Ajker Patrika

পরীক্ষায় কলেজ ছাত্রলীগ সেক্রেটারির প্রক্সি দিচ্ছিলেন কাউন্সিলরপুত্র, দুজনেই পেলেন শাস্তি

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯: ৫৫
পরীক্ষায় কলেজ ছাত্রলীগ সেক্রেটারির প্রক্সি দিচ্ছিলেন কাউন্সিলরপুত্র, দুজনেই পেলেন শাস্তি

চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের হয়ে প্রক্সি দেওয়ার অপরাধে এক ভুয়া পরীক্ষার্থীকে আটকের পর এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

সোমবার (১ জুলাই) চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ওই পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। টানা আট দিন প্রক্সি দেওয়ার পর নবমতম পরীক্ষার দিন জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ওই ভুয়া পরীক্ষার্থী ধরা পড়েন। 

দণ্ডপ্রাপ্ত শামীম আহম্মেদ তুষার জীবননগর পৌর এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইসলামপুর গ্রামের মো. খোকনের ছেলে এবং যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। 

জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা গ্রহণের কেন্দ্র চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজে। এই কেন্দ্রে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। পরীক্ষায় অংশ নেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুজ্জামান। তাঁর বাবা আবুল কাশেম জীবননগর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তাঁর হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন শামীম আহম্মেদ তুষার। 

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আসে। পরীক্ষা চলাকালীন হলে উপস্থিত হন জেলা কালেক্টরেটের সহকারী কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাঈমা জাহান সুমাইয়া। সেখানে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ওই ভুয়া পরীক্ষার্থীকে এক বছরের কারাদণ্ড দেন। 

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাঈমা জাহান সুমাইয়া বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় ভুয়া পরীক্ষার্থীকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে। আর যিনি প্রকৃত পরীক্ষার্থী তাঁকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁর ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে কলেজ কর্তৃপক্ষ।’ 

ম্যাজিস্ট্রেট নাঈমা বলেন, ওই পরীক্ষার্থী প্রথমে অস্বীকার করেন। কিন্তু বাবার মোবাইল নম্বর চাওয়া হলে তিনি আসল পরীক্ষার্থীর নম্বর দেন। সেই নম্বরে কথা বলে সন্দেহ আরও বাড়ে। তিনি যে ওই পরীক্ষার্থীর বাবা নন, সেটি কথা শুনেই মনে হচ্ছিল। এরপর আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে দুজনের কথার মিল ছিল না। পরে ভুয়া পরীক্ষার্থী স্বীকার করেন। তাঁর কাছে একটি মোবাইল ফোনও পাওয়া যায়। 

চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক মামুন অর রশিদ বলেন, অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় ২১৫ নম্বর কক্ষে ইতিহাস বিভাগের শহীদুজ্জামান নামের এক পরীক্ষার্থীর পক্ষে শামীম আহম্মেদ তুষার নামে একজন প্রক্সি দিচ্ছিলেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে এক বছরের সাজা দিয়েছেন। এরই মধ্যে আমরা মূল পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কাগজপত্র পাঠিয়েছি। 

পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থী কীভাবে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করল, এমন প্রশ্নের উত্তরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, ‘এসব কথা লেখার প্রয়োজন নেই!’ 

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক (কমিটি নেই) সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফ বলেন, ‘শহীদুজ্জামান বিপ্লব জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। প্রায় সাত বছর আগে কমিটি হয়েছে। ও পরবর্তীতে বোধহয় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত