Ajker Patrika

রামগড়ে অবাধে পাহাড় ধ্বংস

বেলাল হোসাইন, রামগড় (খাগড়াছড়ি) 
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ২৬
রামগড়ে অবাধে পাহাড় ধ্বংস

খাগড়াছড়ির রামগড়ে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির রমরমা বাণিজ্য চলছে। নানাভাবে পাহাড়, বনাঞ্চল, ফসলি মাঠের জমির মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। আইনি বাধা এড়াতে রাতের আঁধারে পাহাড় কাটা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরিমানা করা হলেও কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও পাহাড় কাটা শুরু করে দেয় পাহাড়খেকোরা। এতে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মূলত বছরের শেষ দিকে উপজেলার ইটের ভাটাগুলোতে মাটি সরবরাহের জন্য পাহাড় কাটার উৎসব শুরু হয়। তবে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের অজুহাত দেখিয়ে বছরজুড়েই পাহাড় কাটছে একটি চক্র। কমিশনের বিনিময়ে তাঁদের সমর্থন দিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েক নেতা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কোদাল দিয়ে মাটি কাটা ও টুকরি দিয়ে বহনের শর্তে সোনাইআগা এবং তৈছালা ছড়া এলাকা মাটি এবং বালু উত্তোলনের জন্য প্রতিবছর ইজারা দেওয়া হয়। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার অন্তত ৩০টি পয়েন্টে এক্সকাভেটর ব্যবহার করে নির্বিচারে পাহাড় কেটে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। রাস্তা তৈরি ও মেরামতসহ নানা অজুহাতে পাহাড়-টিলা কাটা হচ্ছে।

বৈদ্যটিলা এলাকায় মাটি কাটায় জড়িত এক ব্যবসায়ী নাম না প্রকাশের শর্তে আজকের পত্রিকাকে জানান, এক ড্রাম ট্রাক পাহাড়ের মাটি বিক্রি করা হয় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। আর ফসলি জমির মাটি বিক্রি হয় ১ হাজার ৮৫০ টাকায়। ইটের ভাটায় সরবরাহ করা এক ড্রাম ট্রাক মাটি বিক্রি হয় ১ হাজার ৮৫০ টাকায়। এর মধ্যে তাঁরা পান ১ হাজার ৪০০ টাকা; বাকি ৪৫০ টাকা যায় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারীদের পকেটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার পাতাছড়া, বলিপাড়া, চিনছড়িপাড়া, বৈদ্যটিলা, কালাডেবা, সোনাইআগা, খাগড়াবিল, শ্মশান টিলা, নজির টিলা, ভতপাড়াসহ ১০ থেকে ১৫টি পয়েন্টে নির্বিচারে বালু ও মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। আইন অমান্য করে এক্সকাভেটর (ভেকো), কোদাল ও শাবল দিয়ে লাল মাটির পাহাড় ও ফসলি জমির ওপরের উর্বর মাটি কাটা হচ্ছে। এ জন্য পাহাড়ের ওপরের অংশ ন্যাড়া করে উজাড় করা হয়েছে গাছপালা।

কোথাও খাড়াভাবে, কোথাও আড়াআড়িভাবে পাহাড় কাটা হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু স্থানে উঁচু চূড়া থেকে পাহাড় কাটা হচ্ছে। এসব মাটি ইটভাটা, পুকুর ভরাট, রাস্তা সংস্কারসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে ব্যবহৃত হয়। এ জন্য মাটি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা নিয়মিত কমিশন নেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘রামগড়-ফেনী মহাসড়কসহ উপজেলার প্রতিটি অলিগলির রাস্তাগুলো যেন এক রকম মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ইটভাটায় কাঠ ও মাটি সরবার করার ডাম্পার, মিনিট্রাক চলাচল করায় সড়ক নষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারি নেই, এ জন্য অবাধে পাহাড় কেটে পার পেয়ে যাচ্ছেন তারা।’

দলের নাম ভাঙিয়ে পাহাড় কাটার অভিযোগ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাতাছড়া ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নুরুল আলম বলেন, ‘কারও ব্যক্তিগত দায় আওয়ামী লীগ নেবে না। যারা এ বেআইনি কাজে নিয়োজিত আছে, তারা নিজ দায়িত্বে এসব করছে। দল কাউকে এসবে সমর্থন বা সহযোগিতা দেয় না এবং দেবে না।’

রামগড় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেয়র রফিকুল আলম কামাল জানান, ‘রামগড়ে নির্বিচারে পাহাড় ও বনাঞ্চল ধ্বংস করে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এক প্রকার উৎসবে পরিণত হয়েছে মাটি বিক্রি। এসব বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুফিদুল আলম জানান, ‘পাহাড় কাটা গুরুতর অপরাধ। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসক এবং ইউএনওকে জানানো হবে।’

এদিকে দালাল দিয়ে লোভ দেখানোসহ নানাভাবে কৃষককে জমি ও টিলার মাটি বিক্রিতে উৎসাহিত করছেন ব্যবসায়ীরা। এদের প্ররোচনায় নজির টিলার বাসিন্দা জসিম উদ্দীন নিজের ভিটের মাটি বিক্রি করে দেন। খবর পেয়ে পাহাড় কাটার অপরাধে তাঁকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করে উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) উম্মে হাবিবা মজুমদার বলেন, ‘যখনই পাহাড় কাটার খবর পাই, তখনই অভিযানে যাই। ইতিমধ্যে দুই ব্যক্তিকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত