কামরুজ্জামান রাজু, কেশবপুর (যশোর)
সাগরদাঁড়ির কপোতাক্ষ নদপাড়ে এখন শুধু ঢেউ নয়, জেগে উঠছে উদ্যোক্তা জাগরণের তরঙ্গ। সজিবের ঘেরে কাঁকড়া চাষে তৈরি হয়েছে রপ্তানিমুখী সম্ভাবনার এক নতুন হাব; যেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ মিলেছে দুই ডজন তরুণের আর উৎপাদনের ধারাবাহিক গতিতে ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে এ জনপদের অর্থনৈতিক মানচিত্র।
যশোরের কেশবপুর উপজেলার ব্যাসডাঙ্গা গ্রামের তরুণ আব্দুল্লাহ আল মামুন সজিব একসময় করপোরেট জগতে কর্মরত ছিলেন। ঢাকায় যমুনা গ্রুপে করপোরেট এক্সিকিউটিভ হিসেবে সচ্ছল পেশাগত জীবন কাটলেও তাঁর অন্তরে জমে ছিল নিজের অঞ্চলে কিছু করে দেখানোর আকাঙ্ক্ষা। উচ্চশিক্ষিত এই যুবক ২০১৯ সালের শেষ প্রান্তে সিদ্ধান্ত নেন, পেছনে ফিরে যাবেন না—চাকরি ছাড়বেন, নিজ গ্রামে ফিরে কিছু গড়বেন।
প্রথমেই শুরু করেন মুরগির খামার ও ফলের বাগান দিয়ে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি। আশপাশের অনেকেই তখন পেছনে টানার চেষ্টা করেছেন। ‘এত ভালো চাকরি ছেড়ে এসেছ, ফিরে যাও ঢাকায়’—এমন কথাও শুনতে হয়েছে বারবার। কিন্তু দমে যাননি সজিব। এরপরই জোর দেন মাছ চাষে এবং এরই ফাঁকে মাথায় আসে কাঁকড়া চাষের চিন্তা। এই ভাবনাই তাঁর ভাগ্য ফিরিয়ে দেয়।
সাগরদাঁড়ির কপোতাক্ষ নদপারের ৯ বিঘা জমিতে গড়ে তোলেন আধুনিক কাঁকড়া চাষের ঘের। ৫ বিঘা জলাশয়ে তৈরি করেন ৭৩ হাজার ভাসমান প্লাস্টিক বাক্স, যেখানে চাষ করেন সফট সেল কাঁকড়া—বিশ্ববাজারে যার চাহিদা বিশাল। বাকি ৪ বিঘায় চলে হার্ড সেল পদ্ধতির প্রচলিত চাষ। প্রতিদিন ২ মণ তেলাপিয়া মাছ কেটে খাওয়ানো হয় এই কাঁকড়াগুলোকে। শুধুই এখানকার নদী থেকেই নয়, কাঁকড়া সংগ্রহ করা হয় নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, কপিলমুনি ও পাইকগাছার ঘের থেকেও।
বাক্সে কাঁকড়া ঢোকানোর মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যেই শুরু হয় খোলস পাল্টানোর প্রক্রিয়া। এরপর টানা ২৫ দিন পরিচর্যার পর তা রপ্তানিযোগ্য গ্রেডে পৌঁছে যায়। কোরিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার বাজারে এখন নিয়মিত যাচ্ছে এই ঘেরের কাঁকড়া। এবার সজিবের নতুন লক্ষ্য জাপান। সে লক্ষ্যে জাপানি এক্সপোর্টারদের সঙ্গে আলোচনাও শেষ পর্যায়ে। সবকিছু ঠিক থাকলে ঈদের পরেই কেশবপুর থেকে সরাসরি জাপান যাবে কাঁকড়া।
সজিব বলেন, ফ্রিজিং ভ্যান সরাসরি ঘেরের পাশে আসে। ওখানেই বাছাই করে নেয় গ্রেডিং কাঁকড়া। প্রতি কেজি কাঁকড়া ১,৫০০ থেকে ২,০০০ টাকায় বিক্রি হয়। এ কাঁকড়া দেশের সাধারণ বাজারে নয়, শুধু রপ্তানি ও পাঁচ তারকা হোটেলেই সরবরাহ করা হয়।
এই ঘের এখন শুধুই সজিবের আত্মনির্ভরতার প্রতীক নয়, বরং তার ঘেরে কাজ করে খণ্ডকালীন আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন ২২ জন শিক্ষার্থী। তাঁদের অনেকে পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছেন এই কাজ থেকেই। ঘের পরিচালনায় আছেন একজন ব্যবস্থাপক, একজন সুপারভাইজার এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়ে উঠেছে দক্ষ একটি দল।
ঘেরের উৎপাদনশীলতা ও সম্ভাবনা দেখে মুগ্ধ কেশবপুর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, এটা ছোট ঘের হলেও উৎপাদন ও রপ্তানিতে উদাহরণ তৈরি করছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এমন আরও বহু সজিব গড়ে ওঠা সম্ভব। দেশের বহু বেকার তরুণ কাঁকড়া চাষের মাধ্যমে নিজেকে গড়তে পারবে, তৈরি হবে বৈদেশিক আয়।
সজিবের গল্প শুধু একজন ব্যক্তির সাফল্য নয়, বরং এ গল্প আত্মবিশ্বাস, সংকল্প ও উদ্ভাবনী চেতনার। নদীপাড়ে দাঁড়িয়ে যেখানে একসময় কবিতা লিখতেন মাইকেল মধুসূদন, এখন সেখানে লেখা হচ্ছে কর্ম, উদ্যম আর বৈশ্বিক সম্ভাবনার নতুন ছক।
সাগরদাঁড়ির কপোতাক্ষ নদপাড়ে এখন শুধু ঢেউ নয়, জেগে উঠছে উদ্যোক্তা জাগরণের তরঙ্গ। সজিবের ঘেরে কাঁকড়া চাষে তৈরি হয়েছে রপ্তানিমুখী সম্ভাবনার এক নতুন হাব; যেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ মিলেছে দুই ডজন তরুণের আর উৎপাদনের ধারাবাহিক গতিতে ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে এ জনপদের অর্থনৈতিক মানচিত্র।
যশোরের কেশবপুর উপজেলার ব্যাসডাঙ্গা গ্রামের তরুণ আব্দুল্লাহ আল মামুন সজিব একসময় করপোরেট জগতে কর্মরত ছিলেন। ঢাকায় যমুনা গ্রুপে করপোরেট এক্সিকিউটিভ হিসেবে সচ্ছল পেশাগত জীবন কাটলেও তাঁর অন্তরে জমে ছিল নিজের অঞ্চলে কিছু করে দেখানোর আকাঙ্ক্ষা। উচ্চশিক্ষিত এই যুবক ২০১৯ সালের শেষ প্রান্তে সিদ্ধান্ত নেন, পেছনে ফিরে যাবেন না—চাকরি ছাড়বেন, নিজ গ্রামে ফিরে কিছু গড়বেন।
প্রথমেই শুরু করেন মুরগির খামার ও ফলের বাগান দিয়ে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি। আশপাশের অনেকেই তখন পেছনে টানার চেষ্টা করেছেন। ‘এত ভালো চাকরি ছেড়ে এসেছ, ফিরে যাও ঢাকায়’—এমন কথাও শুনতে হয়েছে বারবার। কিন্তু দমে যাননি সজিব। এরপরই জোর দেন মাছ চাষে এবং এরই ফাঁকে মাথায় আসে কাঁকড়া চাষের চিন্তা। এই ভাবনাই তাঁর ভাগ্য ফিরিয়ে দেয়।
সাগরদাঁড়ির কপোতাক্ষ নদপারের ৯ বিঘা জমিতে গড়ে তোলেন আধুনিক কাঁকড়া চাষের ঘের। ৫ বিঘা জলাশয়ে তৈরি করেন ৭৩ হাজার ভাসমান প্লাস্টিক বাক্স, যেখানে চাষ করেন সফট সেল কাঁকড়া—বিশ্ববাজারে যার চাহিদা বিশাল। বাকি ৪ বিঘায় চলে হার্ড সেল পদ্ধতির প্রচলিত চাষ। প্রতিদিন ২ মণ তেলাপিয়া মাছ কেটে খাওয়ানো হয় এই কাঁকড়াগুলোকে। শুধুই এখানকার নদী থেকেই নয়, কাঁকড়া সংগ্রহ করা হয় নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, কপিলমুনি ও পাইকগাছার ঘের থেকেও।
বাক্সে কাঁকড়া ঢোকানোর মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যেই শুরু হয় খোলস পাল্টানোর প্রক্রিয়া। এরপর টানা ২৫ দিন পরিচর্যার পর তা রপ্তানিযোগ্য গ্রেডে পৌঁছে যায়। কোরিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার বাজারে এখন নিয়মিত যাচ্ছে এই ঘেরের কাঁকড়া। এবার সজিবের নতুন লক্ষ্য জাপান। সে লক্ষ্যে জাপানি এক্সপোর্টারদের সঙ্গে আলোচনাও শেষ পর্যায়ে। সবকিছু ঠিক থাকলে ঈদের পরেই কেশবপুর থেকে সরাসরি জাপান যাবে কাঁকড়া।
সজিব বলেন, ফ্রিজিং ভ্যান সরাসরি ঘেরের পাশে আসে। ওখানেই বাছাই করে নেয় গ্রেডিং কাঁকড়া। প্রতি কেজি কাঁকড়া ১,৫০০ থেকে ২,০০০ টাকায় বিক্রি হয়। এ কাঁকড়া দেশের সাধারণ বাজারে নয়, শুধু রপ্তানি ও পাঁচ তারকা হোটেলেই সরবরাহ করা হয়।
এই ঘের এখন শুধুই সজিবের আত্মনির্ভরতার প্রতীক নয়, বরং তার ঘেরে কাজ করে খণ্ডকালীন আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন ২২ জন শিক্ষার্থী। তাঁদের অনেকে পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছেন এই কাজ থেকেই। ঘের পরিচালনায় আছেন একজন ব্যবস্থাপক, একজন সুপারভাইজার এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়ে উঠেছে দক্ষ একটি দল।
ঘেরের উৎপাদনশীলতা ও সম্ভাবনা দেখে মুগ্ধ কেশবপুর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, এটা ছোট ঘের হলেও উৎপাদন ও রপ্তানিতে উদাহরণ তৈরি করছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এমন আরও বহু সজিব গড়ে ওঠা সম্ভব। দেশের বহু বেকার তরুণ কাঁকড়া চাষের মাধ্যমে নিজেকে গড়তে পারবে, তৈরি হবে বৈদেশিক আয়।
সজিবের গল্প শুধু একজন ব্যক্তির সাফল্য নয়, বরং এ গল্প আত্মবিশ্বাস, সংকল্প ও উদ্ভাবনী চেতনার। নদীপাড়ে দাঁড়িয়ে যেখানে একসময় কবিতা লিখতেন মাইকেল মধুসূদন, এখন সেখানে লেখা হচ্ছে কর্ম, উদ্যম আর বৈশ্বিক সম্ভাবনার নতুন ছক।
চট্টগ্রামবাসীর জন্য দ্রুত স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে দেশের শীর্ষ টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী কোম্পানি গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি)। সিসিসি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এবং গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) ইয়াসির আজমানের উপস্থিতিতে ১৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশ
৩৩ মিনিট আগেপুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেডের শেয়ার কারসাজি করে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করায় ৯ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একই সঙ্গে চারটি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষায় গুরু
৩৯ মিনিট আগেপুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ব্যাংকঋণ পরিশোধে জমি বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২ ঘণ্টা আগেঢাকায় পর্যটন বিষয়ক মেলা ‘এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার’ এর দ্বাদশ আসরের পর্দা উঠছে কাল বৃহস্পতিবার। রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে (আইসিসিবি) তিন দিনের মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে। এতে দেশি-বিদেশি হোটেল ও রিসোর্ট, এয়ারলাইন্স ও ক্রুজ কোম্পানি, ট্যুর অপারেটর ও ট্র্যাভেল এজেন্সি, থিম পার্ক ও পর্যটন প্র
২ ঘণ্টা আগে