Ajker Patrika

হাট বসছে, টাকা যাচ্ছে প্রভাবশালীদের পকেটে

মিন্টু মিয়া, নান্দাইল
হাট বসছে, টাকা যাচ্ছে প্রভাবশালীদের পকেটে

নান্দাইল উপজেলার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের বাঁশহাটি বাজার দীর্ঘ সাত বছর ইজারাবিহীন থাকায় রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। বাংলা ১৪২২ থেকে ১৪২৯ সাল পর্যন্ত সরকার প্রায় ৩ কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ইজারা না হওয়ায় প্রভাবশালী একটি মহল বাজারটি দখল করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তবে মামলা জটিলতায় বাজারটি ইজারা দেওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চন্ডিপাশা ইউনিয়নের বাঁশহাটি গ্রামের শাহ আলম বাঁশহাটি বাজার ইজারা দেওয়া নিয়ে ২০১৫ সালে ৩ মার্চ ঈশ্বরগঞ্জের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন।

২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের সহকারী পরিচালক কাশপিয়া তাসরিন বাঁশহাটি বাজারের খাস আদায় করার বিষয়ে আইনগত কোনো জটিলতা আছে কিনা তাঁর সুস্পষ্ট মতামত জানতে চান। এটি জানানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন ঈশ্বরগঞ্জ চৌকির নান্দাইল আদালতের সরকারি উকিল (এজিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেককে।

তবে ৩ বছর অতিবাহিত হলেও এজিপি আব্দুল মালেক বাজারের ব্যাপারে মতামত দিতে পারেননি। এতে বাজার থেকে খাস আদায় করা যাচ্ছে না। অপরদিকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও অবৈধভাবে সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তবে চেষ্টা করেও এ বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৪২৯ বাংলা সাল পর্যন্ত হাট-বাজার ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয়। এতে নান্দাইল উপজেলার ৪৩টি বাজারের নাম উল্লেখ থাকলেও নান্দাইলের বৃহৎ গরুর হাট বাঁশহাটি বাজারের নাম নেই। সর্বশেষ ১৪২২ সালে বাজারটি ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৩০০ টাকার ইজারা গ্রহণ করেছিলেন মো. সোহেল মিয়া নামের এক ব্যক্তি।

২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ এরশাদ উদ্দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বাঁশহাটি বাজার অবৈধ দখলদারমুক্ত করেন। এরপর কিছুদিন সরকারিভাবে খাস আদায় করা হয়। পরবর্তী সময়ে অজ্ঞাত কারণে আবারও অবৈধ দখলদারদের হাতে চলে যায়।

এ বিষয়ে চন্ডিপাশা ইউপির চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি নতুন নির্বাচিত হয়েছি। বাজারটির ব্যাপারে আমি তেমন কিছু জানি না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখব।’

ঈশ্বরগঞ্জ চৌকির নান্দাইল আদালতের এজিপি আব্দুল মালেক এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানান, কয়েক দিনের মধ্যে বাজারের চলমান মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবুল মনসুর বলেন, ‘বাজারটি নিয়ে দীর্ঘদিন নিম্ন আদালতে মামলা চলছে। এ সময় স্থানীয় লোকজন বাজার থেকে অর্থ আদায় করেন, এ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত