Ajker Patrika

মামলায় হারার শঙ্কায় হত্যা

গনেশ দাস, বগুড়া
মামলায় হারার শঙ্কায় হত্যা

বগুড়ায় বণ্টন মামলায় হেরে যাওয়ার শঙ্কায় চাচাতো ভাই-ভাতিজা মিলে শিক্ষানবিশ আইনজীবী আব্দুল বারী ওরফে চাঁন মিয়াকে হত্যা করেছে। হত্যার পরিকল্পনাকারীদের একজন গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য সামনে এলো।

এদিকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধারের পর বেরিয়ে এসেছে আরও অনেক তথ্য। মোটরসাইকেলটির মালিক মামলার প্রধান আসামি নিহত আইনজীবীর চাচাতো ভাই আব্দুর রহিম। সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ অনুযায়ী, মোটরসাইকেলে থাকা তিনজনের মধ্যে হেলমেট পরা যুবকের নাম মেহেদী। তিনি আইনজীবীর আরেক চাচাতো ভাই হেলাল উদ্দিনের ছেলে।

চাঁন মিয়ার বড় ভাই গোলাম আজম গোলাপ বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে ১৯৯০ সালে বগুড়া শহরের ফুলদীঘি মৌজায় জাহাঙ্গীরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট সম্প্রসারণ কাজে তাঁর দাদা হায়দার আলীর কিছু জমি অধিগ্রহণ করা হয়। সে সময় জমি অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলন করেন দাদার ভাই রমজান ও চাচাতো ভাই মনিরের পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় ১৯৯৪ সালে আদালতে বণ্টন মামলা দায়ের করেন হায়দার আলীর ছেলে কবেজ উদ্দিন। তিনি নিহত আইনজীবীর বাবা। মামলাটি এখনো যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতে বিচারাধীন।

গোলাম আজম বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার পর ছোট ভাই চাঁন মিয়া পক্ষভুক্ত হয়ে মামলা চালিয়ে আসছিলেন। দীর্ঘদিন চলা মামলায় সব সাক্ষীর সাক্ষ্য দেওয়া শেষ হয়েছে। ১ নভেম্বর ছিল সাক্ষীদের সর্বশেষ জেরার তারিখ, এর পরে মামলা রায় ঘোষণা করা হতো। প্রতিপক্ষ মামলায় হেরে যাচ্ছে বুঝতে পেরে, ওই দিন আদালতে যাওয়ার পথে চাঁন মিয়াকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।’

গোলাম আজম আরও বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও ধুনট থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মালিক মামলার প্রধান আসামি রহিম। আর মামলার ৫ নম্বর আসামি তাঁর ভাতিজা মেহেদীর শ্বশুরবাড়ি ধুনটে। এ কারণে আমরা অনেকটা নিশ্চিত, তারাই চাঁন মিয়াকে হত্যা করেছে।’

এদিকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চাঁন মিয়া হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চক ফরিদ এলাকার রঞ্জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মামলা তদন্ত-সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘পারিপার্শ্বিক অনুসন্ধানে, রঞ্জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে। তাঁকে মামলায় আসামি করা না হলেও, তাঁর পরিকল্পনাতেই চাঁন মিয়াকে হত্যা করা হয়।’ তাঁর বিরুদ্ধে শাজাহানপুর থানায় ২০২১ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দুটি এবং ২০০৫ সালের এপ্রিলে দায়ের করা একটি হত্যা মামলা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১২ সালের জুনে বগুড়া সদর থানায় রঞ্জনের নামে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে আরও একটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়ার বনানী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘রঞ্জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে চাঁন মিয়া হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে গতকাল সোমবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত রঞ্জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ ও রিমান্ড আবেদন শুনানির দিন ধার্য করবেন।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত