Ajker Patrika

ক্যাম্পাসে সম্প্রীতির ইফতার

আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৫: ০০
ক্যাম্পাসে সম্প্রীতির ইফতার

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই পরিবার থেকে দূরে থাকেন। ফলে চাইলেও তাঁরা পরিবারের সঙ্গে সাহ্‌রি কিংবা ইফতার করতে পারেন না। এই শূন্যতা কিছুটা দূর করেন ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করে। রমজানে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতারের আয়োজন করতে দেখা যায়। একসঙ্গে ইফতার তাঁদের উৎফুল্ল করে তোলে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় হয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইফতার আয়োজন নিয়ে লিখেছেন মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ইফতার আয়োজন নিয়ে সন্ধ্যা নাগাদ মুখরিত হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা। টিএসসি ছাড়াও ক্যাম্পাসের সড়কদ্বীপ, মিলন চত্বর, হাকিম চত্বর, কার্জন হল, রোকেয়া হলের সামনে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক, সবুজ চত্বর, মলচত্বরসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা মুখরিত হয়ে ওঠে ইফতার করতে আসা শিক্ষার্থীদের পদচারণে। ইফতারে রাখা হয় ছোলা, মুড়ি, খেজুর, জিলাপি, বেগুনি, পেঁয়াজু, চিকেন, পাকুড়া, বুন্দিয়া, আলুর চপ। এ ছাড়া বিভিন্ন রকমের পানীয়, শরবত, জুস, কলা, আপেলসহ নানা জাতের ফল থাকে। সবুজ ঘাসের ওপর খবরের কাগজ বিছিয়ে ইফতারি পরিবেশন করা হয়। শিক্ষার্থী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-কর্মকর্তারা এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও তাঁদের পরিবার-পরিজন নিয়ে ইফতার করতে আসেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, টিএসসি, আবাসিক হল, ‘টারজান’ পয়েন্ট, পরিবহন চত্বরে শিক্ষার্থীরা ইফতার করেন। এ ছাড়া আবাসিক হলের ছাদ, মাঠ, ডাইনিং-ক্যান্টিনেও ইফতারে মিলিত হন শিক্ষার্থীরা। তবে ইফতারের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। প্রতিদিন বিকেলে খেলার মাঠ শিক্ষার্থীদের ছোট ছোট জটলায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। বর্তমান শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাবেক শিক্ষার্থীরাও এখানে ইফতার করতে আসেন। ইফতারের আগে পথশিশু, দুস্থ-অসহায় ব্যক্তিদের আগমন ঘটে, যাদের পক্ষে অর্থ দিয়ে ইফতারসামগ্রী কেনা সম্ভব নয়। এখানে আসা অনেকেই অসমর্থ মানুষের সঙ্গে ইফতারি ভাগাভাগি করে নেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
রমজানের শিক্ষা, নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সর্বস্তরে ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ইফতারের আয়োজন করেন। স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে কোরআন তিলাওয়াত, হামদ-নাত ও ইসলামি বিভিন্ন পরিবেশনা থাকে। দোয়া ও মোনাজাতের পর মাগরিবের আজান দিলে সবাই একসঙ্গে ইফতার করেন। রমজানের মাহাত্ম্য ও নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব তুলে ধরতে এবং ইসলামের সাংস্কৃতিক বিকাশের লক্ষ্যে একসঙ্গে সবাই ইফতার করেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
আসরের নামাজের পর থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন খেলার মাঠে খোলা আকাশের নিচে দেখা যায় ইফতার আয়োজনের দৃশ্য। বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতজনদের নিয়ে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বাহারি পদের ইফতারির আয়োজন করে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হল মাঠ, শেখ রাসেল মডেল স্কুল মাঠ, শহীদ মিনার চত্বর, ইবলিশ চত্বর ও শাবাশ বাংলাদেশ মাঠ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর ছাদ, টিভিরুমসহ বিভিন্ন বিভাগের কক্ষেও ইফতারের আয়োজন করে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

 জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মেলবন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, অবকাশ ভবন, শান্ত চত্বর, মুক্তমঞ্চ, কাঁঠালতলা, রফিক ভবনের প্রতিটি তলার বারান্দা, বিবিএ ভবনের নিচতলায় পুরোটা, বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ, পোগোজ স্কুলের খেলার মাঠ ছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আঙিনায় জমে ওঠে ইফতারের আয়োজন। বেশ প্রাণোচ্ছল পরিবেশ দেখা যায় শহীদ মিনারে। ক্যাম্পাসের ছোট-বড় সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে ইফতারের আয়োজন। ক্যাম্পাসে ছোট ছোট দলে ছড়িয়ে আড্ডা-গল্পের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ইফতারের আয়োজন করেন।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় 
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, অ্যাগ্রোনমি ফিল্ড, টিএসসির সিঁড়ি, কৃষি অনুষদ মাঠ, শহীদ মিনার এবং হলগুলোতেও ইফতারের ঠিক আগমুহূর্তে প্রাণের আড্ডা জমে ওঠে। শিক্ষার্থীদের আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার ক্যাম্পাসজীবনে অন্য রকম অনুভূতি যোগ করে ইফতারের আনন্দ।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে ইফতারের আধা ঘণ্টা আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা হাতে ইফতারসামগ্রী নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। পত্রিকার কাগজ ও জায়নামাজ বিছিয়ে সারিতে বসেন। ইফতারের আগে তাঁদের কয়েকজন হামদ-নাতও পরিবেশন করেন। শিক্ষার্থীদের মতে, ক্যাম্পাসে ইফতারের আয়োজন সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির এক অনন্য বন্ধন। সবাই মিলে ইফতারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

 কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, শহীদ মিনার, মুক্তমঞ্চ, কাঁঠালতলা, ক্যাফেটেরিয়ার ছাদ, বিভিন্ন বিভাগের করিডর, অনুষদের হলরুম, ছাদের আঙিনা, ব্যাডমিন্টন কোর্টসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীদের ইফতারের আয়োজন জমে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ইফতার করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, আঞ্চলিক সংগঠনগুলোও ইফতারের আয়োজন করে থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকেরাও শামিল হন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ইফতারের আয়োজন করেন। ক্লাস-পরীক্ষা ও টিউশনির ব্যস্ততা শেষে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, মুক্তমঞ্চ, হলের ছাদ, টিএসসিসহ বিভিন্ন চত্বরে। রোজা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ইবাদত হলেও তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়ে থাকেন অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর বন্ধুরাও।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে ইফতার উৎসবে মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। মাঠ ছাড়াও হলের ছাদ, ডাইনিংসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ইফতারের আয়োজন দেখা যায়। প্রতিদিন ইফতারের সময় কেউ ছোলা-মুড়ি মাখাতে ব্যস্ত, কেউ ব্যস্ত শরবত বানাতে। কেউ আবার গল্প-আড্ডায় জমিয়ে রাখছেন আসর। সবাই মিলে ইফতারি সামনে নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন পশ্চিম দিগন্তে সূর্য ডোবার। ইফতার শেষে মাঠেই জামাতে নামাজ আদায় করেন শিক্ষার্থীরা।

 চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, ক্যাফেটেরিয়া, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, শহীদ মিনার, স্টেশন চত্বর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে ইফতারের আয়োজন করেন। অনেকেই বন্ধুদের নিয়ে ক্যাম্পাসের সবুজ ঘাসের ওপর পত্রিকা বিছিয়ে ইফতার করেন। ক্যাম্পাসে যে শুধু বর্তমান শিক্ষার্থীরা ইফতার করেন তা কিন্তু নয়, দূর-দূরান্ত থেকে দল বেঁধে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও একসঙ্গে ইফতার করতে আসেন।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টিএসসিতে প্রতিদিন ইফতারের আয়োজন করেন। শিক্ষার্থী যোবায়ের আলী বলেন, ‘বাঙালির চিরায়ত মুসলিম সংস্কৃতি রমজান, সাহরি ও ইফতার। এই সংস্কৃতি ও ধর্মীয় রীতি। শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে ক্যাম্পাসে ইফতার করবেন—এটাই ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির উদাহরণ।’

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, স্বাধীনতা চত্বর মাঠ, ক্যাফেটেরিয়ার সামনের মাঠ, সেন্ট্রাল লাইব্রেরির আশপাশ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে চলে শিক্ষার্থীদের ইফতারের উৎসব। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও মাঝেমধ্যে দর্শনার্থীরা ক্যাম্পাসে বসে ইফতারির স্বাদ নেন।

এসব ক্যাম্পাস ছাড়াও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ফিল্ডে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ডুয়েট, চুয়েটসহ বিভিন্ন পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রীতির ইফতারের আয়োজন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শহীদ মিনারে তৃতীয় দিনের মতো প্রাথমিকের শিক্ষকদের অবস্থান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। আর কর্মবিরতি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিলেও গতকাল রোববার মধ্যরাতে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তাঁরা।

রোববার বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ রাত পৌনে ১০টায় কর্মবিরতি স্থগিত করে অবস্থান কর্মসূচি চালানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ও তথ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য বিবরণীতেও শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিতের কথা বলা হয়েছিল।

তবে শিক্ষকেরা শহীদ মিনারে ফেরার পর আরেক আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি কর্মবিরতি ও অবস্থান চালানোর ঘোষণা দেন।

সেসময় সিদ্ধান্ত বদলের কারণ জানতে চাইলে শিক্ষক নেতা মুহিব উল্লাহ বলেছিলেন, ‘সাধারণ শিক্ষকদের জনরোষে নেতারা সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।’

রোববার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সহকারী শিক্ষকেরা দশম গ্রেডে বেতন ছাড়াও, চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা দেওয়ার দাবি জানান।

শনিবার সকাল থেকে শহীদ মিনারে এই তিন দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে শাহবাগ থানার সামনে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ।

এ সময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসে কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায় শিক্ষকদের। এ সময় দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হওয়ার পাশাপাশি ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন শিক্ষক নেতারা।

যদিও ঢাকা মহানগর পুলিশের দাবি, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পুলিশের বাধার মুখে শহীদ মিনারে ফিরে এসে রোববার থেকে কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকেরা। শনিবার মধ্যরাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে শিক্ষকেরা ‘পুলিশের হামলার’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ নামে চারটি শিক্ষক সংগঠনের মোর্চার ব্যানারে শিক্ষকেরা ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালাচ্ছেন। এই মোর্চায় আছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি ও সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ।

এদিকে ১১ তম গ্রেডে বেতনসহ, পদোন্নতি ও উচ্চতর গ্রেড জটিলতা নিরসনের দাবিতে সরকারকে আল্টিমেটাম দেওয়া শিক্ষক সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারাও ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭ টি। এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার। কর্মবিরতির কারণে দ্বিতীয় দিনেও এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চীনের তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয় সিএসসি বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চীনে তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয় সিএসসি বৃত্তির আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির আওতায় দেশটির তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করতে পারবেন। এই বৃত্তিটিতে অর্থায়ন করবে দেশটির সরকার। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তিটি কার্যকর থাকবে।

তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয় চীনের অন্যতম প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৮৯৫ সালে পেইয়াং ইউনিভার্সিটি নামে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ছিল চীনের প্রথম আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়। এখনো বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গবেষণাক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক গবেষণাগার, উদ্ভাবনমুখী পাঠ্যক্রম এবং বিশ্বমানের শিক্ষকদের কারণে প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছেও ব্যাপক জনপ্রিয়।

সুযোগ-সুবিধা

তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তিটি সম্পূর্ণ অর্থায়িত। বিশ্ববিদ্যালয়টির বৃত্তি কর্মসূচি উদ্ভাবন, আন্তসাংস্কৃতিক সহযোগিতা এবং একাডেমিক সাফল্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বৃত্তিটির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি সম্পূর্ণ মওকুফ করা হবে। ক্যাম্পাসে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। থাকছে মাসিক ভাতা ও সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিমার ব্যবস্থা। এ ছাড়া স্নাতকোত্তরের জন্য থাকছে ৩ হাজার চায়নিজ ইউয়ান এবং পিএইচডির জন্য থাকছে সাড়ে ৩ হাজার ইউয়ান।

আবেদনের যোগ্যতা

প্রার্থীদের চীনা নাগরিকত্ব থাকা যাবে না। এ ছাড়া বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা বৃত্তিটির জন্য আবেদন করতে পারবেন। স্নাতকের জন্য আবেদনকারীদের বয়সসীমা ৩৫ বছরের নিচে হতে হবে আর স্নাতকোত্তরের জন্য ৪০ বছরের নিচে হতে হবে। আইইএলটিএস স্কোর ৬ থাকতে হবে বা টোয়েফলে স্কোর ন্যূনতম ৮০ থাকতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ

তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসসি স্কলারশিপের আওতায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন আধুনিক ও চাহিদাসম্পন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন। এগুলো হলো কম্পিউটার সায়েন্স ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা; ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি; পরিবেশবিজ্ঞান; স্থাপত্য ও নগর পরিকল্পনা; আন্তর্জাতিক সম্পর্ক; জীববিজ্ঞান ও বায়োটেকনোলজি; ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা; গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন।

প্রয়োজনীয় তথ্য

অনলাইন সিএসসি আবেদন ফরম, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্ক্যান কপি, পাসপোর্টের ফটোকপি, চায়নিজ বা ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার সনদ, শিক্ষা বা গবেষণার অভিজ্ঞতার জীবনবৃত্তান্ত, তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপারভাইজারের অ্যাকসেপটেনস লেটার, শিক্ষা বা গবেষণা পরিকল্পনা, দুটি সুপারিশপত্র, শারীরিক পরীক্ষার ফরমের ফটোকপি, অপরাধমুক্তির সনদ।

আবেদন পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: আগামী ১৮ জানুয়ারি, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন শুরু

শিক্ষা ডেস্ক
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তির আবেদনের প্রক্রিয়া রোববার (৯ নভেম্বর) বেলা ১২টা থেকে শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ১১ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত। আর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর। এবার বিশ্ববিদ্যালয়টির চারটি প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার টাকা। টেলিটক সিমের মাধ্যমে ফি জমা দিতে হবে। আগামী ১৪ ডিসেম্বর রাত ১২ পর্যন্ত ফি জমা দেওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে যোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে।

প্রাথমিকভাবে যোগ্য প্রার্থীরা আগামী ১৬-২৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। আবেদনের প্রক্রিয়া শেষে ২৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা এই লিংকে গিয়ে বিস্তারিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেখতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এইচএসসি ২০২৬: আপাতত নির্বাচনী পরীক্ষা নয়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

২০২৬ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় অংশ নিতে ইচ্ছুক দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, আপাতত কোনো প্রতিষ্ঠান নির্বাচনী পরীক্ষা নিতে পারবে না।

আজ রোববার বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে

বলা হয়, ২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী পরীক্ষা গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, নির্বাচনী পরীক্ষার তারিখ পরে আলাদা একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও প্রধানদের এই নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণের আহ্বানও জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষা পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচিতে সব বিষয়ে পূর্ণ সময়ে ও পূর্ণ নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। ওই বছরের মে-জুন মাসে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) এ–সংক্রান্ত একটি চিঠি ২৩ আগস্ট ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত