Ajker Patrika

মাশরুরের নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে

আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২১, ১৬: ০৮
মাশরুরের নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে

প্রায় চার বছর পর নতুন ছবির খবর দিলেন কিংবদন্তি অভিনেতা সোহেল রানার ছেলে মাশরুর পারভেজ। ছবির নাম ‘গোয়িং হোম’। ছবিটি সেপ্টেম্বরে ওয়েলসে প্রিমিয়ার হওয়ার কথা রয়েছে। সেখান থেকে আরও ফেস্টিভ্যাল হয়ে সর্বসাধারণের জন্য মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হবে। ছবির পরিচালক মাশরুর বলেন, ‘চেষ্টা করছি বিখ্যাত ফেস্টিভ্যালগুলোতে ছবি জমা দিতে। অস্কারও মাথায় রাখছি। ভালো কিছু ফেস্টিভ্যালে চলার পর বড় কোনো ডিস্ট্রিবিউটরের সঙ্গে পরিকল্পনা করব। তারপর সব ধরনের দর্শকের জন্য ছবি মুক্তি দেব। এভাবেই পরিকল্পনা সাজাচ্ছি।’

করোনার এই সময়ে হলের পাশাপাশি ওটিটিতে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। কথা হয়েছে জি–ফাইভের মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলোতেও। তবে মাশরুর চেষ্টা চালাচ্ছেন আরও বড় কোনো প্ল্যাটফর্মে মুক্তি দেওয়ার। প্রায় চার বছর পর ছবি আসছে। এতটা সময় নেওয়ার কারণ কী? ‘আমার মাথায় একটা ভাবনা সব সময় কাজ করে যে আমি প্রতি চার বছর পর পর একটা সিনেমা করব। আমি যখন সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছি, তখনই এই কথাটা বলতাম। অনেকে হেসে বলত, এত সময় নিয়ে কেন কাজ করবে? এটা আমার একটা টার্গেট। আমার দুনিয়া উল্টে যাক, আমার অবস্থা ভালো–খারাপ যাই হোক, আমি চার বছর পর পর একটা ছবি করব। ছবির বা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা ভালো–খারাপ যেটাই হোক, আমি সিনেমা বানিয়ে যাব।’

সিনেমার দৃশ্যে নুসরাত জাহান জেরিমাশরুরের প্রথম সিনেমা ‘রাইয়ান’ বাংলাদেশে ভালো ব্যবসা করেনি। তবে নিউইয়র্কে ছবিটি প্রশংসা কুড়িয়েছে। সেখান থেকেই দ্বিতীয় সিনেমা করার উৎসাহটা বেড়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘নিউইয়র্কে প্রশংসা পাওয়ার পর ভাবলাম আমি আমার গল্পটা বলতে পারি। গত চার বছর ধরে আস্তে আস্তে কাজটা আগাতে থাকি। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে শুটিং কমপ্লিট হয়। তারপর পোস্ট প্রডাকশনের কাজ করতে করতে এই বছরের ফেব্রুয়ারি। এখন পুরো ছবি তৈরি।’

এত দিন কাউকে না জানানোর কারণ হিসেবে বলেন, ‘গল্পটা যখন লিখছিলাম বা শুটিং শুরু করার পরেও ভয় ছিল। ভাবছিলাম, যেভাবে চাইছি সেভাবে ছবিটি বানাতে পারব তো? যদি না পারি, তাহলে তো অনেকে হাসাহাসিও করতে পারে। তাই কাজ শেষ না করা পর্যন্ত কাউকে কিছু জানাইনি। এখন আমি বলতে পারি, হ্যাঁ, আমি যা বানাতে চেয়েছিলাম অনেকটাই সেই মতো বানাতে পেরেছি। ভালো হয়েছে ছবিটি।’

ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাশরুর। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন একঝাঁক নতুন অভিনয়শিল্পী। অভিনয় করেছেন নুসরাত জাহান জেরি, ফাহিম ফারুকসহ অনেকে। পরিচালক মাশরুর বলেন, ‘অভিনয়শিল্পীর ব্যাপারে আমি খ্যাতিকে প্রাধান্য দিই না। গল্পের মারপ্যাঁচেই চরিত্রের জন্ম হয়। তাই পুরো স্ক্রিপ্ট হয়ে গেলে বিবেচনা করি কে কোন চরিত্রে ভালো করবে। কার লুক কতটা মানানসই। নায়িকা হিসেবে জেরিকে নিয়েছি এবং টুকটাক কাজ করেছেন মিডিয়ায়। দ্বিতীয় হিরো হিসেবে নিয়েছি ফাহিম ফারুককে। তিনি এর আগে অভিনয় করেননি। আমি পরিচিত মুখ নিতেই পারতাম। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, আমি যে গল্প বলতে চাই, তার সঙ্গে ফাহিমই মানানসই।’

ছবির পোস্টারে মাশরুর পারভেজবরেণ্য নায়ক ও প্রযোজক সোহেল রানা ছবিটি এখন পর্যন্ত দেখেনওনি। স্ক্রিপ্ট থেকে শুরু করে কোথাও ছিল না তাঁর কোনো হাত। পুরোদস্তুর ছেলের কাজটি তিনি দেখতে চান। তবে ছবিটি নিয়ে ছেলের যে স্ট্রাগল, সেটা জানেন। তিনি বলেন, ‘এটা আমার ছেলের দ্বিতীয় ছবি। অনেক যত্ন নিয়ে নির্মাণ করেছে। পোস্ট প্রডাকশনেও বেশ সময় দিয়েছে। ও যেভাবে মন দিয়ে কাজটা করেছে। আমার অভিজ্ঞতা বলছে, ছবিটি এই প্রজন্মের দর্শকদের ভালো লাগবে।’

প্রথম ছবিতে সোহেল রানা অভিনয় করলেও এই ছবিতে শুধু প্রযোজক হিসেবে নামটাই যাবে। মাশরুর বলেন, ‘প্রথম ছবিতে আব্বুর সঙ্গে ওই ক্যারেক্টারটা কিছুটা মিলে গিয়েছিল। তাই আব্বুকে কাস্ট করা। এবারের ছবিটি কোনো নায়ক বা নায়িকাকেন্দ্রিক নয়। মূলত এক ব্যক্তিকে ঘিরে এগিয়ে যায় ছবির গল্প। বলতে পারেন আমার জীবনের নানা ঘটনা, নানা বাস্তবতা থেকেই তুলে আনা হয়েছে ছবির গল্প। অর্থাৎ, ছবির অংশগুলো আমার জীবনের কোনো না কোনো অংশ থেকে নেওয়া।'

ছবির গল্প নিয়ে একটা উদাহরণও টানলেন। তিনি বলেন, ‘ছবির চরিত্রটি ব্যাংক থেকে টাকা চুরি করে। সাধারণত অন্যান্য ছবিতে দুইটা ব্যাপার দেখানো হয়। এক, পুলিশের কাছে ধরা খায়, না হয় অপরাধী বিজয়ী হয়। এখানের ক্যারেক্টারটা এমন যে, সে চুরি করে ধরা খায়নি। সবকিছুই ঠিকঠাক। কিন্তু নিজের বিবেকের কাছে ধরা পড়ে। চুরির পরে ওর জীবনটা ঠিকঠাক চললেও মনটা অস্থির হয়ে ওঠে।’

মাশরুর এই মুহূর্তে আরও একটি সিনেমার স্ক্রিপ্টের কাজ করছেন। আর প্রস্তুতি নিচ্ছেন এই ছবির ওয়ার্ল্ড ট্যুরের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত