Ajker Patrika

শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পণ্য ঢোকাতে প্রবাসীর স্বজনকে জিম্মি, গ্রেপ্তার ৩ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৩, ০০: ০০
শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পণ্য ঢোকাতে প্রবাসীর স্বজনকে জিম্মি, গ্রেপ্তার ৩ 

প্রবাসীদের স্বজনদের জিম্মি করে অবৈধভাবে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিদেশ থেকে স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন মূল্যবান পণ্য বাংলাদেশে নিয়ে আসা চক্রের মূল হোতা খোরশেদ আলমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। সেই সঙ্গে অপহৃত একজন ভুক্তভোগীকেও উদ্ধার করা হয়েছে। র‍্যাব বলছে, এই ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করতে গিয়েই এই চক্রের সন্ধান পেয়েছে তাঁরা। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন—খোরশেদ আলম (৫২), জুয়েল রানা মজুমদার (৪০) ও মাসুম আহমেদ (৩৫)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা অপহরণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে র‍্যাব। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে বিপুল স্বর্ণালংকার, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী জব্দ করা হয়। 

আজ শুক্রবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।  

খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ৯ অক্টোবর রাতে যশোরের চৌগাছা থেকে সৈয়দ আলী মন্ডল (৬৫) নামের এক ব্যক্তি মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ থেকে প্রবাস ফেরত তাঁর ছেলেকে নেওয়ার জন্য হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এসে নিখোঁজ হন। নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবার সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাঁকে পাচ্ছিল না। পরে নিখোঁজ ব্যক্তির জামাতা রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার একটি বাসায় অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত সৈয়দ আলী মন্ডলকে উদ্ধার করে র‍্যাব। 

কমান্ডার মঈন আরও বলেন, ভুক্তভোগী সৈয়দ আলীর ছেলে প্রবাসী নুরুন্নবী গত ২০ আগস্ট মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে যান। বিদেশে যাওয়ার পর সেখানে ভালো চাকরি ও সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় একপর্যায়ে দেশে ফেরত আসার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় প্রবাসে এই চক্রের মূল হোতা আবু ইউসুফ ও তাঁর সহযোগীরা নুরুন্নবীর আর্থিক দুর্বলতার সুযোগে তাঁকে বাংলাদেশে আসার ফ্রি টিকিট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্বর্ণালংকার এবং একটি লাগেজে বেশ কিছু দামি কসমেটিকস পণ্য, ইলেকট্রনিকস আইটেম, চকলেটসহ বাংলাদেশে নিয়ে এসে চক্রের হোতা খোরশেদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে বলে শর্ত দেন। 

প্রবাসী নুরুন্নবী তাঁদের দেওয়া শর্তে রাজি হন এবং ৯ অক্টোবর রাতে ঢাকায় আসবেন বলে তাঁর পরিবারকে জানান। নুরুন্নবীর বাবা সৈয়দ আলী ৯ অক্টোবর রাতে প্রবাসফেরত ছেলেকে নেওয়ার জন্য ঢাকায় এলে চক্রের সদস্যরা তাঁদের পাঠানো পণ্য নিরাপদে পাওয়ার জন্য জামানত হিসেবে প্রবাসী ছেলের বাবা সৈয়দ আলীকে কৌশলে রাজধানীর শান্তিনগরের একটি বাসায় নিয়ে জিম্মি করে রাখেন। 

তিনি বলেন, চক্রটি বাংলাদেশ এবং মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী আরও বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতকারী বাংলাদেশিদের পরস্পর যোগসাজশে প্রবাস ফেরত যাত্রীদের মাধ্যমে গত ৫-৬ বছর ধরে অবৈধভাবে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে মূল্যবান পণ্য দেশে এনে বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রি করে আসছিলেন। 

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, চক্রটির অন্যতম মূল হোতা আবু ইউসুফ মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে বাংলাদেশি প্রবাসী। দেশে ও বিদেশে এই চক্রটির প্রায় ১২-১৫ জন সদস্য রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত