Ajker Patrika

জাবি ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন জরুরি

বেলাল হোসেন, জাবি
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ০৪
জাবি ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন জরুরি

দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ, মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সিনেট দ্বারা মনোনীত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতি স্থিতিশীল থাকে। এতে শিক্ষা, গবেষণা এবং মুক্তচিন্তা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশের পথ সুগম হয় বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকবৃন্দ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২ মার্চ। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সিনেট সদস্যদের দাবি দ্রুততম সময়ে সুষ্ঠুভাবে ‘উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন’ সম্পন্ন করা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩-এর ১৯ (১) ধারা অনুসারে ৯৩ জন মনোনীত ও নির্বাচিত সদস্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট গঠিত হবে। অধ্যাদেশের ১১ (১) ধারার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচিত করে আচার্যের কাছে পাঠানো।

জানা যায়, ২০১৪ সালে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম দেশের প্রথম নারী হিসেবে জাহাঙ্গীরনগরের উপাচার্য হন। সে সময় তিনি আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ থেকে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে জয়লাভ করেন। এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪  সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচনের মাধ্যমে জয়লাভ করায় অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের প্রথম মেয়াদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ রাজনৈতিকভাবে কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। এই মেয়াদে বিভিন্ন প্রশাসনিক পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসে। এই মেয়াদের মধ্যে ২০১৫ সালের অক্টোবরে সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন, ২০১৬ সালের এপ্রিলে ডিন নির্বাচন, একই বছরের জুন মাসে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সিন্ডিকেট সদস্য, অর্থ কমিটি ও শিক্ষা পর্ষদে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন এবং ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

তবে সময়ের পরিক্রমায় উপাচার্য ফারজানা ইসলাম ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমতাবলে ১১ (২) ধারা অনুসারে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পান। এর পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতি অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভিন্ন পর্ষদ যেমন—ডিন, সিনেট, সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও অর্থ কমিটির নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি বহুল প্রতিশ্রুত ছাত্রসংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন গঠন পর্যন্তই থেমে থাকে। এতে ২০১৯ সালে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থির হয়ে ওঠে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, এতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করে। দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগের তিন মাসের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ থেকে বেরিয়ে নতুন শিক্ষক সংগঠন গঠন করেন উপাচার্য।  ২০১৮ সালের ৮ মে নতুন এই সংগঠনের নাম দেওয়া হয় ‘বঙ্গবন্ধু-আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’, যার বর্তমান নাম ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’। এই সংগঠনের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার। তিনি এর আগে উপাচার্যবিরোধী আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’-এর সভাপতি ছিলেন। এই সংগঠন থেকে নির্বাচন করে শিক্ষক সমিতির সভাপতিও নির্বাচিত হন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক এ কে এম শাহনেওয়াজ বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়াই কোনো উপাচার্য দায়িত্ব পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে একনায়কতন্ত্র আচরণ বৃদ্ধি পায়। এতে শিক্ষক রাজনীতিতে নতুন বলয় তৈরি হয়। এ সময় অনেক শিক্ষক নিজের স্বার্থের কারণে দল পরিবর্তন করেন। এতে মুক্তচিন্তার চর্চা ও বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে ক্যাম্পাস বিভিন্ন আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সিনেট সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ আন্দোলনের একটি চূড়ান্ত লক্ষ্য থাকে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। এতে অধিকাংশ আন্দোলন তার মূল চেতনা থেকে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়। এ কারণে উপাচার্য যদি নির্বাচিত হয়ে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল থাকে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি মেহেদী জামিল বলেন, ‘একজন সিনেট সদস্য হিসেবে আমাদের মৌলিক কাজ বাজেট অধিবেশন ও উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। মহামারির কারণে মাত্র একটি বাজেট অধিবেশন করা হয়। এতেই আমাদের তিন বছর শেষ হয়ে যায়। আমরা এখনো উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন পাইনি। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে দাবি আসা উচিত।’

সর্বশেষ উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের পক্ষ থেকে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’-এর প্যানেল নির্বাচনে জয়লাভ করে। এই প্যানেলে ছিলেন তৎকালীন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আমির হোসেন, তৎকালীন গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবুল হোসেন ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।

এ বিষয়ে বর্তমান সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু প্রণীত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ সমুন্নত রাখার জন্য হলেও উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন জরুরি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়। আমাদের সব সময়ের দাবি ছিল প্যানেল নির্বাচন। এতে সিনেট অর্থবহ হয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পিআর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি গঠন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে কর্মরত জনসংযোগ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি পাবলিক রিলেশন্স অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (পুপরোয়া) ২০২৬–২৭ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। নবঘোষিত কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান আবু মিয়া আকন্দ (তুহিন) ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক আবু সাদাত।

গত শুক্রবার বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির কার্যালয়ে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

ঘোষিত ২৩ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটিতে সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির সিনিয়র সহপরিচালক আনোয়ার হাবীব কাজল; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির ব্র্যান্ডিং ও পাবলিক রিলেশন অফিসের পরিচালক আল আমিন শিকদার সিহাব এবং ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মহিউদ্দিন।

এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ডেপুটি ডিরেক্টর ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান জাহিদ হাসান; সহসাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান ফারাবী; অর্থ সম্পাদক ফারইস্ট ইউনিভার্সিটির যুগ্ম রেজিস্ট্রার মামুন-উল মতিন; সহসাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাদিক হাসান পলাশ; দপ্তর ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা নাহিদ হাসান; সহদপ্তর ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক তারেক ওমর; প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক আবু হাশেম রনি এবং সহপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইউনিভার্সিটি অব স্কিল এনরিচমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মোশাররফ হোসাইন।

ক্রীড়া সম্পাদক মেরিট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পরিচালক মনজুর হোসাইন এবং সহক্রীড়া সম্পাদক ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার ফাতিউস ফাহমিদ সৌরভ; সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান রাইসুল হক চৌধুরী এবং সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শামসুল হক; আন্তর্জাতিক ও গবেষণা সম্পাদক বিইউএইচএস নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা এনজেল।

এ ছাড়া ইসি সদস্য হিসেবে রয়েছেন ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের জনসংযোগ বিভাগের সহপরিচালক ওয়াহিদুজ্জামান, নর্দান ইউনিভার্সিটির যুগ্ম পরিচালক শেখ মাহবুব, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের সাবেক সহকারী পরিচালক বদিউজ্জামান সোহেল এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. ফায়জ্জুল্লাহ।

সমিতির উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন ইউজিসির জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. এ কে এম শামসুল আরেফিন, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিরুজ্জামান টিপু, পুপরোয়ার সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান ও সদ্যবিদায়ী সভাপতি মনিরুল ইসলাম রিন্টু, বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক বেলাল আহমেদ এবং পুপরোয়ার সাবেক সহসভাপতি ড. হাসান সাইমুম ওয়াহাব।

পুপরোয়া দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, উচ্চশিক্ষার অগ্রগতি, আন্তর্জাতিক সংযোগ বৃদ্ধি, কৌশলগত তথ্য ব্যবস্থাপনা ও সুনাম নির্মাণে জনসংযোগ পেশাজীবীদের ভূমিকা অপরিহার্য ও তাৎপর্যপূর্ণ।

নবনির্বাচিত কমিটি দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংযোগ পেশার বিকাশ, পলিসি উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পেশাগত মর্যাদা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কার্যকর কর্মপরিকল্পনা ও কর্মকাণ্ড নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এবারও লটারিতে স্কুলে ভর্তি, আবেদন শুরু ২১ নভেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে লটারির মাধ্যমে নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। ভর্তির আবেদন শুরু হবে ২১ নভেম্বর, যা চলবে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ডিজিটাল লটারি আয়োজনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ ডিসেম্বর।

আজ সোমবার দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) অনুষ্ঠিত প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি বিষয়ক প্রস্তুতিমূলক সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। সভা সভাপতিত্ব করেন মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক বি এম আবদুল হান্নান।

এসব তথ্য আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর ভর্তি কমিটির সদস্য এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল।

আল মাহমুদ সোহেল বলেন, এবারও লটারি ভর্তি প্রক্রিয়ার কারিগরি সহায়তা দেবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মোবাইল অপারেটর টেলিটক। অনলাইনে আবেদন নিয়ে লটারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১২ থেকে ১৯ নভেম্বর প্রধান শিক্ষকেরা অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও শূন্যপদের তথ্য সফটওয়্যারে আপলোড করবেন। ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হবে ১৩ থেকে ১৯ নভেম্বরের মধ্যে। ভর্তির অনলাইনে আবেদন শুরু হবে আগামী ২১ নভেম্বর, যা চলবে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সভা সূত্রে আরও জানা যায়, লটারিতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা আগামী ১৭ থেকে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করবেন। আর ২২ থেকে ২৪ ডিসেম্বর প্রথম অপেক্ষমাণ এবং ২৭ থেকে ৩০ ডিসেম্বর দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম শেষ হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পরীক্ষা: ৬০ শতাংশ বাধ্যতামূলক উপস্থিতিসহ যেসব পরিবর্তন এল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ১২
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পরীক্ষা: ৬০ শতাংশ বাধ্যতামূলক উপস্থিতিসহ যেসব পরিবর্তন এল

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামের পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন থেকে প্রতি কোর্সের পূর্ণমানের ৮০ শতাংশ নম্বর ফাইনাল পরীক্ষায়, ২০ শতাংশ ধারাবাহিক মূল্যায়নে বরাদ্দ থাকবে।

আর পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে লেকচার ও ব্যবহারিক ক্লাসে ৬০ শতাংশ উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখন থেকে ফরম পূরণের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার উল্লেখ করতে হবে।

স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামের পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন করে সংশোধিত রেগুলেশন থেকে এসব তথ্য জানা যায়। রেগুলেশনটি গতকাল রোববার জারি করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। আজ সোমবার সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

তবে, পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন সংশোধিত রেগুলেশন অনুমোদন দেওয়া ডিন (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক এ এইচ এম রুহুল কুদ্দুস।

যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো মন্তব্য করব না।’

স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামের সংশোধিত রেগুলেশন অনুযায়ী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে তত্ত্বীয় কোর্সের প্রশ্নপত্রের ধরন ও মূল্যায়ন কাঠামোতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

ধারাবাহিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রে, ৪ ক্রেডিট কোর্সে অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন বা কুইজে ৫, ক্লাস উপস্থিতিতে ৫ ও ইন কোর্স পরীক্ষায় ১০ নম্বর, মোট ২০ নম্বর থাকবে। ৩ ক্রেডিট কোর্সে অ্যাসাইনমেন্ট ও কুইজে ৪ নম্বর, ক্লাস উপস্থিতিতে ৩ নম্বর, ইন কোর্সে ৮ নম্বর—মোট ১৫ নম্বর থাকবে। ২ ক্রেডিট কোর্সে অ্যাসাইনমেন্ট ও কুইজে ৩ নম্বর, ক্লাস উপস্থিতিতে ২ নম্বর, ইন কোর্সে ৫ নম্বর—মোট ১০ নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে সংশোধিত রেগুলেশনে।

ব্যবহারিক কোর্সের মূল্যায়ন-সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সিলেবাস অনুযায়ী পরিচালিত হবে বলে রেগুলেশনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রশ্নকাঠামো নিয়ে রেগুলেশনে বলা হয়েছে, ৪ ক্রেডিট কোর্সে ১২টি প্রশ্নের মধ্যে ৮টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, মোট নম্বর থাকবে ৮০, সময় ৪ ঘণ্টা।

৩ ক্রেডিট কোর্সে ৯টি প্রশ্নের মধ্যে ৬টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, মোট নম্বর ৬০, সময় ৩ ঘণ্টা। ২ ক্রেডিট কোর্সে ৬টি প্রশ্নের মধ্যে ৪টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, মোট নম্বর ৪০, সময় ২ ঘণ্টা। প্রয়োজনে প্রতিটি প্রশ্নে সর্বোচ্চ তিনটি উপপ্রশ্ন (ক, খ, গ বা a, b, c) রাখা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শহীদ মিনারে তৃতীয় দিনের মতো প্রাথমিকের শিক্ষকদের অবস্থান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। আর কর্মবিরতি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিলেও গতকাল রোববার মধ্যরাতে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তাঁরা।

রোববার বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ রাত পৌনে ১০টায় কর্মবিরতি স্থগিত করে অবস্থান কর্মসূচি চালানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ও তথ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য বিবরণীতেও শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিতের কথা বলা হয়েছিল।

তবে শিক্ষকেরা শহীদ মিনারে ফেরার পর আরেক আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি কর্মবিরতি ও অবস্থান চালানোর ঘোষণা দেন।

সেসময় সিদ্ধান্ত বদলের কারণ জানতে চাইলে শিক্ষক নেতা মুহিব উল্লাহ বলেছিলেন, ‘সাধারণ শিক্ষকদের জনরোষে নেতারা সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।’

রোববার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সহকারী শিক্ষকেরা দশম গ্রেডে বেতন ছাড়াও, চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা দেওয়ার দাবি জানান।

শনিবার সকাল থেকে শহীদ মিনারে এই তিন দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে শাহবাগ থানার সামনে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ।

এ সময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসে কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায় শিক্ষকদের। এ সময় দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হওয়ার পাশাপাশি ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন শিক্ষক নেতারা।

যদিও ঢাকা মহানগর পুলিশের দাবি, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পুলিশের বাধার মুখে শহীদ মিনারে ফিরে এসে রোববার থেকে কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকেরা। শনিবার মধ্যরাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে শিক্ষকেরা ‘পুলিশের হামলার’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ নামে চারটি শিক্ষক সংগঠনের মোর্চার ব্যানারে শিক্ষকেরা ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালাচ্ছেন। এই মোর্চায় আছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি ও সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ।

এদিকে ১১ তম গ্রেডে বেতনসহ, পদোন্নতি ও উচ্চতর গ্রেড জটিলতা নিরসনের দাবিতে সরকারকে আল্টিমেটাম দেওয়া শিক্ষক সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারাও ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭ টি। এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার। কর্মবিরতির কারণে দ্বিতীয় দিনেও এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত