Ajker Patrika

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

দুই ভিসির ‘অনিয়মের পথে’ নতুন ভিসি

  • বিধি লঙ্ঘন করে ডিন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়োগের অভিযোগ
  • ডিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়োগের সুযোগ নেই: ইউজিসি।
  • নিয়োগে অনিয়মের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বর্তমান ভিসি।
ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট 
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৮: ০২
সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত
সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (এসএমইউ) প্রথম উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী ও দ্বিতীয় উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্ত। তাঁদের দেখানো পথেই হাঁটছেন তৃতীয় ও বর্তমান ভিসি ডা. ইসমাঈল হোসেন পাটোয়ারী। অবৈধভাবে ও অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ করা লোকজন নিয়েই তিনি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বরাদ্দ করা পদসংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত নিয়োগ দিয়ে নানা সমালোচনার মুখে পড়েন প্রথম উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী। নিয়োগ-বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ মাথায় নিয়ে মেয়াদ পূর্ণ করেই বিদায় নেন তিনি। ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে যোগ দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চক্ষু চিকিৎসক এ এইচ এম এনায়েত হোসেন।

অভিযোগ রয়েছে, এনায়েত হোসেন যোগদানের পর ২৩৯ জন কর্মকর্তার বেতন-ভাতা বন্ধ করলেও এসব কর্মকর্তার স্বাক্ষরেই চলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকাণ্ড। পরে ওই ২৩৯ জনের মধ্য থেকে উপাচার্য তাঁর পছন্দ অনুসারে সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, হিসাবরক্ষক ও ক্যাশিয়ার এবং ২৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অস্থায়ী ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগ দেন।

গুরুত্বপূর্ণ রেজিস্ট্রার দপ্তর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে যাঁদের দিয়ে কাজ করানো হয়, তাঁরা দুই বছর ধরে সরকারি বেতন পাচ্ছেন না। কিন্তু তাঁরা বিকল্প উপায়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন সরকারি অর্থ। ২০২৪ সালের শুরু থেকে দীর্ঘদিনের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলনরত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এরই মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবিতে যোগ হয় উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কোনো ধরনের ছুটি ছাড়া টানা তিন মাস ক্যাম্পাসে আসেননি উপাচার্য এনায়েত।

বিধি লঙ্ঘন করে ডিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়োগ

নানা ভাবে সমঝোতার চেষ্টা করেন তৎকালীন উপাচার্য এনায়েত। শেষরক্ষা হবে না ভেবে উপাচার্য পদ টিকিয়ে রাখতে হঠাৎ ঢাকায় সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিএনপিপন্থী দুজন চিকিৎসককে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও এসএমইউ আইন ২০১৮ অমান্য করে নিজের গদি রক্ষায় ডিন হিসেবে অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে ডা. মো. জিয়াউর রহমান চৌধুরীকে নিয়োগ দেন।

তাঁদের মধ্যে ডা. নাজমুল ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সিলেট জেলা সভাপতি ও নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজের নেফ্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক। ডা. জিয়া ড্যাব ওসমানী মেডিকেল শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কলেজটি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।

ডা. নাজমুলের নিয়োগে বলা হয়েছে- এসএমইউ আইন ২০১৮ এর ধারা ২৩ এর উপধারা ৫ অনুযায়ী ১০ম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ডিন হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হয়েছে। অথচ, বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সিন্ডিকেটকে ডিন বা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়োগের কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি।

আর ২৩ নম্বর ধারার ৫ নম্বর উপধারায় বলা আছে, ‘প্রত্যেক অনুষদের একজন করিয়া ডিন থাকিবে এবং তিনি ভাইস চ্যান্সেলরের তত্ত্বাবধানে অনুষদ সম্পর্কিত সংবিধি, বিধি ও প্রবিধান যথাযথভাবে পালনের জন্য দায়ী থাকিবেন।’ একই ধারার ৬ নম্বর উপধারায় ‘প্রত্যেক অনুষদের ডিন সংশ্লিষ্ট অনুষদের অন্তর্ভুক্ত সকল বিভাগের শিক্ষকদের দ্বারা নির্বাচিত হইবেন’ উল্লেখ রয়েছে।

একই দিনে একইভাবে ‘পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক’ হিসেবে ডা. মো. জিয়াউর রহমান চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে; যা ইউজিসি ও এসএমইউ আইন পরিপন্থী। বিএনপিপন্থী এই চিকিৎসক গত ১৫ বছর কোনো পদোন্নতি পাননি। ফলে ক্ষমতার পালাবদলের পর তিনি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনোনীত হন। অধ্যক্ষ হওয়ার জন্য অধ্যাপক বাধ্যতামূলক হওয়ায় তাঁকে চলতি দায়িত্ব পরিচালনার জন্য সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে এই নিয়োগের পাশাপাশি অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পেরে সাবেক উপাচার্য এনায়েত হোসেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত ডিন অফিসে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সবশেষে টিকতে না পেরে পদত্যাগ করেন ডা. এনায়েত হোসেন। তারপর উপাচার্য ছাড়াই কেটে যায় বেশ কিছুদিন।

চলতি বছরের মার্চের শুরুতে যোগদান করেন জামায়াতপন্থী হিসেবে পরিচিত ডা. ইসমাঈল হোসেন পাটোয়ারী। কিন্তু তিনি যোগদানের পরও আগের নিয়মেই চলছে বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় উপাচার্য ও ট্রেজারার ছাড়া বৈধ কোনো কর্মকর্তা নেই। কিন্তু আগের উপাচার্যের সেই অদৃশ্য খাত থেকে বেতন-ভাতা দিয়ে কাজ করানো লোকজন পুষছেন বর্তমান উপাচার্যও।

ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট সভাসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড সম্পন্ন হলেও নিয়োগে অনিয়ম বা বেতনহীন কর্মীদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেননি।

এ ব্যাপারে জানতে সাবেক উপাচার্য ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি। মোবাইল ফোন বন্ধ করে অন্যজনের মাধ্যমে এই প্রতিবেদককে ফোন করে সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন।

এসএমইউর নবনিযুক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ডা. মো. জিয়াউর রহমান চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‌‘আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতেছি। এখানে কোনো আর্থিক ইয়া...নাই। বিনে পয়সায় দায়িত্ব পালন করছি ওসমানী প্রিন্সিপাল হিসেবে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আইন মেনে হইছে কি না, এটা ভিসি মহোদয় ভালো বলতে পারবেন।’

মেডিসিন, সার্জারি, বেসিক সায়েন্স ও প্যারা-ক্লিনিক্যাল সায়েন্স, ডেন্টাল, নার্সিং ও মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের নবনিযুক্ত ডিন অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‌‘আমি ক্রাইসিস মোমেন্টে এসে দায়িত্ব নিয়েছি। এটা সিন্ডিকেটে ডিসিশন নিছে। এর আগেও যত ডিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আসল—সব সিন্ডিকেটে ডিসিশন নিছে।’

নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল হোসেন পাটোয়ারি বলেন, ‘ডিন এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সিন্ডিকেটের মিটিংয়ে ঠিক হয়েছিল। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রেগুলার হয়নি এ জন্য ওসমানীর প্রিন্সিপালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সার্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা ডিসিশন নিয়েছিলেন। কোথাও সমস্যা হলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘যে আইন আছে, তাতে শিক্ষকদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে ডিন নিয়োগ হবে। আমাদের আইনের মধ্যেই কাজ করতে হবে। ডিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এই ধরনের নিয়োগ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হওয়ার সুযোগ নেই। এটা যদি হয়ে থাকে, তাহলে সেটা খারাপ হয়েছে। আগের ভিসিরা ইউনিভার্সিটিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যেভাবে যে সব কাজ করার কথা ছিল, তাঁরা সেভাবে করেননি। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জকসু ছাত্রদলের প্রার্থী অর্ঘ্য মাদকাসক্ত নন, ওষুধের কারণে ডোপ টেস্ট পজিটিভ: চিকিৎসক

জবি প্রতিনিধি 
অর্ঘ্য দাস। ছবি: সংগৃহীত
অর্ঘ্য দাস। ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল-সমর্থিত প্রার্থী অর্ঘ্য দাস মাদকাসক্ত নন বলে দাবি করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক। তিনি জানিয়েছেন, চিকিৎসার প্রয়োজনে নেওয়া ওষুধের প্রতিক্রিয়াতেই তাঁর ডোপ টেস্টের (মাদক পরীক্ষা) রেজাল্ট পজিটিভ এসেছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (অর্থ ও ডাক্তার) ডা. শায়লা ফেরদৌস আহসান স্বাক্ষরিত এক চিকিৎসা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

অর্ঘ্য দাস ছাত্রদল-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেলের আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী। ডোপ টেস্টে ফল পজিটিভ আসায় ১১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েন তিনি।

চিকিৎসা প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অর্ঘ্য দাস এপিলেপসি নামক স্নায়বিক রোগে আক্রান্ত এবং ২০০২ সাল থেকে বেঞ্জোডায়াজেপিন গ্রুপের ওষুধ সেবন করে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসার অংশ হিসেবে তাঁর রক্ত, প্রস্রাব ও অন্যান্য টিস্যুতে বেঞ্জোডায়াজেপিনের উপস্থিতি পাওয়া স্বাভাবিক এবং ডোপ টেস্টে ফল চিকিৎসাজনিত কারণে পজিটিভ আসতে পারে। তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন থাকলেও ক্লিনিক্যালি ও মানসিকভাবে সুস্থ এবং ব্যক্তিগত ও আইনি সব কর্মকাণ্ড পরিচালনায় সক্ষম। তিনি কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত নন।’

‎ড. শায়লা ফেরদৌস আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অর্ঘ্য দাস একটি স্নায়বিক সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে নির্দিষ্ট একটি ওষুধ সেবন করছে। ওই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে তার ডোপ টেস্টে পজিটিভ ফল এসেছিল।’

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘অর্ঘ্য কোনো ধরনের নেশা বা মাদক গ্রহণ করে না। চিকিৎসাগত কারণে নেওয়া ওষুধের প্রতিক্রিয়াতেই এমনটা হয়েছে।’

অর্ঘ্য দাস বলেন, ‘আমি ২০০২ সাল থেকে স্নায়ুর রোগে ভুগছি এবং চিকিৎসকের পরামর্শে বেঞ্জোডায়াজেপিন গ্রুপের ওষুধ নিয়মিত সেবন করি। ঢাকা মেডিকেলে পরীক্ষায় নিশ্চিত নিশ্চত হওয়া গেছে ডোপ টেস্টে পজিটিভ আসা শুধুই এই ওষুধের কারণে, কোনো মাদক নয়। আমার সম্পর্কে মাদকসংশ্লিষ্ট অপপ্রচার আমাকে ও আমার পরিবারকে অসম্মানিত করেছে। অনুরোধ করছি, এ ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো বন্ধ করুন। আমি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। আলো ছড়ান, ঘৃণা নয়।’ ‎

এদিকে, জকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা থেকে ৪২ প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদ-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল। ‎বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে আজ রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি তোলেন প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা।

‎এর আগে, ৪ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জকসুর সংশোধিত তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেই তফসিল অনুযায়ী ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: ৪২ জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি

জবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ২২
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা থেকে ৪২ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল। ‎

বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে আজ রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি তোলেন প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা। ‎

‎তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেলের তিন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে। তাঁদের একজন সম্পাদক এবং অপর দুজন কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী। পাশাপাশি অন্যান্য প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি।

খাদিজাতুল কুবরা বলেন, প্রার্থীর এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার সনদে যে নাম আছে, এর পাশাপাশি তাঁর পরিচিত নাম প্রার্থী তালিকায় না থাকায় ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।‎

‎প্যানেলের দাবি, অবিলম্বে ওই ৪২ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হোক। একই সঙ্গে জকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব প্রার্থী ও প্যানেলের প্রতি সমান, নিরপেক্ষ ও ন্যায়সংগত আচরণ নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয়। ‎

‎গত ১৭ ও ১৮ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের মোট ৩৪টি পদের বিপরীতে ২৪৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাই শেষে ২৪ নভেম্বর প্রাথমিক তালিকায় ২৩১ জন প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। ‎

এরপর ১১ ডিসেম্বর জকসুর ২১ পদে ১৫৬ জন ও হল সংসদের ১৩ পদের বিপরীতে ৩৩ জন প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্য দিয়ে বাদ পড়েন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ৪২ জন প্রার্থী।

৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। আর ফলাফল ঘোষণা করা হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কৃষি গুচ্ছের ভর্তি আবেদনের সময় বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
কৃষি গুচ্ছের ভর্তি আবেদনের সময় বাড়ল

কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিতে আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এর আগে আবেদনের কার্যক্রম ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল

সম্প্রতি কৃষি গুচ্ছের ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিতে আবেদনের সময়সীমা ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। আবেদন শুরু হয় গত ২৫ নভেম্বর থেকে।

এবার কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসনসংখ্যা ৩ হাজার ৭০১টি। ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩ জানুয়ারি। ওই দিন বেলা ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চলবে এই পরীক্ষা।

কৃষি গুচ্ছের আওতাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪-এর আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: জবি উপাচার্য

জবি প্রতিনিধি 
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জবি উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জবি উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই আমাদের এ নতুন বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।’ আজ ‎রোববার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ‎

‎জবি উপাচার্য বলেন, ‘একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও কল্যাণ রাষ্ট্রের স্বপ্নে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কিন্তু ৫৪ বছরে আমরা সেই লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছি, যার মূল্য দিতে হয়েছে ২৪-এর জুলাই–আগস্টে বহু ছাত্র–জনতাকে।’ ‎

তিনি আরও বলেন, ‘একটি বৈষম্যহীন সমাজ এবং বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ হবে। বাংলাদেশ একটু একটু করে সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।’ ‎

‎এর আগে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। ‎এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত