Ajker Patrika

যে কারণে আর বিয়ে করবেন না কুরাত-উল-আইন বালুচ

আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২১, ১১: ৪৬
যে কারণে আর বিয়ে করবেন না কুরাত-উল-আইন বালুচ

কুরাত-উল-আইন বালুচ। সংগীত নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো তালিম না থাকলেও মাত্র ১২ বছর বয়স থেকে তিনি গান করেন। এরই মধ্যে বলিউডে অভিষেকেই বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।

কুরাত-উল-আইনের জন্ম পাকিস্তানের মুলতানে। পাকিস্তানি কিংবদন্তি গায়িকা রেশমার গান ‘আখিয়াঁ নু রেহেনে দে’ গেয়ে প্রথম খ্যাতি পান তিনি। ফাওয়াদ খান অভিনীত ‘হাম সাফার’ ড্রামা সিরিয়ালে ‘ও হামসাফার থা’ গানটি গাওয়ার পর বিখ্যাত হয়ে যান কুরাত-উল-আইন। তিনি সুফির পাশাপাশি রক গানও ভালো গান। গান লেখেনও কুরাত-উল-আইন। অভিনয়ও করেছেন।

মানুষ তাঁকে পছন্দ করে বহুমুখী ও মার্জিত কণ্ঠের কারণে। আদর করে তাঁকে কিউবি বলে ডাকেন অনেকে। পাকিস্তান কোক স্টুডিওতে বেশ কয়েকটি হিট গান উপহার দিয়েছেন তিনি। বলিউডের ‘পিংক’ সিনেমায় তাঁর প্রথম প্লেব্যাকে অভিষেক। এই সিনেমায় ‘কারি কারি’ গানটিতে কুরাত-উল-আইনের শক্তিশালী কণ্ঠ এবং ওই সময়ের দৃশ্যাবলি দর্শকের মেরুদণ্ডে কাঁপুনি ধরাতে বাধ্য। 

মূলত সুফি ঘরানার গান করেন কুরাত-উল-আইন বালুচকুরাত-উল-আইনের ব্যক্তিগত জীবনও বেশ বৈচিত্র্যময়। একাধিক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর পরিবার ও ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। কুরাত-উল-আইনের দাদা ইরানি। তিনি বিয়ে করেন এক পাকিস্তানি নারীকে। থেকে যান পাকিস্তানেই। তাঁর বাবা পাকিস্তানের সাবেক সেনা কর্মকর্তা। 

পাকিস্তানি অভিনেত্রী টিভি সঞ্চালক সামিনা পীরজাদাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের বাবা-মার তিক্ত দাম্পত্য সম্পর্ক এবং বিষণ্ন শৈশবের গল্প বলেছেন কুরাত-উল-আইন। 

তিনি বাবা-মার বড় সন্তান। ছোট এক ভাই ও বোন আছে তাঁর। তাঁর পারিবারিক নাম শেরি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান দুই জায়গাতেই থাকেন তিনি। মা, ভাই-বোনেরা দুই দেশেই যাতায়াত করেন। মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। মায়েরও দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছে। দুই মা মিলে কুরাত-উল-আইনেরা আট ভাই-বোন। 

সাক্ষাৎকারে কুরাত-উল-আইন বলেন, আমি ছিলাম এক ভাঙা ঘরে। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের কারণে আমি বড় হয়েছি ফুপুর কাছে। আমার ফুপু আমাদের ভালোভাবে লালনপালন করেছেন। আঠারোটা বছর তিনি মাকে ছাড়া কাটিয়েছেন। 

নিজের সাফল্য নিজেই অভিভূত কুরাত-উল-আইন বালুচএই অভিজ্ঞতা বিয়ে ও পারিবারিক জীবন সম্পর্কে অনাগ্রহী করেছে তুলেছে তাঁকে। তাঁর ইচ্ছা, বিয়ে নিয়ে মানুষের মনস্তত্ত্ব পরিবর্তন করতে চান। এটি শুরু করতে চান নিজের ঘর থেকেই। 

সাক্ষাৎকারে কুরাত-উল-আইন বলেন, একটি দাম্পত্য কলহযুক্ত ও শেষ পর্যন্ত ভেঙে যাওয়া পরিবার তাঁকে যে অভিজ্ঞতা দিয়েছে সেটি মনে বড় ধরনের ক্ষত তৈরি করেছে। তিনি আর বিয়ে করতে চান না। জীবন সম্পর্কে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে চান। তিনি বলেন, নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই বিয়ে করেছিলেন এবং সেই বিয়ে মায়ের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হওয়ার দরজা খুলে দিয়েছিল। কুরাত-উল-আইনের মতে, ‘নারীদের অবমূল্যায়ন করা হয়। কিন্তু আমরা প্রজাতি হিসেবেও অনেক শক্তিশালী। নারীকে বশ্য ও দমন করা হয়।’ 

সাক্ষাৎকারে ২০১৩ সালের একটি ভয়ানক গাড়ি দুর্ঘটনার কথা স্মরণ করেন কুরাত-উল-আইন। সেই সময় বহু বছর পর তিনি বাবা-মাকে একটি ঘরে দেখেছিলেন। কিন্তু দ্রুতই সেই ঘর যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। বাবা-মা তর্কে লিপ্ত হন। তিনি তখন বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। সেই মুহূর্তেই তিনি বাবা-মাকে একেবারে ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।

সম্পর্কের কথা বললে কুরাত-উল-আইন বালুচ এখন একা। তিনি কারো সঙ্গে ডেট করছেন কি-না সেটিও জানা যায় না। একা জীবন উপভোগ করছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত