Ajker Patrika

আধিপত্য বিস্তার নিয়েই খুন হন যুবলীগকর্মী ইয়াসিন, আটক ৬

যশোর প্রতিনিধি
আধিপত্য বিস্তার নিয়েই খুন হন যুবলীগকর্মী ইয়াসিন, আটক ৬

যশোরে যুবলীগকর্মী ইয়াসিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আটক অপর দুজন গণপিটুনির শিকার হওয়ায় তাঁদের যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। 

গতকাল বুধবার রাতে যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন যুবলীগকর্মী ইন্টারনেট ব্যবসায়ী ইয়াসিন আরাফাত (২৮)। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান তিনি। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ইয়াসিনের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় হত্যাসহ এক ডজন মামলা রয়েছে। 

যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুপন কুমার সরকার জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশের একাধিক টিম অভিযান শুরু করে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে খুলনার শিরোমণি এলাকা থেকে রুবেল (৩৫) ও রানা (৩৮) নামের দুই সহোদরকে আটক করা হয়েছে। তাঁরা যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার তোরাব আলীর ছেলে। 

ওসি রুপন কুমার সরকার আরও জানান, আটককৃতরা ঘটনার পর কোনো এক সময়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের আহত অবস্থায় আটক করার পর যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

র‍্যাব-৬ যশোর কোম্পানির সেকেন্ড ইন কমান্ড সরোয়ার হোসাইন জানান, ইয়াসিন হত্যাকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার রাতে চারজনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন—ষষ্টিতলা এলাকার নিশান (২৮), আশ্রম রোড এলাকার মুন (২৬), শংকরপুর এলাকার শাহাবুদ্দিন (৩০) ও ষষ্টিতলা এলাকার বাবু (৩২)। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। 

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, আজ দুপুরে নিহতের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দাফনসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় মামলা করার সম্ভাবনা রয়েছে। 

জানা যায়, গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে ইয়াসিন বেজপাড়া চোপদারপাড়া রেললাইনের পাশে অবস্থিত ব্রাদার্স ক্লাবে যান। সে সময় ক্লাবে আরও কয়েকজন তাস খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ইয়াসিনও তাস খেলতে বসেন। প্রায় ১৫ মিনিট পড়ে মাঙ্কি টুপি পরে ১০ / ১২ জন ব্যক্তি ক্লাবে প্রবেশ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইয়াসিনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। উপস্থিতরা ইয়াসিনকে উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। 

ইয়াসিনের স্ত্রী নিশা আক্তার অভিযোগ করেন, বেজপাড়ার কাপড় ব্যবসায়ী রোকনের ছেলে স্বর্ণকার রানা ও তাঁর ভাই হাফিজ এবং আইয়ুবের ছেলে হাফিজসহ তাঁদের বাহিনীর ক্যাডাররা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে এই স্বর্ণ রানা ও তাঁর দলের ক্যাডাররা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইয়াসিনকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। 

যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘ইয়াসিন আরাফাত যুবলীগের সক্রিয় কর্মী। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একটি গ্রুপের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর জেরেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে।’ 

এলাকাবাসী জানান, ইয়াছিন ছয় মাস আগে বিয়ে করেন। বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লেও সম্প্রতি নিজেকে শুধরে নিতে শুরু করেছিলেন। বিশেষ করে বিয়ের পর অনেকটা স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে আসছিলেন। 

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) তাসকিন আলম জানান, ইয়াসিন আরাফাতের নামে যশোর কোতোয়ালি থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে এক ডজন মামলা রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে লতিফ সিদ্দিকী অবরুদ্ধ, নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে

সেজ ভাইয়ের চোখ উপড়ে ফেললেন অপর দুই ভাই, বাবাসহ আসামি ৮

রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত