রাসেল মাহমুদ, ঢাকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ২৮টি পদের মধ্যে ভিপি, জিএস ও এজিএসসহ ২৩টিতে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। তাদের প্রার্থীদের কাছে সেই অর্থে দাঁড়াতেই পারেননি ছাত্রদলসহ অন্য কোনো সংগঠনের প্যানেলের প্রার্থীরা।
ছাত্রশিবিরের এই জয় তাই বড় চমক হয়ে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের কাছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই ফলের বড় কারণ হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দখলদারির রাজনীতি, যা চালু ছিল গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের আগ পর্যন্ত। সরকার পতনের পর ছাত্রদলের কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, ডাকসুতে ছাত্রদল বিজয়ী হলে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির সেই পুরোনো ধারা ফিরে আসতে পারে। এই ক্ষেত্রে ছাত্রশিবিরের প্রতি আস্থা রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিবির আর ছাত্রদলের জয়-পরাজয়ের এই হিসাবনিকাশের বাইরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতৃত্বের পরাজয়ের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও সমন্বয়হীনতাকে।
ছয় বছর পর গত মঙ্গলবার উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। ভোট গ্রহণের পর মঙ্গলবার রাত ২টা থেকে ফল ঘোষণা শুরু হয়। বুধবার সকালে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ৩৯ হাজার ৮৭৪ ভোটারের মধ্যে ৭৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ডাকসুর নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত ফল অনুযায়ী, এবারের ডাকসু নির্বাচনে ৪৭০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে ভিপি নির্বাচিত হন ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের মো. আবিদুল ইসলাম খান ৫ হাজার ৭০৮ ভোট পান। এ ছাড়া ভিপি পদে আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন ৩ হাজার ৮৮৩ ভোট পেয়েছেন। স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে উমামা ফাতেমা পান ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট। আর বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আবদুল কাদের পেয়েছেন ১ হাজার ১০৩ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের এস এম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এই পদে ৫ হাজার ২৮৩ ভোট পেয়ে তাঁর পরের অবস্থানে আছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম। এ ছাড়া প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত চৌধুরী ৪ হাজার ৪৪ ভোট, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের মো. আবু বাকের মজুমদার ২ হাজার ১৩১ ভোট, ভিন্নধর্মী প্রচারণায় আলোচনায় আসা আশিকুর রহমান এই পদে পেয়েছেন মাত্র ৫২৬ ভোট।
আর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থী তানভীর আল হাদি মায়েদ ৫ হাজার ৬৪ ভোট পেয়েছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমীদ আল মুদ্দাসসীর চৌধুরী ৩ হাজার ৮ ভোট, প্রতিরোধ পর্ষদের মো. জাবির আহমেদ জুবেল ১ হাজার ৫১১ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার (মহিউদ্দিন রনি) ১ হাজার ১৩৭ ভোট পেয়েছেন।
এ ছাড়া ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ফাতেমা তাসনিম ঝুমা ১০ হাজার ৬৩১ ভোট; কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে ছালমা ৯ হাজার ৯২০ ভোট; আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে জসীমউদ্দিন খান ৯ হাজার ৭০৬ ভোট; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. ইকবাল হায়দার ৭ হাজার ৮৩৩ ভোট; ক্রীড়া সম্পাদক পদে আরমান হোসেন ৭ হাজার ২৫৫ ভোট; ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে আসিফ আব্দুল্লাহ ৯ হাজার ৬১ ভোট; স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে এম এম আল মিনহাজ ৭ হাজার ৩৮ ভোট; মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে মো. জাকারিয়া ১১ হাজার ৭৪৭ ভোট; ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে মো. মাজহারুল ইসলাম ৯ হাজার ৩৪৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
এর বাইরে ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ ৭ হাজার ৭৮২ ভোট এবং সমাজসেবা সম্পাদক পদে যুবাইর বিন নেছারী ৭ হাজার ৬০৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন। আর গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে জুলাই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলার শিকার সানজিদা আহমেদ তন্বী ১১ হাজার ৭৭৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তিনজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।
ডাকসু নির্বাচনে ১৩টি সদস্য পদের ১১টিতে শিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, সাবিকুন নাহার তামান্না (১০,০৮৪), সর্ব মিত্র চাকমা (৮,৯৮৮), ইমরান হোসাইন (৬,২৫৬), মোছা. আফসানা আক্তার (৫৭৪৭), তাজিনুর রহমান (৫,৬৯০), রায়হান উদ্দীন (৫,০৮২), মো. মিফতাহুল হোসাইন আল মারুফ (৫,০১৫), আনাস ইবনে মুনির (৫,০১৫), মো. বেলাল হোসেন অপু (৪,৮৬৫), মো. রাইসুল ইসলাম (৪,৫৩৫), মো. শাহিনুর রহমান (৪,৩৯০)। বাকি দুজনের মধ্যে প্রতিরোধ পর্ষদ থেকে হেমা চাকমা ৪ হাজার ৯০৮ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উম্মে উসওয়াতুন রাফিয়া ৪ হাজার ২০৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
ডাকসুর ভিপি পদে ১০ ভোট পেরোয়নি ২৫ জন, জিএস পদে ২ জন
ডাকসুতে ৪৪ প্রার্থী ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে ২৫ ভিপি প্রার্থী ১০ ভোটের বেশি পাননি। তিনজন প্রার্থী মাত্র একটি করে ভোট পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, সুজন হোসেন, রাকিবুল হাসান, রাসেল হক। এ ছাড়া আমিন ইসলাম পেয়েছেন ১০ ভোট, আসিফ আনোয়ার অন্তিক ৫ ভোট, জালাল আহমেদ ওরফে জ্বালাময়ী জালাল (প্রার্থিতা বাতিল) ৮ ভোট, দ্বীন মোহাম্মদ সোহাগ ৬ ভোট, মাহদী হাসান ৯ ভোট, মুহাম্মদ আবু তৈয়ব ১০ ভোট, আজগর ব্যাপারী ৬ ভোট, শাফি রহমান ৬ ভোট, আতাউর রহমান শিপন ৫ ভোট, আবুল হোসাইন ৭ ভোট, উজ্জ্বল হোসেন ৬ ভোট, নাছিম উদ্দিন ২ ভোট, ফয়সাল আহমেদ ৪ ভোট, মুদাব্বীর রহমান ৩ ভোট, রাসেল মাহমুদ ৭ ভোট, সোহানুর রহমান ২ ভোট, হাবিবুল্লাহ ২ ভোট, হেলালুর রহমান ৩ ভোট, জান্নাতী বুলবুল ৬ ভোট, যায়েদ বিন ইকবাল ৭ ভোট, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ৮ ভোট, শাহ জামাল সায়েম ৩ ভোট।
আর জিএস পদে মো. নিয়াজ মাখদুম ৬ ভোট ও সাইয়াদুল বাশার ৯ ভোট পেয়েছেন।
ডাকসু নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীদের এমন জয়ের পর নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এস এম ফরহাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা ব্যক্তি ফরহাদ কিংবা ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ফরহাদের অর্জন নয়। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে অর্পিত একটি আমানত। এটি মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর বিজয়।’
যে কারণে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীদের বেছে নিল শিক্ষার্থীরা
জুলাই আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেনের ব্যানারে বর্তমান গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, বাম সংগঠনসহ বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্ররাজনীতির গণরুম, গেস্টরুম, সিট দখলসহ বিভিন্ন ট্যাগিংয়ের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ছিল, তা পরিবর্তন হয়েছে। ফলে আগের দখলদারি সংস্কৃতি ফিরে আসুক, তা চান না শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা জানান, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন একে অপরকে ট্যাগিং ও দোষারোপের রাজনীতিসহ নানা কাজে ও অভ্যন্তরীণ বিভেদের কারণে তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা কমেছে। কোনো কোনো ছাত্রসংগঠনের সমর্থিত রাজনৈতিক দলের নানা কর্মকাণ্ডের ফলেও সেই সংগঠনগুলোর ওপর আস্থার সংকট দেখা দেয়। এক্ষেত্রে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা ও তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে থাকে। ৫ আগস্টের পর তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে পানির ফিল্টার স্থাপন করে, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পসহ ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রম চালায়, যা তাদের ওপর সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন বাড়ে।
এ ছাড়া ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ছাত্রশিবির নানা পরিকল্পনা ও কৌশলে কাজ করতে থাকে। ডাকসু নির্বাচনেও নিজেদের একক প্যানেল না দিয়ে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্য, দক্ষ ও মেধাবী রয়েছে তাদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট করেছে। পাশাপাশি ভোটের মাঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি শিক্ষার্থীবান্ধব প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের নানা সুযোগ-সুবিধার ও নিরাপদ ক্যাম্পাস তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ইশতেহার দেয় তারা। এই ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্যও তাদের প্রতি আস্থা রেখেছেন ভোটাররা।
নারী ভোটারদের অভাবনীয় সমর্থন, বিভিন্ন প্যানেলের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি হওয়ায় ছাত্রশিবির-সমর্থিত জোটের প্রধান প্রতিপক্ষ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে তাদের থেকে পিছিয়ে দিয়েছে। এমনকি প্রচার-প্রচারণায়ও ছাত্রদল থেকে এগিয়ে ছিল ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল। ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে সেই প্রভাব রয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা। ফলে তাদের এমন অভাবনীয় বিজয় এনে দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আয়েশা আরিফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল একই ধারার রাজনীতি করবে। তাদের মধ্যে কোনো পরিবর্তন নেই। এই ধারণা থেকেই তাদের বিকল্প কাউকে ভোট দেওয়া হয়েছে।
মো. মামুন সরকার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ৫ আগস্টের পর ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধীদের নানা কাজে তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা কমেছে। ছাত্রদল ভোটে জয়ী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে আগের সংস্কৃতিই ফিরে আসতে পারে। এসব বিবেচনায় এই দুই পক্ষের চেয়ে ছাত্রশিবিরকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডাকসুতে জিততে ছাত্রশিবির আগে থেকেই প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছে। তাদের নেটওয়ার্ক বড় এবং তারা সর্বশক্তি ব্যবহার করেছে। এ ছাড়া জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে শিবিরেই আস্থা রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ২৮টি পদের মধ্যে ভিপি, জিএস ও এজিএসসহ ২৩টিতে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। তাদের প্রার্থীদের কাছে সেই অর্থে দাঁড়াতেই পারেননি ছাত্রদলসহ অন্য কোনো সংগঠনের প্যানেলের প্রার্থীরা।
ছাত্রশিবিরের এই জয় তাই বড় চমক হয়ে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের কাছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই ফলের বড় কারণ হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দখলদারির রাজনীতি, যা চালু ছিল গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের আগ পর্যন্ত। সরকার পতনের পর ছাত্রদলের কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, ডাকসুতে ছাত্রদল বিজয়ী হলে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির সেই পুরোনো ধারা ফিরে আসতে পারে। এই ক্ষেত্রে ছাত্রশিবিরের প্রতি আস্থা রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিবির আর ছাত্রদলের জয়-পরাজয়ের এই হিসাবনিকাশের বাইরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতৃত্বের পরাজয়ের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও সমন্বয়হীনতাকে।
ছয় বছর পর গত মঙ্গলবার উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। ভোট গ্রহণের পর মঙ্গলবার রাত ২টা থেকে ফল ঘোষণা শুরু হয়। বুধবার সকালে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ৩৯ হাজার ৮৭৪ ভোটারের মধ্যে ৭৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ডাকসুর নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত ফল অনুযায়ী, এবারের ডাকসু নির্বাচনে ৪৭০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে ভিপি নির্বাচিত হন ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের মো. আবিদুল ইসলাম খান ৫ হাজার ৭০৮ ভোট পান। এ ছাড়া ভিপি পদে আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন ৩ হাজার ৮৮৩ ভোট পেয়েছেন। স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে উমামা ফাতেমা পান ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট। আর বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আবদুল কাদের পেয়েছেন ১ হাজার ১০৩ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের এস এম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এই পদে ৫ হাজার ২৮৩ ভোট পেয়ে তাঁর পরের অবস্থানে আছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম। এ ছাড়া প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত চৌধুরী ৪ হাজার ৪৪ ভোট, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের মো. আবু বাকের মজুমদার ২ হাজার ১৩১ ভোট, ভিন্নধর্মী প্রচারণায় আলোচনায় আসা আশিকুর রহমান এই পদে পেয়েছেন মাত্র ৫২৬ ভোট।
আর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থী তানভীর আল হাদি মায়েদ ৫ হাজার ৬৪ ভোট পেয়েছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমীদ আল মুদ্দাসসীর চৌধুরী ৩ হাজার ৮ ভোট, প্রতিরোধ পর্ষদের মো. জাবির আহমেদ জুবেল ১ হাজার ৫১১ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার (মহিউদ্দিন রনি) ১ হাজার ১৩৭ ভোট পেয়েছেন।
এ ছাড়া ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ফাতেমা তাসনিম ঝুমা ১০ হাজার ৬৩১ ভোট; কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে ছালমা ৯ হাজার ৯২০ ভোট; আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে জসীমউদ্দিন খান ৯ হাজার ৭০৬ ভোট; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. ইকবাল হায়দার ৭ হাজার ৮৩৩ ভোট; ক্রীড়া সম্পাদক পদে আরমান হোসেন ৭ হাজার ২৫৫ ভোট; ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে আসিফ আব্দুল্লাহ ৯ হাজার ৬১ ভোট; স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে এম এম আল মিনহাজ ৭ হাজার ৩৮ ভোট; মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে মো. জাকারিয়া ১১ হাজার ৭৪৭ ভোট; ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে মো. মাজহারুল ইসলাম ৯ হাজার ৩৪৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
এর বাইরে ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ ৭ হাজার ৭৮২ ভোট এবং সমাজসেবা সম্পাদক পদে যুবাইর বিন নেছারী ৭ হাজার ৬০৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন। আর গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে জুলাই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলার শিকার সানজিদা আহমেদ তন্বী ১১ হাজার ৭৭৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তিনজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।
ডাকসু নির্বাচনে ১৩টি সদস্য পদের ১১টিতে শিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, সাবিকুন নাহার তামান্না (১০,০৮৪), সর্ব মিত্র চাকমা (৮,৯৮৮), ইমরান হোসাইন (৬,২৫৬), মোছা. আফসানা আক্তার (৫৭৪৭), তাজিনুর রহমান (৫,৬৯০), রায়হান উদ্দীন (৫,০৮২), মো. মিফতাহুল হোসাইন আল মারুফ (৫,০১৫), আনাস ইবনে মুনির (৫,০১৫), মো. বেলাল হোসেন অপু (৪,৮৬৫), মো. রাইসুল ইসলাম (৪,৫৩৫), মো. শাহিনুর রহমান (৪,৩৯০)। বাকি দুজনের মধ্যে প্রতিরোধ পর্ষদ থেকে হেমা চাকমা ৪ হাজার ৯০৮ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উম্মে উসওয়াতুন রাফিয়া ৪ হাজার ২০৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
ডাকসুর ভিপি পদে ১০ ভোট পেরোয়নি ২৫ জন, জিএস পদে ২ জন
ডাকসুতে ৪৪ প্রার্থী ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে ২৫ ভিপি প্রার্থী ১০ ভোটের বেশি পাননি। তিনজন প্রার্থী মাত্র একটি করে ভোট পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, সুজন হোসেন, রাকিবুল হাসান, রাসেল হক। এ ছাড়া আমিন ইসলাম পেয়েছেন ১০ ভোট, আসিফ আনোয়ার অন্তিক ৫ ভোট, জালাল আহমেদ ওরফে জ্বালাময়ী জালাল (প্রার্থিতা বাতিল) ৮ ভোট, দ্বীন মোহাম্মদ সোহাগ ৬ ভোট, মাহদী হাসান ৯ ভোট, মুহাম্মদ আবু তৈয়ব ১০ ভোট, আজগর ব্যাপারী ৬ ভোট, শাফি রহমান ৬ ভোট, আতাউর রহমান শিপন ৫ ভোট, আবুল হোসাইন ৭ ভোট, উজ্জ্বল হোসেন ৬ ভোট, নাছিম উদ্দিন ২ ভোট, ফয়সাল আহমেদ ৪ ভোট, মুদাব্বীর রহমান ৩ ভোট, রাসেল মাহমুদ ৭ ভোট, সোহানুর রহমান ২ ভোট, হাবিবুল্লাহ ২ ভোট, হেলালুর রহমান ৩ ভোট, জান্নাতী বুলবুল ৬ ভোট, যায়েদ বিন ইকবাল ৭ ভোট, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ৮ ভোট, শাহ জামাল সায়েম ৩ ভোট।
আর জিএস পদে মো. নিয়াজ মাখদুম ৬ ভোট ও সাইয়াদুল বাশার ৯ ভোট পেয়েছেন।
ডাকসু নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীদের এমন জয়ের পর নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এস এম ফরহাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা ব্যক্তি ফরহাদ কিংবা ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ফরহাদের অর্জন নয়। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে অর্পিত একটি আমানত। এটি মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর বিজয়।’
যে কারণে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীদের বেছে নিল শিক্ষার্থীরা
জুলাই আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেনের ব্যানারে বর্তমান গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, বাম সংগঠনসহ বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্ররাজনীতির গণরুম, গেস্টরুম, সিট দখলসহ বিভিন্ন ট্যাগিংয়ের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ছিল, তা পরিবর্তন হয়েছে। ফলে আগের দখলদারি সংস্কৃতি ফিরে আসুক, তা চান না শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা জানান, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন একে অপরকে ট্যাগিং ও দোষারোপের রাজনীতিসহ নানা কাজে ও অভ্যন্তরীণ বিভেদের কারণে তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা কমেছে। কোনো কোনো ছাত্রসংগঠনের সমর্থিত রাজনৈতিক দলের নানা কর্মকাণ্ডের ফলেও সেই সংগঠনগুলোর ওপর আস্থার সংকট দেখা দেয়। এক্ষেত্রে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা ও তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে থাকে। ৫ আগস্টের পর তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে পানির ফিল্টার স্থাপন করে, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পসহ ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রম চালায়, যা তাদের ওপর সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন বাড়ে।
এ ছাড়া ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ছাত্রশিবির নানা পরিকল্পনা ও কৌশলে কাজ করতে থাকে। ডাকসু নির্বাচনেও নিজেদের একক প্যানেল না দিয়ে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্য, দক্ষ ও মেধাবী রয়েছে তাদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট করেছে। পাশাপাশি ভোটের মাঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি শিক্ষার্থীবান্ধব প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের নানা সুযোগ-সুবিধার ও নিরাপদ ক্যাম্পাস তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ইশতেহার দেয় তারা। এই ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্যও তাদের প্রতি আস্থা রেখেছেন ভোটাররা।
নারী ভোটারদের অভাবনীয় সমর্থন, বিভিন্ন প্যানেলের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি হওয়ায় ছাত্রশিবির-সমর্থিত জোটের প্রধান প্রতিপক্ষ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে তাদের থেকে পিছিয়ে দিয়েছে। এমনকি প্রচার-প্রচারণায়ও ছাত্রদল থেকে এগিয়ে ছিল ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল। ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে সেই প্রভাব রয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা। ফলে তাদের এমন অভাবনীয় বিজয় এনে দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আয়েশা আরিফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল একই ধারার রাজনীতি করবে। তাদের মধ্যে কোনো পরিবর্তন নেই। এই ধারণা থেকেই তাদের বিকল্প কাউকে ভোট দেওয়া হয়েছে।
মো. মামুন সরকার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ৫ আগস্টের পর ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধীদের নানা কাজে তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা কমেছে। ছাত্রদল ভোটে জয়ী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে আগের সংস্কৃতিই ফিরে আসতে পারে। এসব বিবেচনায় এই দুই পক্ষের চেয়ে ছাত্রশিবিরকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডাকসুতে জিততে ছাত্রশিবির আগে থেকেই প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছে। তাদের নেটওয়ার্ক বড় এবং তারা সর্বশক্তি ব্যবহার করেছে। এ ছাড়া জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে শিবিরেই আস্থা রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
গণ-অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দিকে হাঁটছে দেশ। ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা হিসাবনিকাশ ও সমীকরণ চলছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। এমন এক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফল রাজনীতির গতিপথে যোগ করেছে নতুন মাত্রা।
৪ ঘণ্টা আগেজাকসু নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী সতর্ক ও সজাগ রয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই ক্যান্টনমেন্ট রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে।
৯ ঘণ্টা আগেসদ্যসমাপ্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে কিছু চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। বিশেষ করে, সহসভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের চিত্র অনেক ক্ষেত্রেই অপ্রত্যাশিত।
১২ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ১২টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ৯টিতে জয়লাভ করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল। বাকি তিনটি পদে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীরা। ডাকসুর ২৮টি পদের মধ্যে সদস্যপদ রয়েছে ১৩ টি। এই পদেও শিবিরের প্রার্থীরা একচেটিয়
১৫ ঘণ্টা আগে