Ajker Patrika

মাস্ক–ট্রাম্প উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিতে ঘুরে দাঁড়াল টেসলার শেয়ার

রয়টার্স
গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাপক দরপতনের পর শুক্রবার বাজার চালুর আগে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাপক দরপতনের পর শুক্রবার বাজার চালুর আগে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের জন্য আজ স্বস্তির দিন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়ার পর কোম্পানিটির শেয়ার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাপক দরপতনের পর শুক্রবার বাজার চালুর আগে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ।

এর আগে এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে মাস্ক স্পষ্ট করেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের বিষয়ে আগ্রহী। উভয়পক্ষকে ঝগড়া বন্ধ করে বোঝাপড়ার আহ্বান জানিয়ে হেজ ফান্ড ম্যানেজার বিল অ্যাকম্যান যে বার্তা দিয়েছেন, তার সঙ্গেও একমত পোষণ করেন তিনি।

এদিকে মাস্ক ও ট্রাম্পের মধ্যে চলমান তিক্ততা প্রশমনে সরাসরি ফোনালাপ আয়োজনের চেষ্টা করছেন হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টারা।

মাস্ক ও ট্রাম্পের দ্বন্দ্ব শুধু টেসলা নয়, পুরো মার্কিন শেয়ারবাজারেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে তা বাজারের জন্য স্বস্তির বার্তা হতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ভাষ্য।

ট্রাম্পের প্রস্তাবিত কর ও ব্যয় পরিকল্পনা নিয়ে মাস্কের সমালোচনা থেকে এই বিরোধের সূত্রপাত। পরিকল্পনানা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের পর ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য ৭,৫০০ ডলারের করছাড় সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে। টেসলার মতো ইভি কোম্পানিগুলোরর জন্য এই ছাড় দীর্ঘদিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এর পাল্টায় মাস্ক নিজের কোম্পানিগুলোর—বিশেষ করে স্পেসেক্স—এর সঙ্গে থাকা সরকারি চুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনার হুমকি দেন।

এই বিবাদের মধ্যে বৃহস্পতিবার শেয়ার দর কমে এক দিনে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্য হারায় টেসলা। এটি কোম্পানির ইতিহাসে অন্যতম বড় ক্ষতি। তবে এই পতনে সবচেয়ে লাভবান হয় শর্ট সেলাররা, যারা শেয়ারের দরপতনের ওপর বাজি ধরেছিল। তারা একদিনেই প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার মুনাফা করে নেয়, যা রেকর্ডের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

চলতি বছর টেসলার শেয়ারের দর কমেছে ২৯.৫ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু বৃহস্পতিবার ১৪ শতাংশ দরপতন হয়। তবু টেসলার শেয়ার প্রায় ১২০ গুণ মুনাফায় লেনদেন হচ্ছে। এই মুনাফার ধারকাছেও নেই গাড়ি প্রস্তুতকারক বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো।

গত বছর মাস্ক প্রকাশ্যে ট্রাম্পকে সমর্থন দিলে টেসলার শেয়ারে ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। বিনিয়োগকারীরা তখন ধারণা করেছিলেন, ভবিষ্যতে হয়তো কোম্পানিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে ছাড় পাবে, বিশেষ করে স্বচালিত গাড়ি (রোবোট্যাক্সি) প্রকল্পে। কিন্তু পরে রাজনীতিতে মাস্কের সক্রিয় ভূমিকা এবং কিছু নীতিগত বিতর্কে শেয়ারহোল্ডারদের আস্থা কিছুটা কমে যায়।

তবে দুজনের এই দ্বন্দ্ব সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সিটি ইনডেক্সের বিশ্লেষক ফিওনা সিনকোটা বলেন, ‘ট্রাম্পের হুমকিগুলো রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির কৌশল হলেও বাস্তবে তা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আমার ধারণা, কয়েকদিনের মধ্যেই বিষয়টি শান্ত হয়ে আসবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত