Ajker Patrika

পরীমণি পিয়াসাদের তদন্ত কোন পথে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২১, ০০: ৩১
পরীমণি পিয়াসাদের তদন্ত কোন পথে

চিত্রনায়িকা পরীমণিসহ সম্প্রতি গ্রেপ্তার মডেলদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত নিয়ে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির কর্মকর্তারা নানা ধরনের তথ্য দিচ্ছেন।

সিআইডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব রয়েছে–এমন একাধিক রাজনৈতিক নেতা, ঊর্ধ্বতন ব্যাংক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, পুলিশ, বিত্তশালী ও পদস্থ ব্যক্তিদের নাম বলছেন। তালিকায় থাকা সন্দেহভাজন এসব ব্যক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে ইমিগ্রেশনকে চিঠি দেবে সিআইডি। তবে এসব ব্যক্তি কেন সন্দেহভাজন, তা বলছে না সিআইডি।

প্রশ্ন উঠছে, সিআইডির হেফাজতে থাকা পাঁচজনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা পৃথক সাতটি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। তাহলে মাদকের সঙ্গে কি এসব প্রভাবশালী ধনাঢ্য ব্যক্তির যোগসূত্র রয়েছে? সে বিষয়েও নিশ্চুপ সিআইডির কর্মকর্তারা।

মামলাগুলোর তদারকি কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রভাবশালী এই ব্যক্তিরা তাঁদের শুভাকাঙ্ক্ষী। এ ছাড়া তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া চিত্রনায়িকা পরীমণির বাসা থেকে পাওয়া মদের বোতলগুলো খালি ছিল, ওই বাসা থেকে কোনো ভরা বোতল উদ্ধার হয়নি বলে দাবি করেছেন পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রেফাত সুরভী। মাদক আইনে গ্রেপ্তার এই অভিনেত্রী-মডেলদের বিরুদ্ধে তদন্তে এখন পর্যন্ত এই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে কি না, জানতে চাইলে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, রাসায়নিক পরীক্ষার পর সব বলা যাবে।  

সিআইডির ফরেনসিক কেমিক্যাল ল্যাবরেটরির প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ড. দিলীপ কুমার সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোনো আলামতের রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতি প্রয়োজন হয়। আলোচিত কোনো ঘটনা হলে তদন্তের শুরুতেই জব্দকৃত দ্রব্যের পরীক্ষার জন্য আবেদন করা হয়। তবে এ ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত কোনো আলামত পরীক্ষার জন্য আসেনি।  

অন্যদিকে ‘পিয়াসা ও মৌকে গ্রেপ্তারের দিন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেছিলেন, তাঁরা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। রাতে বিভিন্ন পার্টিতে গিয়ে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করে বাসায় ডেকে আনতেন। এরপর বাসায় গোপনে তাঁদের আপত্তিকর ছবি তুলতেন। সেই ছবি বাবা-মা বা পরিবারের সদস্যদের দেখানোর ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করতেন।

ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার কোনো ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওমর ফারুক জানান, এখন পর্যন্ত কোনো ভুক্তভোগী অভিযোগ করেননি। তবে কিছু তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, সে অনুযায়ী তদন্ত করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যেভাবে একের পর এক ব্যাংকের নাম উঠে আসছে, তাতে আমরা সবাই আতঙ্কিত। কেউ অপরাধী হলে নাম আসতেই পারে। কিন্তু কী অপরাধে নাম আসছে, পুলিশ তা বলছে না।’ 

মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, যেভাবে অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে, সেটা অশোভন ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গ্রেপ্তার করতেই পারে। তাই বলে এত আয়োজন করে, গণমাধ্যম নিয়ে গিয়ে দেখানোর কী আছে? তিনি বলেন, শুধু নারী বলেই মামলা বা তদন্তের বাইরে গিয়ে এত প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এটা আসলে চরিত্রহনন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত