Ajker Patrika

দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ চলছেই: এমএসএফ

আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬: ২৪
দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ চলছেই: এমএসএফ

দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা বেড়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ ও অপহরণের চেষ্টা, গ্রেপ্তার এড়াতে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মৃত্যু, নির্যাতন, অপতৎপরতার অভিযোগের মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে। ধর্ষণসহ নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা এখনো উদ্বেগজনক। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। 

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও এমএসএফের সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি সুলতানা কামালের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নানা ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় তুলে ধরে এ নিয়ে গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

এমএসএফের মাসিক মানবাধিকার পরিস্থিতি তদারকি প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে ৬ জন নাগরিককে তুলে নিয়ে যাওয়া ও অপর একটি ঘটনায় দুজনকে তুলে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। রাজনৈতিক ও নির্বাচনী সহিংসতার ৫১টি ঘটনায় সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৬৯১ জন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৫টি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ১২ জন। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে সাধারণ নাগরিকদের বস্তুনিষ্ঠ ও স্বাধীন চিন্তা, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা ও নির্যাতন করার মতো ঘটনা বন্ধ হয়নি। রাজনৈতিক সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা বেড়েছে। পাশাপাশি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।

এমএসএফের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে বন্দুকযুদ্ধের ২টি ঘটনা ঘটেছে। কথিত গোলাগুলির দুটো ঘটনার মধ্যে একটিতে র‌্যাব ও অপরটিতে পুলিশের সম্পৃক্ততা ছিল। দুটো ঘটনাতেই কোনো হতাহতের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত না হলেও ২ জনকে র‌্যাব ও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। 

এমএসএফ মনে করে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণের নামে যে অপতৎপরতা চলছে তা অন্যায়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং নাগরিক জীবনে চরম উৎকণ্ঠা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি ক্রমাগত আস্থাহীনতার জন্ম দিচ্ছে।

প্রতিবেদনে এমএসএফ বলেছে, রাজনৈতিক অঙ্গনে সরকারদলীয় ও বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহিংসতা, হানাহানি, হতাহতের ঘটনাসহ নাগরিক জীবনে উৎকণ্ঠা বেড়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামে মিয়ারহাট এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ছুরিকাঘাতে রাসেল হোসেন (১৪) নামের এক কিশোর নিহত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিরোধীদলীয় কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করার অন্যতম উপায় হিসেবে হয়রানিমূলক মামলা ছাড়াও গায়েবি মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এহেন প্রয়াস নাগরিক জীবনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করেছে।

এ ছাড়া শিক্ষাঙ্গনে সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ও তাদের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা সমর্থকদের দ্বারা ছাত্রছাত্রীদের শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে, যা জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের ঘটনা ক্যাম্পাসে অহরহই ঘটে চলেছে অথচ এর কোনো সুবিচার হচ্ছে না। 
এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী চলতি মাসে কারা হেফাজতে একজন ভারতীয় নাগরিকসহ মোট ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। জানুয়ারিতে এর সংখ্যা ছিল ২০ জন।

এ মাসে বিভিন্ন পর্যায়ে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ৬টি ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে ৫টি ঘটনা জাতিগত ও ১টি ঘটনা ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় এক রাতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ১২টি মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত