Ajker Patrika

উপকূলে ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বন্যা-জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকির মুখে 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
উপকূলে ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বন্যা-জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকির মুখে 

প্রায় এক কোটিরও বেশি মানুষ বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকিতে বসবাস করছেন। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আধা মিটার বাড়লে ভবিষ্যতে এমন ঝুঁকির মধ্যে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা বেড়ে এক কোটি ৪০ লাখ হতে পারে বলে বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে বলেছে।

উপকূলীয় এলাকায় বর্তমানে প্রায় চার কোটি মানুষ বসবাস করে ধরে নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব মানুষের ২৭ ভাগ বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকিতে বসবাস করছেন। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আধা মিটার বাড়লে প্রায় ৩৫ ভাগ মানুষ ঝুঁকিতে পড়বেন।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিস গতকাল সোমবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়, প্রতি বছর বন্যায় উপকূলে অন্তত ১৩ হাজার কোটি টাকা মূল্যমানের সম্পদের ক্ষতি হয়ে থাকে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে।

বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ভাঙন হচ্ছে। উপকূলীয় নদীগুলো গত ৩০ বছরে স্থানভেদে ৫০ মিটার থেকে ৫০০ মিটার পর্যন্ত ভেঙেছে। লবণাক্ততা বেড়েছে। বহুস্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পরিবেশ বিপর্যয় ঘটে গেছে। এসবের পরিণতিতে উপকূলীয় রক্ষা বাঁধ এবং সংলগ্ন এলাকার মানুষ বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেকেরই জীবন ও জীবিকা দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকির মুখে আছে। বহু মানুষ আয়হীন হয়ে পড়েছেন। সামাজিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। 

নদী-খালে উজান থেকে ভাটিমুখী পানির স্রোত কমে যাওয়া, পানি প্রবাহের পথগুলো সংকীর্ণ হয়ে যাওয়া এবং উপকূলীয় বাঁধসহ বিভিন্ন অবকাঠামো প্রয়োজন অনুযায়ী মেরামত না হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে ক্ষয়ক্ষতি ও মানুষের ঝুঁকি বেড়েছে।

বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস এবং এর ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য স্থানীয় পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে সমাধান খোঁজার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা।

স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে উপকূল রক্ষা বাঁধ মেরামত, অনেক স্থানে বাঁধের উচ্চতা বাড়ানো, বনাঞ্চল সৃজন এবং নদী-খাল খননসহ সম্প্রতি গৃহীত কিছু ব্যবস্থা আপাতত কাজে এসেছে বলে প্রতিবেদনে মত প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এসব কাজে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মানুষের জ্ঞান কাজে লাগানোর ওপরও বিশ্বব্যাংক গুরুত্বারোপ করেছে।

পর্যটন-প্রধান জেলা কক্সবাজারের হিমছড়ি, কলাতলী এবং মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন ইনানী বিচে এবং পটুয়াখালীর কুয়াকাটা উপকূলে ভাঙন রোধে এমন কিছু ব্যবস্থায় সুফল মিলেছে বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

উপকূলে প্রাকৃতিকভাবে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সৃজনের পরিবেশ তৈরির ওপর জোর দিয়ে বিশ্বব্যাংক বলেছে, উপকূল রেখায় অন্তত ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা প্রাকৃতিকভাবে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সৃজনের উপযোগী। এমন বন সৃজন করা গেলে বাঁধ উঁচু করার প্রয়োজনীয়তা কমে আসতে পারে। ভাঙনের প্রকোপও কমতে পারে। এতে বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষতি থেকে মানুষ ও জনপদ রেহাই পেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত