Ajker Patrika

পুলিশের ভুলে ১৩ দিন সাজা খাটলেন লিটন, সংবাদ প্রকাশের পর অব্যাহতি

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
পুলিশের ভুলে ১৩ দিন সাজা খাটলেন লিটন, সংবাদ প্রকাশের পর অব্যাহতি

অবশেষে কারাবাস থেকে অব্যাহতি পেলেন নামের মিলে ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ লিটন (৪০)। আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২–এর আদালত শুনানি শেষে ব্যবসায়ী লিটনকে অব্যাহতি দেন। এর আগে গতকাল রোববার রাতে লিটনের পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া দুই হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে পুলিশ।

গতকাল রোববার ‘নামের মিলে আসামির বদলে জেলে নিরপরাধ ব্যবসায়ী’ শিরোনামে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই লিটনের পরিবারকে ২ হাজার টাকা ফেরত দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোতাব্বির হোসেন। পাশাপাশি আসামি গ্রেপ্তার ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ বলে দায় স্বীকার করে আজ সকালে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তিনি। 

লিটনের পক্ষের আইনজীবী জানান, আদালতে পুলিশের দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনের পাশাপাশি আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি আমলে নিয়ে লিটনের সাজা বাতিল করেন বিচারক। তাঁকে দায় মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি এই ঘটনার ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করলে পুলিশকে তা বিবেচনা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। 

লিটনের ছেলে নুর উদ্দিন রাব্বি এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আজ শুনানির ধার্য দিনে তাঁরা আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের কপি আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে জমা দেন। পাশাপাশি নিজেদের ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ স্বীকার করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। আদালত বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণের পর তাঁর বাবাকে অব্যাহতি দেন। 

পুলিশের ভুলে ১৩ দিন সাজা খাটার পর বাবা আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত ও দায়মুক্তি পাওয়ায় আনন্দিত নুর উদ্দিন। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামীকাল মঙ্গলবার সকালের দিকে তাঁর মুক্তি মিলবে বলে আশা করছেন তিনি।

নুর উদ্দিন বলেন, গতকাল পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর সীতাকুণ্ড থানার এসআই মোতাব্বির হোসেন রাতে ফোন করে তাঁকে থানায় ডেকে নেন। ‘অনিচ্ছাকৃত ভুলে’ বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি তাঁর কাছ থেকে নেওয়া ২ হাজার টাকা ফেরত দেন। 

তবে এসআই মোতাব্বির হোসেন টাকা নেওয়া ও ফেরত দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তবে নামের মিলে নিরপরাধ লিটনকে গ্রেপ্তার করায় ভুল স্বীকার করেন। তিনি বলেন, লিটনের পরিবার কাছ থেকে কোনো টাকা নেননি। আদালত থেকে তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়ার পর বিষয়টি আবার তদন্ত করেন। নামের ভুলে সাজা খাটা লিটন ডাকাতি মামলার প্রকৃত আসামি লিটন নন—মর্মে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। 

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১০ জুন রাতে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিরা কাজীপাড়া এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিন প্রকৃত আসামি লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন সকালে গ্রেপ্তার ছয়জন সহ অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা হয়। একই বছরে জামিনে মুক্ত হয়ে পালিয়ে যান লিটন। পরে আদালত লিটনকে এক বছরের সাজা দিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ৯ ডিসেম্বর সোর্স নুরুজ্জামানের সহায়তায় ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী লিটনকে আলমারি বানানোর কথা বলে থানায় ডেকে নেন সীতাকুণ্ড থানার এসআই মোতাব্বির হোসেন। তাঁকে ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার করেন। 

আইনজীবীর সহায়তায় আদালত থেকে মামলার নথি তোলেন লিটনের ছেলে নুর উদ্দিন রাব্বি। নথি দেখে বুঝতে পারেন নামের মিলে তাঁর বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর গত মঙ্গলবার চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র নেন রাব্বি। প্রত্যয়নপত্র আদালতে জমা দিলে আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। 

আরও পড়ৃন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত