Ajker Patrika

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে সুড়ঙ্গ করে ইটভাটার মালামাল পরিবহন

হোসাইন আলী কাজী, আমতলী (বরগুনা)
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে সুড়ঙ্গ করে ইটভাটার মালামাল পরিবহন

বন্যার পানি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে বাঁধ দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ইটের ভাটার মালামাল পরিবহনের জন্য সেই বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ করেছেন এক ইটভাটার মালিক। এলাকার অন্তত ১০ হাজার লোককে প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকিতে ফেলে এই সুড়ঙ্গ থেকে ভাটার জিনিসপত্র আনা-নেওয়াও অব্যাহত রয়েছে। 

জানা গেছে, বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুলকাটা গ্রামের পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাছাকাছি স্থানে মো. বদিউল আলম বাদল মুন্সি ২০১০ সালে মুন্সি ব্রিকস নামের একটি ইটভাটা স্থাপন করেন। এ বছর তিনি ওই ইটভাটাটি কুকুয়া ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামের আবুল হোসেন মৃধার কাছে ভাড়া দেন। এর পর থেকে আবুল হোসেন ওই ইটভাটায় ইট পোড়াচ্ছেন। এর মাঝে ইটভাটার মালামাল আনা নেওয়ার জন্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ তৈরি করছেন। স্থানীয় লোকজন নিষেধ করলেও তিনি বাঁধ কেটেছেন। প্রভাবশালী হওয়ায় আবুল হোসেনকে কেউ কিছু বলতেও পারছেন না। 

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে ফেলায় হুমকিতে পড়েছে গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুলকাটা, খেকুয়ানী, ডালাচারা, বাজারখালী ও গুলিশাখালী গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ। প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাস হলে ওই বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে জানমাল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী। দ্রুত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার করে ইটভাটার মালিকের শাস্তি দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ করা হয়েছে। ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে ইটভাটার মালামাল আনা নেওয়া চলছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপরে ফেলে রাখা হয়েছে কাঠের গুঁড়ি। এর ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করছে। 
 
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গএ প্রসঙ্গে উপজেলা যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও আঙ্গুলকাটা গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুস সোবাহান লিটন বলেন, ইটভাটার মালিক বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে ইটভাটার মালামাল আনা নেওয়া করছেন। প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাস হলে ওই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে গুলিশাখালী ইউনিয়ন তলিয়ে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হবে। দ্রুত বাঁধ সংস্কারের দাবিও জানান তিনি। 

গুলিশাখালী ইউপি সদস্য আব্দুল ওহাব হাওলাদার বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে ফেলায় হুমকির মুখে পরেছে ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার মানুষ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান তিনি। 
 
ইটভাটার ভাড়াটিয়া মালিক মো. আবুল হোসেন মৃধা ইটভাটার মালামাল আনা নেওয়ার জন্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাটার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি নয়, মুন্সি ব্রিকসের মালিক বাদল মুন্সি নিজেই বাঁধটি কেটে দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর। তিনি ভাড়া নিয়ে ইটভাটা চালান বলেও উল্লেখ করেন। 

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আজিজুর রহমান সুজন বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে বাঁধ কাটা দেখেছি। এরই মধ্যে বাঁধ সংস্কারে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। 

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার আলম বলেন, নোটিশ দেওয়ার পরেও ইটভাটার মালিক বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার না করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, বিষয়টি জানা নেই। সরেজমিনে তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

পিপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ৪৯ জন সহকারী পিপির

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

শান্ত যে কারণে টি-টোয়েন্টি দলে, মিরাজ কেন নেই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত