Ajker Patrika

চুয়েটের ‘প্যাডম্যান’ তাঁরা

মো. গোলাম রব্বানী
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫: ৩২
চুয়েটের ‘প্যাডম্যান’ তাঁরা

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশ নারীর মধ্যে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীর সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রায় ৯৪ শতাংশ নারী তাঁদের ঋতুচক্র ব্যবস্থাপনার বাইরে। তাঁরা এখনো পুরোনো কাপড় ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাবের পাশাপাশি বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত প্যাডের দাম। বর্তমান বাজারে বিক্রীত স্যানিটারি প্যাডগুলোর বেশির ভাগে একটি ভয়ংকর রাসায়নিক উপাদান ডাই-অক্সিন ব্যবহার করা হয়। এটি মানবদেহে ক্যানসারের মতো গুরুতর রোগ সৃষ্টি করতে পারে।

স্যানিটারি প্যাডকে সহজলভ্য ও ক্ষতিকর রাসায়নিক থেকে মুক্ত করতে কাজ করছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ আলম ও তাঁর দল। তাঁরা কলাগাছের তন্তু দিয়ে তৈরি করছেন বিশেষ ধরনের স্যানিটারি প্যাড। এর নাম রেখেছেন ‘ব্যানানা প্যাড’। এটি সাধারণ কাপড়ের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ বেশি পানি শোষণে সক্ষম। আসিফ আলম একা শুরু করলেও এখন এই প্রজেক্টে কাজ করছেন আরও দুজন। তাঁরা হলেন পুরকৌশল বিভাগের আতিফ আলম ও তড়িৎকৌশল বিভাগের ইশরাত জাহান। তিনজনের মিলিত প্রচেষ্টায় প্রজেক্টটি এখন আশার আলো দেখছে। চুয়েটে তাঁরা এখন প্যাডম্যান হিসেবে পরিচিত।

আসিফ আলম প্রথমে প্যাডটিকে বারবার ব্যবহার উপযোগী করতে অধিক শোষণক্ষম একধরনের চিপ ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে দাম বেড়ে যাওয়াসহ স্বাস্থ্যঝুঁকিও থেকে যাচ্ছিল। ফলে ব্যর্থতার অন্ধকারে চাপা পড়ে যায় প্রকল্পটির অগ্রগতি। এরপর তৈরি প্যাডে দ্রুত তরল শুষে নেওয়ার উপযোগী একটি চিপ লাগিয়ে বারবার ব্যবহার উপযোগী করা যায় কি না, সেই চেষ্টা করে তিনি সফল হন। কিন্তু তাতেও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি ও দামের সমস্যা থেকেই যাচ্ছিল। পরে বান্দরবান ঘুরতে গিয়ে আসিফ লক্ষ করলেন, সেখানে কলাগাছের প্রাচুর্য আছে। কলাগাছ একবার কেটে ফেললে সেটা দিয়ে আর তেমন কিছু করা যায় না। কলাগাছের তন্তু দিয়ে স্যানিটারি প্যাড তৈরির কথা ভাবতে শুরু করেন আসিফ।

 তবে কলাগাছের আঁশ দিয়ে কাপড় তৈরি করতে বেশ কয়েকটি ধাপ পার হতে হয়। এর প্রথম ধাপ কলাগাছের পানি নিষ্কাশন। বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে এ কাজ করতে গেলেও বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হবে। অনেক ভেবে আসিফ হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্টের টারবাইনকে কাজে লাগিয়ে রিসাইক্লারের মাধ্যমে কাজটি করতে সক্ষম হন। এতে বিদ্যুতের জন্য অর্থ ব্যয় বন্ধ করা যায়। এর মাধ্যমে তৈরি করা আঁশের পানি শোষণক্ষমতা প্রাকৃতিকভাবেই ভালো। সেই আঁশকে আরও তিনটি ট্রিটমেন্টের মধ্য দিয়ে নিয়ে গেলে সেগুলো সাধারণ কাপড়ের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ বেশি শোষণক্ষম হয়ে উঠতে পারে। সেই প্রক্রিয়াগুলো ব্যয়বহুল নয় বলে প্যাডের দামও থাকবে সীমিত। এই চিন্তা আসিফ ও তাঁর দলকে আশার আলো দেখাতে শুরু করে।
রাসায়নিক উপাদান বাদ দিয়ে এখন ব্যানানা প্যাড তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যানানা প্যাডে সংক্রমণরোধী যে চেম্বার স্থাপন করা হবে এর জন্য বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসের (বিআরআইসিএম) সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দলটি। প্রজেক্ট ডেভেলপমেন্ট, টেস্টিং, ট্রান্সপোর্টেশনে সার্বিকভাবে দলটিকে সহযোগিতা করছে ইডুকেশন এটি চট্টগ্রাম এবং ব্রাইট উইনস।

প্রজেক্ট ব্যানানা প্যাড বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অর্জন করেছে অনেক পুরস্কার। বছর গড়াতেই পাঁচটির বেশি জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে প্রকল্পটি। গত ডিসেম্বর মাসে ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইইই) বাংলাদেশ সেকশনের আয়োজনে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাকটিভিটিস শাখায় উদ্যোক্তাদের আইডিয়া প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়বারের মতো প্রথম স্থান অর্জন করে ব্যানানা প্যাড। এর আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক উপকমিটি কর্তৃক আয়োজিত পরিবেশবিষয়ক উদ্ভাবন প্রতিযোগিতা-২০২৩-এর জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন, চট্টগ্রামের ইস্ট ডেলটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে প্রজেক্ট শোকেসে প্রথম হয় প্রকল্পটি। এ বছরের শুরুতে হাল্ট প্রাইজ চুয়েট ২০২৩-২৪ সেশনে এই প্রকল্প অর্জন করেছে ধারাবাহিক সাফল্য।

আসিফ আলম জানান, ব্যানানা প্যাডটি একজন নারীর ষষ্ঠ মৌলিক অধিকার হিসেবে কাজ করবে। এটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের নারী ও কিশোরীদের যেমন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে, ঠিক তেমনি ওই অঞ্চলে তৈরি হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ। বড় কোনো প্রতিষ্ঠান এটি বাস্তবায়নে সহায়তা করলে দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে এই ব্যানানা প্যাড।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

এবার তেলের খনি নাইজেরিয়াতে নজর ট্রাম্পের, অজুহাত—খ্রিষ্টানরা ভালো নেই

সুদানে ‘গণহত্যা’য় আরব আমিরাতের গোপন তৎপরতা ও কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পরামর্শ

মো. শাহজালাল মিশুক
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৯
মো . শাহজালাল মিশুক, সহকারী অধ্যাপক নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ
মো . শাহজালাল মিশুক, সহকারী অধ্যাপক নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ

দেশে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। এ ধাপে একজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীকে কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে এবং দিন শেষে নিজেকে সফল প্রমাণ করতে হলে কিছু বিষয় মেনে চলা খুবই জরুরি।

নিজের স্বাস্থ্যের খেয়াল ও আত্মবিশ্বাসী হওয়া

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির সময় শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে অনেক চাপে থাকেন। বেশি পড়াশোনার জন্য ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এটি করা যাবে না। একজন ভর্তি পরীক্ষার্থীর দৈনিক ৬-৭ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। নিয়মিত পানি পান করতে হবে। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার সময় কোনোভাবেই অসুস্থ হওয়া যাবে না।

কৌশলী প্রস্তুতি গ্রহণ

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কয়েক মাস সময় পাওয়া যায়। এ স্বল্প সময়ে ভর্তি পরীক্ষায় সফলতা লাভের জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রস্তুতি গ্রহণ। এ ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীকে কৌশলী হওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস যথেষ্ট বড় এবং কঠিন হওয়ায় কোন কোন টপিক পরীক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটি আগে খুঁজে বের করতে হবে। সিলেবাসের কোন অংশ থেকে বেশি প্রশ্ন হয়ে থাকে, কোন অংশ থেকে তুলনামূলকভাবে কম প্রশ্ন হয়, সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে যত বেশি সম্ভব বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন সমাধান করতে হবে।

ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার সীমিতকরণ

ভর্তি প্রস্তুতির সময় ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার, টেলিভিশন ইত্যাদি থেকে নিজেকে দূরে রাখা উচিত। কারণ প্রতিটি মুহূর্ত অনেক মূল্যবান। অযথা সময় নষ্ট করা যাবে না। তবে প্রতিদিন আপডেট থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে তা যেন অবশ্যই পড়াশোনাবিষয়ক কাজেই ব্যবহৃত হয়। প্রতিদিন একবার হলেও গণমাধ্যমগুলোর শিরোনাম পড়া উচিত।

বিগত সালের প্রশ্নব্যাংক সমাধান

নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার বিগত ১০ বছরের প্রশ্নগুলো প্রাথমিকভাবে ঘেঁটে দেখুন। এরপর সেখান থেকে বের করুন, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় কোন টপিক থেকে প্রশ্ন বেশি আসে, কোন কোন টপিক থেকে প্রশ্ন কম আসে, আর কোন কোন টপিক থেকে প্রশ্ন আসেই না। আপনার টার্গেটেড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা টপিকগুলো নোট করলে বেশি ভালো হয়।

অনুশীলন এবং অনুশীলন

এ সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন প্রচুর অনুশীলন। যে যত বেশি অনুশীলন করবে, সে তত বেশি এগিয়ে থাকবে। তবে অনুশীলনের সময় একটি বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি। সেটি হলো: একই টপিক বা বিষয় যেন বারবার রিভিশন দেওয়া না হয়। যেমন: একই নিয়মের ১০টি অঙ্ক সমাধান করার চেয়ে ১০ নিয়মের একটি করে অঙ্ক সমাধান করা বেশি কার্যকর। সব টপিক ও বিষয়কে সমান গুরুত্ব দিতে হবে।

সময় ব্যবস্থাপনা জরুরি

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধে জয়লাভ করতে হলে অনেক রণকৌশল শিখতে হবে। সময় ব্যবস্থাপনা তার মধ্যে অন্যতম। কীভাবে কম সময়ের মধ্যে উত্তর করা যায়, তার জন্য প্রয়োজন প্রচুর অনুশীলন। এর জন্য শর্টকাট টেকনিকসহ আরও বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনে বাড়িতে বসে সময় দেখে দেখে পরীক্ষা দিতে হবে। সময় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ধারণা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাদ পড়ে যায়।

শেষ মুহূর্তের গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে পরীক্ষার নিয়মকানুন জানা, ওএমআর ফরম পূরণ, পরীক্ষার দিনে প্রবেশপত্র সঙ্গে থাকা ইত্যাদিও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একসঙ্গে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছপদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়, আর কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেয়—সেগুলো খেয়াল রেখে পরিকল্পনা করতে হবে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনিটভিত্তিক পরীক্ষা নেয় তাদের জন্য একধরনের প্রস্তুতি, আর যারা বিষয়ভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা নেয় তাদের জন্য ভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

এবার তেলের খনি নাইজেরিয়াতে নজর ট্রাম্পের, অজুহাত—খ্রিষ্টানরা ভালো নেই

সুদানে ‘গণহত্যা’য় আরব আমিরাতের গোপন তৎপরতা ও কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ অর্থায়িত মেক্সট বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ অর্থায়িত মেক্সট বৃত্তি

জাপানের হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ে মেক্সট স্কলারশিপের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেসব দেশের সঙ্গে জাপানের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, সেসব দেশের শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা জাপান সরকারের এই বৃত্তির মাধ্যমে হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। বৃত্তিটি ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য কার্যকর থাকবে।

হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয় জাপানের অন্যতম পুরোনো ও মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, যা গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে। দেশের উত্তরের হোক্কাইডো দ্বীপের রাজধানী সাপ্পোরোতে অবস্থিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি বিস্তীর্ণ সবুজ ক্যাম্পাস, আধুনিক গবেষণাগার ও বিশ্বমানের একাডেমিক পরিবেশের জন্য পরিচিত। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ ও বহুমুখী স্কলারশিপ সুবিধা রয়েছে।

মেক্সট স্কলারশিপ কী

মেক্সট হলো জাপানের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংক্ষিপ্ত রূপ। এই মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ বৃত্তি প্রদান করে থাকে। যার মাধ্যমে ব্যাচেলর, মাস্টার্স এবং পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার সুযোগ পাওয়া যায়। নিজের দেশে যে বিষয়ে পড়েছেন, সে ক্ষেত্রেই জাপানে এই বৃত্তির আওতায় উচ্চশিক্ষা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এই বৃত্তির উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী মেধাবী শিক্ষার্থীদের জাপানের উন্নত শিক্ষা ও গবেষণা পরিবেশে যুক্ত করা, বৈশ্বিক গবেষণা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়কে এগিয়ে নেওয়া।

সুযোগ-সুবিধা

হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ে মেক্সট বৃত্তিটি সম্পূর্ণ অর্থায়িত। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে। এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে আইইএলটিএস বা টোফেলের প্রয়োজন নেই। স্নাতকোত্তরের জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মাসিক ভাতা হিসাবে থাকছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ইয়েন। আর পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ইয়েন।

এ ছাড়া বৃত্তিটির জন্য আবেদন ফি লাগবে না। মওকুফ করা হবে ভর্তি ফিও। জাপানে যাওয়ার জন্য দেওয়া হবে বিমানভাড়া। আর পড়াশোনা শেষে দেশে ফেরার সময়ও থাকছে বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা। এই বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা শুধু উচ্চমানের শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগই পাবেন না; বরং জাপানের আধুনিক, নিরাপদ ও প্রযুক্তিসমৃদ্ধ পরিবেশে নতুন অভিজ্ঞতা ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার সুযোগও পাবেন।

আবেদনের যোগ্যতা

এই স্কলারশিপের জন্য যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। তবে প্রার্থীদের অবশ্যই জাপানের বাইরে বসবাসরত হতে হবে। আবেদনকারীকে পূর্ববর্তী ডিগ্রি সম্পন্ন করতে হবে। স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে আবেদন করতে হলে অবশ্যই স্নাতক (ব্যাচেলর) ডিগ্রি থাকতে হবে। পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদনকারীর স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) ডিগ্রি থাকতে হবে। প্রার্থীর জন্ম অবশ্যই ১৯৯০ সালের ২ এপ্রিলের পরে হতে হবে।

বৃত্তির মেয়াদ

স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের মেয়াদ দুই বছর। আর পিএইচডি প্রোগ্রামের তিন বছরের। এ সময়ে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ অর্থায়ন ও গবেষণা সহায়তা পাবেন।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

বৈধ পাসপোর্টের সত্যায়িত অনুলিপি, পূর্ববর্তী সব শিক্ষাজীবনের নম্বরপত্র ও সনদ, পছন্দের বিষয় ও প্রস্তাবিত গবেষণা পরিকল্পনা, স্নাতকপর্যায়ের থিসিসের সারসংক্ষেপ এবং প্রকাশিত গবেষণাপত্র (যদি থাকে), স্নাতক ডিগ্রি সনদ অথবা সম্ভাব্য স্নাতকোত্তীর্ণ হওয়ার প্রত্যয়নপত্র, কমপক্ষে একজন শিক্ষকের সুপারিশপত্র ও ইংরেজি দক্ষতা পরীক্ষার নম্বরপত্র অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি দক্ষতা সনদ।

আবেদন পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা এই গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

এবার তেলের খনি নাইজেরিয়াতে নজর ট্রাম্পের, অজুহাত—খ্রিষ্টানরা ভালো নেই

সুদানে ‘গণহত্যা’য় আরব আমিরাতের গোপন তৎপরতা ও কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ফি কমানো হবে: উপাচার্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ। ফাইল ছবি
উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ। ফাইল ছবি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষার ফি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ।

আজ শুক্রবার রাতে আজকের পত্রিকাকে তিনি এ তথ্য জানান।

উপাচার্য বলেন, ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি বাড়ানোর বিষয়টি শিগগির সমাধান করা হবে এবং তা তৃতীয় বর্ষ থেকে কার্যকর হবে। যারা এরই মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করেছে, তাদের ফি অ্যাডজাস্ট করা হবে।

উপাচার্য আরও বলেন, বর্তমান ফি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

এবার তেলের খনি নাইজেরিয়াতে নজর ট্রাম্পের, অজুহাত—খ্রিষ্টানরা ভালো নেই

সুদানে ‘গণহত্যা’য় আরব আমিরাতের গোপন তৎপরতা ও কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইএসইউতে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো নবীনবরণ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটিতে (আইএসইউ) অনুষ্ঠিত হলো ফল-২০২৫ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাখালী ক্যাম্পাসে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আইএসইউ উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খানের সভাপতিত্বে এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার তাসমিয়া রহমান।

প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খান বলেন, ‘উন্নত ক্যারিয়ার গঠনে অবশ্যই শিক্ষাজীবনে যেমন পড়াশোনা করতে হবে, তেমনি ভালো মানুষ হয়েও গড়ে উঠতে হবে। জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের সব ক্ষেত্রে সেরা হতে হবে যেন পরিবার, দেশ এবং বিশ্বের জন্য অবদান রাখতে পারো। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

ছাত্র-ছাত্রীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আইএসইউর যথাযথ উদ্যোগের কথা তুলে ধরে উপাচার্য জানান, আধুনিক ক্লাসরুম, ল্যাব, মানসম্মত শিক্ষক, তাত্ত্বিক, ব্যবহারিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীবান্ধব উন্নত পরিবেশ তৈরি ও রক্ষা করার জন্য আইএসইউ বদ্ধপরিকর।

ইঞ্জিনিয়ার তাসমিয়া রহমান নবীন শিক্ষার্থীদের আইএসইউ পরিবারে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের জীবনকে এবং আশপাশের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নতুন এ যাত্রায় নতুন কিছু যেমন শিখবে, তেমনি নতুন সৃষ্টিশীলতায় ও উদ্ভাবনে অগ্রগামী হতে হবে। নিজেকে গড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজের পরিবার ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তোমাদের কাজ, অভিজ্ঞতা ও জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলোই একসময় তোমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন আইএসইউ ট্রেজারার প্রফেসর এইচ টি এম কাদের নেওয়াজ, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর মোহাম্মদ আবুল কাসেম, আইকিউএসি পরিচালক প্রফেসর ড. মো. একরামুল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর মোহাম্মদ আলী এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইএসইউ রেজিস্ট্রার মো. ফাইজুল্লাহ কৌশিক। শোয়েব আহমেদ ও মাইশা আফিয়া জেরিনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারপারসন, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

এবার তেলের খনি নাইজেরিয়াতে নজর ট্রাম্পের, অজুহাত—খ্রিষ্টানরা ভালো নেই

সুদানে ‘গণহত্যা’য় আরব আমিরাতের গোপন তৎপরতা ও কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত