Ajker Patrika

এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী চাইল দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১৭: ০০
এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী চাইল দুদক

সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যৌক্তিক সংস্কার ও চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা ১৭ কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক বলছে, অবৈধ সম্পদের প্রমাণ মেলায় সম্পদ বিবরণীর হিসাব চাওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে আজকের পত্রিকা'কে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

আক্তার হোসেন বলেন, দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে তাঁদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের প্রমাণ থাকায় কমিশন অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি করেছে।

অভিযুক্ত এনবিআরের কর্মকর্তারা হলেন সদস্য মো. লুৎফুল আজিম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (সিআইসি) মো. আলমগীর হোসেন, যুগ্ম কমিশনার মো. তারিক হাসান, অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কণ্ডু, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার কাজী মো. জিয়া উদ্দিন, রেলওয়ে কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, বৃহৎ করদাতা ইউনিটের ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুর রশিদ মিয়া, কর অঞ্চল ১৬-এর উপ-কর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম, কর অঞ্চল ৮-এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, বিসিএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দিন খান, কর অঞ্চল ১৬-এর উপ-কর কমিশনার মোনালিসা শাহরিন সুস্মিতা, সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (মূল্য সংযোজন কর) অতিরিক্ত কমিশনার হাসান তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ মামুন মিয়া, গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার সাহেলা সিদ্দিক, কর অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল কমিশনার লোকমান আহমেদ ও কর অঞ্চল ৩-এর কর কমিশনার এম এম ফজলুল হক।

আক্তার হোসেন জানান, দুদকের তথ্যানুসন্ধান শেষে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় এসব কর্মকর্তার নিজ নামে কিংবা অন্য কারও মাধ্যমে বৈধ আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই কমিশন সম্পদ ও দায়দেনার হিসাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। বিগত বছরগুলোতে তাঁরা বিভিন্ন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়েছেন। এর ফলে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। একই সঙ্গে কর ফাঁকির মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হয়েছেন।

এর আগে চলতি বছরের ২৯ জুন রাজস্ব বোর্ডের সংস্কারে চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এনবিআরের ছয় কর্মকর্তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরের তিন দফায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ১৬ জনের অনুসন্ধান শুরু করে সংস্থাটি। সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে।

সে সময় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তটি সরকারের চাপ কি না—এমন প্রশ্নে কমিশনের মহাপরিচালক জানান, শুধু তাঁদের নয়, এনবিআরের আরও অনেক কর্মকর্তার বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করছে। চলমান অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে দুদক এটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে সরকারের কোনো চাপ নেই।

দুদকের মহাপরিচালক সে সময় সাংবাদিকদের আরও জানান, অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম হচ্ছে, এই কর হিসাবনিকাশ করার পর বেশি দেওয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরও অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ হয়। অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা করের টাকা ফেরত দিতে নিজেরাও কামিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত