Ajker Patrika

সচিব পরিচয়ে প্রতারণা, পুলিশের হাতে ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সচিব পরিচয়ে প্রতারণা, পুলিশের হাতে ধরা

সচিব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির শেরে বাংলা নগর থানা-পুলিশ। গতকাল বুধবার সাভার ও আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তাররা হলেন-মোফাজ্জল হোসেন দেওয়ান (৬৫) ও প্রতারণায় ব্যবহৃত গাড়ির চালক মনোয়ার। এ সময় প্রতারণায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটিও জব্দ করা হয়। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মো. ফারুকুল ইসলাম নামের এক দলিল লেখক সহকারীকে প্রায় ৬ মাস আগে মামুন নামের এক ব্যক্তি ফোন করে নিজেকে সংসদীয় মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব খোরশেদ আলমের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) বলে পরিচয় দেন। তিনি তাঁর স্যারের জন্য জমি কিনে দিতে বলেন। তাঁকে কিছু টাকা লাভ দেওয়ার প্রলোভন দেখান। কথামতো ফারুকুল প্রথমে সচিবের পিএস মামুনকে জমি দেখান। যা তাঁদের পছন্দ হয়। জমির দরদাম ঠিক হওয়ার পর ফারুকুলকে মামুন সচিবের সঙ্গে সংসদের ভেতরে দেখা করান। সচিব খুব ব্যস্ততার ভাব নিয়ে ফারুকুলকে শুধু বলেন, ‘জমি আমার খুব পছন্দ হয়েছে। আমি জমি নেব।’ 

ফারুকুলের তাঁর কথা বিশ্বাস হয়। পরে পিএস মামুন আবারও তাঁকে তাঁর সচিবের জন্য আরও জমি কেনার কথা বলেন। আশুলিয়ায় একটি জমি দেখেছেন এবং সেটি তাঁর সচিবের খুব পছন্দ হয়েছে। জমির মালিকের নাম হচ্ছে মোফাজ্জল হোসেন দেওয়ান। তিনিও প্রতারণা দলের সদস্য। পিএস মামুন এবার ফারুকুলকে বড় অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে বলেন, ‘ওই জমি তার নামে বায়না করলে ২০ লাখ টাকা লাভ হবে। লাভের টাকা ফারুকুল এবং মামুন ভাগাভাগি করে নেবেন।’ 

পরে গত ৬ ডিসেম্বর পিএস মামুন ফারুকুল ইসলামের নামে প্রতারণা চক্রের আরেক সদস্য অ্যাডভোকেট পরিচয়ধারী জাহাঙ্গীর আলমের মাধ্যমে একটি বায়নানামা দলিল করেন। এরপর ফারুকুল ইসলাম প্রতারক চক্রের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন দেওয়ানকে নগদ ৮ লাখ টাকা ও ২ লাখ টাকার চেক দেন। পরে ওই দিনই বিকেলে ফারুকুল পিএস মামুনের সঙ্গে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ বকুল তলায় দেখা করে তাঁর লাভের টাকাসহ আসল টাকা চান। পিএস মামুন ফারুকুলের কাছ থেকে বায়নানামা দলিলটি নিয়ে নেন এবং তাঁর সচিব স্যারকে দেখাবেন বলে জানান। কিন্তু তিনি আর ফেরেননি। ফারুকুল দীর্ঘসময় অপেক্ষার পর চক্রের সদস্যদের মোবাইলে যোগাযোগ করলে নম্বর বন্ধ পান। পরে এই ঘটনায় ফারুকুল বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় গত ৮ জানুয়ারি চক্রের সদস্য খোরশেদ আলম, মামুন, জাহাঙ্গীর আলম ও মোফাজ্জল হোসেন দেওয়ানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি স্পর্শকাতর ও চাঞ্চল্যকর হওয়ায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

পুলিশ জানায়, প্রতারক চক্রের সকল সদস্যের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। এরপরও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মোফাজ্জল হোসেন দেওয়ানকে ঢাকা ও তার স্বীকারোক্তি মতে ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে কাশিমপুর এলাকা থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত গাড়ির চালক মনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় প্রতারক চক্রের দখলে থাকা মামলার বাদীর চেক ও বায়না দলিল, পাঁচটি বিভিন্ন ব্যাংকের চেক, ১৫টি ১০০ টাকা মূল্যের লিখিত স্ট্যাম্প, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও মামলার এজাহারে উল্লেখিত সীম উদ্ধার করা হয়। 

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি এ এইচ এম আজিমুল হক বলেন, গ্রেপ্তার মোফাজ্জল রাজধানীর পল্লবী থানায় দায়ের করা একটি মামলার অভিযোগ পত্রে অভিযুক্ত (এজাহারনামীয়) আসামি। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য জানা গেছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গভর্নর আমাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার কে: বিএফআইইউর প্রধান শাহীনুল

সেই রুহুল আমিনের বসুন্ধরা, বনানী ও উত্তরার জমিসহ ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

ছাত্রীকে তিন দিন আটকে রেখে ধর্ষণ, গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে বিয়ে

ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনেই জয়ী হবে জামায়াত: মাওলানা হালিম

কেশবপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বর্ণের কারিগরসহ দুই ব্যক্তি নিহত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত