অর্ণব সান্যাল, ঢাকা
শুরুটা হলো সয়াবিন তেল নিয়ে। সেই সংকটে মিশে যায় নিত্যকার ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির শাঁখের করাত। অথচ ঠিক পেছনের সিটে তখন মরণাপন্ন এক ‘জিন্দা লাশ’ নিয়ে বসা দুই পথচারী। তাদের কাছে ওই পুড়ে যাওয়া নারীটিও নাম-পরিচয়হীন। বাঁচানোর জন্যই রাস্তার ধার থেকে কুড়িয়ে তোলা। কিন্তু সেই তিনজনের উৎকণ্ঠা ও যাতনায় ভ্রুক্ষেপ নেই চাল-ডাল-তেল-নুন কিনতে হাঁপিয়ে ওঠা চালকদের।
আর থাকবেই-বা কেন? এ দেশে যন্ত্রণা সইতে সইতে মানুষ যে অনেকটা স্বার্থপর হয়েই গেছে। তাই যার কাছে তেলের দাম ও তা থেকে পারিবারিক অশান্তি যাতনার, সে আর আরেকজনের পোড়া মাংসের জ্বালা বুঝতে চায় না। সেই অক্ষমতাকে কাটিয়ে যারা উঠে দাঁড়াতে চায়, তারা আবার পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে ‘সিস্টেমের’ বিষে। সেই সিস্টেমে ত্রাতাই হয়ে ওঠেন প্রধান সন্দেহভাজন, আর দোষীরা থাকেন ক্ষমতার বলয়ে নিরাপদে।
সাবরিনা নামের ওয়েব সিরিজটি ‘বানিয়েছেন’ আশফাক নিপুণ। মুক্তি পেয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই-এ। এর আগে একই প্ল্যাটফর্মে একই নির্মাতার ‘মহানগর’ মুক্তি পেয়েছিল। দুই ওয়েব সিরিজেই সাম্প্রতিক সময় বেশ উল্লেখযোগ্যভাবে ফুটে উঠেছে। মহানগরের গল্প ঠিক যেভাবে ক্ষমতা ও টাকার জোরের গল্প শোনায়, সাবরিনাও খানিকটা তেমনি। তবে সয়াবিন তেলের সঙ্গে সেখানে মেশে চামড়া পোড়ার গন্ধ। এবং সেই পুড়ে যাওয়া ক্ষতবিক্ষত চামড়া থাকে অবশ্যই এক নারীর শরীরে, যে কিনা ঐতিহ্যগতভাবে রেষারেষির যবনিকা পতনের উপায় হিসেবে এতদঞ্চলের ‘অতীন্দ্রিয়’ ক্ষমতাসম্পন্ন নাগরিকদের রোষের বলি হয়।
সাবরিনা ওয়েব সিরিজের ঘটনাক্রম এর পর ভেসে চলে নিরবচ্ছিন্ন স্রোতে। তাতে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করে কেউ কেউ, কিন্তু সন্ধ্যা নামার আগে প্রবল ঝড়ের মুখে পড়তেই হয়। সেই শনশন বায়ুতে বড়লোক চোরদের বজরা দুরন্ত গতিতে এগোলেও তাদের চোখে ‘ছোটলোক’-দের ভেলা ডুবে যায় অবেলায়। বজরার ধাক্কায় ডুবলেও তখন সেটি হয়ে যায় দুর্ঘটনা, আর দোষ চাপে শিকারের ঘাড়েই। পেয়াদাদের দেওয়া হয় ক্ষুরধার নির্দেশনা, যাতে শিকারিদের নাম প্রকাশ না হয় কখনো। আর অন্যদিকে তখন কথিত অপরাধীর পালাতে গিয়ে মরে যাওয়ার প্রেস রিলিজে উদ্বেল হয় গণমাধ্যম।
সাবরিনা নামের ওয়েব সিরিজটি আসলে দুই সাবরিনার গল্প। দুজনেই এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের শিকার এক কথায়। একজনকে সুস্থ করে তুলতে গিয়ে আরেকজনের মনে পড়ে যায় নিজের হেরে যাওয়ার কাহিনি। অন্যের গায়ের জোরের কাছে আর হারতে চায় না শারীরিকভাবে হেঁটে-চলে বেড়ানো সাবরিনা। তাই নেমে পড়ে সুলুক সন্ধানে। কিন্তু তাতে যে ঢের বিপত্তি। মিথ্যের এই দুনিয়ায় ‘নিখোঁজ’ সত্যকে যে সবাই এড়িয়ে চলতেই ভালোবাসে। কারণ, তাতে টাকার গন্ধ ক্রমশ চলে যায় দূরে।
মহানগর ও সাবরিনা—এই দুই ওয়েব সিরিজকে মুখোমুখি দাঁড় করালে হাততালি পাবে দুপক্ষই। তবে কনটেন্টের তুলনামূলক বিচারে সাবরিনা আরও নিখুঁত, আরও সমসাময়িক, আরও গভীর। মেহজাবিন নিজের অভিনয়ের চেনা ছক ভেঙেছেন, ইন্তেখাব দিনার ছিলেন স্বচ্ছন্দ। অন্যদিকে হাসান মাসুদ, রুনা খান বা ইয়াশ রোহান চরিত্র ফুটিয়ে তোলায় অভিযোগ করার অবসর রাখেননি। সবশেষে বলতেই হয় নাজিয়া হক অর্ষার কথা। জীবনসঙ্গীর সন্দেহ বা প্রতিবেশী যুবকের উত্ত্যক্ত ব্যবহার বা নিপীড়নের শিকার নারী—সব পরিস্থিতিতেই অন্তত তাঁর চেহারায় অব্যক্ত সংলাপের ছাপচিত্র পড়া গেছে।
সাবরিনারা আবার ফিরে আসবেন পর্দায়। সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্মাতা। ওয়েব সিরিজটির ট্রেলারের ট্যাগলাইনে লেখা আছে, ‘শুধু সাবরিনা নয়, আমাদের সকলের গল্প...’। অন্তত সেই সমানুভূতি যে দর্শকেরা ওয়েব সিরিজটি দেখে পাবেন, তা নিশ্চিত। আর সবশেষে মনে জেগে উঠতে পারে ছোট্ট একটি প্রশ্ন, ‘…একটা মানুষের সাথে এত বড় অন্যায় হইসে, সেটা কিছু না? সে এখন কোনো বিচারও পাবে না?’
শুরুটা হলো সয়াবিন তেল নিয়ে। সেই সংকটে মিশে যায় নিত্যকার ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির শাঁখের করাত। অথচ ঠিক পেছনের সিটে তখন মরণাপন্ন এক ‘জিন্দা লাশ’ নিয়ে বসা দুই পথচারী। তাদের কাছে ওই পুড়ে যাওয়া নারীটিও নাম-পরিচয়হীন। বাঁচানোর জন্যই রাস্তার ধার থেকে কুড়িয়ে তোলা। কিন্তু সেই তিনজনের উৎকণ্ঠা ও যাতনায় ভ্রুক্ষেপ নেই চাল-ডাল-তেল-নুন কিনতে হাঁপিয়ে ওঠা চালকদের।
আর থাকবেই-বা কেন? এ দেশে যন্ত্রণা সইতে সইতে মানুষ যে অনেকটা স্বার্থপর হয়েই গেছে। তাই যার কাছে তেলের দাম ও তা থেকে পারিবারিক অশান্তি যাতনার, সে আর আরেকজনের পোড়া মাংসের জ্বালা বুঝতে চায় না। সেই অক্ষমতাকে কাটিয়ে যারা উঠে দাঁড়াতে চায়, তারা আবার পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে ‘সিস্টেমের’ বিষে। সেই সিস্টেমে ত্রাতাই হয়ে ওঠেন প্রধান সন্দেহভাজন, আর দোষীরা থাকেন ক্ষমতার বলয়ে নিরাপদে।
সাবরিনা নামের ওয়েব সিরিজটি ‘বানিয়েছেন’ আশফাক নিপুণ। মুক্তি পেয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই-এ। এর আগে একই প্ল্যাটফর্মে একই নির্মাতার ‘মহানগর’ মুক্তি পেয়েছিল। দুই ওয়েব সিরিজেই সাম্প্রতিক সময় বেশ উল্লেখযোগ্যভাবে ফুটে উঠেছে। মহানগরের গল্প ঠিক যেভাবে ক্ষমতা ও টাকার জোরের গল্প শোনায়, সাবরিনাও খানিকটা তেমনি। তবে সয়াবিন তেলের সঙ্গে সেখানে মেশে চামড়া পোড়ার গন্ধ। এবং সেই পুড়ে যাওয়া ক্ষতবিক্ষত চামড়া থাকে অবশ্যই এক নারীর শরীরে, যে কিনা ঐতিহ্যগতভাবে রেষারেষির যবনিকা পতনের উপায় হিসেবে এতদঞ্চলের ‘অতীন্দ্রিয়’ ক্ষমতাসম্পন্ন নাগরিকদের রোষের বলি হয়।
সাবরিনা ওয়েব সিরিজের ঘটনাক্রম এর পর ভেসে চলে নিরবচ্ছিন্ন স্রোতে। তাতে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করে কেউ কেউ, কিন্তু সন্ধ্যা নামার আগে প্রবল ঝড়ের মুখে পড়তেই হয়। সেই শনশন বায়ুতে বড়লোক চোরদের বজরা দুরন্ত গতিতে এগোলেও তাদের চোখে ‘ছোটলোক’-দের ভেলা ডুবে যায় অবেলায়। বজরার ধাক্কায় ডুবলেও তখন সেটি হয়ে যায় দুর্ঘটনা, আর দোষ চাপে শিকারের ঘাড়েই। পেয়াদাদের দেওয়া হয় ক্ষুরধার নির্দেশনা, যাতে শিকারিদের নাম প্রকাশ না হয় কখনো। আর অন্যদিকে তখন কথিত অপরাধীর পালাতে গিয়ে মরে যাওয়ার প্রেস রিলিজে উদ্বেল হয় গণমাধ্যম।
সাবরিনা নামের ওয়েব সিরিজটি আসলে দুই সাবরিনার গল্প। দুজনেই এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের শিকার এক কথায়। একজনকে সুস্থ করে তুলতে গিয়ে আরেকজনের মনে পড়ে যায় নিজের হেরে যাওয়ার কাহিনি। অন্যের গায়ের জোরের কাছে আর হারতে চায় না শারীরিকভাবে হেঁটে-চলে বেড়ানো সাবরিনা। তাই নেমে পড়ে সুলুক সন্ধানে। কিন্তু তাতে যে ঢের বিপত্তি। মিথ্যের এই দুনিয়ায় ‘নিখোঁজ’ সত্যকে যে সবাই এড়িয়ে চলতেই ভালোবাসে। কারণ, তাতে টাকার গন্ধ ক্রমশ চলে যায় দূরে।
মহানগর ও সাবরিনা—এই দুই ওয়েব সিরিজকে মুখোমুখি দাঁড় করালে হাততালি পাবে দুপক্ষই। তবে কনটেন্টের তুলনামূলক বিচারে সাবরিনা আরও নিখুঁত, আরও সমসাময়িক, আরও গভীর। মেহজাবিন নিজের অভিনয়ের চেনা ছক ভেঙেছেন, ইন্তেখাব দিনার ছিলেন স্বচ্ছন্দ। অন্যদিকে হাসান মাসুদ, রুনা খান বা ইয়াশ রোহান চরিত্র ফুটিয়ে তোলায় অভিযোগ করার অবসর রাখেননি। সবশেষে বলতেই হয় নাজিয়া হক অর্ষার কথা। জীবনসঙ্গীর সন্দেহ বা প্রতিবেশী যুবকের উত্ত্যক্ত ব্যবহার বা নিপীড়নের শিকার নারী—সব পরিস্থিতিতেই অন্তত তাঁর চেহারায় অব্যক্ত সংলাপের ছাপচিত্র পড়া গেছে।
সাবরিনারা আবার ফিরে আসবেন পর্দায়। সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্মাতা। ওয়েব সিরিজটির ট্রেলারের ট্যাগলাইনে লেখা আছে, ‘শুধু সাবরিনা নয়, আমাদের সকলের গল্প...’। অন্তত সেই সমানুভূতি যে দর্শকেরা ওয়েব সিরিজটি দেখে পাবেন, তা নিশ্চিত। আর সবশেষে মনে জেগে উঠতে পারে ছোট্ট একটি প্রশ্ন, ‘…একটা মানুষের সাথে এত বড় অন্যায় হইসে, সেটা কিছু না? সে এখন কোনো বিচারও পাবে না?’
গত সপ্তাহে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় মেহেরপুরে বাতিল হয়ে গেছে নগর বাউল জেমসের কনসার্ট। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে ওঠে সমালোচনার ঝড়। এই আলোচনার মধ্যে জানা গেল জেমসের নতুন কনসার্টের খবর।
৪ ঘণ্টা আগেস্টেজে গান গাওয়ার সময় মিউজিশিয়ানকে ধাক্কা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন সংগীতশিল্পী মুজিব পরদেশী। অনেকে মন্তব্য করছেন, মুজিব পরদেশীর মতো সিনিয়র শিল্পীর কাছ থেকে এমন ব্যবহার কাম্য নয়। তবে সংগীতশিল্পী রবি চৌধুরী মনে করেন, বিষয়টি অন্যভাবে না নিয়ে ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখা উচিত।
৪ ঘণ্টা আগেশিশুদের অনুষ্ঠানে ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরকামীদের নিয়ে বার্তা প্রচারের অভিযোগ এনে নেটফ্লিক্স বয়কটের ডাক দিয়েছেন প্রযুক্তি বিশ্বের উদ্যোক্তা ধনকুবের ইলন মাস্ক। এরই মধ্যে তাঁর এই বয়কটের ডাকে বিশাল ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এই জনপ্রিয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মটি।
১৯ ঘণ্টা আগেঅভিবাসন, বাস্তুচ্যুতি, আত্মপরিচয়ের সংকট ও অনুসন্ধানসহ জীবনঘনিষ্ঠ গল্প নিয়ে প্রসূন রহমান নির্মাণ করেছেন ‘শেকড়’ নামের সিনেমা। গত বছর সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনে এই সিনেমার ঘোষণা দিয়েছিলেন নির্মাতা। নির্মাণকাজ শেষে এখন সিনেমাটির মুক্তির পালা। দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে কানাডার টরন্টোতে ইন্টারন্যাশনাল...
১ দিন আগে