Ajker Patrika

দখলদারির ছাত্ররাজনীতির শঙ্কায় ছাত্রশিবিরে আস্থা

রাসেল মাহমুদ, ঢাকা
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮: ০৮
ডাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার সময় উচ্ছ্বসিত শিবিরের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার সময় উচ্ছ্বসিত শিবিরের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ২৮টি পদের মধ্যে ভিপি, জিএস ও এজিএসসহ ২৩টিতে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। তাদের প্রার্থীদের কাছে সেই অর্থে দাঁড়াতেই পারেননি ছাত্রদলসহ অন্য কোনো সংগঠনের প্যানেলের প্রার্থীরা।

ছাত্রশিবিরের এই জয় তাই বড় চমক হয়ে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের কাছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই ফলের বড় কারণ হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দখলদারির রাজনীতি, যা চালু ছিল গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের আগ পর্যন্ত। সরকার পতনের পর ছাত্রদলের কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, ডাকসুতে ছাত্রদল বিজয়ী হলে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির সেই পুরোনো ধারা ফিরে আসতে পারে। এই ক্ষেত্রে ছাত্রশিবিরের প্রতি আস্থা রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।

শিবির আর ছাত্রদলের জয়-পরাজয়ের এই হিসাবনিকাশের বাইরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতৃত্বের পরাজয়ের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও সমন্বয়হীনতাকে।

ছয় বছর পর গত মঙ্গলবার উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। ভোট গ্রহণের পর মঙ্গলবার রাত ২টা থেকে ফল ঘোষণা শুরু হয়। বুধবার সকালে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ৩৯ হাজার ৮৭৪ ভোটারের মধ্যে ৭৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

ডাকসুর নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত ফল অনুযায়ী, এবারের ডাকসু নির্বাচনে ৪৭০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে ভিপি নির্বাচিত হন ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের মো. আবিদুল ইসলাম খান ৫ হাজার ৭০৮ ভোট পান। এ ছাড়া ভিপি পদে আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন ৩ হাজার ৮৮৩ ভোট পেয়েছেন। স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে উমামা ফাতেমা পান ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট। আর বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আবদুল কাদের পেয়েছেন ১ হাজার ১০৩ ভোট।

সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের এস এম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এই পদে ৫ হাজার ২৮৩ ভোট পেয়ে তাঁর পরের অবস্থানে আছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম। এ ছাড়া প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত চৌধুরী ৪ হাজার ৪৪ ভোট, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের মো. আবু বাকের মজুমদার ২ হাজার ১৩১ ভোট, ভিন্নধর্মী প্রচারণায় আলোচনায় আসা আশিকুর রহমান এই পদে পেয়েছেন মাত্র ৫২৬ ভোট।

আর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থী তানভীর আল হাদি মায়েদ ৫ হাজার ৬৪ ভোট পেয়েছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমীদ আল মুদ্দাসসীর চৌধুরী ৩ হাজার ৮ ভোট, প্রতিরোধ পর্ষদের মো. জাবির আহমেদ জুবেল ১ হাজার ৫১১ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার (মহিউদ্দিন রনি) ১ হাজার ১৩৭ ভোট পেয়েছেন।

এ ছাড়া ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ফাতেমা তাসনিম ঝুমা ১০ হাজার ৬৩১ ভোট; কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে ছালমা ৯ হাজার ৯২০ ভোট; আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে জসীমউদ্দিন খান ৯ হাজার ৭০৬ ভোট; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. ইকবাল হায়দার ৭ হাজার ৮৩৩ ভোট; ক্রীড়া সম্পাদক পদে আরমান হোসেন ৭ হাজার ২৫৫ ভোট; ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে আসিফ আব্দুল্লাহ ৯ হাজার ৬১ ভোট; স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে এম এম আল মিনহাজ ৭ হাজার ৩৮ ভোট; মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে মো. জাকারিয়া ১১ হাজার ৭৪৭ ভোট; ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে মো. মাজহারুল ইসলাম ৯ হাজার ৩৪৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।

এর বাইরে ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ ৭ হাজার ৭৮২ ভোট এবং সমাজসেবা সম্পাদক পদে যুবাইর বিন নেছারী ৭ হাজার ৬০৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন। আর গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে জুলাই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলার শিকার সানজিদা আহমেদ তন্বী ১১ হাজার ৭৭৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তিনজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।

ডাকসু নির্বাচনে ১৩টি সদস্য পদের ১১টিতে শিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, সাবিকুন নাহার তামান্না (১০,০৮৪), সর্ব মিত্র চাকমা (৮,৯৮৮), ইমরান হোসাইন (৬,২৫৬), মোছা. আফসানা আক্তার (৫৭৪৭), তাজিনুর রহমান (৫,৬৯০), রায়হান উদ্দীন (৫,০৮২), মো. মিফতাহুল হোসাইন আল মারুফ (৫,০১৫), আনাস ইবনে মুনির (৫,০১৫), মো. বেলাল হোসেন অপু (৪,৮৬৫), মো. রাইসুল ইসলাম (৪,৫৩৫), মো. শাহিনুর রহমান (৪,৩৯০)। বাকি দুজনের মধ্যে প্রতিরোধ পর্ষদ থেকে হেমা চাকমা ৪ হাজার ৯০৮ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উম্মে উসওয়াতুন রাফিয়া ৪ হাজার ২০৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।

ডাকসুর ভিপি পদে ১০ ভোট পেরোয়নি ২৫ জন, জিএস পদে ২ জন

ডাকসুতে ৪৪ প্রার্থী ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে ২৫ ভিপি প্রার্থী ১০ ভোটের বেশি পাননি। তিনজন প্রার্থী মাত্র একটি করে ভোট পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, সুজন হোসেন, রাকিবুল হাসান, রাসেল হক। এ ছাড়া আমিন ইসলাম পেয়েছেন ১০ ভোট, আসিফ আনোয়ার অন্তিক ৫ ভোট, জালাল আহমেদ ওরফে জ্বালাময়ী জালাল (প্রার্থিতা বাতিল) ৮ ভোট, দ্বীন মোহাম্মদ সোহাগ ৬ ভোট, মাহদী হাসান ৯ ভোট, মুহাম্মদ আবু তৈয়ব ১০ ভোট, আজগর ব্যাপারী ৬ ভোট, শাফি রহমান ৬ ভোট, আতাউর রহমান শিপন ৫ ভোট, আবুল হোসাইন ৭ ভোট, উজ্জ্বল হোসেন ৬ ভোট, নাছিম উদ্দিন ২ ভোট, ফয়সাল আহমেদ ৪ ভোট, মুদাব্বীর রহমান ৩ ভোট, রাসেল মাহমুদ ৭ ভোট, সোহানুর রহমান ২ ভোট, হাবিবুল্লাহ ২ ভোট, হেলালুর রহমান ৩ ভোট, জান্নাতী বুলবুল ৬ ভোট, যায়েদ বিন ইকবাল ৭ ভোট, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ৮ ভোট, শাহ জামাল সায়েম ৩ ভোট।

আর জিএস পদে মো. নিয়াজ মাখদুম ৬ ভোট ও সাইয়াদুল বাশার ৯ ভোট পেয়েছেন।

ডাকসু নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীদের এমন জয়ের পর নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এস এম ফরহাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা ব্যক্তি ফরহাদ কিংবা ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ফরহাদের অর্জন নয়। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে অর্পিত একটি আমানত। এটি মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর বিজয়।’

যে কারণে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীদের বেছে নিল শিক্ষার্থীরা

জুলাই আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেনের ব্যানারে বর্তমান গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, বাম সংগঠনসহ বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্ররাজনীতির গণরুম, গেস্টরুম, সিট দখলসহ বিভিন্ন ট্যাগিংয়ের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ছিল, তা পরিবর্তন হয়েছে। ফলে আগের দখলদারি সংস্কৃতি ফিরে আসুক, তা চান না শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা জানান, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন একে অপরকে ট্যাগিং ও দোষারোপের রাজনীতিসহ নানা কাজে ও অভ্যন্তরীণ বিভেদের কারণে তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা কমেছে। কোনো কোনো ছাত্রসংগঠনের সমর্থিত রাজনৈতিক দলের নানা কর্মকাণ্ডের ফলেও সেই সংগঠনগুলোর ওপর আস্থার সংকট দেখা দেয়। এক্ষেত্রে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা ও তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে থাকে। ৫ আগস্টের পর তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে পানির ফিল্টার স্থাপন করে, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পসহ ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রম চালায়, যা তাদের ওপর সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন বাড়ে।

এ ছাড়া ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ছাত্রশিবির নানা পরিকল্পনা ও কৌশলে কাজ করতে থাকে। ডাকসু নির্বাচনেও নিজেদের একক প্যানেল না দিয়ে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্য, দক্ষ ও মেধাবী রয়েছে তাদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট করেছে। পাশাপাশি ভোটের মাঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি শিক্ষার্থীবান্ধব প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের নানা সুযোগ-সুবিধার ও নিরাপদ ক্যাম্পাস তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ইশতেহার দেয় তারা। এই ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্যও তাদের প্রতি আস্থা রেখেছেন ভোটাররা।

নারী ভোটারদের অভাবনীয় সমর্থন, বিভিন্ন প্যানেলের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি হওয়ায় ছাত্রশিবির-সমর্থিত জোটের প্রধান প্রতিপক্ষ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে তাদের থেকে পিছিয়ে দিয়েছে। এমনকি প্রচার-প্রচারণায়ও ছাত্রদল থেকে এগিয়ে ছিল ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল। ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে সেই প্রভাব রয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা। ফলে তাদের এমন অভাবনীয় বিজয় এনে দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আয়েশা আরিফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল একই ধারার রাজনীতি করবে। তাদের মধ্যে কোনো পরিবর্তন নেই। এই ধারণা থেকেই তাদের বিকল্প কাউকে ভোট দেওয়া হয়েছে।

মো. মামুন সরকার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ৫ আগস্টের পর ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধীদের নানা কাজে তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা কমেছে। ছাত্রদল ভোটে জয়ী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে আগের সংস্কৃতিই ফিরে আসতে পারে। এসব বিবেচনায় এই দুই পক্ষের চেয়ে ছাত্রশিবিরকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডাকসুতে জিততে ছাত্রশিবির আগে থেকেই প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছে। তাদের নেটওয়ার্ক বড় এবং তারা সর্বশক্তি ব্যবহার করেছে। এ ছাড়া জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে শিবিরেই আস্থা রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়: হাসি গল্প গানের মিলনমেলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৪
পাঠকবন্ধুর কেন্দ্রীয় সদস্যদের সঙ্গে আরপিএসইউ শাখার সদস্যরা। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়
পাঠকবন্ধুর কেন্দ্রীয় সদস্যদের সঙ্গে আরপিএসইউ শাখার সদস্যরা। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়

বন্ধুদের সঙ্গে সবাই কমবেশি আড্ডা দিই। তবে শিক্ষার্থীদের এমন আড্ডায় যদি যোগ দেন শিক্ষকেরা, ভাগাভাগি করেন জীবনের নানা অভিজ্ঞতার গল্প, আর শিক্ষার্থীরা খুঁজে পান অনুপ্রেরণা, তখন সেই আড্ডা হয়ে ওঠে সত্যিই ব্যতিক্রম। ঠিক এমনই ভিন্নধর্মী এক আড্ডার আয়োজন করেছে পাঠকবন্ধু আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয় (আরপিএসইউ) শাখা। এটি ছিল পাঠকবন্ধুর দ্বিতীয় পর্বের প্রাণবন্ত ‘ক্যাম্পাস আড্ডা’, যেখানে হাসি, গল্প ও সৃজনশীলতায় মিলিত হয়েছে এক মধুর মিলনক্ষেত্র।

২৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যার তীরঘেঁষা সবুজ ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে বসে এই প্রাণবন্ত আড্ডা। এতে শিক্ষার্থীরা অংশ নেন কুইজ প্রতিযোগিতা, রম্য বিতর্ক, মজার ‘পিলো পাসিং’ খেলা এবং সুরের তালে তালে গান।

মঞ্চে বসে বন্ধুদের আয়োজন উপভোগ করছেন আরপিএসইউর উপাচার্য। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়
মঞ্চে বসে বন্ধুদের আয়োজন উপভোগ করছেন আরপিএসইউর উপাচার্য। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করেন আরপিএসইউ পাঠকবন্ধু শাখার সদস্যরা। পরে নুসরাত আহমেদ কণার সঞ্চালনায় শুরু হয় আড্ডার আলোচনা। শুরুতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনীন্দ্র কুমার রায়। পাশাপাশি বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা মো. আসাদুজ্জামান, আজকের পত্রিকার পক্ষে হেড অব ডিজিটাল অ্যাড সেলস মো. সিরাজুল ইসলাম সুমন, পাঠকবন্ধুর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী মো. আব্দুর রাজ্জাক খান, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তাহমিদ আল মাহবুব খান এলিন এবং পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা।

আরপিএসইউর উপাচার্যকে উপহার তুলে দিচ্ছেন পাঠকবন্ধুর কেন্দ্রীয় সদস্যরা। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়
আরপিএসইউর উপাচার্যকে উপহার তুলে দিচ্ছেন পাঠকবন্ধুর কেন্দ্রীয় সদস্যরা। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়

ছাত্র উপদেষ্টা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘একটি সুন্দর পৃথিবী আমরা গড়ে তুলতে চাইলে শুধু পরিবেশ সুন্দর করাই যথেষ্ট নয়। প্রথমে আমাদের মনের ভেতরটি পরিষ্কার ও সুন্দর করতে হবে। প্রতিটি ভালো কাজে নিজেকে যুক্ত রাখতে হবে। তখন শরীর-মন সুস্থ থাকবে, রোগ-বালাই কমবে। মানবিকতা গড়ে তোলা, সুন্দরভাবে বাঁচা—এই প্রত্যয় আমাদের রাখতে হবে।’

প্রযুক্তির এই যুগে আমরা ধীরে ধীরে বই পড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। তবে পাঠকবন্ধু চেষ্টা করছে শিক্ষার্থীদের বইয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে এবং তাদের পাঠাভ্যাস বাড়িয়ে তুলতে। এ ছাড়া ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কের বাইরে শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু শিখেছে। সেই অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরা—এটিই আজকের ক্যাম্পাস আড্ডার মূল উদ্দেশ্য বলে উল্লেখ করেন মো. সিরাজুল ইসলাম সুমন।

রম্য বিতর্কে অংশ নিয়েছেন পাঠকবন্ধুর সদস্যরা। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়
রম্য বিতর্কে অংশ নিয়েছেন পাঠকবন্ধুর সদস্যরা। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়

পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে মো. আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, ‘আমরা এমন এক আড্ডার আয়োজন করেছি, যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একত্রে বসে তাদের অভিজ্ঞতা, স্মৃতিচারণা ও স্বপ্নগুলো ভাগাভাগি করবেন। অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারব।’

মো. তাহমিদ আল মাহবুব খান এলিন বলেন, ‘আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, আমাদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বৈচিত্রের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এই ধরনের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আমরা সামাজিক বিভিন্ন দায়িত্ব পালনে সক্ষম হই এবং একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ ও আন্তসম্পর্ক গড়ে তুলি।’

ক্যাম্পাস আড্ডা উপভোগ করছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়
ক্যাম্পাস আড্ডা উপভোগ করছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়

পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘পাঠকবন্ধুর ক্যাম্পাস আড্ডা একটি অনন্য মঞ্চ। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পাঠপ্রেমীরা একত্র হয়ে জ্ঞান, চিন্তা ও মানবিকতার সুন্দর বন্ধনে মিলিত হন। পাঠ শুধুই বিদ্বান বানায় না, মানুষও গড়ে তোলে।’

আলোচনা শেষে অনুষ্ঠিত হয় রম্য বিতর্ক ‘পরীক্ষায় প্রশ্ন কঠিন নয়, শিক্ষার্থীর কল্পনাশক্তিই ভয়ংকর!’। এতে অংশ নেন তামান্না আক্তার, আফরিন আক্তার, জাকিয়া সুলতানা ও এশা ইসলাম। প্রথম স্থান অধিকার করেন জাকিয়া সুলতানা।

সনদ ও পুরস্কার নিচ্ছেন এক বন্ধু। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়
সনদ ও পুরস্কার নিচ্ছেন এক বন্ধু। ছবি: তৈয়বুর রহমান তন্ময়

এরপর শুরু হয় মজার ‘পিলো পাসিং’ খেলা, যেখানে মিউজিকের তালে শিক্ষার্থীরা উপভোগ করেন খেলার আনন্দ। প্রথম হন মেহেরুনেছা মেরি। এরপর মঞ্চে গান পরিবেশন করেন আরপিএসইউ কালচারাল ক্লাবের সদস্যরা। অনুষ্ঠানের আগের দিন অনুষ্ঠিত হয় কুইজ প্রতিযোগিতা, যেখানে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। প্রথম স্থান অধিকার করেন নাদিয়া আক্তার।

পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সদস্যদের নিরলস পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি সাফল্যের মুখ দেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা উপস্থিত থেকে তরুণদের এই সৃষ্টিশীল উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক সাবরিন সুলতানা উর্বরা জানান, আরপিএসইউ ক্যাম্পাসে এক অনন্য বিকেল কাটল পাঠপ্রেমী তরুণদের সঙ্গে। বই শুধুই পড়ার বস্তু নয়, এটি একটি সেতুবন্ধন, যা মানুষকে মানুষে যুক্ত করে, ভাবনায় গভীরতা আনে এবং সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে।’

অনুষ্ঠান শেষে পাঠকবন্ধুর অতিথি ও সদস্যরা পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন। হাসি, গল্প আর গানে গানে এক আনন্দঘন দিন কাটে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পাঠকবন্ধুদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাঠকবন্ধু ক্যাম্পাস আড্ডা /নিজের ইতিবাচক শক্তি জাগিয়ে তুলতে হবে

অধ্যাপক ড. মনীন্দ্র কুমার রায়
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ২৯
পাঠকবন্ধুদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিচ্ছেন আরপিএসইউর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনীন্দ্র কুমার রায়
পাঠকবন্ধুদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিচ্ছেন আরপিএসইউর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনীন্দ্র কুমার রায়

আড্ডা এখন অনেক কমে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো আমাদের হাতে থাকা ছোট্ট একটি যন্ত্র—মোবাইল ফোনসেট। এই যন্ত্র আমাদের একে-অপরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমি বলি ‘রেস ডিসকানেকটেড আস, রিলিজিয়ন সেপারেট আস, পলিটিকস ডিভাইড আস, ওয়েলথ ক্ল্যাসিফাই আস’। এর সঙ্গে যোগ করতে চাই ‘মোবাইল ডিমোরালাইজড’। যদিও এই উক্তি নিয়ে বিতর্ক আছে, তবু সত্যি হলো, মোবাইল জীবনের অপরিহার্য অংশ হলেও এর অপব্যবহার ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে।

আজকাল ছোট বাচ্চাদের খাওয়ানোর সময়ও হাতে মোবাইল ধরিয়ে দেওয়া হয়। এক পরিবারের তিনজন সদস্য একসঙ্গে বসলেও প্রত্যেকে ব্যস্ত নিজের মোবাইলের মধ্যে, কথাবার্তা প্রায় নেই। অথচ মোবাইলের মধ্যে রয়েছে অসীম সম্ভাবনা। এটি দিয়ে তুমি প্রজেক্ট, থিসিস বা যেকোনো একাডেমিক গবেষণা করতে পারো। আমাদের সময়ে এই ধরনের সুযোগ ছিল না। এখন ইন্টারনেট তোমার হাতের মুঠোয়। জ্ঞান আহরণ করতে চাইলে তুমি পুরো বিশ্ব জয় করতে পারো। মনে রাখতে হবে, মোবাইলের দুটি দিক আছে—একটি সুফল, অন্যটি কুফল। সুফল কাজে লাগাতে হবে। নেতিবাচক ব্যবহার আমাদের যুবসমাজে বিভিন্ন আসক্তি, হতাশা এবং দুঃখজনক আত্মহত্যার মতো প্রবণতা তৈরি করছে। তাই তোমরা মোবাইল ব্যবহার করবে এর ইতিবাচক দিকগুলো কাজে লাগিয়ে।

জীবনে সব সময় ইতিবাচক থাকতে হবে। আমি নিজে খারাপ থাকলেও বলি, ‘আমি খুব ভালো আছি’। এই মানসিক ইতিবাচকতা মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আর স্বপ্ন থাকতে হবে—স্বপ্ন ছাড়া কেউ বড় হতে পারে না। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম বলেছিলেন, ‘স্বপ্ন সেটা নয়, যা আমরা ঘুমিয়ে দেখি; স্বপ্ন সেটাই, যা আমাদের ঘুমাতে দেয় না।’

তোমরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছ ‘আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়’, এর প্রতিষ্ঠাতা আর পি সাহাও ছিলেন একজন মহান স্বপ্নদ্রষ্টা। মাত্র সাত বছর বয়সে মাকে হারিয়ে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, ‘আমি যদি কখনো সম্পদশালী হই, তাহলে একটি মাতৃসদন হাসপাতাল গড়ে তুলব, যেন কোনো মা বিনা চিকিৎসায় মারা না যায়।’ ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করা, দারিদ্র্যপীড়িত সেই মানুষটি ফুটপাতে ঘুমিয়েছে, সংবাদপত্র বিক্রি করেছে, গাড়ি মুছেছে। কিন্তু অক্লান্ত পরিশ্রমে মাত্র ছয় বছরে তিনি ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করেন। কয়লা, জুট, চামড়া, লবণ, নৌপরিবহন—সব ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন।

তবে সেই সম্পদ নিজের জন্য নয়, তিনি উৎসর্গ করেছিলেন মানুষের কল্যাণে। প্রতিষ্ঠা করেছেন কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট, কুমুদিনী হাসপাতাল, কুমুদিনী কলেজ, দেবেন্দ্র কলেজ—সবই মানবতার সেবায় নিবেদিত।

তোমাদেরও তাই স্বপ্ন দেখতে হবে, নিজের ভেতরে ইতিবাচক শক্তি জাগিয়ে তুলতে হবে, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে এবং সমাজ পরিবর্তনে এগিয়ে আসতে হবে।

অধ্যাপক ড. মনীন্দ্র কুমার রায়, উপাচার্য, আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাবির আইবিএর ভর্তি পরীক্ষা ২৮ নভেম্বর

শিক্ষা ডেস্ক
ঢাবির আইবিএর ভর্তি পরীক্ষা ২৮ নভেম্বর

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) অধীনে ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) কোর্সের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৮ নভেম্বর এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ২৮ নভেম্বর (শুক্রবার) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

গত ২৯ অক্টোবর থেকে অনলাইনের মাধ্যমে আইবিএ ভর্তি আবেদন শুরু হয়েছে চলবে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত রাত ১১টা ৫৯ পর্যন্ত। আবেদন শেষে আগামী ২৪ নভেম্বর থেকে পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা আগেপর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি আবেদন শুরু ৭ নভেম্বর

শিক্ষা ডেস্ক
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি আবেদন আগামী ৭ নভেম্বর থেকে শুরু হবে। চলবে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত। আর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৮ ও ১৯ ডিসেম্বর। ফলাফল প্রকাশ করা হবে ৩০ ডিসেম্বর। চূড়ান্ত ভর্তি শেষে আগামী বছরের ২৫ জানুয়ারি থেকে ওরিয়েন্টেশন, রেজিস্ট্রেশন ও শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে মোট ১ হাজার ১০৯টি আসনে ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি ও নিয়মাবলি ঘোষণা করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুল) মোট আসন সংখ্যা ৩২০, যার মধ্যে সাধারণ আসন ৩০৩ এবং কোটায় ১৭। আবেদনের যোগ্যতার শর্ত হলো এসএসসি ২০২২-২৩ ও এইচএসসি ২০২৪-২৫ পরীক্ষায় সম্মিলিত জিপিএ কমপক্ষে ৮.০০। ভর্তি পরীক্ষা ৬০ নম্বরের এমসিকিউ ও ৪০ নম্বরের লিখিত অংশের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত অঙ্কন পরীক্ষা থাকবে।

‘বি’ ইউনিটের (জীববিজ্ঞান স্কুল) মোট আসন সংখ্যা ২৮১, যার মধ্যে সাধারণ আসন ২৬৬ ও কোটায় ১৫। আবেদনের যোগ্যতার শর্ত হলো সম্মিলিত জিপিএ ন্যূনতম ৮.০০। পরীক্ষা পদ্ধতি ‘এ’ ইউনিটের মতো হবে। ‘সি’ ইউনিটের (কলা ও মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান, আইন, শিক্ষা ও চারুকলা স্কুল) মোট আসন সংখ্যা ৪১৫, যার মধ্যে সাধারণ আসন ৩৯১ ও কোটায় ২৪।

আবেদনের যোগ্যতার শর্ত হলো এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সম্মিলিত জিপিএ কমপক্ষে ৭ পেতে হবে। চারুকলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত লিখিত ও অঙ্কন পরীক্ষা নেওয়া হবে। ‘ডি’ ইউনিটের (ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুল) মোট আসন সংখ্যা ৮৮, যার মধ্যে সাধারণ আসন ৮৩ ও কোটায় ৫।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত