Ajker Patrika

ধর্ষণ মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করে হত্যা

কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২১, ১২: ০৫
ধর্ষণ মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করে হত্যা

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার পালটিয়া গ্রামে পুকুর থেকে উদ্ধার হওয়া ১৪ বছরের এক কিশোরীর মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মেলায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কলাবাগানে নিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়। মুখে চেপে ধরে ধর্ষণের সময় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায় ওই কিশোরী। 

এ ঘটনায় নিহত কিশোরীর এক নিকট আত্মীয়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত মো. হাছান (৪৮) গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রফিকুল বারী জবানবন্দি রেকর্ড করেন। 

পিবিআই কিশোরগঞ্জ জেলার পরিদর্শক মো. শাহাদাত হোসেন গতকাল শুক্রবার দুপুরে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। 

পিবিআই সূত্রে জানা যায়, নিহত কিশোরী কুলিয়ারচরের এক দিনমজুর বাবার মেয়ে। মা মানসিক ভারসাম্যহীন। অভিযুক্ত হাছান উপজেলার চর কামালপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে। হাছান দীর্ঘদিন যাবৎ শ্বশুরবাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছে। বিভিন্ন মুরগির খামারে খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দেওয়ার কাজ করত সে। 

চলতি বছরের ১৭ মার্চ বিকেলে নিহত কিশোরী লাউশাক আনতে হাছানের বাড়িতে যায়। শাক নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় হাছানের সঙ্গে মেয়েটির দেখা হয়। তখন মেয়েটিকে হাছান মেলায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। সেই সময় গ্রামে মেলা চলছিল। মেয়েটি রাজি হয়ে যায়। হাছান তাকে কাজ শেষ করে রাতে মেলায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। রাত ১২টার সময় মেয়েটিকে নিয়ে মেলার উদ্দেশে বের হয়। দুলাভাইয়ের সঙ্গে মেলায় যাচ্ছে—এই তথ্য পরিবারের আর কারো জানা ছিল না। বাড়ির পশ্চিম পাশে একটি কলাবাগানে মেয়েটিকে জোর করে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। তখন মেয়েটি চিৎকার করছিল। চিৎকার করায় হাছান এক হাতে মেয়েটির মুখে চেপ ধরে। 

প্রথমবার ধর্ষণ করার ২০ মিনিট পর ফের ধর্ষণ করে হাছান। এ সময় ওই কিশোরী চিৎকার করলে হাছান মেয়েটির মুখ চেপে ধরে। দ্বিতীয় দফা ধর্ষণ শেষে হাছান দেখতে পায় মেয়েটি আর নড়াচড়া করছে না। মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে মেয়েটির মরদেহ পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে ওই পুকুরেই গোসল করে হাছান বাড়ি ফিরে আসে। 

পরদিন পুলিশ পুকুর থেকে মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার করে এবং থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে। পরে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে মেয়েটিকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর ২৯ জুন ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। গত ১ নভেম্বর মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পিবিআইয়ের সদস্যরা গত বুধবার বিকেলে মাসকান্দি বাজার থেকে হাছানকে গ্রেপ্তার করেন।

পিবিআই কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘তদন্তের সময় হাছানের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে সন্দেহ জোরালো হয়। তাকে আটক করার পরই আমাদের কাছে সবকিছু স্পষ্ট করে বলে। পরে আদালতেও একই স্বীকারোক্তি দেয়। হাছান এর আগেও একটি ধর্ষণ মামলার আসামি ছিল। ওই মামলায় জামিনে বের হয়ে এসেই ফের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটায়।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘বিচারপতি খায়রুলকে হাতকড়া পরানো মানে পুরো বিচার বিভাগকে হাতকড়া পরানো’

কোথাও ঘুরতে ইচ্ছা করলে আমাকে জানাবে—ছাত্রীকে খুবি অধ্যাপক

মোবাইলে সর্বত্র ইন্টারনেট সংযোগ দেবে স্টারলিংকের ডাইরেক্ট-টু-সেল

আগামী সপ্তাহের মধ্যে ৫ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু: গভর্নর

মৌচাকে হাসপাতালের পার্কিংয়ে প্রাইভেট কার থেকে উদ্ধার দুই মরদেহের পরিচয় মিলেছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত