আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল প্রতীক্ষিত বে টার্মিনাল প্রকল্পে অবশেষে নতুন করে গতি দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন নানা জটিলতা ও বিলম্বের মুখে থাকা এ প্রকল্পের তিনটি প্রধান অবকাঠামোগত অংশকে একত্র করে একটি বড় প্রকল্প হিসেবে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টটি এখন একনেক সভায় পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এটি অনুমোদন পেলে কাজের গতি বহুগুণে বাড়বে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক আজকের পত্রিকা'কে প্রকল্পটির বিষয়ে জানিয়েছেন, বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (বিটিএমআইডিপি) নামে একটি সমন্বিত প্রকল্প প্রণয়ন করে প্রাথমিক অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে এটি প্রি-একনেক পর্যায়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে। নতুন করে গতি পাওয়ায় তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিগগির একনেকে এর অনুমোদন মিলবে।
নতুন প্রকল্পে মূলত তিনটি বড় কাজকে একত্রে নেওয়া হয়েছে—চ্যানেল নির্মাণ; ব্রেকওয়াটার স্থাপন এবং রেল, সড়ক সংযোগসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো উন্নয়ন। অতীতে এসব অংশের জন্য আলাদা আলাদা প্রকল্প করা হয়েছিল, যার ফলে কাজের গতি ব্যাহত হয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে। এ বাস্তবতা আমলে নিয়ে বন্দরের নীতিনির্ধারকেরা একাধিক বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেন, একীভূত প্রকল্প এখন কার্যকর সমাধান।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পে ব্রেকওয়াটার নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা; নেভিগেশন অ্যাকসেস চ্যানেলের জন্য বরাদ্দ ১ হাজার ৯৭৯ কোটি এবং রেল, সড়ক সংযোগসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামোতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া নেভিগেশনে সহায়ক যন্ত্রপাতি স্থাপনে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫৭ কোটি টাকা।
এ বিশাল বাজেটের বড় অংশ আসবে বৈদেশিক সহায়তা থেকে। বিশ্বব্যাংক ইতিমধ্যে ৬৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যা দিয়ে চ্যানেল ও ব্রেকওয়াটার নির্মাণ করা হবে। নতুন করে আরও ১৯২ মিলিয়ন ডলারের ঋণ চাওয়া হয়েছে রেল ও সড়ক সংযোগের জন্য। সব মিলিয়ে বিশ্বব্যাংকের অংশগ্রহণ দাঁড়াতে পারে ১০ হাজার ২৭২ কোটি টাকার বেশি। বাকি অর্থ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করবে।
চট্টগ্রামের হালিশহর উপকূলজুড়ে গড়ে উঠতে যাওয়া বে টার্মিনাল নিয়ে কাজ চললেও বাস্তবতা হলো, বর্তমান বন্দরের সক্ষমতা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশের চাহিদা মেটাতে অক্ষম হয়ে পড়বে। তাই দ্রুত বিকল্প সক্ষমতা গড়ে তোলা জরুরি হয়ে উঠেছে। বে টার্মিনাল নির্মিত হলে বন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষমতা তিন গুণে পৌঁছাবে বলে জানান বন্দরের চেয়ারম্যান এস এম মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বে টার্মিনাল নিয়ে আমরা অগ্রসর হয়েছি। শিগগির জনগণকে সুখবর দিতে পারব।’
উল্লেখ্য, বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে তিনটি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, এর মধ্যে দুটি কনটেইনার টার্মিনাল ও একটি মাল্টিপারপাস। প্রতিটি টার্মিনালের সঙ্গে যুক্ত থাকবে রাস্তা, রেললাইন, ড্রেনেজ সিস্টেম ও অন্যান্য লজিস্টিক সুবিধা। এসব অবকাঠামোকে কেন্দ্র করে দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনের আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা হলেও প্রকল্পটি নানা প্রতিবন্ধকতায় মুখ থুবড়ে পড়েছিল। এবার সমন্বিত উদ্যোগের মধ্য দিয়ে তার নতুন করে যাত্রা শুরু হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবং একনেকের অনুমোদন মিললে দেশের বাণিজ্যিক প্রবাহের কেন্দ্রে এক নতুন অধ্যায় শুরু হবে; যেখানে চট্টগ্রাম বন্দর শুধু দেশের নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক পোর্ট হাবে রূপ নিতে পারবে।
আরও খবর পড়ুন:
চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল প্রতীক্ষিত বে টার্মিনাল প্রকল্পে অবশেষে নতুন করে গতি দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন নানা জটিলতা ও বিলম্বের মুখে থাকা এ প্রকল্পের তিনটি প্রধান অবকাঠামোগত অংশকে একত্র করে একটি বড় প্রকল্প হিসেবে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টটি এখন একনেক সভায় পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এটি অনুমোদন পেলে কাজের গতি বহুগুণে বাড়বে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক আজকের পত্রিকা'কে প্রকল্পটির বিষয়ে জানিয়েছেন, বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (বিটিএমআইডিপি) নামে একটি সমন্বিত প্রকল্প প্রণয়ন করে প্রাথমিক অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে এটি প্রি-একনেক পর্যায়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে। নতুন করে গতি পাওয়ায় তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিগগির একনেকে এর অনুমোদন মিলবে।
নতুন প্রকল্পে মূলত তিনটি বড় কাজকে একত্রে নেওয়া হয়েছে—চ্যানেল নির্মাণ; ব্রেকওয়াটার স্থাপন এবং রেল, সড়ক সংযোগসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো উন্নয়ন। অতীতে এসব অংশের জন্য আলাদা আলাদা প্রকল্প করা হয়েছিল, যার ফলে কাজের গতি ব্যাহত হয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে। এ বাস্তবতা আমলে নিয়ে বন্দরের নীতিনির্ধারকেরা একাধিক বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেন, একীভূত প্রকল্প এখন কার্যকর সমাধান।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পে ব্রেকওয়াটার নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা; নেভিগেশন অ্যাকসেস চ্যানেলের জন্য বরাদ্দ ১ হাজার ৯৭৯ কোটি এবং রেল, সড়ক সংযোগসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামোতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া নেভিগেশনে সহায়ক যন্ত্রপাতি স্থাপনে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫৭ কোটি টাকা।
এ বিশাল বাজেটের বড় অংশ আসবে বৈদেশিক সহায়তা থেকে। বিশ্বব্যাংক ইতিমধ্যে ৬৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যা দিয়ে চ্যানেল ও ব্রেকওয়াটার নির্মাণ করা হবে। নতুন করে আরও ১৯২ মিলিয়ন ডলারের ঋণ চাওয়া হয়েছে রেল ও সড়ক সংযোগের জন্য। সব মিলিয়ে বিশ্বব্যাংকের অংশগ্রহণ দাঁড়াতে পারে ১০ হাজার ২৭২ কোটি টাকার বেশি। বাকি অর্থ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করবে।
চট্টগ্রামের হালিশহর উপকূলজুড়ে গড়ে উঠতে যাওয়া বে টার্মিনাল নিয়ে কাজ চললেও বাস্তবতা হলো, বর্তমান বন্দরের সক্ষমতা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশের চাহিদা মেটাতে অক্ষম হয়ে পড়বে। তাই দ্রুত বিকল্প সক্ষমতা গড়ে তোলা জরুরি হয়ে উঠেছে। বে টার্মিনাল নির্মিত হলে বন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষমতা তিন গুণে পৌঁছাবে বলে জানান বন্দরের চেয়ারম্যান এস এম মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বে টার্মিনাল নিয়ে আমরা অগ্রসর হয়েছি। শিগগির জনগণকে সুখবর দিতে পারব।’
উল্লেখ্য, বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে তিনটি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, এর মধ্যে দুটি কনটেইনার টার্মিনাল ও একটি মাল্টিপারপাস। প্রতিটি টার্মিনালের সঙ্গে যুক্ত থাকবে রাস্তা, রেললাইন, ড্রেনেজ সিস্টেম ও অন্যান্য লজিস্টিক সুবিধা। এসব অবকাঠামোকে কেন্দ্র করে দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনের আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা হলেও প্রকল্পটি নানা প্রতিবন্ধকতায় মুখ থুবড়ে পড়েছিল। এবার সমন্বিত উদ্যোগের মধ্য দিয়ে তার নতুন করে যাত্রা শুরু হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবং একনেকের অনুমোদন মিললে দেশের বাণিজ্যিক প্রবাহের কেন্দ্রে এক নতুন অধ্যায় শুরু হবে; যেখানে চট্টগ্রাম বন্দর শুধু দেশের নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক পোর্ট হাবে রূপ নিতে পারবে।
আরও খবর পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের ধাক্কায় টালমাটাল বিশ্ববাণিজ্য, বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলো। এশিয়ার অধিকাংশ দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি হয়ে থাকে। আর শুল্কের কারণে এ খাতে শঙ্কার জন্ম হয়েছে। গত ২০ এপ্রিল লিবারেশন ডে ঘোষণা করে যে শুল্ক আরোপ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার প্রভাবের
১৫ ঘণ্টা আগেভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এর বড় ধাক্কা লেগেছে ভারতের তৈরি পোশাক খাতে। ট্রাম্পের এই শুল্ক ঘোষণার পর থেকে প্রতিদিন আতঙ্কে কাটছে এই খাতের উদ্যোক্তাদের।
১৭ ঘণ্টা আগেব্যাংক খাতে লুণ্ঠন, অর্থ পাচার, শেয়ারবাজার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নড়বড়ে করে ফেলা, বৈদেশিক মুদ্রার মজুতে চাপ ইত্যাদি কারণে আওয়ামী লীগ আমলের শেষের দিকে অর্থনীতি মহাসংকটে পড়েছিল। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে জনজীবনেও। মূল্যস্ফীতিতে দেশবাসীর নাভিশ্বাস ওঠে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের...
১ দিন আগেচীনা প্রতিষ্ঠান চুয়ানচিং ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের (সিসিডিসি) সঙ্গে দুটি কূপ খননের চুক্তি করেছে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল)। ৫৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বাখরাবাদ ও তিতাস এলাকায় গভীর অনুসন্ধানে এ দুটি কূপ খনন করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে...
১ দিন আগে