Ajker Patrika

পুলিশে চাকরির নামে প্রতারণা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১২: ৫৩
পুলিশে চাকরির নামে প্রতারণা

পুলিশে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া তিনটি প্রতারক চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার জেলা গোয়েন্দা শাখা এ তথ্য জানায়।

এর আগে গত সোমবার মুক্তাগাছা, ফুলপুর ও জামালপুর থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন জামালপুরের মেলান্দহ থানার ছাবিল্লাহপুর গ্রামের ছামিউল আলম (৬৬), ফুলপুরের কুড়িপাড়া গ্রামের জালাল উদ্দিন (৭৫) এবং মুক্তাগাছা উপজেলার রহিমবাড়ি গ্রামের মারুফ মিয়া (১৯)।

এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষা উপলক্ষে ময়মনসিংহ জেলায় একাধিক প্রতারকচক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। একদল প্রতারক চাকরি পাইয়ে দেবে বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নগদ টাকা নেয়।

অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে পুলিশ সুপারকে সুপারিশ করে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে আসছিল। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তিনটি প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক মো. ছামিউল আলম নিজেকে একটি মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামানের সরকারি নম্বরে ফোন করেন। এ সময় তাঁর তিনজন প্রার্থীকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন।

বিষয়টি পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামানের সন্দেহ হলে তাঁকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেন। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ছামিউলকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় পুলিশ সুপারকে ফোন করা মোবাইল ও সিম জব্দ করা হয়।

ছামিউল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, তিনি এক সময় পুলিশ বিভাগের অনিয়মিত খুচরা মোটর পার্টস সরবরাহকারী ঠিকাদার হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে তাঁর পেশাগত কোনো পরিচয় নেই।

ওসি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত জালাল উদ্দিনের চক্রটি ফুলপুর উপজেলায় পুলিশে চাকরি দেওয়ার নামে পাঁচজনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নেন। সেই পাঁচজনকে ঢাকার বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতেন। এ ছাড়া তাঁদের টিম লিডার কামরুল মিয়া নামে একজন চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে নিজেকে ডিআইজি পরিচয়ে কথা বলে বিশ্বাস স্থাপন করাতেন।

জালাল উদ্দিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে আসছেন। তাঁর সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিচয় আছে বলে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করে আসছেন।

ওসি সফিকুল ইসলাম আরও বলেন, মো. মারুফ মিয়া কনস্টেবল পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পর অনলাইনে আবেদন করেন। প্রাথমিক আবেদনেই তিনি বাতিল হয়ে যায়। পরে মারুফ মিয়া চাকরি প্রার্থী হিসেবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরি করেন। সেই প্রবেশপত্র নিয়ে তিনি জেলা পুলিশ লাইনসে হাজির হয়। সেখানে ভুয়া বলে নিশ্চিত হয়।

পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মারুফ স্বীকার করেন, তিনি মুক্তাগাছায় কম্পিউটারের দোকান থেকে ভুয়া প্রবেশপত্রটি তৈরির কথা স্বীকার। পরে রাতেই দোকানে অভিযান চালিয়ে কম্পিউটার জব্দ করা হয়। অন্য আসামিরা পালিয়ে যান।

জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার পর আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত