Ajker Patrika

২৪২ প্রতিষ্ঠান আমদানি করবে ৫ লাখ টন চাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ২৩
২৪২ প্রতিষ্ঠান আমদানি করবে ৫ লাখ টন চাল
ফাইল ছবি

বিশ্ববাজারে চালের দাম ধারাবাহিকভাবে নেমে এলেও দেশের খুচরা বাজারে দাম কমছে না। এ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেসরকারিভাবে ৫ লাখ টন চাল আমদানির জন্য ২৪২টি প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচন করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আমদানি অনুমতিপত্র (আইপি) জারি করার জন্য গত রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয় লিখিত অনুরোধ করেছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আগামী বোরো মৌসুম আসতে এখনো অনেক সময় বাকি। এর মধ্যে চালের দাম যাতে আর না বাড়ে, সে জন্য চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে বাজারের জন্য ইতিবাচক বলছেন কৃষি অর্থনীতিবিদেরা।

এ প্রসঙ্গে খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘দেশে এখন চালের মজুত সর্বোচ্চ। সরকারি ও বেসরকারিভাবে পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। তবু বৃষ্টিসহ নানা অজুহাতে দাম বাড়ছে—মানুষের কষ্ট কমাতে আমদানির দরজা খুলে রাখছি।’ তিনি আরও জানান, আইপি ইস্যুর পর আমদানিকারকেরা এলসি খুলে আমদানি শুরু করতে পারবে; তবে চূড়ান্ত আমদানির পরিমাণ আইপি দেওয়া শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এর আগে গত ১৫ জুলাই অনুষ্ঠিত খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) সভায় সরকারি ও বেসরকারিভাবে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেখানে সরকারি খাত থেকে চার লাখ টন এবং বেসরকারি খাতে ৫ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরে খাদ্য মন্ত্রণালয় ৪ লাখ ৬১ হাজার টন সেদ্ধ চাল এবং ৩৯ হাজার টন আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দেয়। আমদানিতে শর্ত হিসেবে বলা হয়, চালের সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ ভাঙা দানা থাকতে পারবে, বরাদ্দপ্রাপ্তরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেশীয় বাজারে চাল পৌঁছে দেবে এবং আমদানির পরিমাণ, গুদামজাত ও বাজারজাত কাজ জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রককে জানাতে হবে। অতিরিক্ত বা ভিন্ন নামে আইপি জারি, পুনরায় প্যাকেটিং করা কিংবা খোলাখুলি নিয়ম না মানার অনুমতি নেই; চাল বস্তায় বিক্রি করতে হবে এবং পুরো পদ্ধতি লক্ষ্যভিত্তিক নজরদারির মধ্যে হতে হবে। আমদানি করা চাল আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাজারজাতকরণের নির্দেশ আছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য বলছে, এ বছর বিশ্ববাজারে সব ধরনের চালের দাম গড়ে প্রায় ১৩ শতাংশ কমেছে। থাইল্যান্ডের ৫ শতাংশ ভাঙা সাদা চালের দাম নেমে টনপ্রতি ৩৭২ দশমিক ৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৬ শতাংশ কম এবং ২০১৭ সালের পর সবচেয়ে কম। কিন্তু দেশের বাজারে চিত্র উল্টো। এখানে আন্তর্জাতিক বাজারে পড়তি দামের কোনো প্রতিফলন নেই। টিসিবির হিসাবে এখন খুচরা বাজারে সরু চাল কেজি ৭৫–৮৫ টাকা, মাঝারি চাল ৬০–৭০ টাকা আর মোটা চাল ৫৫–৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর একই সময়ে দাম ছিল আরও কম।

সরকারি গুদামে বর্তমানে মোট ২১ লাখ ৭৯ হাজার টন খাদ্য মজুত রয়েছে; এর মধ্যে ধান ও চালের হিসাব ২০ লাখ ৪৫ হাজার টন।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মনে করেন, ‘সরকারি উৎপাদন হিসাব বলছে ঘাটতি নেই, তবু দাম কমছে না। অতএব আমদানির সিদ্ধান্ত বাজারের জন্য ইতিবাচক। অনেক সময় আমদানির খবরই দাম নিয়ন্ত্রণে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলে।’

বর্তমানে চাল আমদানিতে কোনো শুল্ক ধার্য করা হয় না। তুলনামূলকভাবে দাম কম থাকায় ব্যবসায়ীরা সাধারণত ভারতের বাজার থেকে চাল আনে। খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চিঠি অনুমোদন করলেই প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টিন থেকে আইপি জারি করা শুরু হবে এবং আমদানিকারকেরা দ্রুত রপ্তানি উৎস থেকে চাল আনার কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী জাফরিন

পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী

টেলিটক এখন গলার কাঁটা পর্যায়ে চলে এসেছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

সিন্ধু পানিবণ্টন নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় পাকিস্তানের বড় জয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত