Ajker Patrika

‘লাশের ভাগাড়’ শীতলক্ষ্যা

সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ
‘লাশের ভাগাড়’ শীতলক্ষ্যা

নিখোঁজের চার দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে লাশ পাওয়া যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইল এলাকার বাসিন্দা রোহান চৌধুরীর (১৯)। লাশটি অর্ধগলিত থাকলেও গায়ে পরিহিত জ্যাকেট দেখে শনাক্ত করা হয় তাঁর পরিচয়। বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরতে কাজ শুরু করেন হোসিয়ারি কারখানায়। চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি রাতে রোহানের চাচাতো ভাইয়ের গায়েহলুদের অনুষ্ঠান চলা অবস্থায় ডেকে নিয়ে যান তাঁর বন্ধুরা। পরে ২৬ জানুয়ারি সকালে কুমুদিনী বাগানসংলগ্ন এলাকায় নদী থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁর লাশ।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে নভেম্বর পর্যন্ত শীতলক্ষ্যা নদী থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ২৩টি। এর ভেতর নৌ দুর্ঘটনা ও হত্যাকাণ্ড উভয়ই রয়েছে। কেবল সদর নৌ থানা-পুলিশই উদ্ধার করেছে ২১টি লাশ।

হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর শীতলক্ষ্যায় লাশ ভাসিয়ে দেওয়ার তালিকায় রোহান একা নন, এই শহরে ত্বকী, আশিকের মতো অনেক মেধাবী তরুণের লাশও মিলেছিল শীতলক্ষ্যায়। নতুন করে বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশের লাশ উদ্ধার আলোচনায় এনেছে শীতলক্ষ্যা নদীকে। অপরাধ বিশ্লেষকেরা বলছেন, শীতলক্ষ্যার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত নারায়ণগঞ্জ। এখানে কোনো অপরাধ সঙ্ঘটিত হলে অপরাধীরা সহজে নিস্তার পাবে, এমন ধারণা তৈরি করে রেখেছে। সেই কারণেই অপরাধীরা দূর-দূরান্তে অপরাধ করে লাশ ফেলে এই নারায়ণগঞ্জ বা শীতলক্ষ্যায়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য এবং জেলা পুলিশ থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন মিলিয়ে দেখা যায়, চলতি বছরের শুরু থেকে নভেম্বর পর্যন্ত শীতলক্ষ্যায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে এমন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ছয়টি। আর দুর্ঘটনার কবলে পরে শীতলক্ষ্যায় মৃত্যু ঘটেছে অন্তত ১৭ জনের। পাশাপাশি শীতলক্ষ্যায় ফেলে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে এমন ভুক্তভোগীও রয়েছেন দুজন।

চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী বাগানের পাশে উদ্ধার করা হয় রোহান চৌধুরীর লাশ। একই দিন অজ্ঞাতনামা আরেক নারীর (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয় শীতলক্ষ্যা থেকে।

উভয়ের শরীরেই ছিল আঘাতের চিহ্ন। ৭ মার্চ শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকায় শীতলক্ষ্যা থেকে উদ্ধার করা হয় রাহিমা নামের এক কিশোরীর মরদেহ। দুই দিন আগেই শীতলক্ষ্যা নদীতে বাল্কহেডের সঙ্গে ট্রলারের সংঘর্ষ ঘটলে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন সে।

২২ মার্চ জাহাজের ধাক্কায় শীতলক্ষ্যা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল আফসার উদ্দিন ডুবে যায়। ওই ঘটনায় ২৪ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১০ যাত্রীর মরদেহ ও এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়। লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন জয়নাল ভূঁইয়া, সাফায়াত হোসেন, সাফায়াতের মা আরিফা বেগম, স্মৃতি, আরোহী, সালমা, ফাতেমা, উম্মে খাইরুন ফাতেমা, আব্দুল্লাহ আল জাবের ও হাতেম আলী। অন্যদিকে উদ্ধার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হলেন জিয়াউর রহমান রিমন।

২ জুলাই শীতলক্ষ্যার বন্দর মাহমুদনগর এলাকা থেকে সেলিম (৪৮) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৪ জুলাই শীতলক্ষ্যার কয়লাঘাট এলাকায় নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ গার্মেন্টস কর্মী মিরাজের লাশ উদ্ধার করা হয়। একই দিন রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবে মৃত্যু হয় শিশু আল আমিনের (৭)। গত ১৬ সেপ্টেম্বর কয়লাঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় আহম্মদ উল্লাহ মৃদুল (২৫) নামের এক যুবকের লাশ। ১৪ অক্টোবর বন্দরের কদমরসূল মেলা থেকে ফেরার সময় নৌকা ডুবে মৃত্যু হয় তিন বন্ধুর। শহরের ডনচেম্বার এলাকায় বসবাস করা সেই তরুণেরা হলেন শাওন, জীম ও রিফাত। ৭ নভেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জের লক্ষ্মী নারায়ণ কটন মিল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মরদেহ।

এ ছাড়া ১৪ অক্টোবর বন্দরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শফিকুল ইসলাম (২০) নামের এক হোসিয়ারি শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার পর শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ১৬ অক্টোবর রূপগঞ্জে যৌতুকের টাকা না পেয়ে কাজল রেখা নামের এক গৃহবধূর হাত-পা বেঁধে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে প্রত্যক্ষদর্শী এক মাঝি দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এক শীতলক্ষ্যায় এত লাশ উদ্ধারে উদ্বেগ প্রকাশ করে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বী আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই জেলার বাইরে থেকে অপরাধ করে এখানে লাশ ফেলে পালায় অপরাধীরা। কারণ, অপরাধীরা জানে নারায়ণগঞ্জে অপরাধ করে সহজে পার পাওয়া যায়। সেই কারণেই অপরাধীরা অপরাধ করার ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জকে বেছে নেয়।

একই প্রসঙ্গে সুজন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই শীতলক্ষ্যায় ত্বকী, আশিকের মতো মেধাবী ছেলেদের লাশ পাওয়া গেছে। সাত খুনের সব লাশও মিলেছে এখানেই। অপরাধীরা অপরাধ সঙ্ঘটিত করে শীতলক্ষ্যাকে লাশের ভাগাড় হিসেবে বেছে নিয়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হলে একের পর এক লাশ শীতলক্ষ্যায় দেখতে হতো না।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) আমীর খসরু বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ যেহেতু শিল্পনগরী, সেহেতু শীতলক্ষ্যায় নৌযানের চাপ অনেক বেশি। নৌ দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ এটি। আর হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র থাকতে পারে কিংবা ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণও থাকতে পারে। সেসব ঘটনা নিরসন ও রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আনফিট লঞ্চ দুর্ঘটনায় পতিত হলে আমাদের কী করার আছে? বিআইডব্লিউটিএ যদি জেনে-বুঝে এদের চলাচলের অনুমতি দেয়, তাহলে আমাদের কিছু করার থাকে না। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বও বিআইডব্লিউটিএর। আমরা কেবল নৌযানগুলোকে অপরাধীদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে তাদের চলাচল নিশ্চিত করি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংকের ৭৫ লাখ গ্রাহকের আমানত কী নিরাপদ, যা জানালেন গভর্নর

জুলাই বিপ্লবওয়ালারা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন সংবিধান চাইলে, সেটাই হতো: অ্যাটর্নি জেনারেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংকের ৭৫ লাখ গ্রাহকের আমানত কী নিরাপদ, যা জানালেন গভর্নর

জুলাই বিপ্লবওয়ালারা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন সংবিধান চাইলে, সেটাই হতো: অ্যাটর্নি জেনারেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংকের ৭৫ লাখ গ্রাহকের আমানত কী নিরাপদ, যা জানালেন গভর্নর

জুলাই বিপ্লবওয়ালারা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন সংবিধান চাইলে, সেটাই হতো: অ্যাটর্নি জেনারেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংকের ৭৫ লাখ গ্রাহকের আমানত কী নিরাপদ, যা জানালেন গভর্নর

জুলাই বিপ্লবওয়ালারা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন সংবিধান চাইলে, সেটাই হতো: অ্যাটর্নি জেনারেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংকের ৭৫ লাখ গ্রাহকের আমানত কী নিরাপদ, যা জানালেন গভর্নর

জুলাই বিপ্লবওয়ালারা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন সংবিধান চাইলে, সেটাই হতো: অ্যাটর্নি জেনারেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত