Ajker Patrika

বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির রুদ্ধশ্বাস কাহিনি

আপডেট : ২২ জুন ২০২১, ১২: ৩৪
বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির রুদ্ধশ্বাস কাহিনি

ঢাকা: ২০১৬ সালে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনা সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিল। কীভাবে হয়েছিল এই চুরি? গতকাল বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতিহাসে নজিরবিহীন এই রিজার্ভ চুরির নেপথ্যে ছিল উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা।

চুরির বিষয়টি টের পাওয়া যায় একটি ত্রুটিপূর্ণ প্রিন্টার থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মীদের কাছে প্রিন্টারের এই ত্রুটি ছিল একটি নিত্যদিনের সমস্যা। সাধারণ যান্ত্রিক ত্রুটি ভেবে এটি নিয়ে মাথা ঘামানোর বিশেষ প্রয়োজন মনে করেনি কেউ। এটা যে একসময় অনেক বড় মাথা ব্যথার কারণ হবে, তা কারও ভাবনাতেই ছিল না।

এটা কারও মাথায় আসেনি যে অন্য দশটা সাধারণ প্রিন্টার আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রিন্টারের এমন প্রিন্ট বের না হওয়ার ঘটনা এক নয়। রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভবনের দশম তলায় একটি সুরক্ষিত কক্ষে ছিল এই প্রিন্টারের অবস্থান। ত্রুটিপূর্ণ হলেও গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হতো এটিকে। ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা লেনদেনের নথি প্রিন্ট করা হতো এই প্রিন্টার দিয়ে।

রিজার্ভ চুরির পর এই প্রিন্টার সম্পর্কে কর্তব্যরত ডিউটি ম্যানেজার জুবায়ের বিন হুদা পুলিশকে জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যখন দেখা গেল প্রিন্টারটি কাজ করছে না, তখন এটিকে অন্যান্য দিনের মতো একটি সাধারণ ঘটনা হিসেবেই মনে করা হয়েছিল। জুবায়ের বলেছিলেন, ‘এ ধরনের সমস্যা আগেও দেখা গিয়েছিল।’

বাংলাদেশ ব্যাংক যে অনেক বড় একটি সমস্যার মুখে পড়েছে এ ঘটনাই ছিল তার প্রথম ইঙ্গিত। হ্যাকাররা ততক্ষণে ব্যাংকের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমে ঢুকে পড়েছিল। আর এ সময়ই তারা এ যাবৎকালের দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনাটি ঘটাতে শুরু করেছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল ১০০ কোটি ডলার চুরি করা, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা হাতিয়ে নিতে হ্যাকার দলটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রস্তুত রেখেছিল অসংখ্য ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, দাতব্য সংস্থা এবং ক্যাসিনো। কিন্তু কারা ছিল এই হ্যাকার, কোথা থেকেই বা এসেছিল?

ঘটনাটি যাঁরা অনুসন্ধান করেছিলেন তাঁদের মতে–ঘটনার সব ডিজিটাল ফিঙ্গার প্রিন্ট একটি দিকে যাচ্ছিল। আর তা হলো–উত্তর কোরিয়া!

ঘটনা পরম্পরায় উত্তর কোরিয়াই হতে যাচ্ছিল এই সাইবার অপরাধের প্রধান সন্দেহভাজন। পৃথিবীর অন্যতম গরিব দেশ এটি এবং প্রযুক্তি, অর্থনীতির মতো বিষয়গুলোতে এই দেশ বাকি দুনিয়া থেকে প্রায় পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের মতে, দুর্ধর্ষ এই চুরিটি করতে উত্তর কোরিয়া সরকারের ছত্রছায়ায় থাকা সেই হ্যাকার দল ও এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা তাদের সহযোগীরা কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিল। সাইবার নিরাপত্তার জগতে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা ‘ল্যাজারাস’ গ্রুপ নামে পরিচিত। এই ল্যাজারাস হলো বাইবেলে বর্ণিত একটি চরিত্র, যিনি মৃত্যুর পর ফিরে এসেছিলেন।

কারা এই ল্যাজারাস: ল্যাজারাস হ্যাকারদের সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। তবে রিজার্ভ চুরির সঙ্গে জড়িত এই গ্রুপের প্রধান সন্দেহভাজনের একটি ছবি প্রকাশ করতে সক্ষম হয় এফবিআই। তাঁর নাম পার্ক জিন–হিয়োক। এ ছাড়া পার্ক জিন–হেক, পার্ক কোয়াং–জিন নামগুলোও তিনি ব্যবহার করেছেন। কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবেই তিনি পরিচিত। উত্তর কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোনো একটি থেকে তিনি পড়াশোনা শেষ করেন। পরে চীনের বন্দরনগরী দালিয়ানে চোসান এক্সপো নামে একটি উত্তর কোরিয়ান কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। এই কোম্পানি মূলত অনলাইন গেম ও জুয়া খেলার প্রোগ্রাম তৈরি করে বিশ্বজুড়ে সরবরাহ করে।

দালিয়ানে থাকা অবস্থায় পার্ক জিন–হিয়োক একটি ইমেইল ঠিকানা ও একটি সিভি তৈরি করেছিলেন। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তিনি তাঁর নিজস্ব যোগাযোগের নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন। সাইবার ফুটপ্রিন্ট এটাই নির্দেশ করছে যে, ২০০২ সালের শুরু থেকে ২০১৩ কিংবা ২০১৪ সাল পর্যন্ত দালিয়ানেই অবস্থান করছিলেন পার্ক।

এফবিআইয়ের তদন্তকারীরা পার্ক জিন–হিয়োকের একটি ছবি প্রকাশ করতে সক্ষম হন। এই ছবি ২০১১ সালে চোসান এক্সপোর ম্যানেজার বাইরের এক ক্লায়েন্টের সাথে পার্কের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় ব্যবহার করেছিলেন। ছবিতে পার্কের চেহারায় সাদামাটা এক উত্তর কোরিয়ান যুবকের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে, যার বয়স ৩০ বছরের কম কিংবা বেশিও হতে পারে। তাঁর গায়ে একটি কালো শার্ট, তার ওপর একটি চকলেট–বাদমি রঙের স্যুট। প্রথম দেখায় যার চেহারায় কোনো বিশেষত্ব ধরা পড়বে না। এফবিআই বলছে, ছবিটি সেই সময়ের, যখন দিনের বেলায় প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করতেন পার্ক, আর রাতের বেলায় হ্যাকার।

২০১৮ সালের জুনে মার্কিন কর্তৃপক্ষ পার্কের বিরুদ্ধে কম্পিউটার জালিয়াতির মাধ্যমে ষড়যন্ত্র ও যোগাযোগ বিচ্যুতি ঘটানোর অভিযোগ আনে। এই কাজগুলো ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত করেছিলেন তিনি। বিচারের আওতায় আনা গেলে এর জন্য পার্কের সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারত।

বিবিসি বলছে, রাতারাতি হ্যাকারে পরিণত হয়নি পার্ক। তিনি হলেন উত্তর কোরিয়ার এমন হাজারো যুবকের একজন, যাদেরকে শৈশব থেকেই সাইবার যোদ্ধা হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। গণিতে মেধাবী এ ধরনের শিশুদের ১২ বছর বয়সেই তাদের স্কুল থেকে ছাড়িয়ে উত্তর কোরিয়ার রাজধানীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে তাদের প্রশিক্ষণ।

ঘটনার এ পর্যায়ে আসা যাক বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই প্রিন্টারে যেখান থেকে রিজার্ভ চুরির প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। প্রিন্টারটি সমস্যা দূর করার পরই ব্যাংক কর্মীদের জন্য এমন কিছু অপেক্ষা করছিল, যা কি–না খুবই দুশ্চিন্তাজনক। প্রিন্টারের ভেতর থেকে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের একটি বার্তা বেরিয়ে এসেছিল। এই ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যেখানে মার্কিন ডলারে বাংলাদেশের রিজার্ভ জমা হয়।

হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে অর্থ ছাড়ের নির্দেশ দেয়, যার পরিমাণ ছিল প্রায় ১০০ কোটি ডলার। এই বিষয়ে পরে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের কাছে জানতে চায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে হ্যাকাররা যে সময়টি বেছে নিয়েছিল তার জন্য বেকায়দায় পড়ে যায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

খুব সতর্কতার সঙ্গে হ্যাকিংয়ের সময়টি বেছে নিয়েছিল ল্যাজারাস গ্রুপ। তারা হ্যাকিং শুরু করেছিল ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টায়। সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। নিউ ইয়র্কের সময় অনুযায়ী সেই সময়টি ছিল বৃহস্পতিবার সকাল, পুরোদমে ব্যাংকের কাজ চলছিল সেখানে। পরদিন শুক্রবার এবং শনিবারও বন্ধ থাকায় টানা দুই দিনের ছুটিতে ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ছুটি শেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংক যখন বিষয়টি অনুধাবন করতে শুরু করে ততক্ষণে নিউ ইয়র্কে শুরু হয়ে যায় সাপ্তাহিক ছুটি। এই সময়টিই বেছে নিয়েছিল হ্যাকাররা। পুরো ব্যাপারটি সামনে আসার আগেই অন্তত তিন দিনের সময় পেয়ে গিয়েছিল হ্যাকাররা। তারা আরও একটি কৌশল অবলম্বন করেছিল। এ ক্ষেত্রে নিউ ইয়র্ক থেকে ডলার ছাড় হয়ে গেলে সেগুলো কোথাও না কোথাও নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল তাদের। তাই তারা এই অর্থ ফিলিপাইনের ম্যানিলায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আর ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চন্দ্র বর্ষের প্রথম দিন হওয়ায় ফিলিপাইনসহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে ছুটি চলছিল তখন। ফলে সব মিলিয়ে পাঁচ দিনের সময় পেয়েছিল হ্যাকার দল। এ থেকেই বোঝা যায়, দিন ক্ষণ মিলিয়ে চুরির ঘটনাটি ঘটাতে বেশ সময় নিয়ে পরিকল্পনা করেছিল হ্যাকাররা।

বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালে জানুয়ারিতে একটি সিভি ডাউনলোড করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমে ঢুকে পড়েছিল হ্যাকাররা। সিভিটি ছিল রাসেল আহলাম নামে এক ব্যক্তির, যিনি একজন চাকরি প্রত্যাশী ছিলেন। আসলে এই নামে কেউ ছিল না। হ্যাকাররাই এই সিভিটি তৈরি করেছিল ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমে তাদের ভাইরাস ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য। ব্যাংকের কোন একটি কম্পিউটার থেকে সিভিটি ডাউনলোড করার পরই সেই কম্পিউটার হ্যাকারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। পরে এই কম্পিউটার থেকে তারা অন্যান্য কম্পিউটারে প্রবেশ করতে শুরু করে।

হ্যাকাররা অর্থ স্থানান্তরের জন্য ম্যানিলার জুপিটার স্ট্রিটে থাকা ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের একটি শাখাকে বেছে নিয়েছিল। ২০১৫ সালের মে মাসে এই শাখায় তারা চারটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। এই অ্যাকাউন্টগুলোকে সন্দেহের বাইরে রাখতে তারা আরও কিছু কৌশল অবলম্বন করেছিল। প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টেই ৫০০ ডলার করে জমা রেখেছিল হ্যাকাররা।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রিন্টারে যখন ত্রুটি চিহ্নিত হয় ততক্ষণে অন্তত ৩৫টি গন্তব্যে ৯৫ কোটি ১০ লাখ ডলার ছাড়ের নির্দেশ দিয়ে দেয় হ্যাকাররা। প্রিন্টারটি তাদের কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারত। তাই এটিরও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিল তারা।

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, হলিউড সিনেমায় যেমনটি ঘটে–ঠিক তেমনিভাবে ছোট্ট একটি ভুল করে বসেছিল হ্যাকাররা। ফিলিপাইনে আরও অসংখ্য ব্যাংক রেখে জুপিটার ব্যাংক বাছাই করাই ছিল তাদের সেই ভুল। কারণ জুপিটার নামে ইরানের একটি জাহাজ রয়েছে। ফলে মার্কিন স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটার সিস্টেম জুপিটার শব্দটি শনাক্ত করে সন্দেহজনক বিবেচনায় আটকে দেয় হ্যাকারদের বেশির ভাগ অর্থ স্থানান্তরের নির্দেশ। তবে, আটকে দেওয়ার আগেই পাঁচটি লেনদেনে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার ছাড় দিয়ে দেয় নিউ ইয়র্কের ফেডারেল ব্যাংক। এর মধ্যে ২ কোটি ডলারের একটি লেনদেন ছিল শ্রীলঙ্কার দাতব্য প্রতিষ্ঠান শালিকা ফাউন্ডেশনের নামে। কিন্তু ফাউন্ডেশন বানানে ভুল করায় সেই অর্থছাড়ও আটকে যায়।

শেষ পর্যন্ত ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার স্থানান্তর করতে সক্ষম হয় হ্যাকাররা। যে পরিমাণ অর্থ চুরি হতে যাচ্ছিল, তার তুলনায় এই অর্থ কিছুই নয়। তবু বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য এটি অনেক বড় অঙ্ক। বাংলাদেশ এখনো সেই অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা করে যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার মন্ত্রীর বাড়িতে একটি করে হাড় কবর দিলেও ১০০ বাড়ি ফাঁকা: সারজিস

উট ও সোনা বিক্রি করে সাম্রাজ্য গড়া দাগোলোর নিয়ন্ত্রণে এখন অর্ধেক সুদান

বাদ পড়েছেন বড় অনেক নেতা, চাপে বিএনপি

বিএনপিতে যোগ দিলেন জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধর যমজ ভাই স্নিগ্ধ

প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের যে ব্যাখ্যা দিল সরকার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার মন্ত্রীর বাড়িতে একটি করে হাড় কবর দিলেও ১০০ বাড়ি ফাঁকা: সারজিস

উট ও সোনা বিক্রি করে সাম্রাজ্য গড়া দাগোলোর নিয়ন্ত্রণে এখন অর্ধেক সুদান

বাদ পড়েছেন বড় অনেক নেতা, চাপে বিএনপি

বিএনপিতে যোগ দিলেন জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধর যমজ ভাই স্নিগ্ধ

প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের যে ব্যাখ্যা দিল সরকার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার মন্ত্রীর বাড়িতে একটি করে হাড় কবর দিলেও ১০০ বাড়ি ফাঁকা: সারজিস

উট ও সোনা বিক্রি করে সাম্রাজ্য গড়া দাগোলোর নিয়ন্ত্রণে এখন অর্ধেক সুদান

বাদ পড়েছেন বড় অনেক নেতা, চাপে বিএনপি

বিএনপিতে যোগ দিলেন জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধর যমজ ভাই স্নিগ্ধ

প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের যে ব্যাখ্যা দিল সরকার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার মন্ত্রীর বাড়িতে একটি করে হাড় কবর দিলেও ১০০ বাড়ি ফাঁকা: সারজিস

উট ও সোনা বিক্রি করে সাম্রাজ্য গড়া দাগোলোর নিয়ন্ত্রণে এখন অর্ধেক সুদান

বাদ পড়েছেন বড় অনেক নেতা, চাপে বিএনপি

বিএনপিতে যোগ দিলেন জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধর যমজ ভাই স্নিগ্ধ

প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের যে ব্যাখ্যা দিল সরকার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার মন্ত্রীর বাড়িতে একটি করে হাড় কবর দিলেও ১০০ বাড়ি ফাঁকা: সারজিস

উট ও সোনা বিক্রি করে সাম্রাজ্য গড়া দাগোলোর নিয়ন্ত্রণে এখন অর্ধেক সুদান

বাদ পড়েছেন বড় অনেক নেতা, চাপে বিএনপি

বিএনপিতে যোগ দিলেন জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধর যমজ ভাই স্নিগ্ধ

প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের যে ব্যাখ্যা দিল সরকার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত