দেশে শীত না পড়ার সম্ভাবনা কম। এর আগে অবশ্য নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি উত্তরাঞ্চলে হালকা শীত পড়তে পারে।

বঙ্গোপসাগরে আবারও সৃষ্টি হয়েছে লঘুচাপ। লঘুচাপটি বর্তমানে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলীয় এলাকায় রয়েছে। এটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম বরাবর মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট ছাড়া লঘুচাপটির প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পড়বে না বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটির নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এর কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আজ বৃষ্টি হতে পারে। সিলেট বিভাগেও আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৭টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আকাশ দুপুর পর্যন্ত আংশিক মেঘলা থাকবে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮৪ শতাংশ। আজকে ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ১৮ মিনিটে। আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৭ মিনিটে।
সারা দেশের আজকের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
তবে শীতের দেখা মিলতে আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা বলেন, ডিসেম্বর মাসের আগে সারা দেশে শীত না পড়ার সম্ভাবনা কম। এর আগে অবশ্য নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি উত্তরাঞ্চলে হালকা শীত পড়তে পারে।

ইকুয়েডরের চকো ক্লাউড ফরেস্ট বিখ্যাত তার বৈচিত্র্যময় বন্য প্রাণী আর উদ্ভিদের জন্য। এখানকার উঁচু উঁচু সব গাছপালার ওপরে ঝুলে থাকে মেঘেরা। সম্প্রতি আরেকটি কারণে মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছে অরণ্যটি। সেটি বনের মধ্যে তৈরি করা বিলাসবহুল এক হোটেল। জঙ্গলে সংরক্ষণেও কাজ করছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
১২ অক্টোবর ২০২৩
বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
৯ ঘণ্টা আগে
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১১ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর অবস্থা বিপর্যস্ত। বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার শীর্ষ দশে প্রায় দেখা যাচ্ছে শহরগুলোকে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ।
১৫ ঘণ্টা আগে