Ajker Patrika

ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় জামিনে মুক্ত শিক্ষক ক্লাসে, অস্বস্তিতে শিক্ষার্থীরা

প্রতিনিধি, বগুড়া
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৬: ২২
ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় জামিনে মুক্ত শিক্ষক ক্লাসে, অস্বস্তিতে শিক্ষার্থীরা

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন কলেজশিক্ষক জিন্নাতুল ইসলাম (৫৩)। পুলিশের তদন্তেও সত্যতা পাওয়া গেছে ধর্ষণের অভিযোগের। এরপরও জামিনে বের হয়ে তিনি নিজ পদে বহাল থেকে নিয়মিত চাকরি করছেন। এতে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা তাঁর ক্লাসে অস্বস্তি বোধ করছেন। ধর্ষণ মামলার আসামি শিক্ষক জিন্নাতুল ইসলাম বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।

গত বছরের ১ নভেম্বর রাতে শহরের কামারগাড়ি রানার সিটির বাসা থেকে সদর থানা–পুলিশ জিন্নাতুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। ওই রাতেই ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরদিন জিন্নাতুল ইসলামকে পুলিশ কারাগারে পাঠায়। দুই মাস কারাগারে থাকার পর জিন্নাতুল ইসলাম জামিনে মুক্তি পেয়ে কর্মস্থলে যোগদান করেন। কিন্তু কারাগারে থাকাকালীন কর্তৃপক্ষ তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেনি। কর্মস্থলে যোগ দিয়ে নিয়মিত ক্লাস নেওয়া শুরু করলে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অস্বস্তি দেখা দেয়।

গত মাসের প্রথম সপ্তাহে জিন্নাতুল ইসলামের ক্লাস বর্জন করেছিল ক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রীরা। সরকারি আজিজুল হক কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেছেন, ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগে ধর্ষণ ও নগ্ন ভিডিও ধারণের মতো অপরাধ করেও তিনি সাময়িক বরখাস্ত হননি শুধু অধ্যক্ষের কাছের মানুষ হওয়ার কারণে। অধ্যক্ষও বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে লিখিতভাবে জানাননি। অথচ সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবাস করলে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি সাময়িক বরখাস্ত থাকার কথা।

বগুড়া প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী জাহানুর রহমান বলেন, সরকারি চাকরির বিধি অনুযায়ী জিন্নাতুল ইসলাম গ্রেপ্তারের তারিখ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হিসেবে গণ্য হবেন। মামলা নিষ্পত্তি অর্থাৎ বেকসুর খালাস পেলে তাঁকে চাকরিতে পুনর্বহালের বিধান রয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি সাময়িক বরখাস্ত থাকবেন। তথ্য গোপন করে বেতন–ভাতা উত্তোলন করে থাকলে তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।

ছাত্রী ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জেবুনেচ্ছা আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলাটি তদন্ত শেষে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গত ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে জিন্নাতুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। তিনি বলেন, জিন্নাতুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পরপরই বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল।

ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষক জিন্নাতুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ব্যস্ততার অজুহাতে কথা না বলে এড়িয়ে যান। 

সরকারি আজিজুল হক কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অলোক পোদ্দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, জিন্নাতুল ইসলাম জামিন পাওয়ার পর নিয়মিত ক্লাস করছেন। 

কলেজের অধ্যক্ষ শাজাহান আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, জিন্নাতুল ইসলাম হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন। তিনি বলেন মামলাটি যেহেতু উচ্চ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এ কারণে তাঁর গ্রেপ্তারের বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে জানানো হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

বিদায় বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত